Wednesday, August 14, 2019

নির্ধারিত স্পটেই কেন কুরবানী দিতে হবে ?


নির্ধারিত স্পটে কেন কুরবানী দিতে হবে ?- এই প্রশ্ন আমি তাদের কাছে জানতে চাই, যারা আমাদের এ শিক্ষাটা দিচ্ছে। আমি জানি তারা উত্তর দিবে- “পরিবেশ ভালো হবে, আপনি ভালো থাকবেন। ”
না না, আমি জনগণের উপকার জানতে চাই নি। আমি জানতে চেয়েছি- যারা আমাদেরকে বার বার বলতেছেন, নির্ধারিত স্পটে কোরবানী দিতে, তাদের লাভ কি ? সেটা আমাকে আগে বলেন।
তাদের গোপন রহস্য কি ?
কেন তারা কোরবানী স্পট নির্দ্দিষ্ট করতে চাইছেন ?
কেন মিডিয়ার মাধ্যমে উৎসাহিত করছেন?
কেন সরকারকে প্রেসার দিয়ে জনগণের উপর আইন হিসেবে চাপায় দিতেছেন?
তাদের আসল উদ্দেশ্যটা কি ? সেটা আগে জানা দরকার।

উল্লেখ্য, নির্ধারিত স্পটে দেওয়ার পলিসি আমি প্রথম পাই মাহফুজ আনামের ডেইলি স্টার পত্রিকায়। ২০১৩ সালের ১৫ই অক্টোবর “The Slaughterhouse Solution” শীর্ষক এক কলামে বাংলাদেশে কোরবানী বিষয়টি কেমন হওয়া উচিত তার পরিপূর্ণ রূপরেখা সেই কলামে দেয়া হয় (https://bit.ly/2MgYLx6)।  সেখানে বাংলাদেশের কোরবানীর বিষয়টি লোকচক্ষুর আড়ালে কসাইখানায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়, নির্ধারিত লোক দ্বারা জবাই করা এবং অতঃপর নির্ধারিত কসাই দ্বারা মাংশ কাটার সিস্টেম বাতলে দেয়া হয়। যেহেতু বাংলাদেশে কসাইখানা এত নেই, তাই সেই কসাইখানার ধারনায় উৎসাহিত করতেই নির্ধারিত স্পটে পশু কোরবানীর বিষয়টি প্রচার করা হচ্ছে। মানুষ যখন বুঝবে- যেখানে সেখানে নয়, নির্ধারিত স্পটে পশু কোরবানী করতে হবে, তারপর সেই নির্ধারিত স্পটকে লোকচক্ষুর আড়ালে নির্ধারিত কসাইখানায় কনর্ভাট করা হবে।

নির্ধারিত কসাই খানায় কেন কোরবানী ?
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক ব্লক মেইনটেইন করা একটা গ্রুপ আছে, যারা নিজেদের পশু প্রেমী দাবী করে। এই গ্রুপটি সারা বিশ্বে Ritual slaughter বা ধর্মীয় পশু জবাইয়ের রীতির বিরুদ্ধে। তারা এভাবে প্রকাশ্যে পশু কোরবানী নয় বরং লোকচক্ষুর আড়ালে হত্যা করতে বলে। এবং পশুকে হত্যার আগে ইঞ্জেকশন দিয়ে চেতনাহীন করারও পরামর্শ দেয় (https://bit.ly/2TAgPD1)। এদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা- পশু হত্যা বন্ধ করে কৃত্তিম মাংশ তৈরী করে মানুষকে মাংশ খাওয়ানো, এতে তাদের কর্পোরেট সদস্যদের একচেটিয়ে ব্যবসা হবে (https://bit.ly/31JYOFr)।
মূলত ঐ গ্রুপটি বাংলাদেশের পরিবেশের অজুহাতে কোরবানীর স্পট নির্দ্দিষ্ট করে কোরবানীকে ধরে বেধে সীমিত করতে চাইছে।


বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নির্ধারিত স্পটে কোরবানী করলে কি হবে ?
আসলে বাংলাদেশে ঐ বিশেষ গ্রুপটি দুটি শ্লোগান প্রচার করেন-
একটি, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার – এটা হচ্ছে ইসলাম ধর্মের জন্য।
দ্বিতীয়টি, ধর্ম যার যার উৎসব সবার- এটা হচ্ছে হিন্দু ধর্মের জন্য।
প্রথম শ্লোগানটির মধ্যে লুকিয়ে বলা হচ্ছে, ইসলাম ধর্ম হচ্ছে ব্যক্তি পর্যায়ে চর্চার জিনিস, এটা সামাজিক চর্চায় আনা যাবে না। অপরদিকে দ্বিতীয় শ্লোগানে বলা হচ্ছে, হিন্দু ধর্মটা সামাজিকভাবে চর্চার জন্য। সবাই পালন করতে পারবে।
সত্যিই বলতে ইসলামবিদ্বেষী গ্রুপটি চায়, ইসলাম ধর্ম যেন ঘরের গোপন প্রোকোষ্ঠে চর্চা হয়, সেটা যেন কোনভাবেই সামাজিকভাবে চর্চা না হয়। কিন্তু কোরবানী ঈদ তাদের এই পলিসির জন্য বড় বাধা। কারণ কোরবানী ঈদ ধর্মীয় অনুসঙ্গ হলেও এটা একা একা করা যায় না। গরু কিনতে, গরু রাখতে, গরু জবাই করতে, গরুর মাংশ বিলি করতে ইচ্ছা অনিচ্ছায় এটা সামাজিক চর্চায় চলে আসে। এতে মুসলমানদের ধর্মীয় চেতনা বৃদ্ধি পায়, মুসলমানরা তাদের ধর্মকে সামাজিকভাবে প্র্যাকটিস করে। তারা এটার বিরোধী। কিন্তু গরু কোরবানীটা যদি একটি নির্ধারিত স্পটে বা পরবর্তীয়তে কসাই খানায় আনা যায়, তবে –
ক) সে শুধু টাকা দিবে, কিন্তু গরু কিনতে হাটে যেতে হবে না্
খ) সে নিজের গরুর পালতে পারবে না, গরুর চেহারাও দেখতে পাবে না।
গ) নিজের গরু নিজে জবাই করতে পারবে না।
ঘ) তাকে ঈদের দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিন এসএমএস করে কসাইখানায় আসতে বলা হবে, সে কসাইখানায় গেলে তাকে ৩-৪ প্যাকেট মাংশ দিয়ে বলা হবে এগুলো আপনার পশুর কোরবানীর মাংশ। সে কসাইয়ের দোকান থেকে মাংশ কিনলে যতটুকু অনুভূতি পেতো, ঠিক কোরবানীর পশুর মাংশ নিয়ে তার ততটুকুই অনুভূতি হতো, এর বেশি হবে না।

ইউরোপে কিভাবে কিভাবে কোরবানী হয় ?

১) ইউরোপে কোরবানির সমস্যা ও আমার অভিজ্ঞতা
(https://bit.ly/2KOiIIg)

২) বিলেতে যেভাবে কোরবানি দিতে হয় (https://bit.ly/2MjBB96)

এই দুইটি আর্টিকেল দেখে বুঝবেন- পশ্চিমাদের অনুকরণে বাংলাদেশের কোরবানীকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের দেখানো সিস্টেমে বাংলাদেশের মুসলমানদের কোরবানীকে ঘিরে ধর্মীয় চেতনাকে সম্পূর্ণরূপে কবর দেয়া হবে।


সরকার কি বলছে ?
ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল বলেছে, “সামনের বার যত্রতত্র পশু জবাই চললে আইনি ব্যবস্থা”।
(https://bit.ly/2TBOXOX)

উল্লেখ্য, তাদের দাবী- দুই সিটিতে ৫ লক্ষ কোরবানী হয়  (মূল হিসেব আরো ৬ গুন বেশি)
সেক্ষেত্রে সরকার স্পট দিয়েছে ৮৭৫টি।
তাহলে গড়ে প্রতি স্পটে কোরবানী দিতে হবে ৫৭১টি কোরবানী।
এবার আপনারা ছবিতে দেখুন, স্পটের সাইজ, এখানে ৫৭১টি কোরবানী দেয়া কি সম্ভব ?
এখানে ২০০ বার সিরিয়ালেও তো ৫৭১টি কোরবানী হবে না।
কিন্তু মেয়র যেহেতু বলছে  এখানেই কোরবানী দিতে হবে, না হলে আইনী ব্যবস্থা।
তাহলে মানুষ তো আইনের ভয়ে কোরবানী দেয়াই ব্ন্ধ করে দিবে ।
তারমানে সরকার আইন করে কোরবানী বন্ধ করতে চাইছে, যেটা ভারতে হয়েছে।
জনগণের এ ব্যাপারে শক্ত প্রতিবাদ করা জরুরী হয়ে পড়েছে।

