Wednesday, January 30, 2019

“আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান”


রবীন্দ্রনাথ যে অর্থেই ‘বিষ’ শব্দের প্রয়োগ করুক, যারা গণতন্ত্র চর্চা করে আমার কাছে কেন জানি মনে হয় তারা জেনে শুনেই এক ধরনের বিষ পান করে। সেটা রাজনীতিবিদ হোক কিংবা জনগণ হোক।
ইতিহাসের বই ঘাটতে হবে না, সাম্প্রতিক নির্বাচনটা শুধু দেখুন। ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ২১ জন, আহত হয়েছে ৭০০। এইলোকগুলো কিন্তু সবাই গণতন্ত্র রক্ষা করতে গিয়েছিলো। কেউ ভোট দিতে, কেউ ভোট কেন্দ্র পাহারা দিতে, কেউবা প্রতিপক্ষের কবল থেকে ভোটকেন্দ্র বাচাতে (দখল করতে)। প্রত্যেকেই গণতন্ত্রের পথে এগিয়েছিলো, কিন্তু মৃত্যুকে বরণ করেছে করুণভাবে।
ছোটবেলায় বইয়ে পড়েছিলাম, ব্রিটিশরা নাকি এ অঞ্চলে ক্ষমতকায় টিকতে ‘ডিভাইড এন্ড রুল’ মানে ‘ভাগ করো এবং শাসন করো’ পলিসি প্রয়োগ করেছিলো। আসলে সম্রাজ্যবাদীরা যখন এ অঞ্চলে নিজে থেকে ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করতো, তখন তাকে বলতো “ডিভাইড এন্ড রুল”, কিন্তু যখন তারা নিজ দেশে বসে আমাদের দেশে ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে, তখন তার নাম হয় গণতন্ত্র বা ডেমোক্রেসি। সোজা কথায়, “সোনা মিয়ারে লাল মিয়া বানাইছে। মিয়াটা ঠিকই আছে, খালি সোনাটা লাল হইয়া গেছে’।
মূল পলিসি হলো নিচে দুইদলকে লাগায় দেয়া, আর উপর থেকে ফায়দা নেয়া। ১৪শ” বছর আগের, ইসলামের প্রাথমিক যুগের ইতিহাস পড়লে বিষয়টি অনুধাবন করা যায়। ঐ সময় মদীনার ইহুদীরা ঐ অঞ্চলে দুটি গোত্র আওস ও খাযরায গোত্রের মধ্যে সর্বদা দ্বন্দ্ব তৈরী করে রাখতো এবং দুই দ্বন্দ্বের মাঝ থেকে ফায়দা নিতো। উপনিবেশ আমলে ইহুদীরা দেখলো কোন একটি এলাকা দখল করে, যুদ্ধবাহিনী রেখে তার থেকে ফায়দা নেয়া সত্যিই ঝামেলাপূর্ণ। তার থেকে বরং ঐ দেশের মানুষকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে দেই, এরপর তাদের দুর্নীতিবাজ নেতাদের সুবিধা দেয়ার নাম করে নিয়ন্ত্রণ করি, এবং তাদের থেকে সুবিধা নেই, ব্যস দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে তৈরী হতে থাকলো অসংখ্য রাষ্ট্র, বসতে থাকলো গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা। এজন্য দেখবেন, কেউ দেশের জনগণকে ভাগ করে ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি’, আর ‘মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি’ হিসেবে। আবার কেউ দেশের জনগণকে ভাগ করে, ‘গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি’ আর ‘গণতন্ত্র হরণকারী ফ্যাসিবাদী’ শক্তি হিসেবে। আর জনগণও এই সব মুখরোচক কথা শুনে ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মত লাফ দেয়। ছাগলের দুই বাচ্চা দুধ খায়, তিন নম্বর এমনিতেই লাফায়। ‘হাওয়া ভবন লোপাট করে ৫ লক্ষ কোটি, আর গণভবন ২৮ লক্ষ কোটি। মাঝ দিয়ে জনগণ ১০ হাজার টাকা বেতন পেয়ে ৬ হাজার টাকা বাড়িভাড়া আর ৭০ টাকা কেজি দরে খুদের চাল খেয়ে ডবল ভাড়া দিয়ে সিটিং সার্ভিসে দাড়িয়ে যায়।
আমি আগেই বলেছি, ইহুদীদের পলিসি হলো “দেবে বিষ, কিন্তু মোড়ক দেখে চোখ যাবে ঝলসে।” নাম দিয়েছে গণতন্ত্র মানে জণগনের জন্য তন্ত্র, কিন্তু বাস্তবে জনগণের এখানে কোন ভূমিকা নাই। প্রার্থী সিলেক্ট করতেই কোন ভূমিকা নাই, সেই প্রার্থী দিয়ে নিজের স্বার্থে কাজ করানো তো ‘দিল্লী দূর অস্ত’। আমার আপনার ট্যাক্সের টাকা দিয়ে সরকার চলবে, কিন্তু শীর্ষ ধনীদের তালিকায় নাম আসবে সরকারের বেটা, বেটি, বোন, দুলাভাই, জামাই আর বেয়াইয়ের নাম। বলবে দেশের মানুষের জন্য জীবন দেবো, কিন্তু কারো গার্জিয়ান আমেরিকা, কারো চীন কারো ভারত। মুখে বলবে গণতন্ত্র, কিন্তু মুখ ফসকে বলে ফেলবে “তুই প্রজা, আমি রাজা”। মুখে বলবে, “আমি ক্ষমতা চাই না, আমি জনগণের শান্তি চাই” কিন্তু বাস্তবে “আমার ক্ষমতা চাই, জনগণ কোন চ্যটে...বা..”। মুখে বলবে, “আমি যেন তেন ভাবে ক্ষমতায় যেতে চাই না”, কিন্তু বাস্তবে ‘হেন কোন জালিয়াতি’ বাদ থাকবে না।
অনেকে হয়ত বলতে পারে, “ব্যক্তির দোষ আপনি সিস্টেমের উপর চাপাতে পারেন না”। আমার উত্তর হলো, পারি পারি। প্রতিবারই এমন দুর্নীতি হয়। ৯১, ৯৬, ০১, ০৮, ১৪ প্রতিবারই জাল ভোট হয়েছে। কোনবার কম, কোনবার বেশি, এইতো। আগে এবারের মত এত বেশি মোবাইল, ফেসবুক আর ক্যামেরা উন্নত ছিলো না, তাই প্রচার হয়নি। নয়ত প্রতিবারই ভোট জালিয়াতি নিয়ে চিল্লাচিল্লি লাগতো।
আমি আগেও বলেছি, ইহুদীদের বানানো সিস্টেমের মধ্যে ঢুকে সেই সিস্টেম দিয়ে নিজের অধিকার আদায় করা সত্যিই কঠিন এবং পারাও সম্ভব নয়। মুসলমানরা যদি একটি পৃথক সিস্টেম তৈরী করতে পারতো, তবে সেটা দিয়ে ইহুদীবাদী সিস্টেমের সাথে টেক্কা দিয়ে নিজেদের অধিকার আদায় করা সম্ভব ছিলো। গণতন্ত্র, ভোট, নির্বাচন এই ইহুদীবাদী ফাদগুলো বাদ দিয়ে মুসলমানদের ভিন্ন কোন পলিসি নিয়ে চিন্তা করতে হবে। এবং অবশ্যই সেটা নিরপেক্ষতার সাথে, বিভেদ নয়, একতাবদ্ধ হয়ে।

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

0 comments:

Post a Comment