Wednesday, March 7, 2018

কর্পোরেট বাধনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, মুসলমানরা আবার ফিরে আসবে কবে ?



গতকালকে কৃত্তিম মাংশ নিয়ে একটা লেখা লেখার পর চিন্তা করলাম, প্রযুক্তির উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু সেটা হচ্ছে কোন দিকে ?

কৃত্তিম মাংশের পেছনে মূল ইনভেস্ট করেছে মাইক্রোসফটের বিল গেটস এবং ভার্জিন গ্রুপের রিচার্ড ব্র্যানসনের। একজন ব্যবসায়ী যখন প্রযুক্তিতে ইনভেস্ট করে, তখণ তার মূলে থাকে ব্যবসায়ীক চিন্তা। কৃত্তিম মাংশের পেছনে তারমানে রয়ে গেছে বড় বড় কর্পোরেটদের বিলিয়ন-ট্রিলিয়ন ডলারের ব্যবসার চিন্তাভাবনা।

বাংলাদেশে একটা কথা প্রায় উঠে, মিডিয়া যখন ব্যবসায়ীদের দখলে তখন প্রকৃত খবর কি পাওয়া যায় ?
যেমন : প্রথম আলো-ডেইলি স্টার চালায় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ট্র্যান্সকম গ্রুপ। কালেরকণ্ঠ-বাংলাদেশ প্রতিদিন চালায় ব্যবসায়ী বসুন্ধরা গ্রুপ, একাত্তর টিভি চালায় মেঘনা গ্রুপ, যুগান্তর-যমুনা টিভি চালায় যমুনা গ্রুপ, মাছরাঙ্গা চালায় স্কয়ার, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি চালায় ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমান, চ্যানেল ২৪ চালায় হামীম গ্রুপ, আরটিভি চালায় বেঙ্গল গ্রুপ, এসএ পরিবহনের মালিক সালাউদ্দিন আহমদ চালায় এসএটিভি। একজন ব্যবসায়ী যখন মিডিয়া চালায়, তখন মিডিয়ায় তার ব্যবসায়ীক ফায়দা ও পলিসির প্রভাব পড়তে বাধ্য। আর তাই স্বাভাবিকভাবে ঐ মিডিয়ার থেকে নিরপেক্ষ খবর পাওয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

একইভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যখন ব্যবসায়ীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তখনও প্রযুক্তি শরীরে বাধন পড়িয়ে দেয়া হয় এবং ধরে নেয়া যায় প্রযুক্তি সব সময় ব্যবসায়ীদের স্বার্থই রক্ষা করবে। তখন জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রকৃত বিকাশ নিয়ে তৈরী হয় সন্দেহ।

একটা সময় জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা একচ্ছত্র চালাত মুসলমানরা। মুসলমানরা খুব কম সময়ের ব্যবধানে অসংখ্য গবেষণা আবিষ্কার করেছিলো। কিন্তু মুসলমানদের গবেষণা বা বিজ্ঞান চর্চার মধ্যে কর্পোরেট দৃষ্টিভঙ্গি ছিলো না। মুসলমানরা কখনো চিন্তা করেনি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চার মাধ্যমে তারা ব্যবসা করে খাবে। কিন্তু মুসলমানরা জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা ছেড়ে দেয়ার পর সেই জ্ঞানটা আয়ত্ব করে ইহুদীরা । এবং তারা সেই জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা ব্যবসার কাজে ব্যয় করে। তারা চিন্তা করে ‘তত প্রযুক্তি জ্ঞানই বাইরে ছাড়া হবে’ যা তাদের ব্যবসার পক্ষে যায়, কিন্তু ততটুকু ছাড়া যাবে না যা তাদের ব্যবসাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ইহুদীদের এ পলিসির কারণে বিজ্ঞান ও গবেষণার গায়ে শিকল আটকে যায়।

উদারহণ দিলে বুঝতে সহজ হবে। ধরুন, এখন মাঝে মাঝে অনেক সাধারণ বিজ্ঞানীও পানিতে চালিত গাড়ি বা ইঞ্জিন আবিষ্কার করে। কিন্তু এই প্রযুক্তিগুলো মুখে মুখে থেকে যায়, কিন্তু বাস্তবে এগুলো পন্য হিসেবে আসে না। কারণ পানি চালিত গাড়ি যদি মার্কেটে আসে, তবে তেল মার খাবে। আর বিশ্বব্যাপী ইহুদীরা তাদের অর্থনীতি তৈরী করেছে তেলের দ্বারা। মার্কিন ডলার টিকে আছে আরবের তেলের উপর ভিত্তি করে। এখন তেলের বদলে যদি পানি চালিত গাড়ি চলা শুরু করে, তবে তেল বিক্রি বন্ধ হবে, ফলে ইহুদীদের ব্যবসা ও তথা ইহুদী সম্রাজ্যের পতন হবে। তাই তারা ইচ্ছে করেই তেল ভিন্ন অন্য কিছু জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের প্রযুক্তির গবেষণা ফাইল বন্ধ করে রাখে। এরকম আরো বহু উদাহরণ আছে, দেখা যাবে ঐ জিনিসটা আবিষ্কার বা প্রচারিত হলে ইহুদীদের অনেক পন্য বিক্রিতে ধস নামবে, তাই তারা ইচ্ছা করেই সেই সব আবিষ্কারের রাস্তা বন্ধ করে রাখে তারা।

শুধু তাই নয়, অন্যদের অজ্ঞতা ও গবেষণাহীনতার সুযোগ নিয়ে তারা মিথ্যা গবেষণাও প্রচার করে শুধু কর্পোরেট স্বার্থে। যেমন: আগে একটা সময় বাংলাদেশের মানুষ সরিষার তেল খেতো। সরিষার তেল দেশেই উৎপাদিত হয় এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। তখন বাংলাদেশের মানুষের শরীরে গ্যাস্ট্রিক ও হার্টের সমস্যা এত এভেইলএবল ছিলো না। কিন্তু আমেরিকান বিজ্ঞানীরা ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত তিনটি গবেষণা প্রচার করে, যেখানে দেখানো হয়, ইদুরের উপর সরিষার তেলের অন্যতম উপাদান ইউরেসিক অ্যাসিড (একটি ফ্যাটি অ্যাসিড) এর ক্ষতিকর প্রভাব আছে। ফলে সরিষার তেল নিষিদ্ধ হয়। অথচ ইউরেসিক অ্যাসিড ইদুরের জন্য ক্ষতিকারক হলেও মানুষের জন্য ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু সেই ভুয়া গবেষণা দিয়েই বাংলাদেশে সরিষার বাজারে পতন হলো, চলে আসে আমেরিকার সয়াবিন। সয়াবিন তেল বাজারে আসার পর গ্যাস্ট্রিক আর হার্টের অসুখ শুরু হলো। ব্যস গ্যাস্ট্রিক আর হার্টের অসুখের চিকিৎসার নামেও তারা ওষুধ বিক্রি করতে থাকে। মানে ‘এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাকে বলে’। বর্তমানে অনেক রোগই তারা ল্যাবরেটরিতে তৈরী করে, আর পরে তার ওষুধ ছাড়ে। সোজা ভাষায় যাকে বলে, প্রযুক্তির অপব্যবহার।

একটা জিনিস চিন্তা করে দেখুন, ইহুদীরা অনেক বিজ্ঞান-প্রযুক্তি চর্চা করছে ভালো কথা। কিন্তু সেটা শুধু অন্যের পকেটের টাকা খসানোর জন্য। কিন্তু টাকা ছাড়া অন্য বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে তারা চিন্তায় ছাড় দেয়নি। কিন্তু মুসলমানরা যখন বিজ্ঞান চর্চা করেছে, তখন তারা বিজ্ঞান চর্চা ব্যবসায়ীক স্বার্থে তা ব্যবহার করতো না, বরং মানুষের কল্যাণে সেসব গবেষণা করা হয়েছে। তাই মানব জাতির কল্যাণের জন্যই আবার মুসলমানদের বিজ্ঞান ও গবেষণা চর্চায় ফিরে আসতে হবে। নয়ত ইহুদীদের হাতে বিজ্ঞান প্রযুক্তি থাকলে তো অপব্যবহারে বিশ্বকে ধ্বংস করে ছাড়বে।

বি:দ্র: অনেকে বলতে পারেন “ইহুদীদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে লিখতেছেন, আবার তাদের প্রযুক্তির বিরুদ্ধে কথা ?” তাদের জানার জন্য বলছি বছর খানেক আগে সমুদ্রের নিচে মোবাইল সদৃশ্য বস্তু পাওয়া যায়, যার আনুমানিক বয়স ৮০০ বছর (http://bit.ly/2FpLVIW)। তারমানে ৮০০ বছর পূর্বেও হয়ত অনেক প্রযুক্তি ছিলো । এটা সবার জানা ৮০০ বছর আগে জ্ঞান বিজ্ঞানের শীর্ষে আরোহণ করছিলেন মুসলমানরা, তাই ঐ সময় মোবাইল থাকলে সেটা মুসলমানদের আবিষ্কারই হওয়ার কথা। কিন্তু ঐ সময় মুসলমানরা ‘প্যাটেন্ট’ বা ‘স্বত্ব্’ সিস্টেম’ বের করার কথা চিন্তাও করে নাই। তাই মুসলমানরা নিজেদের নামে সেসব আবিষ্কার কুক্ষিগত করে রাখে নাই । কিন্তু ইহুদীদের মাথায় আবিষ্কার ‘দখল’র চিন্তা আগে থেকেই ছিলো। ‘দখল’ তার মাথায় আসে, যে তার মালিক না। তাই মাত্র ২০০-৩০০ বছর আগে প্রযুক্তি চর্চার নামে এসে ইহুদীরা সেসব আবিষ্কার দখল করতে ‘প্যাটেন্ট’ সিস্টেম তৈরী করে নেয়।


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686

------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

0 comments:

Post a Comment