Monday, August 5, 2019

কেবিসি এগ্রোর শুকর নিয়ে আমার লেখা ও তার ব্যাখ্যা

গতকাল কেবিসি এগ্রো নিয়ে একটা লেখা দিয়েছিলাম। দেয়ার পর কোন কোন পেইজ থেকে বলা হচ্ছে এই কোম্পানির সাথে হিন্দুদের নাকি বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নাই এবং ভারতীয়দের সাথেও নাকি সম্পর্ক নাই। এটি একটি বাংলাদেশী কোম্পানি।  যাই হোক, আমার মনে হয়, আমি অনলাইনে যে কিছু তথ্য পেয়েছি, তার শেয়ার করছি-
প্রথম কথা হলো কেবিসি এগ্রোর ওয়েবসাইট (যা এখন বন্ধ, তার ওয়েবক্যাশ) বলছে-
১)  Initially the company was started as an India-Bangladesh Joint Venture Company,
২) The company was incorporated on June 29, 2008 as a private limited company with paid up capital of Tk. 223.61 million against the authorized capital of Tk.310.00 million
(https://bit.ly/2MDOrOT)
৩) ২০১২ সালে সামুর ব্লগার জুলভার্ন একটা স্ট্যাটাস লিখে। সেখানে দেয়া তথ্য- অনুযায়ী সে রুপসী বাংলায় একটা অনুষ্ঠানে যায়, সেখানে তার কেবিসি এগ্রোর চেয়ারম্যানের সাথে দেখা হয়, তার নাম রাজকুমার আগারওয়াল বলে উল্লেখ করে এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে সুবির চৌধুরী উল্লেখ করে। ধামরাইয়ে তাদের কারখানা সম্পর্কে অনেকগুলো তথ্যও জুলভার্ন সংযুক্ত করে। (http://archive.fo/uLkkF)
৪) কেবিসির ওয়েবসাইটের দেয়া তথ্য অনুসারে কোম্পানিটি ২০১৬ সালে তাদের শেয়ার (বা শেয়ারের একটা অংশ) কিনে নেয় মাহবুব গ্রুপ। কিন্তু কোম্পানিটি কেবিসিকে তাদের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বলে না, বলে সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
৫) ২০১৭ সালের এক স্ট্যাটাসে দেখা যায়, কোম্পানির পুরাতন এমডি কল্যানি চৌধুরীর থেকে কিছু একটা বুঝে নিচ্ছে নতুন এমডি মাহবুব রহমান। (https://drive.google.com/file/d/1CILXnW4gEk--RzYQWKusAfMAG6p8wYgJ/view)
কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হিসেবে যে রাজকুমার আগারওয়াল এর নাম বাদ গেছে কি না, সে সম্পর্কে কোন তথ্য নেই।
৬) কোম্পানির স্টকে ৩ হাজার টন শুকর পন্য পাওয়া যায়, এবং কোম্পানি শুরু থেকে প্রায় ৩ লক্ষ টন  শুকর পন্য এনেছিলো বলে চালান পাওয়া যায়। তারমানে ২০১৬ সালে শেয়ার বদল হওয়ার বহু আগে থেকে তারা শুকর পন্য দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলো।  অর্থাৎ এই শুকর বাংলাদেশে নিয়ে আসার কারবারি শুরু করে ঐ মারোয়ারী ব্যবসায়ী রাজকুমার আগারওয়ালই।
৭) কোম্পানির মালিক পর্যায়ে শেয়ার বদল হলেও কেবিসির হিন্দু মালিক থাকা অবস্থায় যে মহাব্যবস্থাপক ছিলো, তাপস দেবনাথ, মুসলিম মালিক আসার পরও সেই তাপস দেবনাথ আছে।  এমনকি গতকাল পুলিশ যখন আসে, তখন পত্রপত্রিকায় তাপস দেবনাথের নাম পাওয়া যায়। তাপস দেবনাথের ফেসবুক আইডি ঢেটে দেখলাম সে উগ্রহিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকনের খুব ভক্ত। আমার ধারণা কোম্পানির মালিক পরিবর্তন হলেও ফ্যাক্টরির কার্যক্রম আগের পলিসিতেই চলতে থাকে বা যারা দায়িত্বে ছিলো সেভাবেই চালাচ্ছিলো। যেহেতু কাজটা শুরু করে  দেয় ভারতীয় হিন্দু মারোয়ারি ব্যবসায়ী, এবং এখনও ফ্যাক্টরির ভেতরে থেকে হিন্দু মহাব্যবস্থাপক বিষয়টি চালিয়ে নিচ্ছিলো এজন্য নতুন মাহবুব গ্রুপের থেকে আমার কাছে সেই রাজকুমার আগারওয়ালকেই বেশি দায়ী মনে হয়েছে।  এবং সে কারণেই আমি কোম্পানির মূল যেখান থেকে শুরু হয়েছে তাকেই দোষ দিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছি।
৮) বিভিন্ন সময় ফ্যাক্টরির যে স্ট্যাফ দের ছবি আমি সংগ্রহ করতে পেলেছি, সেখানে আমার কাছে কোম্পানিটিকে হিন্দুদের আখড়া কোম্পানি বলে মনে হয়ছে। হয়ত পড়ে আর্থিক সংকটে তারা শেয়ার বিক্রি করে দেয়। কিন্তু বাংলাদেশে শুকর দিয়ে কাজ করার সূচনাটা হিন্দুরাই করে। আমার স্ট্যাটাসে আমি সেটাই বুঝাতে চেয়েছি।


কোম্পানি ও তৎসম্পর্কিত কিছু ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম-