Showing posts with label রাজনীতি. Show all posts
Showing posts with label রাজনীতি. Show all posts

Wednesday, February 27, 2019

পুরান ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে সরকারের যুদ্ধ ঘোষণা

পুরান ঢাকায় শত বছর ধরে গড়ে ওঠা ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে শেখ হাসিনা সরকার।  বুড়িঙ্গার তীর জুড়ে পর্যটন ও বিনোদন নগরী, বাণিজ্য উচ্ছেদ করে হেরিটেজ পার্ক এবং নতুন শহর নির্মাণ (আরবান ল্যান্ড রিডেভেলপমেন্ট প্রকল্প) করার জন্য সাম্প্রতিক সময়ে চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে তৈরী জনমতকে কাজে লাগতে চাইছে সরকার।  আসুন, এ সম্পর্কিত কিছু খবর দেখি-

১)  ৩ দিনের মধ্যে গোডাউন ছাড়বেন, ৬ মাসের মধ্যে নতুন গোডাউন পাবেন !
দৈনিক প্রথম আলোর খবর; “২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে টাস্কফোর্সের অভিযান” (https://bit.ly/2UeGvox)
খবরের ভেতর- তিন দিনের মধ্যে পুরান ঢাকায় কেমিকেল গোডাউন বিরোধী অভিজান শুরু করবে বিশেষ বাহিনী, কোন বাড়িতে কেমিকেল পাওয়া  গেলে ঐ বাড়ির গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে দেবে। সাথে নেয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা। ১ মাসের মধ্যে পুরো পুরান ঢাকা কেমিকেল গোডাউন শূণ্য হবে।
এরপর খবরে নিচের অংশে বলা হচ্ছে, “শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, রাসায়নিকের গুদাম সরিয়ে নিতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে শিল্পনগর তৈরি করে দেবে শিল্প মন্ত্রণালয়।  সভা শেষে সাংবাদিকদের জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় রাসায়নিক পল্লির জমির পরিমাণ ৫০ একর থেকে বাড়িয়ে ২০০ একর করার চিন্তা করা হচ্ছে। এ জন্য কেরানীগঞ্জে নতুন কয়েকটি জায়গা দেখা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কাজ শুরু হয়েছে। সরকারি প্রকল্পের বিভিন্ন ধাপ থাকে, সেটা এড়িয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। এ ক্ষেত্রে ছয় মাসের বেশি লাগবে না বলে আশা করা হচ্ছে।”
তারমানে যদি সরকার তড়িৎ কাজও করে (যদিও এখনও জমি ঠিক হয়নি) তবে ৬ মাস পর কেরানীগঞ্জ কেমিকেল গোডাউন প্রস্তুত হবে।  এবার নিজেই একটু বিবেক খাটিয়ে চিন্তা করে দেখুন তো, কোন বাড়িয়ালা আপনাকে বললো, “৩ দিনের মধ্যে বাসা ছাড়বেন, আর ৬ মাস পর নতুন বাসা পাবেন। ” বিষয়টা কেমন ? আপনি নিজে যদি থাকতেন, তবে না হয় স্টেশন, পথে ঘাটে ঘুমাতেন। কিন্তু  কোটি কোটি টাকার মালামাল নিয়ে কোথায় যাবেন ? ৬ মাস রাস্তায় থাকবেন ? খোলা আকাশের নিচে এসব মালামাল রাখলে তা ৬ মাস তো দূরের কথা, ৬ দিন থাকবে না।  সরকার যদি সত্যিই চাইতো, এসব ব্যবসা টিকে থাকুক, তবে সঠিক উপায়ে কেমিকেল গোডাউনের পুনর্বাসন করতো, এভাবে উচ্ছেদ চাইতো না।  এখানে স্পষ্ট, সরকার নিজেই চাইছে পুরান ঢাকায় দীর্ঘদিনের গড়ে ওঠা ব্যবসা-বাণিজ্যের পতন ঘটুক।

(২) বলপ্রয়োগ করে হলেও কেমিক্যাল গুদাম সরাতে হবে: নাসিম (https://bit.ly/2ExhMpM)
মন্তব্য : আপনার ও আপনার পুত্রের লুটপাট ও চুরির দরুন বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন যে পরিমাণ রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে, তার বিচার হবে কবে ?

(৩) এলসি বন্ধ হলেই পুরান ঢাকা ছাড়বেন ব্যবসায়ীরা :  এনবিআর চেয়ারম্যান (https://bit.ly/2NvcSwi)
কয়েকদিন আগে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনসি বলেছিলো, আওয়ামী সরকার হলো ব্যবসাবান্ধব সরকার।  তখন আমি স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছিলো, আওয়ামী সরকার ব্যবসা বান্ধব সরকার নয়, আওয়ামী সরকার হলো ব্যবসাখেকো সরকার (https://bit.ly/2VfkkOS)।  পুরান ঢাকার ব্যবসা বন্ধ করে রিয়েল স্টেট ও পর্যটন ব্যবসা চালু করতে সরকারী কর্মকর্তাদের হুমকি ধামকি দেখলে সেটা সহজে অনুমেয়।

(৪) কেমিকেল গোডাউনের সংখ্যা কত ?
বাংলানিউজ২৪ একটি প্রতিবেদন বলছে, এর সংখ্যা ৯ হাজার। (https://bit.ly/2tHV8Vn), এমন গোডাউন আছে, যেখানে শত-হাজার কোটি টাকার মালামালও আছে।  এগুলো ৩ দিনের মধ্যে উচ্ছেদ করে, ৬ মাসের মধ্যে নতুন বাসা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে রাস্তায় নামিয়ে দেয়া কতটুকু যুক্তিযুদ্ধ, আপনি বিচার করুন।

সারা বিশ্ব এখন নিজের দেশে উৎপাদনের উপর জোর দিয়েছে।  চায়না নিজস্ব শিল্পের উপর জোর দিয়ে এখন বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যে কর্তৃত্ব করছে।   ট্র্যাম্প নিয়েছে ‘মেক অ্যামেরিকা গ্রেট এগেইন' কর্মসূচি।  মোদি নিয়েছে ‘মেইক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি।  সবাই চায় নিজের দেশে উৎপাদন বা প্রডাকশন হোক।  কিন্তু বাংলাদেশের আওয়ামী সরকার দেশের সামান্য একটু অঞ্চলে গড়ে ওঠা প্রডাকশনকে ধূলায় মিশিয়ে দিয়ে পুরোপুরি বিদেশ নির্ভর হওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে ।  এই তাদের দেশপ্রেম  ! ছি :

----------------------------------------------------------
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

শেখ হাসিনা এটা কি বললো ?

গত শনিবার ঢামেক বার্ন ইউনিটে চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে আহতদের পরিদর্শনে গিয়ে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছে, নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনার পরে রাসায়নিকের গোডাউন সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কেরানীগঞ্জে তাঁদের জন্য জায়গাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তাতে রাজি হয়নি। একে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছে হাসিনা। (https://bit.ly/2SUpLWR)

কথা হলো, সত্যিই কি  ২০১০ সালে নিমতলীর ঘটনার পর সরকার কোন কার্যকরী ও বাস্তবমূখী পদক্ষেপ নিয়েছিলো ?
কখনই নয়। নিমতলীর ঘটনার পর কেরানীগঞ্জে কেমিকেলপল্লী নির্মাণের কথা বললেও সেটার পরিকল্পনা (ডিপিপি) করতে বিসিক সময় নেয় ৫ বছর। ৫ বছর পর ২০১৫ তে আজগুবি পরিকল্পনায় তারা ৭ তলা ভবনের ১৭টি স্ট্র্যাকচার করার কথা বলে, যার ব্যয় ধরা হয় ১৪১৮ কোটি টাকা। বলা হয় কেমিকেল ব্যবাসায়ীরা এই খরচ বহন করবে। কিন্তু ২০১৬ সালে ব্যবসায়ীরা এই পরিকল্পনার বিস্তারিত জেনে তার প্রতিবাদ করে এবং বলে, সম্পূর্ণ পরিকল্পনা ভুল হয়েছে। ৭ তলা গোডাউন বানালে দুর্ঘটনার সম্ভবনা আরো বেড়ে যাবে। আর এত উচ্চমূল্যের প্রজেক্টের খরচ তারা বহন করতে পারবে না। ফলে এই ব্যয়বহুল ও ফালতু পরিকল্পনাটি বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০১৭ সালে সরকার নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করে, যেখানে ৩০০টি প্লট বরাদ্দের কথা বলা হয় এবং এর খরচ ২০৩ কোটি টাকা। এই পরিকল্পনাটি প্রক্রিয়াধীন আছে। (https://bit.ly/2Nq2yWB)

উল্লেখ্য, কেমিকেল পল্লী বানাতে ব্যবসায়ীদের পকেটের টাকা দিতে হবে। তাই তারা হিসেব করবে, এই ঠিক। তাই অযাচিত ও ভুল প্রজেক্টের জন্য তারা প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ করতে কখন রাজি হবে না এবং এটা বাস্তব সম্মত নয়। অথচ এই ভুল পরিকল্পনার পেছনে ব্যয় হয়ে গেছে ৭ বছর এবং এই ভুল পরিকল্পনায় ব্যবসায়ীরা না করেছে। কিন্তু এটার জন্য শেখ হাসিনা কি ব্যবসায়ীদের দায়ী করতে পারেন ? নাকি সরকারী সংস্থা “বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন, বিসিক’কে দায়ী করবে ? “খুব ভালো হয়েছে! তখন ঐ প্রজেক্ট নিলি না কেন ? এবার বুঝ ঠ্যালা”- এই ধরনের ইনটেনশন তো দেশের প্রধানমন্ত্রী দেখাতে পারেন না। তাছাড়া ২০১৭ সালে মাত্র ৩০০টি প্লট বরাদ্দের কথা বললেও ২ বছরে সেখানে কতটুকু সুযোগ সুবিধা গড়ে তুলেছে সরকার ? কোন সুযোগ সুবিধা না গড়ে তুলে যদি চকবাজারের স্যাবোটেজকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীদের ফাকা মাঠে সরাতে জোর করা হয়, তবে তো বুঝতে হবে সরকার নিজেই চাইছে পুরান ঢাকায় দীর্ঘদিন ধরে গড়ে এই বাজার নষ্ট হয়ে যাক। ঠিক যেভাবে ট্যানারিওয়ালাদের জোর করে সাভার সরিয়ে দিয়ে চামড়া শিল্পকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দিয়েছে সরকার।

অগ্নিকাণ্ডের উৎস কি ?
অগ্নিকাণ্ডের উৎস নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলছেন। কেউ বলছে কেমিকেল থেকে, কেউ বলছে সিলিন্ডার বিষ্ফোরণ। যেটাই হোক, একটা জিনিস মনে রাখতে হবে দাহ্য পদার্থ (flammable) আর  বিস্ফোরক পদার্থ (explosive) কিন্তু আলাদা। আগুনের গতি বাড়াতে দাহ্য পদার্থ (flammable) কাজ করতে পারে। কিন্তু শুরুতে কিন্তু একটা বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, যা সিসিটিভি ফুটেছে যা দৃশ্যমান হয়েছে। এই শুরুর বিস্ফোরক(explosion)টা কে ঘটালো? দাহ্য পদার্থ এমনি এমনি বিষ্ফোরণ ঘটাতে পারে না। এই রহস্য আগে পরিস্কার হওয়া দরকার। উল্লেখ্য, সাধারণভাবে কেমিকেল হিসেবে যা প্রচার চলছে, সেগুলো সর্বোচ্চ দাহ্য পদার্থ। তবে সেগুলো যদি উচ্চচাপে সিলিন্ডারের মধ্যে সংরক্ষণ করা হয় তবে সেগুলোও কিন্তু এক্সপ্লোসিভ হয়ে যায় (পারফিউমের বোতলও এক ধরনের ছোট সিলিন্ডার বলা চলে। সেক্ষেত্রেও বড় উচ্চচাপের সিলিন্ডার বা অবস্থা থেকে ছোট ছোট সিলিন্ডারে সংরক্ষণ করা হয়, অর্থাৎ দোষ সেই সিলিন্ডারের, দাহ্য কেমিকেলের নয়)। আমার ধারণা সাধারণ মানুষ বা মিডিয়া দাহ্য পদার্থ আর বিষ্ফোরক পর্দার্থ এক করে ফেলছে। শুরুটা বিষ্ফোরক কিছু থেকে হয়েছে, অথচ দাহ্য পদার্থের বিরুদ্ধে যত কথা হচ্ছে, বিষ্ফোরক নিয়ে কেউ বলছে না। শুরুর বিষ্ফোরণটা কে ঘটালো সেই রহস্য আগে বের করা দরকার।
আরেকটি বিষয় না বললেই নয়, কয়েকদিন আগে পুরান ঢাকায় হয়ে গেলো সাকরাইন উৎসব। মিডিয়া বিষয়টি খুব হাইলাইট করেছে, ফলে আগামীবার আরো বড় আকারে সেটা ধারণ করতে পারে তাতে সন্দেহ নাই। এই সাকরাইন উৎসবে আতশবাজি জ্বালানো হয়। এগুলো সাধারণত ভারত থেকে আমদানি করা হয়। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে এই আতশবাজির ব্যবহার বাড়ছে। বিশেষ করে সরকার কোন উন্নয়নের খবর প্রচার করলেই কোটি কোটি টাকার আতশবাজি পোড়ায়। এছাড়া সাইকরাইনের দিনও প্রচুর আতশবাজি লাগছে। এই অবস্থায় পুরান ঢাকায় কেউ আতশবাজির কারখানা নির্মাণ করতেই পারে। এই আতশবাজিতে ব্যবহৃত পর্দাথ কিন্তু বিষ্ফোরক। সাকরাইনকে মিডিয়ায় অত্যধিক হাইলাইট যে পুরান ঢাকায় আতশবাজির কারখানার জন্মদিতে পারে, এটা কিন্তু কেউ বলেনি।

