গত কয়েক বছর একটা আন্দোলনের নাম শোনা যাচ্ছে, যার নাম ‘মি-টু’। হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে এই আন্দোলনটি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায়। ‘মি-টু’ মানে ‘আমিও কোনভাবে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছি’ এই অভিজ্ঞতা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা। মি-টু মুভমেন্টের সূচনাকারী হিসেবে ধরা হয় ‘তারানা বুরকি’ নামক এক মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ মহিলাকে। ছোট বেলা থেকেই এই মহিলাটি বিভিন্ন পুরুষের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে আসছিলো। ‘তারানা বুরকি’ প্রথম এ আন্দোলনের ধারণা দেয় এবং একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করে। সেই ধারাবাহিকতায় হলিউড অভিনেত্রী অ্যালিসা মিলানো ইহুদী প্রযোজক হার্ভে ওয়েনস্টেইনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সোস্যাল মিডিয়ায় ‘মি টু’হ্যাশট্যাগ দিয়ে আন্দোলনের সূত্রপাত করে। এরপর একে একে মুখ খুলতে থাকে হলিউডের অনেকে। এরপর থেকে স্যোশাল মিডিয়ায় অনেক হোমরা চোমরার নামে অনেক ঘটনা বের হয়ে আসতে থাকে। ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো, বলিউডের অমিতাভ বচ্চন কিংবা বাংলাদেশের নাট্যকার সেলিম আদ দ্বীনের নাম ও বের হয়। এই লিঙ্কে- https://bit.ly/2ShQpEf ঢুকলে প্রায় ২৫২ জন পশ্চিমা সেলিব্রেটির নাম পাবেন, যারা মিটু’র পর নারী যৌন হয়রানীর দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্লাস নেয়ার সময়, একটা কথা আপনাদের বলেছিলাম, কোন ঘটনা দেখলে আগে বুঝতে চেষ্টা করবেন,
-কে ঘটনা ঘটাচ্ছে এবং
-সে ঘটনার দ্বারা কার উপকার হচ্ছে ?
তাহলে মি-টু আন্দোলন কে করছে এবং তার দ্বারা কে উপকৃত হচ্ছে ?
আমি এখন পর্যন্ত এনালিস্ট ক্লাস নিয়েছি মাত্র ২টি, কিন্তু মি-টু আন্দোলন আসলে কারা ঘটাচ্ছে এবং কি উদ্দেশ্যে ঘটাচ্ছে, এটা যদি আপনাদের বুঝাতে চাই, তবে আমাকে এনালিস্ট ক্লাস ৫ বা ৬ এর দিকে যেতে হবে। তবে সংক্ষেপে যদি বলি, তবে বলতে হবে, ইহুদীরা ভর করেছে আমেরিকার উপর। তাই আমেরিকা নিজে হয়ে গেছে ইহুদীবাদী। এই ইহুদীবাদীদের নিজেদের মধ্যে আবার দ্বন্দ্ব আছে, গ্রুপ গ্রুপ আছে। মার্কিনীদের মধ্যে এই দুইভাগ ‘ডেমোক্র্যাট’ এবং ‘রিপাবলিকান’ দুইনামে ও দুই দলে চলে। সারা বিশ্বজুড়ে মার্কিনপন্থীরাও এই দুই নেটওয়ার্ক মেইনটেইন করে চলে। মি-টু আন্দোলনটা ছিলো বেসিক্যালি একটা রাজনৈতিক আন্দোলন, দুই দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব, একদল অন্যদলকে ফাঁসানোর জন্য, এটা ছিলো তাদের রিয়েলফেস, আর আর্টিফিসিয়াল ফেস ছিলো ‘নারী নিপীড়ন’।
মি-টু’ আন্দোলন দিয়ে যেটা হবে, অনেক কথিত সেলিব্রেটির গোমর ফাঁস হবে। এটা একটা রাজনৈতিক বিষয়, যেহেতু আমি রাজনীতি করি না, সুতরাং এটা নিয়ে কথা বলারও আমার প্রয়োজন নেই। কিন্তু আমি কথা বলবো, তখন যখন কেউ কেউ মনে করবে, মিটু আন্দোলনের মাধ্যমে সমাজে একটা পরিবর্তন ঘটনো বা সমাজে নারী নির্যাতন কমানো সম্ভব, তখন।
আমার এ লেখার হেডিং ছিলো, “মি-টু আন্দোলন আসলে কাদের জন্য ?”
