Showing posts with label আন্তর্জাতিক. Show all posts
Showing posts with label আন্তর্জাতিক. Show all posts

Wednesday, February 27, 2019

মোদির সস্তা সাম্প্রদায়িক ভোটের রাজনীতি ও মুসলমানদের করণীয়

২০০১ সালে ২৬শে জানুয়ারী, ভারতের গুজরাট রাজ্যে ঘটে যায় এক শক্তিশালী ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পেরে  মাত্রা ছিলো ৭.৭। এ ভূমিকম্পে গুজরাট রাজ্যে প্রায় ৪ লক্ষ বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়। সরকারি হিসেবেই ভূমিকম্পে প্রায় ২০ হাজার লোক নিহত এবং ১ লক্ষ ৬৭ হাজার লোক আহত হয়েছে বলে স্বীকার করা হয়।
এ অতিমাত্রার ভূমিকম্পের পর পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয় তৎকালীন গুজরাটের মূখ্যমন্ত্রী বিজেপির কেশুভাই প্যাটেল। শুরু হয় তুমুল সমালোচনা। ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে কেশুভাই ২০০১ সালের ৬ই অক্টোবর পদত্যাগ করে। ৭ই অক্টোবর সাময়িকভাবে ভারপ্রাপ্ত মূখ্যমন্ত্রী করা হয় লোকাল নেতা নরেন্দ্র মোদিকে।  তবে চতুর মোদি জানতো কি করে সাধারণ জনতার সেন্টিমেন্ট ব্যবহার করে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে হয়।
ভারপ্রাপ্ত ক্ষমতা পাওয়ার মাত্র ৪ মাস পর, ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে ফেব্রুয়ারী রহস্যজনকভাবে গোধরা শহরে হিন্দু পূজারীবাহী একটি ট্রেনে আগুন ধরে যায়। মারা যায় ৬০ পূজারী। ব্যস শুরু হয়ে যায় হিন্দু পূজারীদের লাশ নিয়ে রাজনীতি। লাশ নিয়ে মিছিল করে জাগিয়ে তোলা হয় হিন্দুত্ববাদ। এরপর জারি করা হয় কারফিউ। ভারতে কারফিউ এর অর্থ কিন্তু ভিন্ন। কাউফিউ অর্থ হিন্দুত্ববাদীরা যেন পুলিশ প্রটেকশনে মুসলমানদের উপর নির্ভয়ে দাঙ্গা চালাতে পারে। শুরু হয়ে যায় গুজরাট দাঙ্গা।  গোধরার ট্রেনে আগুনের পর যা চলে প্রায় ১ মাস। হত্যা করা হয় ৫ হাজার মুসলমানকে, ধর্ষণ করা হয় ৪০০ মুসলিম নারীকে, ধ্বংস করা হয় ৫৬৩টি মসজিদ, বাড়িঘর ছাড়া করা হয় আড়াই লক্ষ মুসলমানকে। দাঙ্গার সময় মুসলিম মহিলারা পুলিশের কাছে তাদের ইজ্জত রক্ষার আবেদন জানালে পুলিশ বলে, 'তোমাদেরকে তো শেষমেষ মেরেই ফেলবে। তার আগে ইজ্জত থাকলো কি চলে গেল তাতে কি'। এমনকি দাঙ্গার সময় রক্ষা পায়নি মুসলিম এমপি এহসান জাফরী। তাকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী নেতা বাবু ভাই প্যাটেলের নাম শুনে থাকবে অনেকেই। যে এক মুসলিম নারীর পেট চিড়ে ৯ মাসের ভ্রুণকে বের করে আগুনে পুড়িয়ে মারে। হিন্দুত্ববাদ জাগিয়ে তুলে নিজের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করে মোদি। ২০০২ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ১৮২টির  মধ্যে ১২৭টি আসন লাভ করে সে। হয়ে যায় মূখ্যমন্ত্রী। এরপর ২০০৭, ২০১২ এর নির্বাচনেও তাকে মূখ্যমন্ত্রী হতে কষ্ট করতে হয়নি। শুধু তাই নয়, ঐ হিন্দুত্ববাদী ট্যাগ লাগিয়ে ২০১৪ সালেও হয়ে যায় পুরো ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে আর মাত্র ৪ মাস বাকি। ‘মোদি ম্যাজিক’, “আচ্ছে দিন”, “বুক চওড়া” এইসব শ্লোগান দিয়ে এখন আর পাবলিক খায় না।  ৫০০ আর ১০০০ টাকা নোট বাতিল করে পুরো দেশের অর্থনীতির মাজা ভেঙ্গে দিয়েছে মোদি। বেকারত্ব এখন চরম পর্যায়ে।  দমননীতির কারণে আত্মহত্যা করেছে লক্ষ লক্ষ কৃষক। তাই এখন নতুন সাম্প্রদায়িক পলিসি নিয়েছে মোদি। প্রাথমিক ধাপ ছিলো ভুয়া ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ আর এবার ‘পুলওয়ামা অ্যাটাক’। অভিযোগ দুটোই মোদির বানানো এবং দুই ক্ষেত্রেই পাকিস্তানবিরোধী উস্কে দিয়ে সামনে লাকড়ি হিসেবে দিয়ে দেয়া হয় সংখ্যালঘু মুসলমানদের। গুজরাটে আগুন দেয়া হয়েছিলো ট্রেনে, এবার বোমা বিষ্ফোরণ করা হলো বাসে।  নীতিও এক: “উস্কে দাও সাম্প্রদায়িকতা, নিয়ে নাও ভোট”। সেটাই দেখা যাচ্ছে, কথিত পুলওয়ামা অ্যাটাকের পর যায়গায় যায়গায় নিরীহ মুসলমানের উপর হামলা হচ্ছে। মুসলমানদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙ্গা হচ্ছে, মুসলিম নারীদের হোস্টেলের সামনে হিন্দু পুরুষরা জড়ো হচ্ছে। ভুয়া ফেসবুক স্ট্যাটাস অজুহাত করে মুসলমানদের পিটিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে লাইক কামানো হচ্ছে। যদি ধরেও নেই, ঐ হামলায় পাকিস্তান দায়ী, তবে যে ভারতীয় মুসলমানরা ৭০ বছর আগে পাকিস্তান ছেড়ে ভারতের সাথে যোগ দিয়েছে, তাদের দেশাত্ববোধকে কেন নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ করা হবে ? কেন তাদের উপর হামলা করা হবে ?? তবে খালিস্তান আন্দোলনের জন্য শিখদের, বঙ্গসেনা আন্দোলনের জন্য হিন্দুদের, আর সেভেন সিস্টারসের স্বাধীনতার জন্য কেন উপজাতি গোষ্ঠীগুলোকে কেন দেশাত্ববোধের পরীক্ষা দিতে হয় না ? কেন তাদের উপর দেশজুড়ে হামলা হয় না ??
মোদির মুসলিমবিরোধী সস্তা সাম্প্রদায়িক ভোটের রাজনীতি নিয়ে কিছু বলার নাই তবে, এতটুকু বলতে পারি, সারা বিশ্বের মুসলমানরা যদি একটু চেষ্টা করতো, তবে নতুন করে তৈরী হতে থাকা গুজরাট দাঙ্গা বন্ধ করা কষ্টের কিছু ছিলো না। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স গ্রহণকারী দেশ হয়েছে ভারত। ঐ বছর  প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার প্রবাসী ভারতীয়রা তার দেশে পাঠায়, যা বিশ্বের শীর্ষ। যে সব দেশ থেকে ভারতীয় প্রবাসীরা টাকা পাঠায় তার শীর্ষ ১০টির মধ্যে ৭টি মুসলিম দেশ। সংযুক্ত আরব আমিরাত (১ম), সৌদি আরব (৩য়), বাংলাদেশ (৪র্থ), কুয়েত (৫ম), কাতার (৬ষ্ঠ), ওমান (৮ম), বাহরাইন (৯ম)। তাই মুসলিমবিরোধী সহিংসতা হওয়ায় মুসলিম দেশগুলো যদি একটু বিবৃতি দিতো তবে পাতলা পায়খানা হয়ে যেতো ভারতের।

আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিবেচনায় অবশ্য ভারতের উপর মুসলিম রাষ্ট্রীয়গুলোর চাপ আছে। যেমন পাকিস্তান সফরে থাকা বিন সালমান ভারত না গিয়ে দেশে ফেরত যাওয়ায় একটু হলেও চাপে পড়েছে ভারত। আবার ২০১৭ সালে ভারত সফরের সময় তুরষ্কের প্রেসিডেন্ট তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইপ এরদোয়ান কাশ্মীর ইস্যুতে বহুপাক্ষিক আলোচনার প্রস্তাব দিলে সে সময় চাপে পড়ে মোদি।  কিন্তু এগুলো সব কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের চাপ। কিন্তু মোদি মুসলিমবিরোধী সেন্টিমেন্ট সৃষ্টি করে যে লোকাল পর্যায়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে সেটা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে মুসলিম সংগঠন বা রাষ্ট্রগুলো কোন প্রেসার তৈরী করে না।

আপনি যদি বলেন, এক দেশ কি অন্য দেশের জনগণের (শুধু ধর্মীয় ভিত্তিতে) নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলতে পারে ?
তবে বলবো, অবশ্যই পাবে।
২০১৬ সালে নাসিরনগর কথিত হামলার সময় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ টুইট বার্তায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং 'ঢাকাস্থ হাইকমিশনারকে প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনার সাথে দেখা করতে বলে। পরবর্তী কালে ভারতের কথা রাখতে নাসিরনগরের ঘটনায় বিচারের নাম দিয়ে ব্যাপক ধরপাকড় করায় ভারত খুশি হয় এবং ২০১৮ সালে ১৯শে জুলাই রাজ্যসভায় দাড়িয়ে সুষমা বলে বাংলাদেশ তার নির্দেশ অনুসারে কাজ করেছে বলে জানায়। (https://bbc.in/2XaEYS5, https://bit.ly/2V4Kwvu)
ভারত যদি অন্যদেশের হিন্দুদের নিরাপত্তার জন্য কথা বলতে পারে, তবে অন্য দেশের মুসলমানরা কেন ভারতীয় মুসলমানদের জন্য কথা বলতে পারবে না ??

মোদি এ ঘটনা নিজেই বানিয়েছে এটা ধিরে ধিরে তথ্যের ভিত্তিতেই প্রমাণ হচ্ছে। যে আদিল আহমেদ দারকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে পুলওয়ামা অ্যাটাক’ এর জন্য, সেই আদিল নাকি ২ বছরে ৬ বার পুলিশ হেফাজতে ছিলো। ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনী আদিলকে সুইসাইড বোম্বার হিসেবে গড়ে তুলেছিলো কি না, সেটাই এখন সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। (https://bit.ly/2TSmVy8)
 তাছাড়া পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতাও বলেছে, সরকার ৮ই ফেব্রুয়ারী নিজেও জানতো এ ঘটনা ঘটবে, তবুও কেন যেতে দিলো ?? (https://bit.ly/2Gx26VL)

বিশ্ব এখন আর একমুখী নেই, যে কেউ যা ইচ্ছা তাই করবে। সবাই সবার কাছে কিছু না কিছু বিষয়ে ধরা। মোদি মিথ্যা ঘটনা ঘটিয়ে স্থানীয় মুসলমানদের উপর টর্চার করার যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটা এখন কারো অজানা নয়।  সারা বিশ্বের মুসলমানদের উচিত এই নিকৃষ্ট ঘটনা নিয়ে একট্টা হওয়া এবং ভারতীয় মুসলমানদের পক্ষ নিয়ে এর বিরুদ্ধে শক্ত বিবৃতি দিয়ে প্রতিবাদ করা।

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

সৌদি আরবের সাথে সেনাচূক্তি, বাংলাদেশের লাভক্ষতির হিসেব-নিকেষ


আগামী ১৪ই ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ ও সৌদি সেনাবাহিনীর মধ্যে একটি চূক্তি সম্পাদিত হতে যাচ্ছে।  এ চূক্তি হলে ইয়েমেন সীমান্তে বাংলাদেশের ১৮০০ সেনা যাবে, যুদ্ধকবলিত এলাকায় মাইন তুলতে।   (https://bit.ly/2Bw6LmQ )
উল্লেখ্য ২০১৭ সালে সৌদি আরবের নেতৃত্বে ৩৪টি মুসলিম দেশের জোটে বাংলাদেশের যোগ দেয়ার সময় বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বলেছিলো, “'মক্কা মদিনা আক্রান্ত হলে সৌদি আরবে সৈন্য পাঠাবে বাংলাদেশ”।
(https://bbc.in/2titONp)
মক্কা-মদীনায় কোন কিছু হলে সৈন্য পাঠাতে আমি দোষের কিছু দেখি না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, নতুন এ চূক্তির মাধ্যমে মাইন তোলার নাম করে বাংলাদেশে এখন সৌদি-ইয়েমেন যুদ্ধে জড়িয়ে যাচ্ছে।   কিন্ত হঠাৎ করে কেন এই সিদ্ধান্ত ? এতে কি বাংলাদেশ লাভবান হবে নাকি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সেসব নিয়ে আলোচনা করতে আমার এ পোস্ট।

এক্ষেত্রে সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া নির্বাচন নিয়ে একটু আলোচনা করার দরকার আছে। এবার নির্বাচনের আগে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে লবিং করতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে পাল্টা আওয়ামীলীগকে দেখা যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লবিগুলোর সাথে যোগাযোগ করতে। বিশেষ করে, নির্বাচনের ঠিক আড়াই মাস পূর্বে শেখ হাসিনা সৌদি আরব যায় এবং বাদশাহ সালমানের ছেলে বিন সালমানের সাথে দেখা করে (https://bit.ly/2Eu2dkP)। আর বিন সালমানের রয়েছে ট্র্যাম্প জামাতা জারেড কুশনারের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক। এবং এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই, বিন সালমানের লবি অন্যান্য লবি থেকে অধিক শক্তিশালী লবি হবে।

নির্বাচনের আগ মুহুর্তে শেখ হাসিনার সাথে বিন সালমানের সাক্ষাৎ আমাকে ভাবিয়েছিলো, এবার নির্বাচনে বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টের মার্কিন নেটওয়ার্ক ঠিক মত কাজ করবে তো ?
সেটাই কিন্তু প্রমাণ হয়, নির্বাচনে  ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে আমেরিকান নেটওয়ার্ক ঠিকমত কাজ করে নাই, যার সুযোগ আওয়ামীলীগ ফাঁকা মাঠে গোল দিয়ে দেয়।  এ কারণে অনেকে এবারের নির্বাচনকে আওয়ামীলীগের চাওয়ার থেকে বেশি পাওয়া বলে মনে করেন, কেউ কেউ “নকল করে পরীক্ষা দিতে গিয়ে জিপিএ-৬” বলে বর্ণনা করেছে।

যদি সত্যিই আওয়ামীলীগ মার্কিন লবি ধরতে সৌদি আরবকে ব্যবহার করে, তবে স্বাভাবিক একটা প্রশ্ন আসে, নির্বাচনে জয়লাভ করলে আওয়ামীলীগ সৌদি আরবকে কি প্রতিদান দেবে ?
তবে কি আওয়ামীলীগের নির্বাচনে জয়লাভ করতে সহায়তা করার প্রতিদান হিসেবে সৌদির সাথে সামরিক চূক্তি বা ইয়েমেনে সৌদির পক্ষে সেনা পাঠাচ্ছে আওয়ামীলীগ ??