পুরান ঢাকা কি বাণিজ্যিক এলাকা নাকি আবাসিক এলাকা ?
অনেকে বলছে, আবাসিক এলাকায় এত এত কেমিকেল কেন ? আমার প্রশ্ন হলো, পুরান ঢাকা কি আবাসিক এলাকা নাকি বানিজ্যিক এলাকা ?
আমরা জানি, ঢাকার গোড়া পত্তন হয়েছিলো, বুড়িগঙ্গার তীরে, যার সীমানা ছিলো ঢাবির দোয়েল চত্বরের পাশে ঢাকা গেট পর্যন্ত। শুরুতে সবাই সেই ঢাকায় বসবাস করতো আবার ব্যবসা বাণিজ্য করতো। কিন্তু ধিরে ধিরে পুরান ঢাকা একচেটিয়া বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে থাকে, আর আবাসনের জন্য নতুন ঢাকাকে সবাই বেছে নেয়। পুরান ঢাকা এখন বাসাবাড়িগুলো গোডাউন আর কারখানায় রুপান্তর হয়েছে। তবে অনেক বাসিন্দা থাকেন, কিন্তু সেটাও তাদের বিশেষ প্রয়োজনে। কিন্তু বেসিক্যালী পুরান ঢাকা বানিজ্যিক এলাকাই। তাই এখন যদি কেউ বলে, পুরান ঢাকা আবাসিক এলাকা হিসেবে বাণিজ্য সরে যাবে, নাকি বানিজ্যিক এলাকা হিসেবে আবাসন সরে যাবে, এই প্রশ্ন করলে বলতে হবে দ্বিতীয়টিই বেশি গ্রহণযোগ্য হবে।

কেমিকেল নাকি কাচামাল ?
মিডিয়াতে যাকে কেমিকেল বলে একচেটিয়া প্রচার করা হচ্ছে, সেটা আসলে কোন কোন প্রডাক্টের কাচামাল। দুই তিনটি কাচামাল এক করে নতুন পণ্য তৈরী হচ্ছে, যাকে আমরা অর্থনীতির ভাষায় বলছি উৎপাদন বা প্রডাকশন। তাই আপনি যদি কেমিকেলের বিরুদ্ধে বলেন, তারমানে বুঝতে হবে আপনি কাচামালের বিরোধীতা করতেছেন এবং সেই বিরোধীতাটা পৌছে যাচ্ছে প্রডাকশন বা উৎপাদনের উপর।  আর আপনি উৎপাদন বন্ধ করলেই সেই স্থানটি দখল করবে বিদেশ থেকে আগত তৈরী প্রডাক্ট। অর্থাৎ দেশী উৎপাদন বন্ধ করো বিদেশী প্রডাক্ট গ্রহণ করো।

পর্যটন আর হেরিটেজ, দুই দুইয়ে চার
আগের পোস্টে আমি বলেছিলাম, সরকার বুড়িগঙ্গার তীর ঘেষে একটি অত্যাধুনিক পর্যটন কেন্দ্র করতে চায়, যার নাম “বুড়িগঙ্গা রিভার ডেভলপমেন্ট এন্ড এন্টারটেইনমেন্ট মেগা প্রজেক্ট” (এ সম্পর্কে দুটো আর্টিকেল আছে, পড়তে পারেন: https://bit.ly/2NlB707, https://bit.ly/2TcfJzG)  কিন্তু পুরান ঢাকার এই প্রডাকশন বা উৎপাদন কারখানা থাকলে তাদের ভাষায় কথিত দূষণের কারণে তা সম্ভব হবে না। ফলে উক্ত প্রজেক্টে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করাও সম্ভব না। তাই এই প্রডাকশন বা উৎপাদন বন্ধ করতেই চক বাজারের আগুন এবং অতঃপর কেমিকেল নাম দিয়ে কাচামালের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া হলো কি না তা যাচাই করা উচিত। তবে এক্ষত্রে আপনাদের আরেকটা তথ্য জানিয়ে রাখি, ২০০৯ সালে সরকার পুরান ঢাকার একটা বিরাট অংশকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করে। এই ঘোষণার কারণে ঐ এলাকাগুলো কিন্তু আর পাবলিকের সম্পত্তি থাকলো না, সরকারের সম্পত্তি হয়ে গেলো। এ সম্পর্কে নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, “রাজউকের নেতৃত্বে নগর উন্নয়ন কমিটি নামের একটি কমিটি পুরান ঢাকার অধিকাংশ অঞ্চলকে ২০০৯ সালে হেরিটেজ ঘোষণা করে। যার অর্থ ওইসব অঞ্চল ও সেখানকার অবকাঠামো, খোলা জায়গা সব কিছুর ব্যক্তি মালিকানা থাকলেও তা রাষ্ট্রিয় সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে। সরকারের নির্ধারিত সংস্থার অনুমতি ছাড়া সেখানে কোনো কিছুই করা সম্ভব না। তাই যদি হয় তাহলে এখানে কীভাবে রাসায়নিকের কারখানা থাকে, কীভাবে রাসায়নিকের গোডাউন গড়ে ওঠে ?” (https://bit.ly/2Nq6qXJ) তারমানে বুড়িগঙ্গীর তীর গড়ে ওঠা পুরান ঢাকায় হেরিজেট আর পর্যটন কেন্দ্র দুই দুইয়ে চার হিসেবে, যার ফলাফল পুরান ঢাকা থেকে ব্যবসা, বাণিজ্য আর প্রডাকশন বন্ধ, সবাই পুরান ঢাকা এখন থেকে “খুশির ঠেলায় ঘোরতে” বের হওয়ার যায়গা।

 সাংবাদিকদের দেশবিরোধী অবস্থান ও জনগণের করণীয়:
একটু আগে দেখলাম, সময় টিভির ক্যামেরা বিভিন্ন কারাখানায় ঘুড়ে ঘুড়ে অযাচিত মিথ্যা সংবাদ করছে। মনে হচ্ছে সেখানে কারখানা স্থাপন করে বিরাট নিষিদ্ধ কোন কাজ করে ফেলেছে (https://bit.ly/2GGJx1r)। কালেরকন্ঠ নিউজ করেছে, “কেমিকেল দেখলেই  ৯৫৫৬০১৪ নম্বরে কল”  (https://bit.ly/2NoB7fO)। মিডিয়াগুলো স্পষ্ট দেশীয় শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। তাই পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী ভাইদের বলবো,
ক) আপনাদের আশেপাশে কোন সাংবাদিক দেখলেই গণপিটুনী দিয়ে তাদের এলাকা ছাড়া করুন।
খ) এই বিরাট ষড়যন্ত্র বন্ধ করার জন্য সবাই এক হয়ে সংবাদ সম্মেলন করুন, আপনাদের ক্ষয়ক্ষতি হিসেব এবং ষড়যন্ত্রের বিষয়টি প্রকাশ করুন। এছাড়া আপনাদের মোট কত ব্যবসায়ী আছে তার সঠিক হিসেব প্রকাশ করুন এবং তাদের গোডাউন লাগলে কত বড় এলাকা লাগতে পারে এবং কি কি সুবিধা লাগতে পারে সেটার হিসেব প্রকাশ করুন।
গ) পাশাপাশি ভালো অ্যাডভোকেট ধরে বিচারবিভাগীয় ব্যবস্থা নিন বা রিট করুণ।

লেখার শেষে আবার বলবো, শেখ হাসিনা যে কেমিকেল পল্লীর কথা বলে সমস্ত গোডাউন সরাতে বলেছে, পারলে সেই কেমিকেল পল্লীর একটা ছবি প্রকাশ করুক। আমি নিশ্চিত সেটা ফাকা মাঠ ছাড়া কিছু নয়। ফাকা মাঠের নাম কেমিকেল পল্লী দিয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্মের অভিজ্ঞতায় গড়ে ওঠা পুরান ঢাকার এই ব্যবসায়ীক এলাকার উচ্ছেদ এবং লক্ষ লক্ষ মানুষকে পথের ফকির বানিয়ে দেয়া কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।

----------------------------------------------------------
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

কারো কোন ব্যবসা দেখলেই সেটা খেয়ে ফেলাই আওয়ামী সরকারের কাজ।

প্রথম আলোতে এক সাক্ষাৎকারে নতুন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনসি বলছে, আওয়ামী সরকার নাকি ব্যবসা বান্ধব। (https://bit.ly/2GTJDly)

সরি, টিপু মুনসি আপনার কথা মানতে পারলাম না।
আওয়ামী সরকার ব্যবসা বান্ধব সরকার না, ব্যবসা খেকো সরকার।
কারো কোন ব্যবসা দেখলেই সেটা খেয়ে ফেলাই আওয়ামী সরকারের কাজ।
টিপু মুনসি নিজেই তো এক সময় বিজিএমইএর সভাপতি ছিলো।  সে নিজের মুখেই বলুক, বর্তমানে গার্মেন্টস শিল্পের অবস্থা কি ?
উল্লেখ্য, দৈনিক জনকণ্ঠে গত ৬ই জানুয়ারী, ২০১৮ তারিখে একটি খবরে প্রকাশ, এক সেমিনারে বিজিএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাছির বলেছিলো, চার বছরে ১২০০ ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে গেছে”।(https://bit.ly/2XcxSfY)\
 
যে গার্মেন্টস ব্যবসার মাধ্যমে এত এত বৈদেশিক মুদ্রা।  যে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ নিয়ে শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে গর্ববোধ করে, সেই গার্মেন্টস সেক্টরের কেন এত দুর্দশা ? সরকার যদি ব্যবসা বান্ধবই হয় তবে তো এমন হওয়ার কথা ছিলো না।

ব্যবসা খেকো আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় এসে সর্বপ্রথম ধ্বংস করেছিলো দুটি ব্যবসা-
১) রিয়েল স্টেট
২) শেয়ার মার্কেট

নতুন করে সরকারী অব্যবস্থাপনার কারণে নষ্ট হলো ট্যানারি বা চামড়া শিল্প। সরকার যদিই ব্যবসা বান্ধবই হতো, তবে এমনটা হলো কেন ?

কোন ব্যবসায়ী ব্যবসা বিস্তৃতি করতে না পারার মূল কারণ, ব্যাংক ঋণ না পাওয়া। অনেক সৎ ও দক্ষ ব্যবসায়ী আওয়ামী সরকারের আমলে ঋণ পায়নি, শুধু আওয়ামীলীগ না করার কারণে। অপরদিকে শুধুমাত্র আওয়ামীলীগ করার কারণে অনেক নব্য গজিয়ে ওঠা ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে মিথ্যা বলে কোটি কোটি টাকা নিয়ে লোপাট করেছে, যার দরুণ আজকে ব্যাংকগুলো এক মূলধন সংকটে ভুগছে।

অজ্ঞাত কারণে সরকার দেশের গ্যাস উত্তোলন করে না। কথিত আছে, বাংলাদেশের গ্যাসে লেয়ার এমন অবস্থায় আছে যে, বাংলাদেশে থেকে গ্যাস উত্তোলন করলে ভারতীয় লেয়ারের গ্যাস বাংলাদেশ দিয়ে বের হয়ে যাবে। অথচ এই গ্যাসের অভাবে বন্ধ হয়ে আছে লক্ষ লক্ষ কারখানা। (https://bit.ly/2TTd8I1)

ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ব্যবসাকে ধ্বংস করা ছিলো আওয়ামী সরকারের ওয়ান-টু’র কাজ। এই তো কিছুদিন আগে বাংলাদেশের ডেইরি শিল্পের পেছনে লাগলো সরকার। সরকার শিক্ষিত বেকারদের চাকুরী দিতে পারে না। তাই তারা মা-বাপের জমানো টাকা দিয়ে নামছে ডেইলি ফার্ম ব্যবসায়। লক্ষ লক্ষ বেকারের কর্মসংস্থান হচ্ছে এই খাতে। কিন্তু হঠাৎ করে বিদেশী সম্রাজ্যবাদীদের অঙ্গসংগঠন ফাউ (FAO) এর টাকায় বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এক জরিপে দাবি করে, বাংলাদেশের গরুর দুধে নাকি তারা এন্টিবায়োটিক আর শিসা পাইছে।  বিষয়টি প্রচারের দায়িত্ব নেয় সিআইএ’র মুখপাত্র দৈনিক প্রথম আলো। মূলত এর পেছনে মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশে স্বপ্রণোদিত হয়ে গড়ে ওঠা ডেইরি শিল্পকে ধ্বংস করে বিদেশ থেকে গুড়া দুধ আমদানি করে নিয়ে আসা।  (https://bit.ly/2IrV0nj, https://bit.ly/2TXOwOn)

শুধু এবারই না, বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশের ডেইরি ফার্মগুলোর পেছনে লেগেছে সরকার প্রশাসন। আবাসিক এলাকা থেকে ডেইরি ফার্ম সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেয় প্রশাসন (https://bit.ly/2V8GC4R)। অথচ আবাসিক এলাকায় এসব ফার্ম আছে বলে আবাসিক এলাকার মানুষ গরুর দুর্ধ খেতে পারছে, নয়ত তাদেরকে গুড়া দুধ পানিতে গুলিয়ে খেতে হতো।  উল্লেখ্য বিভিন্ন এলাকায় এইসব ফার্ম গড়ে উঠায়, দুধের পাশাপাশি, কোরবানীর ঈদে গরু সরবরাহ অনেক সহজ হয়ে গেছে, ফলে ভারত থেকে গরু আমদানি করা লাগছে না। কিন্তু এই ব্যবসা খেকো সরকার কোন সম্ভবনাময় শিল্প দেখলেই সেটাকে কিভাবে করে কোমড়ভাঙ্গা যায়, সেটা নিয়ে থিসিস শুরু করে, যা দেখা যাচ্ছে এবার ডেইরি ফার্মের বেলায়।
এবার আসুন, দোকান-মার্কেট ব্যবসার দিকে তাকাই। সরকারের বাপের টাকা না, নিজের টাকা দিয়ে তিল তিল করে গড়ে তোলা ব্যবসা। কিন্তু ফ্লাইওভার-মেট্রোরেল এর দাপটে ব্যবসা সব লাটে উঠছে। বছরের পর বছর রাস্তা কাটা, মার্কেটে বেচা বিক্রি নাই। বিক্রি ছাড়া দোকান ভাড়া আর স্ট্যাফ খরচ দিয়ে কত দিন লসে চলতে পারে ? ফ্লাইওভার-মেট্রোরেলের  নির্মাণের জন্য সারা ঢাকা শহরে অনেক ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, শুধু তাই নয়, এসব স্থাপনা তৈরী হওয়ার পর গাড়ি আর নিচ দিয়ে যায় না, উপর দিয়ে যায়। তাই অনেক চালু দোকান কাস্টমারের অভাবে বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। ফ্লাইওভার মেট্রোরেল করতে গিয়ে তো সরকার আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে, কিন্তু কত লোকের পেটে লাত্থি পড়ছে তার হিসেব কেউ রেখেছে?

কোচিং-কে যদি আমরা এক ধরনের শিল্প হিসেবে দেখি, তবে সেটাও কিন্তু বন্ধের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে ব্যবসা খেকো আওয়ামী সরকার। শিক্ষিত যুবকরা নিজের পকেটের টাকা জমিয়ে পাড়ার অলিতে গলিতে গড়ে তুলেছে কোচিং সেন্টার, যা আজকে দেশের স্কুল-কলেজের প্যারাল্যাল হিসেবে কাজ করছে। কিন্তু সরকার চায় না, সরকারী বইয়ের বাইরে কোন ছাত্র ১ অক্ষর বেশি জানুক। তাই এর বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র। নানান মিথ্যা ছুতা-নাতা দিয়ে বন্ধ করে দিচ্ছে কোচিং সেন্টারগুলো।

আপনাদেরকে আগে থেকে সতর্ক করে দিচ্ছি, বাংলাদেশের চিংড়ী শিল্প ধংষ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে সরকার। ভেনামি চিংড়ী নামক এক ক্ষতিকারক চিংড়ী এনে বাংলাদেশের চিংড়ি সম্পূর্ণ লাটে উঠার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।  একটি ইহুদীবাদী বিদেশী সংস্থা ‘উইনরক ইন্টারন্যাশনাল এর টাকা খেয়ে  এর সাথে যুক্ত হয়েছে মৎস ও প্রাণীপ্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু।  (https://bit.ly/2U62AFm)

উল্লেখ্য ২০১৩ সালেও একবার ভেনামি চিংড়ী আসার কথা ছিলো বাংলাদেশে।  কিন্তু এর ক্ষতিকর দিক বেশি হওয়ায় এই বিদেশী চিংড়িটি আর বাংলাদেশে আসা হয়নি।   এর কারণ, ভেনামি চিংড়ি আমদানির পর প্রথমেই যে সমস্যাটি দেখা দিবে তা হলো ব্রুড চিংড়ি অনুপ্রবেশের মাধ্যমে আমাদের দেশীয় চিংড়িতে ভাইরাসজনিত রোগের সংক্রমণ।  গত কয়েক দশকের ইতিহাস থেকে জানা যায়, বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে ব্রুড চিংড়ি অনুপ্রবেশের কারণে ভাইরাসজনিত রোগ বিশেষ করে 'হোয়াইট স্পট ডিজিস' ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।  একটু অসতর্কতার কারণে একবার রোগের রাস্তা খুলে গেলে দেশীয় বাগদা চিংড়ির অপার সম্ভাবনা চিরতরে বিনষ্ট হবে।   (https://bit.ly/2GAtXV9)

উৎপাদন বন্ধ করো, বেকারত্ব বৃদ্ধি করো।
বিদেশ থেকে ঋণ আনো, নিজের পকেট ভর্তি করো।
অনুৎপাদন খাতে ব্যয় করো, জীবনব্যয় বৃদ্ধি করো,
বেকারত্ব বৃদ্ধি করো, দারিদ্রতার চাষ করো।
বিদেশী কলকারাখানা স্থাপন করো, নামমাত্র মজুরিতে শ্রমিক নিয়োগ করো।
স্ব-নির্ভর নয়, স্বাধীন দেশে দাসত্ব জীবন গড়ো।

এটাই হলো কর্পোরেটদের শাসন বা কর্পোরেটোক্রেসি, এক সময় নীলকর এই কাজটি করেছিলো, এখন নব্য উপায়ে, নতুন সিস্টেমে তার বাস্তবায়ন চলছে। সময় পাল্টেছে মীর জাফরদের স্থানটি দখল করেছে সরকার, তবে জনগণ এখনও অবুজ। নতুন ষড়যন্ত্র বুঝতে তাদের আরো সময় প্রয়োজন।

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

Wednesday, January 30, 2019

রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য শেখ হাসিনার ম্যাজিকনীতি পরিহার করা উচিত

যাদুকররা কিভাবে যাদু করে এটা নিয়ে আমি একবার খোঁজ নিয়েছিলাম। দেখেছিলাম, যাদুকরদের যাদুর পেছনে কিছু কৌশল আছে। যেমন- যাদুকররা হাত দিয়ে কোন জিনিস লুকাবে। এক্ষেত্রে কাজটা করবে এক হাতে, কিন্তু নাড়তে থাকবে অন্য হাত। একহাত নাড়িয়ে সে মানুষের দৃষ্টিকে বিভ্রান্ত করবে, অন্যহাত দিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসটা লুকিয়ে ফেলবে। মানুষের দৃষ্টি বিভ্রান্ত করে অন্য হাতের সাহায্যে লুকানোর সেই পদ্ধতিকে বলা হচ্ছে যাদু বা ম্যাজিক।
গত কয়েকদিন ধরে দেখছি, নির্বাচনের পর থেকে শেখ হাসিনা ‘ম্যাজিকনীতি’ গ্রহণ করেছেন। সম্ভবত বানোয়াট নির্বাচনের দৃশ্য ভুলাতে শেখ হাসিনার এই কৌশল। তিনি ম্যাজিক দেখিয়ে জনগণের স্নায়ুকে উত্তেজিত করে পুরাতন স্মৃতি ভুলাতে চাইছেন।
যেমন: হঠাৎ করে বুড়িগঙ্গার তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কিংবা ধর্ষককে ক্রশফায়ার। দুটো শুনতেই খুব ভালো। কিন্তু বুড়িগঙ্গা যতগুলো অবৈধ স্থাপনা আছে, তার সবগুলো সরকার-প্রশাসনের যোগসাজসেই হয়েছে। তাই অবৈধস্থাপনাকারীদের সাথে সরকার-প্রশাসনের সাথে যুক্তদেরও বিচার হওয়া উচিত। এছাড়া বুড়িগঙ্গার তীরে যে অবৈধ স্থাপনার তালিকা তৈরী করা হয়েছে, আমি নিজে দেখেছি, তার একটি বড় অংশ প্রকৃতপক্ষে অবৈধ স্থাপনাই নয়, বরং তাদের নাম উদ্দেশ্যমূলকভাবে লিস্টে ঢুকানো হয়েছে। সরকার ম্যাজিক দেখাতে চোখ বন্ধ করে যে কাজ করছে তাতে নিরাপরাধ ব্যক্তিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যেটা কখনই কাম্য হতে পারে না। (https://bit.ly/2TmH679)
ক্রশফায়ারের নামে ধর্ষকে গুলি করে হত্যা। ধর্ষণ প্রমাণিত হলে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হোক, এটা আমারও দাবী। কিন্তু ক্রশফায়ারের নামে মিথ্যা লোক যেন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের স্বীকার না ঘটে, সেটাও খেয়াল রাখা উচিত। বিশেষ করে এসব ক্ষেত্রে সরকারের নিরপেক্ষ হওয়া বাঞ্চনিয়। আমরা দেখেছি এর আগে সরকার মাদক নির্মূলে ক্রশফায়ার দিলো, কিন্তু ইয়াবার মূল হোতা বদিকেই কিছু বললো না। এতে বোঝা যায়, সরকার নিজেই মাদকের ক্রশফায়ার নিয়ে দ্বিচারিতায় ভুগছে। কোর্ট কাচারিতে গিয়ে দেখবেন, ৮০% নারী নির্যাতন মামলা ভুয়া, অপরকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে (https://bbc.in/2CWKiiL)। শুধু অভিযোগের ভিত্তিতে যদি ক্রশফায়ার দেয়া হয়, তবে ‘ভুল’ হওয়ার সম্ভবনা আছে। পাশাপাশি যদি ক্রশফায়ারও দেয়, তবে সেখানে প্রশাসনের অবস্থান নিরপেক্ষ থাকতে হবে। কক্সবাজারে একটি ধর্ষণের ঘটনায় দেখলাম, শাহাব উদ্দিন নামক এক ধর্ষককে ক্রশফায়ারে দেয়া হয়েছে, খুব ভালো। কিন্তু শ্যামল দে নামক আরেকজনকে বাচিয়ে রাখা হয়েছে (https://bit.ly/2sXhemC)। সরকারের ভেতর যেহেতু হিন্দু প্রীতি বা ভীতি আছে, সম্ভবত সে কারণে শ্যামল দে কে ক্রশফায়ারে দেয়ার সাহস পায় নাই। এ দিকগুলোতে পরিষ্কার থাকা সরকারের জন্য জরুরী।
আওয়ামী সরকারের উন্নয়নের ম্যাজিকনীতি প্রথম দৃশ্যমান হয় ফ্লাইওভার, মেট্রোরেলে মাধ্যমে। আপনারা যদি জনপার্কিন্সের লেখা ‘এক অর্থনৈতিক ঘাতকের স্বীকারক্তি’ বই পড়েন, তবে স্পষ্ট হয়ে যাবে, আওয়ামী সরকারের কথিত উন্নয়নের ম্যাজিকের আড়ালে কিভাবে দেশকে বিদেশী কর্পোরেটদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে। সরকার বিদেশ থেকে ঋণ এনে অনুৎপাদনশীল খাত ফ্লাইওভার-মেট্রোরেল করতেছে, আর উৎপাদনশীল খাতগুলো বন্ধ করে দিচ্ছে। যেমন, গত কয়েকদিন খরবগুলো যদি দেখেন-
- জাপানের ঋণে হচ্ছে পাতাল রেল, চলছে নকশার কাজ (https://bit.ly/2Sd9yem)
- মহাখালীতে আবারও ফ্লাইওভার (https://bit.ly/2RW4mfs)
এই খবরগুলোর উল্টা পাশের খবর-
১) ৩০০ মেট্রিক টন ইলিশ, অপর্যাপ্ত লবণ-বরফে পঁচে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ (https://bit.ly/2BaalCS)
২) বগুড়ায় বহুমুখী হিমাগারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে সবজী, হুমকির মুখে ১৮ হাজার চাষী (https://bit.ly/2Wv4Qb5)
৩) মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে হিমাগারের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সবজি চাষীরা (https://bit.ly/2ShAQjB)
৪) কুমিল্লায় হিমাগারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে শাক-সবজি ও ফলমূলের ৩০%
(https://bit.ly/2sXAXm2)
৩ বছর আগে এক অনুষ্ঠানে তৎকালীন পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছিলো,“ সরকার আর হিমাগার নির্মাণ করতে চায় না ” (https://bit.ly/2TlhmYI)
সরকার যদি দেশজুড়ে হিমাগার নির্মাণ করতো, তবে প্রতিদিন হাজার হাজার কোটি টাকার খাদ্যসম্পদ নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পেতো, খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়তো না, জনগণ স্বল্পমূল্যে খাবার পেতো, এছাড়া বেচে যেতো কৃষক সমাজ। এটাই মূলত উৎপাদনশীল খাত। কিন্তু সরকার সেটা না করে ফ্লাইওভার-মেট্রোরেলের বানানোর ম্যাজিকে নেমেছে। কিন্তু এই ম্যাজিক দেশকে শুধু ঋণের মধ্যে জড়িয়ে দেবে, জনগণের লিভিংকস্ট বাড়িয়ে তুলবে।জনগণের খরচ কমাতে পারবে না।
শেখ হাসিনাকে বলবো, দয়া করে ম্যাজিশিয়ান নয় রাষ্ট্র পরিচালক হোন। ম্যাজিক দেখিয়ে হয়ত কিছু সময়ের জন্য কিছু মানুষকে ধোঁকা দিতে পারবেন, কিন্তু সব সময়ের জন্য সব মানুষকে ধোঁকা দিতে কখনই পারবেন না।

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

মন্ত্রীদের নিয়ে কিছু কথা


এবার আওয়ামীলীগের মন্ত্রীসভা সিলেকশন শুরু দিকে আমার ভালো গেলেছিলো। কারণ গতবারের মার্কিনপন্থী কিছু মন্ত্রীদের সরাসরি বাদ দেয়া হয়েছে। সম্ভবত ২০০৮ সালে যখন মাইনাস-টু’র কথা উঠে, তখন শেষ মুহুর্তে হস্তক্ষেপ করে ভারতীয় কংগ্রেস। তখন আমেরিকা আর ভারতীয় কংগ্রেসের মধ্যে একটা সমঝোতা হয় শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনার ব্যাপারে। ভারতীয় কংগ্রেস সমঝোতা করে, “আমেরিকা যা নিবে তা ভারত থেকে বুঝে নিবে, কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাপারটা বুঝবে ভারত। ” শুধু ২০০৮ নয়, ২০১৪ এর নির্বাচনেও আওয়ামীলীগকে একইসূত্রে ক্ষমতায় আনে ভারতীয় কংগ্রেস। আমার ধারণা, এই দুই টার্মে আওয়ামীলীগের সাথে কোন অদৃশ্য চূক্তির বলে কিছু মন্ত্রীত্ব মার্কিনপন্থীদের হাতে ছেড়ে দিতে হয়, এর মধ্যে অর্থবিভাগ, মিডিয়া, শিক্ষা উল্লেখযোগ্য। ২০০৮ এবং ২০১৪ তে একই সূত্রে গেলেও এবার নির্বাচনে আওয়ামীলীগ বিদেশী শক্তির সাহায্য ছাড়াই নিজ কৌশলে জয়লাভ করেছে। আমার ধারণা এই কারণে মন্ত্রীসভা নির্বাচনে তাই আওয়ামীলীগকে কারো জন্য ছাড় দিতে হয় না, নিজের তৃণমূল নেতাদের মন্ত্রীসভায় তুলে আনতে পেরেছে। বাদ দিয়ে দিয়েছে পুরাতন মার্কিনপন্থীদের। এবার শুধু পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন ব্যতিত মার্কিনপন্থী কোন মন্ত্রীকে চোখে পড়েনি (সামনে পড়তে পারে)। তবে এক্ষেত্রে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় পলিসি কি তাও জানা দরকার।
তবে তৃণমূল আওয়ামীলীগের নেতাদের মন্ত্রী বানালে সুবিধা অসুবিধা দুই পরিলক্ষিত হতে পারে। সুবিধা দেখা যাচ্ছে পরিবর্তণ হয়েছে, পুরাতন ছেড়ে নতুন হয়েছে।, মানুষ নতুন কিছু চায়, ব্যস এইটুকুই। আর অসুবিধা হলো, যদি অযোগ্য লোকই ক্ষমতায় আসে, তবে নতুন আর পুরাতনের মাঝে তফাৎ কোথায় ?
স্বাভাবিকভাবে একটা কথা সব সময় উঠবে, যোগ্যলোককে যোগ্য পদ দেয়া উচিত। বাংলাদেশে এখন একটা পিওনের চাকুরী পেতে গেলেও ১০ হাজার পদপ্রার্থী প্রতিযোগীতা করে। দৃশ্যত্ব সেই প্রতিযোগীতায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েই কেউ পিওন হয়। সেখানে বাংলাদেশে একজন মন্ত্রী হওয়ার জন কতটুকু যোগ্যতার প্রতিযোগীতা হয় ?
বাংলাদেশের সংসদীয় ব্যবস্থায় ‘ফিউশন অব পাওয়ার’ পদ্ধতি থাকে, এতে মন্ত্রীদের মধ্যে ৯০% শতাংশ হয় এমপিদের থেকে, বাকি ১০ শতাংশ হয় টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী। আরেকটি পদ্ধতি আছে, যাকে বলছে ‘সেপারেশন অব পাওয়ার, মন্ত্রীরা সেখানে এমপিদের থেকে নয়, বরং যোগ্যতার ভিত্তিতে মন্ত্রী হবে, তবে তারা সংসদের কাছে জবাবদিহি করবে। ‘সেপারেশন অব পাওয়ার’ সিস্টেমটাকে আমার কাছে মন্দের ভালো মনে হয়েছে, এবং মনে হয়েছে বাংলাদেশেও এই পদ্ধতি চালু করলে ভালো হতো, কারণ একটি মন্ত্রনালয় চালানোর মত একজন মন্ত্রীর কতটুকু যোগ্যতা আছে, সেটা যাচাই করার কোন সুযোগ থাকলো না।
কিছুমন্ত্রী নিয়ে কথা রয়েই যায়। যেমন খাদ্যমন্ত্রী করা হয়েছে সাধন চন্দ্র মজুমদারকে। সাধন চন্দ্র মজুমদার নিজে নওগার চাল ব্যবসায়ী, আর সাধারণত এই সব চাল ব্যবসায়ীরাই সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়ায়। বাংলাদেশের প্রধান খাদ্য যেহেতু চাল, তাই এখন থেকে যতবার চালের দাম বাড়বে, ততবার চোখ বুজে বলা যাবে এর জন্য দায়ী মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ব্যতিক্রমের মধ্যে তার চার মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ে লোপা আর কাবেরী মজুমদার ধর্মান্তরিত মুসলমান, কিন্তু সেই পজিটিভ প্রভাব চাল নিয়ে চালবাজিতে পড়বে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
ধর্মান্তরের ঘটনা আছে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির ফ্যামিলিতে। তার দুই ভাই রাশিয়ান মেয়েদের বিয়ে করে মুসলিম বানিয়েছে। তবে সমস্যা, দীপু মনিকে নিয়ে। শুনেছি রাজনৈতিক মহলে তাকে নিয়ে স্ক্যান্ডাল আছে। ভয়ের কথা হলো, যদি সে স্ক্যান্ডালকে পূজি করে বিদেশী শক্তিরা রাষ্ট্র ও জাতিবিরোধী পাঠ্যবই বানাতে চায়, তখন। একই ধরনের স্ক্যান্ডাল আছে এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামকে নিয়ে। ২০১৩ সালে এই তাজুল ইসলামের পর্নো ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হয়। তাকে বহিষ্কারের দাবীতে তখন প্রেসক্লাসেও অনেকে মানববন্ধন করে। সুতরাং ফাকফোকর অনেক আছে। তার ডেপুটি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আছে স্বপন ভট্টাচার্জ, যে চরমমাত্রার দুর্নীতিবাজ। ৫ বছর এমপি থেকে অদৃশ্য কাজ করে সে ও তার স্ত্রী সম্পদ বাড়িয়েছে শতগুন। ২০১৪ সালে বিনাভোটের নির্বাচনের সময় এলাকাবাসীকে শুধু সুয়েরেজ লাইন বানানোর একটা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো, কিন্তু নির্বাচনের জিতে তাও পূরণ করেনি। বাংলাদেশের অন্যতম সম্পদময় মন্ত্রনালয় এলজিআরডি’র তাই ভবিষ্যতে কি অবস্থা হতে পারে তা সহজে অনুমেয়। একই অবস্থা পাবর্ত বিষয়ক মন্ত্রী উশেসিংকে নিয়ে। পেশায় ফুটবল রেফারী উশেসিং পাবর্ত সমস্যার কতটুকু সমাধান করবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। উপজাতি গোষ্ঠীগুলোকে নিজ এলাকা ও ভাষার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ‘তোমরা সবাই বাঙালী হয়ে যাও’ যতক্ষণ বাস্তবায়ন না হবে ততক্ষণ পাবর্ত সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
শেষে বলতে চাই, পুরাতন দুর্নীতিবাজ ও অযোগ্যদের ঝেটিয়ে বিদায় ভালো হয়েছে, তবে সেটা ভালো হিসেবে তখন ধরা দেবে যখন নতুনরা ভালো কাজ করতে পারবে। কিন্তু নতুনরা যদি দুর্নীতি ও নৈতিকতাহীন স্ক্যান্ডালে বেশি জড়ায় তখন তাদের দ্বারা আবার একই দুরাবস্থা ফিরে আসবে, যাতে কোন সন্দেহ নাই।

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

“আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান”


রবীন্দ্রনাথ যে অর্থেই ‘বিষ’ শব্দের প্রয়োগ করুক, যারা গণতন্ত্র চর্চা করে আমার কাছে কেন জানি মনে হয় তারা জেনে শুনেই এক ধরনের বিষ পান করে। সেটা রাজনীতিবিদ হোক কিংবা জনগণ হোক।
ইতিহাসের বই ঘাটতে হবে না, সাম্প্রতিক নির্বাচনটা শুধু দেখুন। ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ২১ জন, আহত হয়েছে ৭০০। এইলোকগুলো কিন্তু সবাই গণতন্ত্র রক্ষা করতে গিয়েছিলো। কেউ ভোট দিতে, কেউ ভোট কেন্দ্র পাহারা দিতে, কেউবা প্রতিপক্ষের কবল থেকে ভোটকেন্দ্র বাচাতে (দখল করতে)। প্রত্যেকেই গণতন্ত্রের পথে এগিয়েছিলো, কিন্তু মৃত্যুকে বরণ করেছে করুণভাবে।
ছোটবেলায় বইয়ে পড়েছিলাম, ব্রিটিশরা নাকি এ অঞ্চলে ক্ষমতকায় টিকতে ‘ডিভাইড এন্ড রুল’ মানে ‘ভাগ করো এবং শাসন করো’ পলিসি প্রয়োগ করেছিলো। আসলে সম্রাজ্যবাদীরা যখন এ অঞ্চলে নিজে থেকে ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করতো, তখন তাকে বলতো “ডিভাইড এন্ড রুল”, কিন্তু যখন তারা নিজ দেশে বসে আমাদের দেশে ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে, তখন তার নাম হয় গণতন্ত্র বা ডেমোক্রেসি। সোজা কথায়, “সোনা মিয়ারে লাল মিয়া বানাইছে। মিয়াটা ঠিকই আছে, খালি সোনাটা লাল হইয়া গেছে’।
মূল পলিসি হলো নিচে দুইদলকে লাগায় দেয়া, আর উপর থেকে ফায়দা নেয়া। ১৪শ” বছর আগের, ইসলামের প্রাথমিক যুগের ইতিহাস পড়লে বিষয়টি অনুধাবন করা যায়। ঐ সময় মদীনার ইহুদীরা ঐ অঞ্চলে দুটি গোত্র আওস ও খাযরায গোত্রের মধ্যে সর্বদা দ্বন্দ্ব তৈরী করে রাখতো এবং দুই দ্বন্দ্বের মাঝ থেকে ফায়দা নিতো। উপনিবেশ আমলে ইহুদীরা দেখলো কোন একটি এলাকা দখল করে, যুদ্ধবাহিনী রেখে তার থেকে ফায়দা নেয়া সত্যিই ঝামেলাপূর্ণ। তার থেকে বরং ঐ দেশের মানুষকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে দেই, এরপর তাদের দুর্নীতিবাজ নেতাদের সুবিধা দেয়ার নাম করে নিয়ন্ত্রণ করি, এবং তাদের থেকে সুবিধা নেই, ব্যস দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে তৈরী হতে থাকলো অসংখ্য রাষ্ট্র, বসতে থাকলো গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা। এজন্য দেখবেন, কেউ দেশের জনগণকে ভাগ করে ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি’, আর ‘মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি’ হিসেবে। আবার কেউ দেশের জনগণকে ভাগ করে, ‘গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি’ আর ‘গণতন্ত্র হরণকারী ফ্যাসিবাদী’ শক্তি হিসেবে। আর জনগণও এই সব মুখরোচক কথা শুনে ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মত লাফ দেয়। ছাগলের দুই বাচ্চা দুধ খায়, তিন নম্বর এমনিতেই লাফায়। ‘হাওয়া ভবন লোপাট করে ৫ লক্ষ কোটি, আর গণভবন ২৮ লক্ষ কোটি। মাঝ দিয়ে জনগণ ১০ হাজার টাকা বেতন পেয়ে ৬ হাজার টাকা বাড়িভাড়া আর ৭০ টাকা কেজি দরে খুদের চাল খেয়ে ডবল ভাড়া দিয়ে সিটিং সার্ভিসে দাড়িয়ে যায়।
আমি আগেই বলেছি, ইহুদীদের পলিসি হলো “দেবে বিষ, কিন্তু মোড়ক দেখে চোখ যাবে ঝলসে।” নাম দিয়েছে গণতন্ত্র মানে জণগনের জন্য তন্ত্র, কিন্তু বাস্তবে জনগণের এখানে কোন ভূমিকা নাই। প্রার্থী সিলেক্ট করতেই কোন ভূমিকা নাই, সেই প্রার্থী দিয়ে নিজের স্বার্থে কাজ করানো তো ‘দিল্লী দূর অস্ত’। আমার আপনার ট্যাক্সের টাকা দিয়ে সরকার চলবে, কিন্তু শীর্ষ ধনীদের তালিকায় নাম আসবে সরকারের বেটা, বেটি, বোন, দুলাভাই, জামাই আর বেয়াইয়ের নাম। বলবে দেশের মানুষের জন্য জীবন দেবো, কিন্তু কারো গার্জিয়ান আমেরিকা, কারো চীন কারো ভারত। মুখে বলবে গণতন্ত্র, কিন্তু মুখ ফসকে বলে ফেলবে “তুই প্রজা, আমি রাজা”। মুখে বলবে, “আমি ক্ষমতা চাই না, আমি জনগণের শান্তি চাই” কিন্তু বাস্তবে “আমার ক্ষমতা চাই, জনগণ কোন চ্যটে...বা..”। মুখে বলবে, “আমি যেন তেন ভাবে ক্ষমতায় যেতে চাই না”, কিন্তু বাস্তবে ‘হেন কোন জালিয়াতি’ বাদ থাকবে না।
অনেকে হয়ত বলতে পারে, “ব্যক্তির দোষ আপনি সিস্টেমের উপর চাপাতে পারেন না”। আমার উত্তর হলো, পারি পারি। প্রতিবারই এমন দুর্নীতি হয়। ৯১, ৯৬, ০১, ০৮, ১৪ প্রতিবারই জাল ভোট হয়েছে। কোনবার কম, কোনবার বেশি, এইতো। আগে এবারের মত এত বেশি মোবাইল, ফেসবুক আর ক্যামেরা উন্নত ছিলো না, তাই প্রচার হয়নি। নয়ত প্রতিবারই ভোট জালিয়াতি নিয়ে চিল্লাচিল্লি লাগতো।
আমি আগেও বলেছি, ইহুদীদের বানানো সিস্টেমের মধ্যে ঢুকে সেই সিস্টেম দিয়ে নিজের অধিকার আদায় করা সত্যিই কঠিন এবং পারাও সম্ভব নয়। মুসলমানরা যদি একটি পৃথক সিস্টেম তৈরী করতে পারতো, তবে সেটা দিয়ে ইহুদীবাদী সিস্টেমের সাথে টেক্কা দিয়ে নিজেদের অধিকার আদায় করা সম্ভব ছিলো। গণতন্ত্র, ভোট, নির্বাচন এই ইহুদীবাদী ফাদগুলো বাদ দিয়ে মুসলমানদের ভিন্ন কোন পলিসি নিয়ে চিন্তা করতে হবে। এবং অবশ্যই সেটা নিরপেক্ষতার সাথে, বিভেদ নয়, একতাবদ্ধ হয়ে।

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

গনতন্ত্রের জুস, আওয়ামলীগের পেশীর প্রয়োগ এবং বিএনপির বাধন ছেড়ার চেষ্টা


ব্যক্তিগতভাবে আমি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিটাকে সমর্থন করি না। কারণ আমি জানি এর মধ্যে কোন রাষ্ট্র কিংবা তার জনগণ কখনই শান্তি লাভ করবে না। কিন্তু তারপরও দেশের তাবৎ বুদ্ধিজীবি শ্রেণী সেই গণতন্ত্রের মাধ্যমে সকল ভালো জিনিস জুস বানিয়ে খেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
গত কয়েকদিন ধরে খবরে দৃশ্যমান, ভোটের দিন একটি সহিংস পরিস্থিতি তৈরী হতে পারে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ইলেকশন কমিশন অফিস দেশের হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে, কারণ যে কোন সময় অনেক রোগী সেখানে ভর্তি হতে পারে।
বিএনপি চাইছে বহুকষ্টে পাওয়া এ নির্বাচনকে কাজে লাগতে। তাদের বিশ্বাস, মানুষের মাঝে আওয়ামী বিরোধী সেন্টিমেন্ট এতটাই প্রবল, সাধারণ মানুষ যদি শুধু ভোট কেন্দ্র যেতে পারে, তবেই তারা নির্বাচনে জয়লাভ করবে। আওয়ামীলীগও তাই জানে, তাই তারা চায় না, সাধারণ মানুষ নির্বাচন কেন্দ্রে যাক, এজন্য তারা শুরু থেকেই প্রার্থী ও ভোটাদের ভয় দেখাতে দেশজুড়ে তাণ্ডব, কোপাকুপি, গোলাগুলি ও গ্রেফতার চালিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশের মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪০ হাজার। নির্বাচনে নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে পুলিশ ১ লাখ ২১ হাজার, আনসার ৪ লাখ ৪৬ হাজার ও গ্রামপুলিশ ৪১ হাজার। প্রতি সাধারণ কেন্দ্রে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও আনসার ও গ্রাম পুলিশ থাকবে ১৪ জন, কিন্তু এদের মধ্যে অস্ত্র থাকবে মাত্র ২ জনের কাছে। র‌্যাব-সেনাবাহিনী সরাসরি দায়িত্বে নয়, স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে।
সত্যি বলতে, ১ জন অস্ত্রধারী পুলিশ এবং ১ জন অস্ত্রধারী আনসার একটি ভোটকেন্দ্র নিরাপত্তা কতটুকু বজায় রাখতে পারবে, সেটা চিন্তার বিষয়। আওয়ামীলীগ জানে, সাধারণ মানুষ ভোট দিলে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় যেতে পারবে না, তাই তারা স্থানীয় আওয়ামীলীগ দিয়ে প্রতিটি ভোটকেন্দ্র দখলের উদ্যোগ নিতে পারে এবং বিএনপিও সেটার জন্য প্রস্তুত। আমার কাছে যে তথ্য এসেছে, তাতে সে ধরনের পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য ইতিমধ্যে বহু উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। স্বাভাবিকভাবে যদি চিন্তা করি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি নিউট্রাল হয়ে যায় (হতে বাধ্য) তবে আওয়ামীলীগ-বিএনপির ভোটকেন্দ্র দখল নিয়ে বড় ধরনের একটা খুনোখুনি হতে পারে। অন্তত শহরকেন্দ্রীর কেন্দ্রগুলো বাদ গেলেও শহরের বাইরের কেন্দ্র এ ধরনের ঘটনা ঘটনা খুবই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে ১০ বছর ক্ষমতার কারণে আওয়ামীলীগের সুবিধাবাদী নেতারা অসময়ে কতটা কাছে তাকে সেটা যেমন দেখার বিষয়, তেমনি বিএনপির সাথে কোয়ালিশন করা মার্কিনীপন্থীদের এনজিওগুলোর ফিল্ডে ছড়িয়ে থাকা লক্ষ লক্ষ কর্মী এবং বাংলাদেশে সিআইএ কন্ট্রোলড গণমাধ্যমগুলো বিএনপির পক্ষে কতটা কাজ সেটাও দেখবার বিষয়।
আমি যদি গনতন্ত্রের ভাষায় কথা বলি, তবে বলতে হয়, আওয়ামীলীগ অগনতান্ত্রিক কাজ করেছে। সে যদি প্রকৃতপক্ষেই গণতন্ত্র মানে, তবে স্বৈরাচারি কায়দায় পতিপক্ষকে বাধা দেয়া মোটেও উচিত হয়নি, তাদের এহেন কর্মই বিরোধীদলগুলোকে এক্সট্রিম করে দিয়েছে, যা দেশকে অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়। অপরদিকে যদি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে যদি বলি, তবে বলতে হবে, আওয়ামীলীগ বিভিন্ন চেতনার উছিলায় দেশের জনগণকে দুইভাগে বিভক্ত করে মূর্খের শাসন ও দুর্নীতি আখড়া প্রতিষ্ঠা করেছে। উৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্য, জ্ঞান-গবেষণা ও স্বনির্ভরতায় বাংলাদেশের যে পরিমাণ এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো সে পরিমাণ আগাতে বাংলাদেশ পারেনি।
দেশে অরাজকতা, বিশৃঙ্খলতা ও খুনোখুনির পরিবেশ কখনই মেনে নেয়া যায় না। যারা এ ধরনের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে তাদের কর্মের তীব্র নিন্দা জানাই এবং আজ হোক কিংবা কাল তাদের এহেন অপকর্মের কঠোর শাস্তি দাবী করি।

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

Saturday, December 29, 2018

ইশতেহার : ‘জেগে ওঠো বাংলাদেশ ২০১৮’



১. সংবিধান, আইন ও বিচার ব্যবস্থা
১.১) সংবিধানে আল্লাহ’র উপর আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে।
১.২) সংবিধানের রাষ্ট্রধর্ম অবমাননার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড আইন করতে হবে। রাষ্ট্রধর্মবিরোধী সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
১.৩) সংবিধানে বর্ণিত রাষ্ট্রধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক কোন মূলনীতি করা যাবে না, থাকলে বাদ দিতে হবে।
১.৪) রাষ্ট্রধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক আইন বাতিল করে, রাষ্ট্রধর্মের সাথে সমন্বয়পূর্ণ আইন চালু করতে হবে।
১.৫) সুপ্রীম কোর্টে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।
১.৬) দেশের প্রতি থানায় ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট এবং প্রতিবিভাগে হাইকোর্টের শাখা থাকতে হবে।
১.৭) হাইকোর্টের অতিরিক্ত ছুটি বাতিল করে সরকারী নিয়ম অনুসারে ছুটি দিতে হবে।
১.৮) শুধু আইন দিয়ে নয়, বরং সর্বত্র ধর্ম ও নৈতিকতার মাধ্যমে অপরাধ হ্রাসের উদ্যোগ নিতে হবে।
১.৯) শুধু মুখে নয়, বাস্তবে সকল মাদক নিষিদ্ধ করতে হবে। এমনকি ধূমপানের ব্যাপারেও কড়াকড়ি করতে হবে। ‘প্রকাশ্যে ধূমপান করলে জরিমানা’, যদি কোন নাগরিক কোন ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে ধূমপানে ধরিয়ে দেয়, তবে ঐ জরিমানাকৃত অর্থের অর্ধেক তাকে দিতে হবে। মদ, জুয়াসহ যাবতীয় অবরাধ নিয়ে সংবিধানের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবে জারি করতে হবে।