সে আলোচনা যদি করি, তবে বলতে হবে, জঙ্গল আর জনপদে কিন্তু এক আইন চলে না।
মিটু হচ্ছে জঙ্গলের আন্দোলন। মিটু, মাধ্যমে যারা নিপীড়নকারী ও অভিযোগকারী উভয় হলো পোষাক-আষাক ও চলাফেরায় বন-জঙ্গলের মত স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। হলিউড-বলিউড কিংবা বাংলাদেশের নাট্য-সিনেমা কিংবা মডেল পাড়ার আইন তো আমি-আপনি বুঝবো না। সানি লিওন কখন অভিনয় করলো আর কখন ধর্ষিত হইলো, এটা আমার আপনার পক্ষে অনুধাবন সম্ভব না, এটা সানি লিওন আর তার সমগোত্রীয়দের উপর ছেড়ে দেন।এবং তাদেরকেই মিটু আন্দোলন করতে বলেন, সাধারণ মানুষকে না।
এবার আসুন,
সাধারণ মেয়েরা মিটু মুভমেন্টের লেজ ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের যৌন নির্যাতনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলে সমাজ উপকৃত হবে কি না ?
এ প্রশ্নটা একটু ক্রিটিকাল। এর কয়েকটা উত্তর হতে পারে:
১) কোর্টে দেখেছিলাম, নারী নির্যাতন ট্রাইবুনালে সাধারণ মানুষ এমনকি সংশ্লিষ্ট উকিল ছাড়া অন্যদের ঢুকতে দেয় না। অনেক সময় বাদীনীকে বিচারক ভেতরে নিয়ে জবানবন্দি নেয়। এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে, তবে আমার মনে হয়েছে নারী নির্যাতনের ঘটনা প্রচারের একদিকে পজিটিভ দিকের সাথে সাতে নেগেটিভ দিকও আছে। এর মাধ্যমে অনেকের মনের ভেতরে গোপন আকাঙ্খা জাগ্রত হতে পারে এবং সুযোগ বুঝে কাজে লাগাতে পারে। মুভিতে ধর্ষণের ভিডিও ধর্ষণ হ্রাসের তুলনায় ধর্ষণ বৃদ্ধি করে বলে মনে হয়। এই সব অভিযোগ দাখিলের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে গোপন সেল থাকুক, সেখান থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অপরাধীর বিচার করা হোক, কিন্তু স্যোশাল মিডিয়ায় এসব উন্মুক্ত আলোচনার পজিটিভ থেকে নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট বেশি।
২) পুরুষটা দোষী হলে তো ঠিক আছে। কিন্তু যদি মহিলাটি পুরুষটিকে ফাঁসানোর জন্য করে, তখন ? ফেসবুক ওপেন মাধ্যমে, তখন যেখা যাবে, অনেক মহিলা বিভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে অসংখ্য পুরুষকে ফাঁসিয়ে দিচ্ছে। ঐ পুরুষটি এবং তার পরিবারবর্গকে তখন সমাজে নিগৃহিত হতে হবে, এর দায় কে নিবে ? আপনাদের মনে থাকার কথা, কিছুদিন আগে বাংলাদেশের সিআইএপন্থী ডা. জাফরুল্লাহ’র একটা ফোনালাপ ফাঁস হয়েছিলো। সেখানে ছাত্রীদের ব্যবহার করে প্রতিপক্ষে নারী নির্যাতন মামলা দেয়ার কথা বলেছিলো। (https://bit.ly/2AxcKq9)