ইয়েমেন যুদ্ধে কে কে লড়ছে ? -

ইয়েমেন যুদ্ধ একটা জটিল সমীকরণ বিরাজ করছে।  এত জটিল হিসেব দিতে অনেক সময় লাগবে।  তবুও আন্তর্জাতিক রাজনীতির দৃষ্টিকোন থেকে যদি তাকাই তবে ৩টি পক্ষকে পাওয়া যায়-
(১) সৌদি আরব ও আরব আমিরাত- একপক্ষ
(২) ইরান –দ্বিতীয় পক্ষ
(৩) কাতার, সুদান ও তুরস্ক – মধ্যপক্ষ

ইমেয়েন যুদ্ধ থেকে কাতার অবরোধ ঃ
ইয়েমেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে কাতার অবরোধের সূচনা। কাতারের সাথে অনেক পূর্ব থেকে ইয়েমেনের  হুতিদের ভালো সম্পর্ক ছিলো। কিন্তু হুতি ও সালেহদের মধ্যে ঐক্য হলে কাতারের সাথে হুতিদের সম্পর্কে অবনতি ঘটে। কিন্তু সালেহের হত্যার পর সেই ঐক্য নষ্ট হয়। তখন কাতার হুতিদের সাথে ফের সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করার চেষ্টা করে। এই ঘটনাটি ঘটলে রক্তক্ষয়ী ইয়েমেন যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটতে পারতো। কিন্তু হুতির সাথে কাতারের সম্পর্ক সৌদি-আরব আমিরাতের স্বার্থে বিঘ্ন ঘটায়। তাই সৌদি-আরব আমিরাত এর কঠোর বিরোধীতা করতে থাকে, একপর্যায়ে তারা কাতারের বিরুদ্ধে আবরোধ আরোপ করে। কিন্‌তু তুরষ্ক কাতারের পাশে এসে দাড়ালে, সৌদি-আমিরাত অবরোধ আরোপ করে সফল হতে পারেনি। যেহেতু ইয়েমেন যুদ্ধের সাথে কাতার-অবরোধ ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তাই বাংলাদেশ যদি সৌদি-আমিরাতের পক্ষ নেয়, তবে আলটিমেটলি বাংলাদেশের অবস্থান হবে কাতার-তুরষ্কের বিপক্ষে।

সৌদির সাথে সামরিক চূক্তি করলে লাভ-ক্ষতি কি হবে ?
ক) এমনিতেই ইয়েমেন যুদ্ধ লেজে গোবরে অবস্থায় পৌছে গেছে। কয়েকদিন আগে মরোক্কোও সৌদি-আরব আমিরাতের পক্ষ থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছে।  এ অবস্থায় সৌদি-আরব আমিরাতের পক্ষ নিয়ে ইয়েমেন ইস্যুতে যাওয়া মানে ইচ্ছাকৃত পচা শামুকে পা কাটতে যাওয়া।  
খ) ইয়েমেন যুদ্ধ সৌদি-আরব আমিরাত-কাতার-তুরষ্কের মধ্যে অভ্যন্তরীণ জটিল রাজনীতি, ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তিত হচ্ছে। এই জটিল পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশ যদি প্রবেশ করে তবে সবকিছুকে সামাল দেয়ার ক্ষমতা কি আওয়ামী সরকারের আছে ?
গ)ইয়েমেন ইস্যুতে বাংলাদেশ জড়িয়ে গেলে কিছু সময় পরে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় পক্ষ-বিপক্ষ তৈরী হবে। যদি সৌদি-আরব আমিরাতের পক্ষে যায় তবে কাতার-তুরষ্ক-সুদানের বিরুদ্ধে যাবে। আর মাঠে নেমে সরে গেলে সৌদি-আরব আমিরাতের  সাথে সম্পর্ক খারাপ হবে। এটা আমাকে-আপনাকে মানতেই হবে বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বড় অংশ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্স। এই যে আমরা যেচে গিয়ে এই জটিল সমীকরণের মধ্যে ঢুকছি, এর ফলাফল আলটিমেটলি আমাদের ১ কোটি শ্রমিকের জীবিকা দিয়ে খেসারত দিতে হয় কি না, সেটা নিয়ে আগাম চিন্তা করার দরকার আছে।
ঘ) বাংলাদেশ এতদিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক রাজনীতি (ভারত-চীন) মধ্যে অধিকমাত্রায় আবর্তিত হয়েছে, যা অবশ্যই বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য বড় বাধা।  এরমধ্যে অযথাই যদি নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যের জটিল রাজনীতির (সৌদি-কাতার-ইরান) মধ্যে অনুপ্রবেশ করে, তবে তা বাংলাদেশকে আরো পিছন থেকে আটকে ধরবে, যা দেশকে আরো পিছিয়ে দেবে, এতে কোন সন্দেহ নাই।

সবশেষে বলবো,
আওয়ামীলীগ অবৈধ নির্বাচনে অবৈধভাবে জয়লাভ করেছে, এর খেসারত কেন বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপরাধ শ্রমিক ও বাংলাদেশের অর্থনীতিকে দিতে হবে ?  তাছাড়া আওয়ামী সরকার সব সময় প্রচার করে, বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতি হচ্ছে, “কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ নয় সবার সাথে বন্ধুত্ব”। এই নীতি নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর জটিল সমীকরণে পক্ষ-বিপক্ষ কখনই মিল খায় না। এ অবস্থায় অযথাই বাংলাদেশ চূক্তি করে কেন মুসলিম দেশগুলোর শত্রু-মিত্র হবে ?  সৌদির সাথে তাই এ চূক্তি করা কখনই বাংলাদেশের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে না বলে মনে করি।
===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

Friday, October 19, 2018

বাংলাদেশ নদীর পানির জন্য ভারতের উপর নির্ভরশীল কিন্তু নৌপথের দিক থেকে বাংলাদেশের উপর নির্ভরশীল ভারত


কিন্তু উল্টাভাবে যদি চিন্তা করেন, তবে ভারতের নৌপথগুলো সমুদ্র সংযোগ করতে ভারত বাংলাদেশের উপর নির্ভরশীল।
ম্যাপের দিকে ভালোভাবে খেয়াল করুন, ভারতের ভেতর দিয়ে আসা বড় নদীগুলো বাংলাদেশ ছেদ করে সমুদ্রপথে মিশেছে। 

তারমানে আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য সমুদ্রপথে যদি ভারত কোন মালামাল আনা-নেয়া করতে চায় এবং সেটা যদি স্বল্পমূল্যের নৌপথ ব্যবহার করে ভারতের ভেতর ছড়িয়ে দিতে চায়, তবে বাংলাদেশ ভিন্ন ভারতের আর কোন উপায় নাই।
তবে, ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন, বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেষে হুগলি নদীও ভারতের ভেতর দিয়ে বঙ্গপোসাগরে মিশেছে। যেখানে অবস্থিত কলকাতা বন্দর। কিন্তু কলকাতা বন্দরের বর্তমানে অনেক সমস্যা তৈরী হয়েছে, বিশেষ করে হুগলি নদীতে অসংখ্য নদীবাক তৈরী হয়েছে যেগুলো বড় বড় জাহাজ চলাচলের জন্য অসুবিধাজনক। মূল কথা হলো, গঙ্গা নদীর মূল অংশযুক্ত হয়েছে পদ্মার সাথে, হুগলি নদী সে হিসেবে শাখা নদী। তাই সমুদ্র পর্যন্ত পৌছাতে বাংলাদেশের ভেতর নদীপথের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে ভারতকে।

এখানে একটু আন্তর্জাতিক রাজনীতি বুঝার দরকার আছে।
চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু আমেরিকা চাচ্ছে চীনের এই প্রভাব দমন করতে। চীনের প্রভাব বিস্তারের মূল হাতিয়ার হচ্ছে ব্যবসা । চীন তার বিপুল জনগোষ্ঠীকে ব্যবহার করে অতি সস্তায় পণ্য উদপাদন করে বিশ্বজুড়ে সরবরাহ করছে, এতে সারাবিশ্ব চীনা পণ্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনাদের এই প্রভার হ্রাস করতে বেছে নিয়েছে ভারতকে। ভারতেরও রয়েছে শতকোটি জনসংখ্যা, রয়েছে সন্তায় শ্রম। ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতে প্রচুর পরিমাণে ইনভেস্ট করছে, তৈরী হচ্ছে অসংখ্য ইপিজেড। এর মাধ্যমে পন্য উৎপাদন ও সরবরাহে চীনের বিকল্প হিসেবে খুব শিঘ্রই ভারতকে দাড় করাতে চাইছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ব্যবসা বাণিজ্যের পরিবহন সহজ করতে সমুদ্র বন্দর ও নদী পথ ব্যবহারের বিকল্প নাই। সেদিক বিবেচনা করলে চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ভারতকে দাড় হতে বাংলাদেশের সহযোগীতা চাই ভারতের।

আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, গত সপ্তাহে বাংলাদেশের মন্ত্রীসভায় একটি চূক্তির খসড়া অনুমোদন হয়েছে, যে চূক্তি অনুসারে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করে পণ্য আমদানির সুযোগ পাচ্ছে ভারত।(https://bit.ly/2pvVywb)
শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের নৌপথ ব্যবহারের বুদ্ধি ভারতের অনেক আগে থেকে। এবং কয়েক বছর আগেই সে রাস্তা পরিষ্কার করতে বাংলাদেশের সাথে ভারত একটি চূক্তি করেছে ৪৭০ কিলোমিটার নৌপথ ড্রেজিং করার জন্য, যার ৮০% খরচ দেবে ভারত এবং ২০% খরচ দেবে বাংলাদেশ। (https://bit.ly/2yMQGt2)

একটি কথা বলতেই হয়, বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে তৈরীকৃত উত্তেজনার মূল কারণ হলো নদী। ভারত বাংলাদেশের সাথে অভিন্ন নদীর ৫৪টি মধ্যে ৪৭টি বাধ দিয়েছে (https://bit.ly/2zqb0Q0)। এতে নদীগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। নদী বাচাও আন্দোলনের ভাস্য অনুযায়ী আজ থেকে ৪৭ বছর আগে বাংলাদেশের নদীর সংখ্যা ছিলো ১৩০০। কিন্তু বর্তমানে কাগজে কলমে নদী আছে মাত্র ৩০০, যার বেশিরভাগের অবস্থা সংকটাপূর্ণ। (https://bit.ly/2QVah0i)
আমরা শুনেছি, বিজেপি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছে, আওয়ামীলীগ আর ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্বর্ণযুগে পৌছেছে (https://bit.ly/2PZq1xO)। কিন্তু তারপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই তিস্তার পানি নিয়ে কোন চূক্তি করতে পারেনি এবং আক্ষেপ করেছে।(https://bit.ly/2pxw5mc)

তাহলে ভারত যখন পানি ছাড়তে বিন্দুমাত্র রাজী হচ্ছে না, তখন পানির বাকিঅংশটুকু ব্যবহার নিয়ে কেন বাংলাদেশ দরকষাকষিতে যাচ্ছে না ? তারা যদি পানি না ছাড়ে, তবে আমরা তাদের সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করতে দেবো কেন ? আমরা কেন বলছি না, “আগে পানি ছাড়ো, তারপর সমুদ্র বন্দর ব্যবহার ।” কিন্তু সেটা না করে কোন যুক্তিতে আওয়ামীলীগ সরকার মংলা ও চট্টগ্রাম ব্যবহারের অনুমুতি দিয়ে দিলো ?

আমরা জানি, সারা বিশ্বজুড়ে সবাই সবার ভৌগলিক অবস্থান নিয়ে প্রতিপক্ষ থেকে অধিকার বা সুবিধা আদায় করে নেয়। যেমন, তুরষ্কের আছে ‘বসফরাস প্রণালী’। এর মধ্য দিয়ে দিয়ে ইউরোপ-এশিয়ার মধ্য দিয়ে সংযোগ স্থাপন হয়েছে। ইউরোপ যদি তুরষ্কের সাথে বিরোধ হয়, তবে তুরষ্ক বসফরাস প্রণালী বন্ধ করে তার দাবী আদায় করে নেয়। একইভাবে ‘হরমুজ প্রণালী’ দিয়ে আমেরিকা-সৌদির তেল বাণিজ্য চাপের মুখে রাখে ইরান। এর কারণে ইরানের বিরুদ্ধে একেবারে এক্সট্রিম পর্যায়ে যেতে পারে না আমেরিকা। তারা যখন তাদের ভৌগলিক অবস্থান দিয়ে প্রতিপক্ষ থেকে সুবিধা আদায় করে নিতে পারে, তাহলে বাংলাদেশ কেন সমুদ্র বন্দর সুবিধা দিয়ে নদীর পানি আদায় করে নিতে পারবে না ? কেন পানি না আদায় করে মংলা-চট্টগ্রাম বন্দরের সুবিধা ছেড়ে দেয়া হবে ??

আমার মনে হয়, সরকারের উচিত বিষয়টির দিকে কঠোর দৃষ্টিপাত দেয়া। আর জনগণেরও উচিত, তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা, যেন শতভাগ পানি আদায় করে তারপর বন্দর ব্যবহার করতে দেয়া হয় এবং অবশ্যই সেটা আন্তর্জাতিক শর্ত ও খরচ মেনে।


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

Thursday, September 20, 2018

এবারের নির্বাচনে শেখ হাসিনা ভারতের উপর কতটা আস্থা রাখতে পারবে ?


এবারের নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকারের উপর শেখ হাসিনা কতটা আস্থা রাখতে পারে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। শেখ হাসিনা সরকারের মূল ভিত্তি রুশব্লকের ভারতীয় কংগ্রেস, এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু মার্কিনপন্থী বিজেপি সরকার আওয়ামীলীগের কতটুকু সহায়ক হবে তা নিয়ে যথেষ্ট ভাববার বিষয় আছে।

আমেরিকা এ অঞ্চলে চীনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলতে চায়। কিন্তু এ অঞ্চলে সরাসরি আসা আমেরিকার জন্য কঠিন। তাই এ অঞ্চলে আমেরিকা ভর করেছে ভারতের বিজেপি’র উপর। আমেরিকাই ভারতকে এ অঞ্চলে আঞ্চলিক সুপার পাওয়ার হিসেবে গড়ে তুলবে, যারা চীনের শক্তিকে খর্ব করবে। সে দিক বিবেচনা করলে ভারত এখন চীনের বিপরীতে আঞ্চলিক শক্তি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। কিন্তু আমেরিকার মূল অংশের সাথে বিরোধ আওয়ামী সরকারের। সে দিক বিবেচনা করলে বাংলাদেশ এখন ভারতের বিজেপি’র বাবা’র শত্রু।

ভারতীয় রাজনীতির দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই, বিজেপি কংগ্রেসকে চারদিক দিয়ে ঘিরে ধরছে। কংগ্রেসকে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব দিক থেকে ফেলে দিতে তৎপর বিজেপি। ভারতীয় কংগ্রেস যদি আওয়ামীলীগের বাবা হয়, তবে সেদিক বিবেচনা করলে বিজেপিও আওয়ামীলীগের বাবা’র (কংগ্রেস) শত্রু।

বাবার শত্রু হলেও আওয়ামীলীগ প্রথম থেকে চেয়েছে বিজেপি’র সাথে সম্পর্ক সুন্দর রাখতে, এটা-ওটা দিয়ে বুঝ দিয়ে বিজেপিকে ঠাণ্ডা রাখতে। এজন্য দেশীয় সম্পদ, চুক্তি অনেক কিছু দিয়ে বিজেপির মন জয় করতে চেয়েছে। কিন্তু যত কিছুই দিক, বাবা আমেরিকার কথা রাখতে বিজেপি কতক্ষণ আওয়ামীলীগের সাথে নরম থাকে সেটাও দেখার বিষয়। তাছাড়া আওয়ামীলীগের থেকেও ভালো কোন অপশন আছে, তবে বিজেপি সে সুযোগ নেবে না কেন ?

বিজেপির সাথে বিএনপি’র তারেক জিয়া প্যানেলের সম্পর্ক খারাপ, কিন্তু ড. কামালের সাথে মোটেও সম্পর্ক খারাপ না, বরং ভালো। তাই বিএনপি যদি কামাল হোসেনের লিডিং এ যায় এবং বাবা আমেরিকার যেহেতু সেখানে পূর্ণ সমর্থন আছে, তখন সন্তান বিজেপি’র সেখানে সমর্থন জানানোই স্বাভাবিক।

একটি কথা মনে রাখতে হবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে চীনের ক্ষমতা খর্ব করার জন্য ‘পিভট টু এশিয়া’ পলিসি নিয়েছে, আর ভারতের বিজেপি সরকার সেই নীতি বাস্তবায়ন করতে নিয়েছে ‘লুক ইস্ট’ পলিসি। আর ‘পিভট টু এশিয়া’ আর ‘লুক ইস্ট’ পলিসি উভয় বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশে মার্কিনপন্থী সরকার জরুরী। চীনের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড ইস্যুতে ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগ-বিজেপি বিরোধ স্পষ্ট দেখা গেছে।

এটা ঠিক, রুশব্লকের আওয়ামী সরকার হয়ত ভারতবিদ্বেষী বাংলাদেশীদের বকাঝকা দিয়ে চূক্তির নামে ভারতকে অনেক কিছু দেবে, কিন্তু আমেরিকা তো ভারতকে পুরো অঞ্চলের খলিফা বানিয়ে দেবে। সুতরাং ১০ টাকার জন্য ১০০ টাকা কেন হাত ছাড়া করবে ভারত ? তাছাড়া পিভট টু এশিয়া সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশকে নিজের ৩০ তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে ভারত। পুরোটার ক্ষমতা যখন হাতছানি দিচ্ছে, তখন আওয়ামীলীগ থেকে খণ্ডিত সুযোগ সুবিধা নিয়ে লাভ কি ??

তাই স্বাভাবিক হিসেবে, এবারের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ভারতের বিজেপি সরকারের উপর ভরসা রাখা তো দূরের কথা বাস্তবদৃষ্টিতে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবাই শ্রেয়।


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

Wednesday, September 19, 2018

খবর ও মন্তব্য :

খবর ও মন্তব্য :
(১) খবর : বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সর্বকালের সর্বসেরা প্রবৃদ্ধি অর্জন : মাথাপিছু আয় ১৭৫১ ডলার (https://bit.ly/2xtkEzl)
মন্তব্য : দাড়ান, দাড়ান। মাথাপিছু আয় ১৭৫১ ডলার বা ১৪৫৩৩৩ টাকা দেখিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করে লাভ হবে না। আসুন আরেকটু হিসেবে কষে নেই-
বর্তমানে বাংলাদেশে মাথাপিছু ঋণ ৬০০০০ টাকা। (https://bit.ly/2JpG2yc)
তাহলে প্রকৃত মাথাপিছু আয় হিসেব করতে ঋণ হিসেব করা জরুরী।
ঋণ বাদ দিলে হবে, ১৪৫৩৩৩ - ৬০০০০ = ৮৫৩৩৩ টাকা ।
এবার আসুন, বাংলাদেশে ৫% ধনীর আয় হচ্ছে মোট আয়ের ২৮% (https://goo.gl/xDmtsy)
সেটা বাদ দিয়ে বাকি ৯৫% সাধারণ জনগণের মাথাপিছু আয় হলো = ৬০ হাজার টাকা বা ৭২২ ডলার
স্বাভাবিকভাবে তাই মাথাপিছু আয় ধরা যায় ৭২২ ডলার হিসেব করা উচিত, অতিরিক্ত ১ হাজার ডলার দেখানোর দরকার নাই।
(২)
খবর : দেশে শিগগিরই অনেক পরিবর্তন হবে: মওদুদ (https://bit.ly/2QC4Raa)
মন্তব্য : পরিবর্তন অবশ্যই হবে। তবে সেই পরিবর্তনে যেন খোদ বিএনপি নিজেই অস্তিত্ব হারিয়ে ইতিহাসের পাতা থেকে ভ্যানিশ না হয়ে যায়। বিএনপি নেতৃত্বে থেকে জোট করুক সমস্যা নাই। কিন্তু ড. কামালের অধিনে থেকে বিএনপি নির্বাচনে গেলে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করবে বিএনপি। বিপুল জনসমর্থনযুক্ত বিএনপির মাথায় কাঠাল ভাঙ্গবে তারা, পুরো দেশজুড়ে সাংগঠনিক কাঠামোকে ব্যবহার করবে, কিন্তু দিন শেষে বিএনপির হাতে লোটা ধরিয়ে দিবে, এটা নিশ্চিত থাকতে পারে।
(৩)
খবর : আটকে পড়া বাঙালিদের নাগরিকত্ব দেবে পাকিস্তান (https://bit.ly/2NlSiSw)
মন্তব্য : খুব ভালো কথা। কিন্তু আটকে পড়া পাকিস্তানীদের (বিহারীদের) জন্য কি করেছিলো বাংলাদেশ ? কেন তাদের সঠিক দেখাশোনা করেনি ? কেন মেইনস্ট্রিমে মিশিয়ে দেয়নি ? যার ফলশ্রুতিতে দরিদ্র পাকিস্তানীরা (বিহারীরা) বিপথে গিয়েছে। আজকে মেইনস্ট্রিমে মিশতে না পারায় দরিদ্রের কারণে মদ-গাজা ইয়াবা ব্যবসা আর সন্ত্রাসীপনা করে বিহারীরা। একইসাথে বিহারী ক্যাম্পগুলোকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে সম্রাজ্যবাদীদের বিভিন্ন সংস্থা (জাতিসংঘ)। রাষ্ট্র যখন তার ভেতরে অবস্থান করা মানুষগুলোর সাথে বৈষম্য করে তখন বিদেশীরা তো সুযোগ নেবেই। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ভেতরে পাকিস্তানীরা ছিলো দুই ভাগে বিভক্ত। ধনী ও দরিদ্র। ধনীরা আটকানোর পরও সামলে উঠে হয়েছে ক্রিকেটার তামিম ইকবাল, আর গরীবরা হয়েছে মুহম্মদপুরের জেনেভাক্যাম্পের ইয়াবা ব্যবসায়ী।
(৪) এশিয়ার সবচেয়ে কম উদ্ভাবনশীল রাষ্ট্র বাংলাদেশ (https://bit.ly/2Oz3Myr)
মন্তব্য : ঠিকই তো আছে। বাংলাদেশ মেধাবীদের জন্য কি করেছে ?
সব তো করেছে কোটাধারীদের জন্য। কোটার যখন রাজত্ব, তখন মেধাবীরা ড্রেইন করে চলে যাচ্ছে বিদেশে। বাংলাদেশের মেধাবীরা গুগল, ইউটিউব, অ্যাপল, নাসা চালাচ্ছে, আর বাংলাদেশ তখন ভারত-চীনের ইঞ্জিনিয়ার ভাড়া করে এনে ফ্লাইওভার-সেতু বানাচ্ছে। research and development (R&D) লিস্টে অনেক হাভাতে দেশের নাম থাকলেও বাংলাদেশের যায়গাই হয়নি। (https://bit.ly/2dLjLeE)
(৫)
খবর: ফলমূল-শাকসবজি-মাছকে বিষমুক্ত করতে কার্বন গ্রিন (https://bit.ly/2Mplanv)
মন্তব্য : ফলমূল বা শাকসবজী ফরমালিন বা রাসায়নিক সারের ক্রিয়ামুক্ত করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখা। পানিতে ভিজিয়ে রাখলেই এই সব রাসায়নিক উপাদান এমনিতেই চলে যায়। কিন্তু এর মধ্যে মানুষের আবেগকে কাজে লাকিয়ে ‘শক্তি রঞ্জন পাল’ নামক এক হিন্দু কর্পোরেট ডাক্তার ‘লাইফ অ্যান্ড হেলথ লিমিটেড’ নামক কোম্পানির নাম দিয়ে ‘কার্বন গ্রিন’ নামক একটি প্রডাক্ট মার্কেটে আনছে। কার্বন গ্রিনে থাকে ৮৫% সোডিয়াম বাই কার্বনেট বা খাবার সোডা আর ১৫% থাকে অ্যাক্টিভেটেড কার্বন। এই অ্যাক্টিভেটেড কার্বন এর কিন্তু অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। অ্যাক্টিভেটেড কার্বন ব্যবহারে ডাইরিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা বমি হতে পারে। আর কার্বন যদি ভালোভাবে রিফাইন না করা হয়, তবে তা ব্যবহারে ক্যান্সারও হতে পারে। তাই পানি দিয়ে ধুয়েই ফলমূল শাক সবজীর ফরমালিন ও সার দূর করুন, অযথা খরচ করে কার্বন গ্রিন ব্যবহারের দরকার দেখি না।
[অনেকদিন না লেখায়, লেখা অগোছালো। চেষ্টা করছি গুছিযে নিতে। সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখিত]

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

Wednesday, September 5, 2018

অ্যানালিস্ট ক্লাস -২ : জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি কিভাবে সম্পর্কিত হয় ?


জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির মধ্যে সম্পর্ক ধরতে হলে প্রথমে আপনাকে বুঝতে হবে লোকাল (থানা বা ইউনিয়ন পর্যায়ে রাজনীতি) রাজনীতির সাথে জাতীয় রাজনীতির সম্পর্ক। লোকাল রাজনীতির সাথে জাতীয় রাজনীতির সম্পর্ক যেমন, জাতীয় রাজনীতির সাথে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ঠিক সেকরম। একটি সম্পর্ক বুঝলে, অন্যটি বোঝা সহজ।

বিষয়গুলো খেয়াল করুন:

(১) জাতীয় রাজনীতিতে যেমন দুটি বড় দল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে (উদাহরণ আওয়ামীলীগ-বিএনপি), ঠিক তেমনি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দুটি বড় ব্লক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একটি মার্কিন ব্লক, অন্যটি রুশ ব্লক।

(২) লোকাল রাজনীতি করা একজন চেয়্যারম্যান, তার এলাকায় হয়ত খুব জনপ্রিয় হতে পারে। কিন্তু জাতীয়ভাবে তার কোন অবস্থান নেই। জাতীয়ভাবে আসতে হলে ঐ চেয়ারম্যানকে জাতীয় রাজনৈতিক দল যেমন- আওয়ামীলীগ বা বিএনপি’র পরিচয়ে আসতে হবে। তখন যদি তাকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়, “অমুক এলাকার আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান বা অমুক এলাকার বিএনপির চেয়ারম্যান। তাহলে জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতিবিদরা তাকে সহজেই চিনতে পারে। ঠিক তেমনি, বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ যখন জাতীয় পর্যায়ে রেখে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যায়, তখন যদি তাকে বলা হয় আওয়ামীলীগ/বিএনপির নেতা। তবে কিন্তু চেনা যায় না। কারণ আন্তর্জাতিক রাজনীতির পরিমণ্ডলে আওয়ামীলীগ বা বিএনপির কোন অবস্থান নেই । তখন ঐ রাজনীতিবিদকে যোগ দিতে হয় আমেরিকা বা রাশিয়ান ব্লকে। তখন তার পরিচয় হয় অমুক দেশের রাশিয়ান বা মার্কিন ব্লকের সদস্য। যেমন: ড. কামাল হোসেন বাংলাদেশে মার্কিন ব্লকের সদস্য।

(৩) প্রশ্ন আসতে পারে, একজন জাতীয় রাজনীতিবিদের সাথে কেন বিদেশী ব্লকের সাথে সম্পর্ক তৈরী হয়?

উত্তর হবে: দুই দিকেরই স্বার্থ আছে। লোকাল রাজনীতির সাথে জাতীয় রাজনীতির সম্পর্ক বুঝলে, জাতীয় রাজনীতির সাথে আন্তর্জাতিক রাজনীতির সম্পর্ক বুঝা সম্ভব।

ক) একজন লোকাল চেয়ারম্যানের উপর লোকাল ও জাতীয় লেভেলে নানা রকম হুমকি বা থ্রেট থাকতে পারে। সেই থ্রেট এড়ানোর জন্য সে জাতীয়ভাবে যারা রাজনীতি করে তাদের সাথে গাট বাধে। তার সাথে জাতীয় রাজনীতিবিদদের সম্পর্ক থাকায় এলাকার প্রতিপক্ষরা তাকে কিছু করতে পারে না। পাশাপাশি লোকাল লেভেলে তার প্রভাব বিস্তার এবং প্রতিপক্ষ থেকে এগিয়ে থাকতে জাতীয় রাজনীতিবিদরা সর্বাত্মক হেল্প করে।
একইভাবে জাতীয় ক্ষেত্রে রাজনীতিবিদদের জন্য অনেক ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল থ্রেট থাকে। এজন্য তাকে বিদেশী রাজনীতিক ব্লকের সাথে সম্পর্ক মেইনটেইন করতে হয়, নয়ত তার প্রতিপক্ষরা তাকে শেষ করে দিতে পারে। পাশাপাশি জাতীয় লেভেলে প্রভাব বিস্তার ও প্রতিপক্ষ থেকে এগিয়ে থাকতে আন্তর্জাতিক লেভেল থেকে হেল্প করা হয়।
যেমন: শেখ হাসিনা রুশব্লক মেইনটেইন করে। এটা করে তারা ভারতীয় কংগ্রেসের মাধ্যম দিয়ে (ভারতের কংগ্রেস রুশব্লকের সদস্য)। এ কারণে ওয়ান ইলেভেনের সময় মাইনাস টু করে যখন আমেরিকা শেখ হাসিনাকে হটিয়ে দিতে চাইছিলো, তখন রুশব্লকের ভারতীয় কংগ্রেস শেখ হাসিনাকে রক্ষার জন্য সর্বাত্মক কাজ চালায়। পাশাপাশি প্রতিপক্ষ বিএনপি থেকে এগিয়ে থাকতে রুশব্লকের ভারতীয় কংগ্রেস সব সময় শেখ হাসিনাকে সাহায্য করে।

