ড. কামালের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতিহারে বেশকিছু প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, এর মধ্যে একটি হলো, ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে সংখ্যালঘু মন্ত্রনালয় গঠন করবে এবং বিশেষ ট্রাইবুনাল করে সংখ্যালঘুদের উপর যে কোন হামলার বিচার করবে। (https://bit.ly/2AMbdMV)
কোন মানুষ নির্যাতিত হলে নিপীড়কের বিচার হওয়া উচিত। কিন্তু নির্যাতিতের ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু করে সাম্প্রদায়িক বিভাজন কেন ? আমরা সাম্প্রদায়িকতামুক্ত দেশ চাই, কিন্তু কোন নির্যাতিত মুসলমান আর কোন নির্যাতিত হিন্দু, এই বিভাজন কখনই কাম্য হতে পারে না।
সংখ্যালঘুদের জন্য পৃথক মন্ত্রনালয় বা ট্রাইবুনালের কথা তখন আসতে পারে, যদি বাংলাদেশে সাধারণ বিচার বিভাগীয় পদ্ধতিতে সংখ্যালঘুরা সঠিক বিচার না পায় তখন। কিন্তু বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হয়ে বিচার পায় না, এরকম কোন নজির আছে বলে সংখ্যালঘুরা দেখাতে পারবে বলে মনে হয় না।
বিশ্বজিৎ হত্যায় ২ জনের ফাঁসি, ৪ জনের যাবজ্জীবন হয়েছে
পূর্ণিমা ধর্ষণ মামলায় ১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে,
সাতক্ষীরায় হিন্দু ছাত্র গৌতম হত্যা মামলায় ২ জনের ফাঁসির আদেশ।
আমার মনে হয়, সংখ্যাগুরুদের যতগুলো মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে তার সাথে সংখ্যাগুরুদের তুলনা করলে সংখ্যালঘুরাই এগিয়ে থাকবে। তবুও যদি তাদের দাবি মেনে নেই, এবং তাদের বক্তব্য “বিচারহীনতার কারণে সংখ্যালঘু নির্যাতন বেড়ে চলেছে” (https://bit.ly/2G0by4I)- এ কথাটা যদি সত্য হয়, তবে তা যাচাই করার অপশন আছে।
সম্প্রতি হিন্দু মহাজোট নামক একটি হিন্দু সংস্থা দাবি করেছে, গত ১১ মাসে ৮৮ জন সংখ্যালঘুকে হত্যা করা হয়েছে। (https://bit.ly/2G0by4I)
কথা হলো, এই ৮৮ জন সংখ্যালঘুকে কি শুধু সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে হত্যা করা হয়েছে ?
যদি সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে হত্যা করা হয়, তবে তাদের জন্য আলাদা সংখ্যালঘু মন্ত্রনালয় বা ট্রাইবুনাল করার দরকার আছে। কিন্তু হিন্দু মহাজোট যাকে সংখ্যালঘু হত্যাকাণ্ড বলছে, সেটা আদৌ সংখ্যালঘু হত্যা নাকি সাম্প্রদায়িক রং মাখানো তা সম্পূর্ণ ঘোলাটে। যেমন, সংস্থাটি কিছুদিন আগে বরিশালের ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু হত্যাকাণ্ডকে সংখ্যালঘু হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছে, (https://bit.ly/2zKoBSl)
অথচ হিন্দুদের একটি নিউজ পোর্টাল বলছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চেয়্যারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল ও এমপি তালুকদার ইউনুসের সাথে বিরোধ চলছিলো, যার দরুণ এই হত্যাকাণ্ড। বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু হাফিজুর রহমান ইকবালের অনুসারী। (https://bit.ly/2ARb23b)
আমার কথা হলো, মানুষ মরণশীল। মানুষকে মরতেই হবে। কেউ স্বাভাবিকভাবে মরবে, কাউকে হত্যা করা হবে। হিন্দুরা যেহেতু বাংলাদেশের নাগরিক এবং মানুষ, তাই বাংলাদেশে কেউ মারা গেলে তার মধ্যে হিন্দু থাকবে, এবং সেটা মেনে নেয়াই উচিত। ‘১১ মাসে ৮৮ জন হিন্দু খুন হয়েছে’ এর থেকে বলা জরুরী ১১ মানে ৮৮ জন বাংলাদেশের নাগরিক খুন হয়েছে, তখন কথাটা সত্য হবে। হিসেব করলে তো দেখা যাবে ১১ মাসে ১১ হাজার লোক খুন হয়েছে, এর মধ্যে ৮৮ জন কি হিন্দু থাকতে পারবে না ? হিন্দুদের কি তবে অমরত্ব দিতে হবে ??