২. শিক্ষা ও গবেষণা:
২.১) শিক্ষা ও গবেষণাখাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়াতে হবে। সববিষয়ে গবেষণা চালু করতে হবে, বিদেশী গবেষণা নির্ভর থাকলে চলবে না।
২.২) অবাস্তবমুখী ও সময় অপচয়কারী শিক্ষাপদ্ধতি বাতিল করে বাস্তবমুখী শিক্ষা, যা বাস্তব জীবনে কাজে লাগে তা প্রণয়ন করতে হবে। শিক্ষা গ্রহণে ‘সময় কার্যকরী’ পদ্ধতি দিতে হবে। একজন ছাত্র যেন ২০ বছরের মধ্যে সাধারণ শিক্ষা সময় পার করে চাকুরী পেতে পারে সে ব্যবস্থা রাখতে হবে।
২.৩) অপরাধ, দুর্নীতি, ঘুষ, অনিয়ম, নারী নির্যাতন, সন্ত্রাস হ্রাসের জন্য সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থা বাদ দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে নৈতিকতা বৃদ্ধি করতে হবে।
২.৪) ধর্মীয় গবেষণার জন্য আলাদা বরাদ্দ দিতে হবে, ধর্মীয় বিষয়গুলো নিয়ে কেউ গবেষনা করতে চাইলে সরকারি বরাদ্দ পাবে।
২.৫) একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। একটি নির্দ্দিষ্ট ক্লাস পর্যস্ত সবাই একসাথে লেখাপড়া করবে। এর মধ্যে কমপক্ষ ৩০% ধর্মীয় শিক্ষা থাকবে। বাকিগুলোও ধর্মের আলোকে হবে। এই নির্দ্দিষ্ট সংখ্যক ক্লাস শেষ করার পর চাহিদা অনুযায়ী কেউ ধর্মীয় উচ্চতর, কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং উচ্চতর, কেউ ডাক্তার বা কেউ অর্থনীতি নিয়ে লেখাপড়া করবে।
২.৬) ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত চলমান ‘পরীক্ষা পদ্ধতি’ বাতিল করতে হবে।
২.৭) ছাত্র-ছাত্রীদের ধর্ম পালনের সুবিধা দিতে হবে। রুটিন এমনভাবে করতে হবে যেন, ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকে।
২.৮) মেধাপাচার রোধ করতে হবে। দেশের মেধাবীরা যেন দেশেই থাকে সে জন্য তাদের সুযোগ করে দিতে হবে।
২.৯) দেশজুড়ে সার্টিফিকেটহীন দেশজুড়ে অনেক মেধাবী/প্রতিভাধর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। সমাজ থেকে এদের তুলে আনতে হবে। তাদের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দিয়ে রাষ্ট্রের কাজে লাগাতে হবে।
২.১০) দেশের সবচেয়ে মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় নিয়ে আসতে হবে। শিক্ষক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্কতা বজায় রাখতে হবে। ভিন্ন সম্প্রদায়ের শিক্ষক দিয়ে ছাত্রদের মধ্যে গোলযোগ তৈরী করা যাবে না।
২.১১) ইতিহাস নিয়ে লুকোচুরি/কাটছাট বাদ দিতে হবে। শুধু ৭১’র চেতনা নয়, ৪৭’র চেতনা, অর্থাৎ বাংলাদেশ প্রকৃতপক্ষে কিভাবে সৃষ্টি হলো তা পড়াতে হবে।
২.১২) মুসলমানদের ইতিহাস/সভ্যতার জন্য গবেষণা, তা উৎঘাটন এবং প্রচারে আলাদা বরাদ্দ করতে হবে।
২.১৩) মুসলিম কবি সাহিত্যিকদের বইসমূহ পুনঃমুদ্রণ করতে।
২.১৪) ‘লাইব্রেরী’ একটি স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মর্যাদা পাবে । দেশে যত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে, সেই অনুপাতে লাইব্রেরীও থাকবে, যেখানে সকল বয়সের মানুষ প্রবেশ করে জ্ঞান চর্চা করতে পারবে। এতে একজন ব্যক্তি ছোটবেলা থেকেই গবেষণাভিত্তিক মনন নিয়ে বেড়ে উঠবে।
২.১৫) প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক নামাজের স্থান রাখতে হবে।

৩.চাকুরী/ব্যবসা:
৩.১) সরকার বেকার জনগোষ্ঠীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ (চাকুরী/ব্যবসা) করে দিতে বাধ্য থাকবে।
৩.২) শুধু চাকুরী নয়, তরুণ প্রজন্মকে উদ্যোক্তা হতে বা ব্যবসা করতে উৎসাহ দিতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ট্রেনিং দিতে হবে এবং সরকারকেই বিনিয়োগ করতে হবে। কেউ বৈধ ব্যবসা করতে চাইলে সরকার তাকে সব ধরনের সহায়তা করবে। কারণ তার মাধ্যমে অনেকের চাকুরী হবে তথা বেকারত্ব দূর হবে।
৩.৩) ব্যবসা করার জন্য সরকারের থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। তবে এই লাইসেন্স নেয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি কোর্স করা বাধ্যতামূলক থাকবে। ঐ কোর্সে ঐ নির্দ্দিষ্ট ব্যবসা করার জন্য প্রয়োজনীয় ধর্মীয় নীতিমালার শিক্ষা দেয়া হবে। যে সেই কোর্সে পাশ করবে, সেই লাইসেন্স পাবে। যে পাশ করবে না সে লাইসেন্স পাবে না। উদহারণস্বরূপ, একজন দোকানদার দোকানব্যবসা শুরুর আগে ঐ কোর্সে গিয়ে শিখবে- দোকানদারের জন্য ধর্মীয় নীতিমালা কি ? যেমন: মাপে কম দিলে, মানুষকে মিথ্যা বলে পণ্য দিলে ধর্মে কি বলা হয়েছে। এরফলে সকল পেশার মানুষের মধ্যে একটি নৈতিকতা কাজ করবে এবং তার পেশাকে সমাজের জন্য ‘আমানত’ মনে করবে।
৩.৪) বিদেশীদের চাকুরী নয়, দেশের মানুষকে আগে চাকুরী দিতে হবে। দেশের বেকারদের চাহিদা পূরণ হওয়ার পর বিদেশীদের দিতে চোখ দিতে হবে। দেশীয় কোন কাজের টেন্ডার পাওয়ার ক্ষেত্রে একই রকম দেশীয় কোম্পানিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কোন কাজ দেশের লোক না পারলে, তাদের বিদেশ থেকে ট্রেনিং দিয়ে নিয়ে এসে সেই কাজ করানো যায় কি না, সে চেষ্টা করতে হবে।
৩.৫) মসজিদের ইমাম/খতিবদের চাকুরীকে প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা দিতে হবে।
৩.৬) চাকুরীতে কোন ধরনের কোটা থাকবে না, যোগ্যতা অনুসারে সবাই চাকুরী পাবে। প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকার আলাদা ভাতার ব্যবস্থা করবে।
৩.৭) সরকারী চাকুরীতে এখনও কয়েক লক্ষ পদ খালি আছে। সেগুলো দ্রুত পূরণ করতে বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। সরকারী চাকুরীর সংখ্যা আরো কয়েকগুন বাড়াতে হবে।
৩.৮) সরকারী চাকুরীর বেতন এতটুকু উন্নীত করতে হবে, যেন জীবন নির্বাহের জন্য তাকে অসুদপায় অবলম্বন করতে না হয়।
৩.৯) চাকুরীতে যোগদানের বয়স বৃদ্ধি, অবসর গ্রহণের বয়স বৃদ্ধি এবং চাকুরী শেষে সংশ্লিষ্ট স্থানে উপদেষ্টা/পরামর্শদাতা হিসেবে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে।

৪.অর্থনীতি:
৪.১) সুদের গ্রাস থেকে মানুষকে রক্ষা করতে হবে, সুদবিহীন অর্থনীতির প্রণয়ন করতে হবে। ব্যাংকগুলো থেকে বৈধ ব্যবসায় ঋণের বদলে বিনিয়োগ করতে হবে।
৪.২) রিজার্ভ ডলারে না রেখে স্বর্ণে নিয়ে আসতে হবে। এতে মূদ্রাস্ফীতি কমে আসবে । আন্তর্জাতিকভাবে অনেক রাষ্ট্র বর্তমানে ডলার ব্যতিত নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেন করছে। ডলারের পরিবর্তে স্বর্ণ করলে আগামীতে আমাদের রিজার্ভের উপর কোন হুমকি আসবে না।
৪.৩) অযথা বিদেশী ঋণের বোঝা না বাড়িয়ে দেশের সম্পদ দিয়ে কাজ পূরণ করতে হবে। সরকারী/বেসরকারীভাবে চেষ্টা করতে হবে। প্রকল্প প্রয়োজন অনুসারে অনুমোদন পাবে, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প হ্রাস করতে হবে।
৪.৪) চলমান ট্যাক্স ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে, জাকাত ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৪.৫) বর্তমানে জনগণের থেকে আদায় করা ট্যাক্স/মাসুল হচ্ছে সরকারের আয়ের একমাত্র উৎস। জনগণের থেকেই আয় করা টাকা দিয়েই জনগণের জন্য উন্নয়ন করে সরকার। কিন্তু জনগণের টাকা জনগণের জন্য ব্যয় করলে সেটা উন্নয়ন বলা যায় না, বিনিময় বলা যেতে পারে।
৪.৬) জনরফতানির থেকে কোম্পানি/প্রতিষ্ঠান রফতানি (বিদেশে গিয়ে প্রতিষ্ঠানিক ব্যবসা) অনেক বেশি লাভজনক। এ কারণে বাংলাদেশ সরকারকে জনরফতানির থেকে বিভিন্ন কোম্পানিকে বিদেশে রফতানি (বিদেশে গিয়ে ব্যবসা) করতে বেশি সুযোগ করে দিতে হবে।
৪.৭) বিদেশীরা বাংলাদেশে এসে চাকুরী করলে যত ক্ষতি হয়, তার থেকে বেশি ক্ষতি হয় বিদেশী কোম্পানি এসে কাজ করলে (কাজ আমদানি)। বিদেশী কোম্পানির কাজের লাগাম টেনে ধরতে তাদের উপর শক্ত ট্যাক্স বসাতে হবে।
৪.৮) সরকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দেশে-বিদেশে ব্যবসা করতে বিনিযোগ করবে এবং তাদের ব্যবসায় অংশীদার হয়ে ইনকাম করবে।
৪.৯) কাউকে ফ্রি ট্রানজিট দেয়া যাবে না। পৃথিবীর অনেক রাষ্ট্র ট্র্রানজিটের বিনিয়য়ে অর্থ সংগ্রহ করে অনেক ধনী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ যদি বিদেশী কোন রাষ্ট্রকে ট্র্রানজিট দেয়ও, তবে সেখান থেকে আন্তর্জাতিক রেট মেনে অর্থ আদায় করতে হবে। এবং সেই টাকাও সরকারের সোর্স অব ইনকাম হবে। ট্রানজিট দেয়ার ক্ষেত্রে নৌ ও রেল ট্র্যানজিট দেয়া যেতে পারে, তবে নিরাপত্তার জন্য সড়ক ট্র্যানজিট এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
৪.১০) সাধারণভাবে কোরবানির হাট বরাদ্দ দেয়ার সময় যে সর্বোচ্চ টেন্ডারমূল্য দেয়, তাকে হাট ইজারা দেয়া হয়। এই পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। এর বদলে যে ইজারাদার কাস্টমারদের থেকে সবচেয়ে কম হাসিল নিবে এবং সর্বোচ্চ পাবলিক সার্ভিস দেওয়ার নিশ্চয়তা দিবে, তাকেই হাট ইজারা দিতে হবে। কোরবানি ঈদের ছুটি আরো দুইদিন (জিলহ্জ্জ মাসের ৭ ও ৮ তারিখ) বাড়িয়ে ৫ দিন করতে হবে, এতে গ্রামীন অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।
৪.১১) ইকোনোমিক জোনগুলোতে বিদেশী কোম্পানি আসতে পারে, তবে শর্ত দিতে হবে, শুধু শ্রমিক নয়, বরং মূল প্রসিসেং বা গবেষণা বিভাগে বাংলাদেশীদের চাকুরী দিতে হবে।
৪.১২) ব্লু’ইকোনমি বা সমুদ্র সম্পদ নিয়ে তাড়াহুড়া করে বিদেশীদের কাছে বর্গা নয়। দেশীয় সক্ষমতা অর্জন করে দেশের সম্পদ দেশে কিভাবে সর্বোচ্চ রাখা যায়, সে চেষ্টা করতে হবে।