(খ) আবার, একজন লোকাল চেয়্যারমানের দ্বারা জাতীয় রাজনৈতিক দল বা রাজনীতিবিদ ফায়দা নেয়। যেমন জাতীয় দলগুলো লোকাল রাজনীতিবিদদের উপর নির্ভর করে লোকাল পর্যায়ে তাদের প্রচার-প্রসার বা স্বার্থ উদ্ধার করে। একই ঘটনা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিবিদদের মধ্যেও হয়। জাতীয় রাজনীতিবিদদের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক শক্তিগুলো ঐ দেশে তাদের মতবাদ/প্রচার প্রসারসহ বিভিন্ন স্বার্থ উদ্ধার করে।

৪) তবে অনেক ক্ষেত্রে দুইজনের ইন্টারেস্ট বা স্বার্থ এক নাও হতে পারে বা পরিবর্তিত হতে পারে। তখন স্বাভাবিকভাবে দেখা যায়, পরপষ্পর সমঝোতা করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়। তবে কিছু কিছু সেটা নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে দল পরিবর্তনের ঘটনা ঘটে। যেমন একসময় চীন সোভিয়েত ব্লকে ছিলো। এরপর দল পরিবর্তন করে মার্কিন ব্লকে যোগ দেয়। এরপর আবার মার্কিনব্লক ত্যাগ করে রুশব্লকে যোগ দেয়।

(৫) জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে কিছু আ্ঞ্চলিক দল থাকে, যাদের অবস্থান পুরো দেশব্যাপী বিস্তৃত নয়। যেমন: জাতীয় পার্টি, জাসদ ইত্যাদি। এ দলগুলোর পৃথক অবস্থান থাকলেও জাতীয়পর্যায়ে কোন ঘটনার সময় (উদহারণ:নির্বাচন) তারা বড়দলগুলোর (যেমন: আওয়ামীলীগ বা বিএনপি) সাথে জোট বাধে (আবার নিজেদের মধ্যেও জোট তৈরী করতে পারে)। অনুরূপ আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রেও এরকম আঞ্চলিক শক্তি থাকে। তারা আঞ্চলিক রাষ্ট্রগুলো নিয়ে জোট বাধে বা বড় শক্তিগুলোর সাথে জোট বেধে কাজ চালায়। যেমন: এশিয়ায় চীন রাশিয়ার সাথে, ভারত আমেরিকার সাথে। মিডলইস্টে সৌদি আরব আমেরিকার সাথে, ইরান রাশিয়ার সাথে জোট বাধে ইত্যাদি।

৬) উপরের দিকে যখন দুই দলের সাথে জোট হয়, তখন নিচের দিকেও জোট বা সু-সম্পর্ক লক্ষ্য করা যায়। আবার উপরের দিকে বিপরীতজোটে চলে গেলে নিচের দিকে শত্রুতা লক্ষ্য করা যায়। যেমন- আওয়ামীলীগ আর জাসদ যখন উপরের দিকে জোট বাধে তখন লোকাল পর্যায়ে আওয়ামীলীগ ও জাসদের চেয়্যারম্যানের মধ্যে জোট বা সুসম্পর্ক গড়ে। আবার আওয়ামীলীগ ও জাসদ প্রতিপক্ষ হয়ে গেলে লোকাল চেয়্যারম্যানদের মধ্যে সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়। অনুরূপ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কোন জোট হলে, জাতীয় পর্যায়ে ঐ ব্লকের সদস্যদের মধ্যে জোট বা বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। ভেঙ্গে গেলে শত্রুতা বা প্রতিপক্ষতা তৈরী হয়। যেমন: এক সময় আমেরিকা আর চীন একব্লকে ছিলো, তখন বাংলাদেশে মার্কিন ও চীনব্লকের রাজনীতিবিদদের মধ্যে জোট বা সুসম্পর্ক লক্ষ্য করা যায়। এখন চীন মার্কিন ব্লক ত্যাগ করে রুশ ব্লকে যোগ দিয়েছে। তাই এখন বাংলাদেশে চীন ও মার্কিনপন্থীদের মধ্যে শত্রুতা বা বিপরীতপক্ষতা লক্ষ্য করা যায়।

আজকের পাঠের পর আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন থাকে, কিংবা কোন অংশ যদি বুঝতে না পারেন, তবে তা কমেন্ট করুন। আমি সুযোগ-সময় করে তার উত্তর দিবো।

(১ম পর্ব- রিয়েল ফেস ও আর্টিফিসিয়াল ফেস-https://bit.ly/2PKbc2S)


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

Tuesday, September 4, 2018

বর্তমান ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্স, ঠিক যেন মেয়েদের চুলের বেণীর মত প্যাচের পর প্যাট লেগে গেছে


‘ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্স’ নিয়ে আলোচনা করতে গেলে আমার প্রথম মাথায় আসে মেয়েদের ‘চুলের বেণী’র কথা, চুলের বেণীতে যেমন একপ্যাচের পর অন্য প্যাচ দিয়ে লম্বা করা হয়, বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্সের অবস্থা ঠিক সেই চুলের বেণীর মত প্যাচের পর প্যাচ লেগে গেছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যখন আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা সিস্টেম তৈরী হলো, তখন সেই ‘নীতি’র আবির্ভাব। যুদ্ধ দিয়ে নয়, বরং পলিটিক্স বা কৌশলগত সিদ্ধান্ত দিয়ে হবে ঘায়েল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একদল অ্যানালিস্ট তৈরী করে যখন কাজ শুরু করলো, তখন রাশিয়া দেখলো তাদেরও একদল অ্যানালিস্ট লাগবে মার্কিন নীতিকে সামাল দিতে। শুরু হয়ে গেলো পাল্টাপাল্টি কূটনীতি-যুদ্ধ। দেয়া হলো এক প্যাচের উপর অন্য প্যাচ। প্যাচ লাগতে লাগতে এখন সেটা নারীদের বেণীর মত হয়ে গেছে। বর্তমান কালে আমরা যে প্যাচ দেখি সেটা বেনীর ৯ নম্বর প্যাচ, একটু বুদ্ধিমানরা হয়ত ৯ নম্বরটা খুলতে পেরে খুশি। কিন্তু সেই প্যাচের পর আরো ৮টি প্যাচ রয়ে গেছে। একটার পর একটা খুলতে পারলেই মূল যায়গায় যাওয়া সম্ভব।

ইহুদীরা উপরে বসে থাকে। এরপর দুই পক্ষ হয়ে একপক্ষ একদিকে মার্কিনব্লকের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে, আরেক পক্ষ অন্যদিকে রাশিয়ানব্লকের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে। ইহুদীরা দুইপক্ষ এক সাথে বসে চা খায়, কিন্তু নিচ দিয়ে প্যাচ লাগিয়ে ফায়দা নেয়। নিচ দিয়ে আমেরিকান ব্লকে অনেক রাষ্ট্র ও রাজনীতিক যোগ হয়, আবার রাশিয়ান ব্লকেও যোগ হয় অনেক রাষ্ট্র ও রাজনীতিক। বিশ্বব্যাপী চলে আন্তর্জাতিক রাজনীতি।

মুসলমানরা এখন বিশ্বজুড়ে নির্যাতিত ও নিপীড়িত। মুসলমানরা যদি এই অবস্থা থেকে উত্তরণ চায়, তবে মুসলমানদেরকে প্রথমে এই আন্তর্জাতিক রাজনীতি বুঝতে হবে, প্যাচগুলো ধরতে হবে। অনেক মুসলমান কিন্তু এই প্যাচের মধ্যে ঢুকে বিলীন হয়ে যায়। এটা হলে চলবে না। নিজেই পৃথক প্যাচ তৈরী করতে হবে আর সেই প্যাচে শত্রুদেরকে ঘায়েল করতে হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশের নির্বাচন সন্নিকটে। এ মুহুর্তে জাতীয় সেক্টরে আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিষয়গুলো অবলোকন করা সহজ। বাংলাদেশের জনগণ হয়ে গেছে ফুটবলের মত। একবার এক পক্ষ লাথি মেরে একদিকে পাঠায়, আরেকবার আরেকপক্ষ লাথি মেরে অন্যদিকে পাঠায়। দুই পক্ষ জনগণকে নিয়ে খেলে, কিন্তু জনগণের নিজের কোন অবস্থান নাই। সে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু নিজে কিছু করতে পারে না। বাংলাদেশের জনগণকে সেই জ্ঞান দিতে আমি অ্যানালিস্ট ক্লাস শুরু করেছিলাম। প্রথম ক্লাসে ‘ঘটনার আড়ালে এক্টরস বা প্লেয়ার কতজন’, ‘রিয়েল ফেস ও আর্টিফিসিয়াল ফেস’ টার্মগুলো এনেছিলাম। প্রথম ক্লাস নেয়ার পর দীর্ঘ ১ মাস ব্যক্তিগত কাজে আমি ব্যস্ত থাকায় সময় নিয়ে ‘অ্যানালিস্ট ক্লাস’ এর জন্য ফেসবুকে বসতে পারিনি। এজন্য অনেকে কষ্ট পেয়েছেন। একারণে আমি আন্তারিকভাবে দুঃখিত।

এবার ঠিক করেছি ২য় ক্লাসটি নিবো। ২য় ক্লাসটি হবে ‘জাতীয় রাজনীতির সাথে আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্ক রক্ষা করে কিভাবে ?’ ২য় ক্লাসের স্ট্যাটাস লেখা শেষ, খুব শিঘ্রই রিলিজ হবে।


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

Thursday, March 15, 2018

চিকেনস নেক, মুগরীর গলা বা শিলিগুড়ি করিডোরের নাম সবাই জানেন, যার দৈর্ঘ্য্ মাত্র ২১ কিলোমিটার।


চিকেনস নেক’র ভারতের অন্যতম দুর্বলতা ধরা হয়। ভারত কোন দেশের বিরুদ্ধে যাওয়ার পূর্বে তার চিকেনস নেকের কথা স্মরণ রাখে। চিকেনস নেকের এক পা বাংলাদেশের মাটিতে, অন্য পা নেপালের মাটিতে। স্বাভাবিক কথা হচ্ছে, বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে যদি ভালো সম্পর্ক থাকে, তবে চিকেনস নেক সুযোগ নেয়ার কথা চিন্তাও করতে পারে কেউ। বিশেষ করে নেপাল ও বাংলাদেশে চীনের বলয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারতের চিকেনস নেক নিয়ে অবশ্যই চিন্তা থাকার কথা।

তবে এক্ষেত্রে একমাত্র সমাধান যদি নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ করা যায়। যদি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়, তবে চিকেনস নেক ব্লক করার কথা হয়ত কেউ চিন্তাও করবে না। ফলে অবধারিত নিরাপদ থাকবে ভারত।

নেপালে বাংলাদেশী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার পর একটি কথা আমার বার বার মনে হয়েছে, এর ঘটনা ঘটিয়ে নেপালের কি সুবিধা থাকতে পারে ? কারণ নেপালের পর্যটকদের একটি বিরাট অংশ বাংলাদেশ থেকে আগত, পাশাপাশি নেপালীদের একটা বড় অংশ বাংলাদেশে আসছে পড়ালেখা করার জন্য। ঐ বিমানে নেপালেরও বেশ কিছু ভবিষ্যত ডাক্তার ছিলো। বাংলাদেশের অনেক শিক্ষিত ব্যক্তি নেপালের সেমিনার-সিম্ফোজিয়াম করে দু’দেশের মধ্যে সু-সম্পর্কই রাখছিলো।

যদিও এ বিমান হামলা স্যাবোটেজ হয়, তবে এ ঘটনায় নেপাল ক্ষতিগ্রস্ত-ই হবে, লাভবান হবে না্ মোটেও। কিন্তু হিসেব মতে কেবল লাভবান হবে ভারত। কারণ দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগলে চিকেনস নেক থাকবে নিরাপদ। সে দিক বিবেচনা করলে, নেপাল এভিয়েশনের ভেতর ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার লোক ঢুকে থাকা একদম অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু নেপাল চক্ষু লজ্জায় সেটা কখনই প্রকাশ করতে পারবে না। কারণ নিজ দেশের পর্যটন সেক্টরের সুনাম নষ্টের ভয়ে বাংলাদেশের ক্যাপ্টেনকে দোষারোপ করা ছাড়া অন্য উপায় তার থাকছে না।


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

Sunday, January 14, 2018

ওরা অসাম্প্রদায়িকতার বুলি যতই আওড়াক, তাদের বোরখা বিদ্বেষ মুসলমান বিদ্বেষ তথা উগ্র সাম্প্রদায়িকতারই অংশ।


ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, ইতালি, সুইজারল্যান্ডসহ অনেক রাষ্ট্রে মুসলমান মহিলাদের বোরখা বা নেকাব নিষিদ্ধ। তাদের দাবি, মুসলমান মহিলারা এসব পোষাক পরে সারা শরীর ঢেকে রাখে, সেটা নাকি নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

অথচ শীতের দিনে ঐসব দেশের মহিলা-পুরুষ সবাই এমনভাবে শরীর ঢেকে রাখে যা বোরখার থেকেও আবদ্ধ। কিন্তু ঐ পোষাক তাদের কাছে হুমকি বলে মনে হয় না।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, বোরকা নিষিদ্ধকারীদেশগুলো অধিকাংশ শীতপ্রধান অঞ্চলে এবং সেখানে অধিকাংশ মানুষ অমুসলিম। অর্থাৎ অমুসলিম মানুষগুলো বেশিরভাগ সময় শরীর ঢেকে রাখে শুধুমাত্র শীতের জন্য। সে হিসেবে গুটি কয়েক মুসলিম নারীর বোরখা তাদের জন্য কিছুই না। তারপরও সেটাই তাদের চুলকানির কারণ।

কিন্তু ওরা যখন বাংলাদেশে আসে তখন সাজে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তমনা। তারমানে বাস্তবতা হচ্ছে, ওরা অসাম্প্রদায়িকতার বুলি যতই আওড়াক, তাদের বোরখা বিদ্বেষ মুসলমান বিদ্বেষ তথা উগ্র সাম্প্রদায়িকতারই অংশ।



===============================
আমার ব্যাকআপ পেইজ- 
Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
-------------------------------------------------------------
আমার মূল পেইজ- 
Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686