ড. কামাল আগাগোড়া একজন সেক্যুলার মানুষ, এতে কোন সন্দেহ নাই।
তিনি এক মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন ইহুদীর সাথে, আরেকজনকে হিন্দুর সাথে, এটা অবশ্যই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু তিনি যে সেক্যুলার মানসিকতা নিয়ে তার ঐক্যফ্রন্টের ইশতিহার দিলেন, সেটা কতটুকু সেক্যুলার মানসিকতা থেকে উদগিরিত ? বিশেষ করে তার দলের ডেপুটি এ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী একজন গোড়া হিন্দু, যে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক হিন্দু দলের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে (২০১৬ সালে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করতে যে রিট হাইকোর্টে উঠেছিলো তা পরিচালিত হয়েছিলো ড. কামালের চেম্বার থেকেই এবং সেটার দায়িত্ব ছিলো ঐ সুব্রত চৌধুরীর হাতেই)। পাশাপাশি ঐক্যফ্রন্টের জোটে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে সুকৃতি মণ্ডল নামক আরেক উগ্র সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিকে, যে ইসরাইলের ড্রুজ প্রতিনিধি মেন্দি এন সাফাদির সাথে সাম্প্রদায়িক ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পর্ক রক্ষা করে।
ড. কামালের সংখ্যালঘু দরদ থেকে আমার একটি খবর মনে পড়ে গেলো। সম্প্রতি ভারতের সেনাপ্রধান বলেছে, “ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হলে পাকিস্তানকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হতে হবে।” (https://bit.ly/2G1kC9h)
মজার ব্যাপার হলো, ভারত নিজে এখন উগ্রহিন্দুত্ববাদী, কিন্তু মুসলমানকে হতে বলে ধর্মনিরপেক্ষ।
ড. কামাল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা উগ্রহিন্দুত্ববাদ সমর্থন করে, কিন্তু মুসলমানদের বলে ধর্মনিরপেক্ষ হতে !! অবাককাণ্ড।
আমি অনেকদিন আগে আপনাদেরকে ‘সুপার মাইনোরিটি’ নামক এক থিউরী দিয়েছিলাম (লেখাটা পাচ্ছি না, অন্য একটি ফেসবুক পেইজে পেলাম-https://bit.ly/2zHipug )। বলেছিলাম, বাংলাদেশে হিন্দুদের সুপার মাইনোরিটি করার প্রক্রিয়া চলছে। বর্তমানে সংখ্যালঘু মন্ত্রনালয় বা ট্রাইবুনালের মাধ্যমে সেই সুপার মাইনোরিটিকেই আইনত স্বীকৃতি দিয়ে পুরো সিস্টেমটার বৈধকরণ করা হবে। এতে যেটা হবে, সংখ্যালঘু গোটা কয়েক হিন্দুকে সংখ্যাগুরু অধিক সংখ্যাক মুসলমানের উপর কর্তৃত্ব দিয়ে দেয়া হবে এবং সেটা বজায় রাখতে শক্তি প্রয়োগ হবে। তবে এই বুদ্ধি অবশ্যই হিন্দুদের মাথা থেকে আসছে না, আসছে পশ্চিমা সম্রাজ্যবাদীদের মাথা থেকে, যারা এদেশে সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু বিভেদ তৈরী করে নানান ফায়দা নিতে চায়, ঠিক যেটা হয়েছে নাইজেরিয়ার ক্ষেত্রে। সেখানের তেল সম্পদ লুটতে পশ্চিমারা দেশটিতে আইনতভাবে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বিভেদ তৈরী করে দিয়েছে, ফলশ্রুতিতে সারাদিন ঘটছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, সেই সুযোগ তাদের সম্পদ লুটছে সম্প্রাজ্যবাদীরা। নাইজেরিয়ায় এত সম্পদ থাকতেও সাধারণ মানুষ ফকির, সম্পদ নিয়ে যাচ্ছে অন্যরা।
আমরা জানি, বাংলাদেশের সীমানার ঐপার মানে ভারতে চলছে উগ্র সাম্প্রদায়িক হিন্দুদের রামরাজ্য প্রতিষ্ঠা। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের সুপার মাইনোরিটি বানিয়ে দিলে ভারতের সেই সাম্প্রদায়িকতা বর্ডার ছেড়ে বাংলাদেশে আসতে আইনত ভিত্তি পাবে। এতে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু সংঘাত হবে, এরপর পূর্বতীমুর বা দক্ষিণ সুদানের মত সংখ্যালঘুদের দেশের কোন একপ্রান্তে জড়ো করে তাদের জন্য পৃথম ভূমি বা রাষ্ট্রের দাবি উঠবে, দেশটা ভাগ হয়ে যাবে। এরপর যে পশ্চিমারা সংখ্যালঘু সংখ্যালঘু জিগির তুলেছিলো তারা সংখ্যালঘুদের থেকে ঐ ভূমির নিয়ন্ত্রণ বুঝে নিয়ে সম্পদ কুক্ষিত করবে।
এইসব ক্যালকুলেশন বা চিন্তাধারা অবাস্তব বা মনগড়া নয়। পশ্চিমা সম্রাজ্রবাদীরা বহুদেশে দল-মত-সম্প্রদায় বিভাজন করে এইভাবেই সুবিধা নিয়েছে, যার বহু উদহারণ আছে। যারা মোটামুটি আন্তর্জাতিক খবরা-খবর পড়েন তাদের জানার কথা। আমরা চাই, সবাই নির্বাচন করুক। কিন্তু কোন ধরনের সাম্প্রদায়িক বিভাজনমূলক ইশতিহার গ্রহণযোগ্য হতে পারে না, তাই সেটা পরিত্যাগ করাই জরুরী।
===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/ noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
(https://www.facebook.com/
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/ Noyon-Chatterjee-6-20264727 0140320/)
-------------------------- -------------------------- --------------------------------------------
(https://www.facebook.com/
--------------------------
0 comments:
Post a Comment