৫. কৃষি:
৫.১) কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। উৎপাদন খরচ হ্রাস এবং মান উন্নয়নের জন্য গবেষণা বাড়াতে বাজেট বরাদ্দ করতে হবে । কৃষকদের বিনাশর্তে ঋণ দিতে হবে। কৃষকের ফসল যেন নষ্ট না হয়, সেজন্য দেশজুড়ে পর্যাপ্ত হিমাগার তৈরী করতে হবে।
৫.২) জিএমও’র এখন চূড়ান্ত গবেষায় পৌছায়নি, তাই এখনই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা ঠিক হবে না। কৃষিযন্ত্র নিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। এতে উৎপাদন খরচ কমবে।
৫.৩) বিদেশী বিজের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে, দেশী বীজের বৈশিষ্ট্য ঠিক রাখতে সরকারি উদ্যোগে আলাদা বীজগার তৈরী করতে হবে।
৫.৪) রাসায়নিক সার ও কিটনাশকের ব্যবহার বাদ দিয়ে অর্গানিক ফুডের উপর জোর দিতে হবে।
৫.৫) দেশে যে সকল ফসল পর্যাপ্তহারে উৎপাদিত হয়, সেসব ফসল আমদানির উপর উচ্চহারে ট্যাক্স বসাতে হবে।
৫.৬) কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
৫.৭) কৃষি ক্ষেত্রে কৃষকের সহায়তার জন্য ২৪ ঘন্টা কল সেন্টারের সার্ভিস রাখতে হবে। যেখানে কৃষিবিগণ কৃষকের যে কোন সমস্যার সমাধান দিবেন। কৃষক সমস্যায় পড়লে ১২ ঘন্টার মধ্যে কোন কৃষিবিদকে মাঠে গিয়ে পরামর্শ দিতে হবে। , এতে পরামর্শের নাম দিয়ে আন্তর্জাতিক বহুজাতিক কোম্পানিগুলো কৃষকদের প্রতারণা করে ব্যবসা করার সুযোগ পাবে না।
৫.৮) সরকারের একটি জরিপ বিভাগ থাকবে, যার মাধ্যমে জানা যাবে, কোন ফসল কতটুকু চাষের প্রয়োজন। সেই প্রয়োজন অনুসারে কৃষকরা চাষ করবে এবং অনলাইনে চাষের তথ্য আপডেট করবে। একটি পূরণ হয়ে গেলে অন্যটির চাষের উপর জোর দিবে। এই তথ্য ও জরিপের কারণে কোন ফসল অতিরিক্ত হারে উৎপাদনের কারণে নষ্ট হওয়ার সুযোগ হ্রাস পাবে।
৫.৯) জনগণের জন্য রেশন সিস্টেম চালু করতে হবে।
৫.১০) সরকারী উদ্যোগে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতেহবে। পানি বিশুদ্ধকরণ জটিল কোন প্রযুক্তি নয়, তাই পানি পরিশোধনের কথা বলে বিদেশী কর্পোরেট কোম্পানির হাতে দেশের পানি ব্যবস্থাকে তুলে দেয়া যাবে না, দেশীয় কোম্পানির মাধ্যমে কাজ করাতে হবে।
৫.১১) খাদ্যে ভেজালের সাথে সংযুক্ত ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড/যাবজ্জীবন বিধান রেখে আইন পাশ করা।

৬. খনিজ সম্পদ ও শিল্প-কারখানা:
৬.১) গ্যাস আমদানি না করে, গ্যাস উত্তোলন করতে হবে। সক্ষমতা বাড়িয়ে দেশীয় কোম্পানি দিয়ে গ্যাস উত্তোলনে জোর দিতে হবে।
৬.২) রিনিউয়েবল এনার্জি বা নবায়নযোগ্য শক্তি, বিশেষ করে সৌর শক্তির উপর জোর দিতে হবে, গবেষণা বাড়াতে হবে।
৬.৩) কারাখানাগুলোতে প্রয়োজন মাফিক গ্যাস-বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
৬.৪) অব্যবস্থাপনার কারণে গার্মেন্টস, রিয়েল স্টেট বা চামড়ার মত বড় শিল্পগুলো যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সরকারী অব্যবস্থাপনার কারণে চামড়াজাত পন্য গার্মেন্টস পণ্যের মত বড় রফতানির উৎস হয়ে উঠতে পারেনি। এদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
৬.৫) শিল্পাঞ্চলগুলো নদীর কাছাকাছি হতে হবে। নদীপথকে পণ্য পরিবহনে ব্যবহার করতে হবে। শিল্প বর্জ্যের কারণে নদীগুলো যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিকতা আনতে হবে।
৬.৬) সঠিক আদমশুমারি করে সে অনুপাতে প্রত্যেক এলাকার মানুষের কি কি চাহিদা লাগবে, তার তালিকা তৈরী করতে হবে। যেগুলোর সরবারহ ইতিমধ্যে আছে, সেগুলো বাদে বাকিগুলো দেশীয় উদ্যোগে কলকারখানা নির্মাণ করে তা তৈরী করার উদ্যোগ নিতে হবে। এতে দেশে প্রচুর কলকারখানা বৃদ্ধি পাবে, সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান।
৬.৭) জনগণ একটি বিরাট সম্পদ। দেশে শিল্পাঞ্চল তৈরী করে, সেখানে বিদেশীদের কলকারখানা নির্মাণ করলে, দেশের জনসম্পদ বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়া হয়। এজন্য দেশের শিল্পাঞ্চলে দেশীয় শিল্পকারখানা নির্মাণে বেশি জোর দিতে হবে।
৬.৮) বিদেশী সংস্থা ও বিদেশি পুঁজির জাতীয় স্বার্থবিরোধী অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। এমন কোন বিদেশী পুঁজি প্রবেশ করানো যাবে না, যার কারণে দেশী শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
৬.৯) দেশের রফতানি খাতকে এক শিল্প নির্ভর না করা। রফতানি সেক্টরকে বহুমুখী করা, যেন ভবিষ্যতে কোন রাষ্ট্র অর্থনৈতিক অবরোধ তৈরী করে দেশের অর্থনীতিতে খুব বেশি প্রভাব বিস্তার না করতে পারে।
৬.১০) দেশে প্রয়োজন মাফিক পণ্য তৈরীতে উদ্যোগ নেয়া এবং জনগণকে দেশীয় পণ্য ব্যবহারে উব্ধুদ্ধ করা। বিদেশী পণ্য ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে হবে।
৬.১১) কোন রফতানিকারকের প্রাপ্য অর্থ বিদেশী কোন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান আটকে দিলে রাষ্ট্রীয়ভাবে সর্বোচ্চ সহযোগীতা প্রদান করতে হবে।

৭. সরকার ও প্রশাসন:
৭.১) উপজেলা চেয়্যারম্যান ও কমিশনার পদে দাড়াতে নূন্যতম এইচএচসি, এমপি/মেয়র হওয়ার জন্য নূন্যতম স্নাতক পাশ হতে হবে।
৭.২) এমপিদের থেকে ৯০% মন্ত্রী হবে, সংবিধানের এই ধারা পরিবর্তন করতে হবে। কোন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হতে ঐ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বা বিশেষ অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৭.৩) শুধু ভোটের আগে জনগণের পাশে, এই সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে। নির্বাচিত হওয়ার ২ বছর পর একটি নিরপেক্ষ জরিপ করা, “এমপিরা কত পার্সেন্ট জনগণের পাশে থাকলো”। সেই জরিপে ফলাফল কম আসলে এমপি পদ বাতিল হওয়ার নিয়ম করতে হবে।
৭.৪) সংসদে অপ্রয়োজনীয় আলাপ, রাজনৈতিক চাটুকারিতা নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা প্রয়োজন ছাড়া সংসদে অপ্রয়োজনীয় কথা বলবে, তাদের শাস্তির ব্যবস্থা রাখতে হবে। যার সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে ‘সংসদ সদস্য পদ’ বাতিল।
৭.৫) আন্তর্জাতিক চুক্তির ক্ষেত্রে সরকার একা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। অবশ্যই চূক্তির প্রতিটি ধারা জনগনের সামনে উন্মুক্ত করে তারপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

৮. সমাজ ও সংস্কৃতি:
৮.১) ধর্মকে ব্যক্তির মধ্যে আটকে রাখার কূট-পরিকল্পনা বাদ দিতে হবে। সমাজের প্রতিটি সেক্টরে ধর্মীয় নিয়ম-প্রথার চর্চা করতে দিতে হবে।
৮.২) বিজাতীয় সংস্কৃতি প্রমোট করে এমন মিডিয়া নিষিদ্ধ করতে হবে। মিডিয়ায় অশ্লীলতা বন্ধে কঠোর কার্যক্রম প্রণয়ন করতে হবে।
৮.৩) ধর্ম যার যার উৎসব সবার, এই শ্লোগান বাদ দিতে হবে। ধর্ম যার যার উৎসবও তার তার, এই শ্লোগান চালু করতে হবে। এক ধর্মের অনুষ্ঠানকে সেক্যুলার অনুষ্ঠান নাম দিয়ে সকল ধর্মের উপর চাপিয়ে দেয়া যাবে না।
৮.৪) বিজাতীয় দিবস পালন নিষিদ্ধ করে, ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন উৎসব পালন করতে সর্বোচ্চ সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা দিতে হবে।
৮.৫) বিয়ের জন্য কোন বয়স নির্ধারণ করা যাবে না। কেউ উপযুক্ত হলে বিয়ে করতে পারবে। সরকারীভাবে বিয়েতে সাহায্য করতে হবে। তবে প্রেম/ব্যাভিচারে ধরা পড়লে আইনত দণ্ড দেয়া হবে।
৮.৬) মিশনারীর নামে কেউ রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম করলে ফাঁসির ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৮.৭) উপনেবেশিক আমলে ব্রিটিশ দালালদের নামে যে সমস্ত জেলা/উপজেলা/গ্রাম/শহর/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ যে সব নামকরণ হয়েছে, তার সবগুলো পরিবর্তন করতে হবে। এদেশীয় চেতনায় নামকরণ করতে হবে।
৮.৮) অন্যদেশের জাতীয় কবি নয়, বরং বাংলাদেশের জাতীয় কবির সংগীতকে জাতীয় সংগীত করতে হবে।
৮.৯) ছোট নয় বড় ও যৌথ পরিবার সুখ ও নিরাপত্তার কারণ, এই ধারণার তৈরী করতে হবে।
৮.১০) সমাজে বিশৃঙ্খলতা তৈরী হতে পারে বা অন্যকে অন্যায়ে উব্ধুদ্ধ করতে পারে এমন কোন পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করা যাবে না। সমাজে সুশৃঙ্খলতা বজায় থাকে, এমন পোশাক-পরিচ্ছেদ নারী-পুরষকে পরিধান করতে বলতে হবে।

৯. জনসংখ্যা, শহরায়ন, নগরায়ন ও আবাসন:
৯.১) যানজট সমস্যা নিরসনে ঢাকা শহরের মধ্যে জনসংখ্যা জড়ো না করে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। অন্য বিভাগ ও জেলাশহরগুলো উন্নত করতে হবে। গার্মেন্টস কারখানাসহ বিভিন্ন কর্মক্ষেত্র দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিতে হবে।
৯.২) গণহারে ফ্লাইওভার, এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। দুর্ঘটনাপ্রবণ সড়ক ও আকাশ যোগাযোগের বদলে নৌ ও রেলপথকে যাতায়তের মূল মাধ্যমে হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
৯.৩) নতুন করে সিএনজি অটোরিকশার রেজিস্টেশন চালু করতে হবে।
৯.৪) দুর্যোগে গৃহহীনদের জন্য সরকারী উদ্যোগে স্থায়ী বাসস্থান নির্মাণ করে দিতে হবে। রাজনৈতিক নেটওয়ার্কে নয়, প্রকৃতভূমিহীনদের মধ্যে খাস জমি বিতরণ করতে হবে।
৯.৫) বিভাগগুলোকে প্রদেশে রূপান্তর করতে হবে। এবং প্রদেশ ভিত্তিক নিয়ম অনুসারে প্রশাসন পরিচালনা করতে হবে।
৯.৬) শহরের যাবতীয় স্থাপনা কমপক্ষে ১০০ বছরের প্ল্যান নিয়ে করতে হবে। রাস্তায় সুয়ারেজ লাইন, পাানির লাইন, গ্যাসের লাইন, টেলিফোন লাইন যাবতীয় কাজ একসা
থে করতে হবে, যেন বছর বছর রাস্তা খুড়তে না হয়।
৯.৭) পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট ব্যবস্থা, বিশেষ করে নারীদের জন্য আলাদা পাবলিক টয়লেট তৈরী করতে হবে।
৯.৮) শহর সাজাতে এমন ভাস্কর্য তৈরী করা যাবে না, যা জনগণের মধ্যে অস্থিরতা তৈরী করে। শাপলা চত্বরের শাপলা, বিজয় স্মরণীর প্লেন বা হোটেল সোনারগাও মোড়ের ঝরনার মত ভাস্কর্য বা স্থাপত্য তৈরী করে শহর সাজাতে হবে। দেশের বিভিন্ন ভার্সিটির চারুকলা বিভাগে abstract art বা বিমূর্ত শিল্প এর উপর জোর দিতে হবে। চীনের মত রাষ্ট্রগুলো abstract art আর্টের কাজ করে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার কামাচ্ছে। বাংলাদেশের চারুকলাকে আর্থিক উৎপাদনশীল খাতের দিকে নিয়ে যেতে হবে।

১০. নদী ও পরিবেশ:
১০.১) নদীগুলো দ্রুত খনন করতে হবে। ভারতের সাথে দরকষাকষিতে যেতে হবে, যেন তারা নদীর পানি ছাড়ে। এব্যাপারে প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে। নদীমাতৃক দেশে নদীমাতৃকতা ফিরিয়ে আনতে হবে।
১০.২) নদী ভাঙ্গন রোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। ঘুমিয়ে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জাগাতে হবে।
১০.৩) বাংলাদেশে কৃষি নির্ভর দেশ, কিন্তু নেদারল্যান্ড কৃষি নির্ভর নয়।। দুইদেশ ব-দ্বীপ হলেও ভৌগলিক ক্ষেত্রে অনেক কিছুই মিলে না। তাই নেদারল্যান্ডের বুদ্ধিতে নতুন করে অত্যন্ত ব্যয়বহুল প্রকল্প গ্রহণ না করে, দেশীয় বাস্তবসম্মত জ্ঞানের আলোকে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
১০.৪) পরিবেশের সাথে সাংঘর্ষিক এমন কোন স্থাপনা করা যাবে না।
১০.৫) বাংলাদেশের মত ছোট দেশে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মত ঝুকিপূর্ণ কাজ ব্ন্ধ করতে হবে।
১০.৬) দেশজুড়ে এখনও কৃষির জন্য ক্ষতিকর লক্ষ লক্ষ ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছ আছে। সেগুলো চিহ্নিত করে কেটে ফেলা।
১০.৭) ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের উপর আলাদা জোর দেয়া। এতে অতিরিক্ত লোকবলকে চাকুরী দিতে হবে। ইনোভেটিভ ডাস্টবিন সম্পর্কে জনগণকে ধারণা দিতে হবে। রিসাইকেলিং এর মাধ্যমে আবর্জনাকে সম্পদে রুপান্তর করতে হবে ।

১১. চিকিৎসাখাত:
১১.১) চিকিৎসাখাতকে আরো সমৃদ্ধ করতে হবে। দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। প্রত্যেক জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন করতে হবে। বিভাগগুলোতে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে, গবেষনা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তির চিকিৎসা, স্বল্পমূল্য এবং চিকিৎসক-নার্সের ভালো ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে ছুটতে হবে না। প্রয়োজনে চিকিৎসক-নার্সদের কাস্টমার সার্ভিস ট্রেনিং দিতে হবে।
১১.২) মায়েদের অহেতুক সিজার (সি-সেকশন) অপারেশন হ্রাস করতে হবে। হাসপাতালে যেকোন ধরনের বানিজ্য বন্ধ করতে কঠোর নজরদারী করতে হবে।
১১.৩) শুধু অ্যালোপ্যাথি নয়, হোমিও, আয়ুর্বেদ, দেশীয় ভেষজ চিকিৎসা ব্যবস্থাগুলোর মধ্যেও গবেষণা বাড়াতে বরাদ্দ দিতে হবে।
১১.৪) গর্ভপাত নিষিদ্ধ, এই আইন বাস্তবে কার্যকর করতে হবে। ব্যাঙের ছাতার মত দেশজুড়ে গজিয়ে ওঠা কথিত মেটারনিটি ক্লিনিকগুলোতে নজরদারী বাড়াতে হবে, কেউ অবৈধ গর্ভপাত করলে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
১১.৫) বিদেশ থেকে আসা ফ্রি ওধুষ/টিকা/ক্যাপসুল শিশুদের দেয়া বন্ধ করতে হবে। কেউ অনুদান দিতে চাইলে নগদ অর্থ দিবে, সেই অর্থ দিয়ে বাংলাদেশে তৈরী ঔষধ জনগণের কাছে পৌছাতে হবে।

১২. সামরিক বাহিনী:
১২.১) সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে বিদেশ থেকে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র আমদানি করতে হবে। দেশে অস্ত্র কারখানা তৈরী করে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
১২.২) আন্তর্জাতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে সামরিক অফিসারদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে অ্যানালিস্ট ট্রেনিং দিতে হবে। গোয়েন্দা বাহিনীর কার্যক্রম বৃদ্ধি, ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতে হবে । সামরিক অফিসারদের মাঝে গবেষণা বাড়তে হবে । এতে বহিঃবিশ্বে প্রভাব বাড়বে।
১২.৩) খেলাধূলা নামক সময় অপচয়কারী বিষয়গুলো বাদ দিতে হবে। তরুণ সমাজকে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হবে।

১৩. বহির্বিশ্বের সাথে সম্পর্ক:
১৩.১) বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করতে হবে, কোনরূপ বিরুপ সম্পর্ক করা যাবে না। বিশ্বের কোন দেশে মুসলমানরা আক্রান্ত হলে সবাই এক হয়ে ঐ দেশের মুসলমানদের সাহায্য করার উদ্যোগ নিতে হবে।
১৩.২) কোন বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক করতে গেলে দেশের স্বার্থ সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে, নিজ দলের রাজনৈতিক স্বার্থ নয়। এমন ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া যাবে না, যাতে দেশের জন্য ক্ষতিকর হয়। প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করে নিজ দেশের স্বার্থ আদায় করতে হবে।
১৩.৩) বিদেশে গিয়ে নিজ দেশের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর সম্পর্কে বিচার দেয়ার সংষ্কৃতি বন্ধ করতে হবে। শত্রুকে হাসতে দেয়া যাবে না। দেশের স্বার্থে সবাই এক, এই নীতিতে অটল থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে যতই দ্বন্দ্ব থাক, দেশের স্বার্থে সবাই এক হতে হবে।
১৪.৪) প্রবাসীদের অর্থ ও পরিবারের নিরাপত্তা দিতে হবে। বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের একজন নাগরিকও যদি বিপদে পড়ে তবে রাষ্ট্রের শীর্ষমহল থেকে তার সহায়তায় এগিয়ে আসতে হবে।
১৪.৫) তুরষ্কের সাথে ‘হালাল পর্যটন শিল্প’ বিস্তারে যে চূক্তি হয়েছে, তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

১৪. মিডিয়া ও আইটি:
১৪.১) গণমাধ্যমকে প্রকৃত অর্থেই জনগণের মাধ্যম বানাতে হবে। জনগণ যা চায় গণমাধ্যম সেটা প্রচার করে কি না, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। যারা নিজেদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যকে গণমানুষের চাওয়া হিসেবে প্রচার করবে, সেসব মিডিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
১৪.২) বাংলাদেশের বিভিন্ন ভার্সিটির সাংবাদিকতা ও মিডিয়া স্ট্যাডি বিভাগসমূহকে বিদেশী সম্রাজ্যবাদীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সংযোগ থেকে রক্ষা করতে হবে।
১৪.৩) পর্নগ্রাফী নিষিদ্ধ এবং এইজরেস্ট্রিকডেট সকল পেইজ-সাইট বন্ধ করতে হবে।
১৪.৪) প্রত্যেক উপজেলায় সরকারি উদ্যোগে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌছাতে হবে। এবং সরকারী বা বেসরকারী উদ্যোগে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট জনগণের ঘরে ঘরে পৌছাতে হবে।

১৫. সংখ্যালঘু:
১৫.১) গৃহহীন বাঙালীদের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় পুনর্বাসন করতে হবে। উপজাতি গোষ্ঠীগুলোকে এক এলাকায় জড়ো না করে পুরো দেশে কর্মসংস্থান দিয়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। উপজাতিদের বাংলাভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ দিতে হবে। উপজাতিরা শুধু একস্থানে তাদের ভাষা ও সংষ্কৃতির উপর আটকে থাকলে তাদের ব্যবহার করে শত্রু রাষ্ট্র বাংলাদেশকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পাবে। রাষ্ট্রবিরোধী কোন সংগঠন বা গোষ্ঠীকে কোনরূপ প্রশ্রয় দেয়া যাবে না।
১৫.২) সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় ছুটি শুধুমাত্র সংখ্যালঘুরাই ভোগ করবে, সংখ্যাগুরুরা নয়।
১৫.৩) সাম্প্রদায়িকতা এড়ানোর জন্য সংখ্যালঘুরা নিজেদের ভূমি/যায়গায় ধর্মীয় রীতি/অনুষ্ঠান পালন করবে, সংখ্যাগুরুদের যায়গায় নয়।
১৫.৪) দেশে গোলযোগ তৈরীকারী অর্পিত সম্পত্তি আইন বাতিল করতে হবে।

১৬. মানবাধিকার:
১৬.১) শিশুদের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। স্কুলগুলোতে বেত ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে।
১৬.২) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হল/সিট ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। র‌্যাগিংনিষিদ্ধ করতে হবে।
১৬.৩) প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের বৃদ্ধা পিতামাতাকে লালন/পালন বাধ্যতামূলক করতে হবে। সন্তানহীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের লালন পালনের জন্য সরকারী উদ্যোগে বৃদ্ধনিবাস করতে হবে।
১৬.৪) আত্মহত্যা রোধে ধর্মীয় চেতনা বৃদ্ধি করতে হবে।
১৬.৫) বস্তিবাসী ও হকারদের উচ্ছেদ নয়, বরং তাদের স্থায়ী পুনবার্সন করতে হবে।
১৬.৬) বিধবা বা ডিভোর্সী নারীদের বিয়ে নিয়ে সামাজিক কু-ধারনা পরিবর্তন করতে হবে। সরকারী উদ্যোগে প্রয়োজনে তাদের দ্রুত বিয়ের ব্যবস্থা করতে হবে ।
১৬.৭) সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সমস্যা হ্রাস করতে পশ্চিমা নারীবাদী ধারণা নিষিদ্ধ করে, ধর্মীয় নীতির ভিত্তিতে নারী-পুরুষের মাঝে সহমর্মিতা বৃদ্ধি করতে হবে।
১৬.৮) নারী নির্যাতন বন্ধ করতে নারীদের জন্য আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শপিং কমপ্লেক্স, যানবাহন, হাসপাতাল, তৈরী করতে হবে। নারীদের জন্য পৃথক প্রতিষ্ঠানে নারীরা কাজ করবে, ফলে অনেক নারীর নিরাপদ কর্মসংস্থান হবে।
১৬.৯) সিনেমা, বিজ্ঞাপন, মডেলিং, পোস্টার যে কোন স্থানে নারীকে পণ্য বানানোর মাধ্যমে অবমাননা নিষিদ্ধ করতে হবে। কেউ করলে তাকে কঠোর শাস্তির ব্যবহার করতে হবে ।
১৬.১০) ফ্ল্যামিলি প্ল্যানিং নামক শিশু হত্যা নিষিদ্ধ করতে হবে।
১৬.১১) বিদেশে পুরুষ শ্রমিক যেতে পারবে, তবে নারী শ্রমিক রফতানি নিষিদ্ধ করতে হবে।
১৬.১২) কারাগারগুলোতে আরও সুযোগ সুবিধা তৈরী করা। অমানবিকতা বন্ধ করতে হবে। কারাগার শুদ্ধ হওয়ার স্থান, সেখানে গিয়ে যেন মানুষ উল্টা আরো অপরাধপ্রবণ না হয়ে উঠে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ধর্মীয় পরিবেশ ও মনোচিকিৎসার মাধ্যমে অপরাধীকে ভালো করতে হবে। থানার হাজতগুলোতেও অমানবিকতা বন্ধ করতে হবে। রিমান্ডে নির্যাতন নিষিদ্ধ করতে হবে।
১৬.১৩) পতিতাবৃত্তি সর্বাধিক অমানবিক কাজ। সংবিধানে ‘পতিতাবৃত্তি নিষিদ্ধ’ এই আইন দেশজুড়ে জারি করতে হবে। পতিতাদের বিয়ে ও পুনর্বাসানের ব্যবস্থা করতে হবে।
১৬.১৪) হিজড়াদের আলাদা কর্মের ব্যবস্থা করতে হবে। সমাজে বিশৃঙ্খলা/চাঁদাবাজি করতে দেয়া যাবে না।
১৬.১৫) ভিক্ষুকদেরও পুনর্বাসন করতে হবে। যদি বৃদ্ধ-বৃদ্ধা হয় তবে সরকারী বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাতে হবে। যদি শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়, সরকারের তরফ থেকে তৈরী প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠাতে হবে।
১৬.১৬) পথশিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় শিক্ষা এবং তাদের পুনর্বাসন করতে হবে। এদেরকে মাদক, মিশনারী ও বিদেশী মদদপুষ্ট এনজিওদের খপ্পর থেকে রক্ষা করতে হবে। মা-বাবাহীন সন্তানদের নিঃসন্তান ভালো দম্পত্তিদের মাঝে তাদের বণ্টন করে দিতে হবে।

পিডিএফ আকারে পেতে : https://bit.ly/2A2Kb4p


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------