৩) মিটু’তে সাধারণ মহিলাদের মধ্যে উস্কাচ্ছে নারীবাদীরা। এজন্য ফেসবুকে কিছু ফেইক্ আইডিকে তারা ব্যবহার করছে। এক্ষেত্রে বলতে হয়, ইহুদীবাদীরা নারীবাদ সৃষ্টি করেছে পুরুষ-মহিলার মধ্যে বিভেদ বাড়িয়ে সমাজে অরাজকতা সৃষ্টির জন্য। কাজী নজরুল ইসলাম বলেছিলেন, “বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।” নারী ছাড়া যেমন পুরুষ নয়, তেমনি পুরুষ ছাড়া নারী নয়। কিন্তু সমাজের এই ভারসাম্য ইহুদীরা নষ্ট করে দিতে পুরুষের বিরুদ্ধে নারীদের উস্কে দেয়, বিভেদ সৃষ্টি করে। এতে সমাজে নারী-পুরুষের মধ্যে একটা হিংসাত্মক সম্পর্ক তৈরী হতে পারে। নারীর বিরুদ্ধে পুরুষ বিষেদগার হবে, পুরুষের বিরুদ্ধে নারী বিষেদগার করবে। যেহেতু নারী শারীরিকভাবে অপেক্ষকৃত দুর্বল, তাই এই হিংসা-হিংসীর আলটিমেট এফেক্ট পড়বে নারীর উপর, মানে সমাজে নারী নির্যাতন আরো বেড়ে যাবে।
৪) মিটু’র পরের ধাপ হলো ‘বৈবাহিক ধর্ষণ টার্মটি। দেখা যাবে, বিষয়টি স্বাভাবিক হওয়ার পর কোন কোন স্ত্রী তার স্বামীর বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিবে, তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বামী ইয়ে করেছে। ব্যস ইহুদীবাদীদের উদ্দেশ্য পাক্কা। অর্থাৎ তখন দুইজনের সম্মতি প্রধান (লিভটুগেদার) হয়ে যাবে, বিয়ে নামক কোন সামাজিক চূক্তি নয়।
এখন কথা হলো, মিটু না থাকলে সমাজে নারী নির্যাতন কমবে কিভাবে ?
আহহা ! মিটু দিয়ে যে সমাজে নারী নির্যাতন কমবে, এটা আপনি বিশ্বাস করলেন কেন?
আমি আমার লেখার মধ্যে কিন্তু বলেছি, জঙ্গলের নিয়ম আর জনপদের নিয়ম এক নয়। জঙ্গলে তারা মিটু চালু করেছে করুক, কিন্তু আমরা যারা স্বাভাবিক সমাজে বাস করি, তাদের জনপদের নিয়ম খুজতে হবে।
আর সেটা তো আছেই, যার যার ধর্মীয় নিয়ম অনুসরণ করুন, ধর্মীয় নিয়ম মেনে পোষাক পরিচ্ছদ পড়ুন। নারী-পুরুষ আলাদা বাস-ট্রেন-যাতায়াত ব্যবস্থা, শপিং সেন্টার, স্কুল-কলেজ ভার্সিটি এমনকি হাসপাতাল করে দিন। নারী-পুরুষকে সঠিক সময়ে বিয়ে দিন। মিডিয়ায় উলঙ্গপনা বন্ধ করুন। দেখুন নারী নির্যাতন শূণ্যের কোঠায় নেমে আসবে।
আমি জানি, এ কথা শুনে অনেকের মধ্যে ‘নারী স্বাধীনতার শ্লোগান দিয়ে চুলকানি হতে পারে, দয়া করে চুলকানি থামান দাদা । নিজের মুখে ভালো করে ছাই মাখুন। হলিউডের নারীরা তো কম স্বাধীনতা ভোগ করে না, তাহলে তারা কেন এত নির্যাতিত হচ্ছে ? কেন তাদের মিটুর আশ্রয় নিতে হচ্ছে ? তাই জঙ্গলে মিটু পালন করুন, জনপদে নয়।
===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/ noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
(https://www.facebook.com/
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/ Noyon-Chatterjee-6-20264727 0140320/)
-------------------------- -------------------------- --------------------------------------------
(https://www.facebook.com/
--------------------------
0 comments:
Post a Comment