Sunday, July 1, 2018

মুসলমানরা নিজের অবস্থান ধরে রাখতে হলে, ধর্মের নামে অধর্ম বন্ধ করার বিকল্প নাই

কয়েকদিন আগে ইউটিউবে একটা ভিডিও দেখছিলাম। কাজী নজরুল ইসলামের লিখিত “ও মোর রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ” গানটির উপর নির্মিত একটি মিউজিক ভিডিও। গানটিকে রিমিক্স করা হয়েছে, গানের সাথে জুড়ে দেয়া হয়েছে উদ্দাম আর অশ্লীল নৃত্য। নৃত্যের সাথে গানের কোন কথার কোন মিল নাই। বাংলাদেশে অধিকাংশ স্থানে এই গান দিয়ে শুরু হয় ঈদের আনন্দ। কিন্তু গানটির মধ্যে কবি কাজী নজরুল ইসলাম আসলে কি বলতে চেয়েছেন, এটা বোধহয় শতকরা ৯৯.৯৯% লোকই জানে না। আসুন গানটিতে একবার চোখ বুলাই-
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ।
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন্‌ আসমানী তাগিদ।।
তোর সোনা-দানা বালাখানা সব রাহেলিল্লাহ্‌।
দে জাকাত মুর্দ্দা মুসলিমের আজ ভাঙাইতে নিদ্‌।।
আজ পড়বি ঈদের নামাজ রে মন সেই সে ঈদ গাহে।
যে ময়দানে সব গাজী মুসলিম হয়েছে শহীদ।।
আজ ভুলে যা তোর দোস্ত ও দুশমন হাত মিলাও হাতে।
তোর প্রেম দিয়ে কর বিশ্ব নিখিল ইসলামে মুরীদ।।
ঢাল হৃদয়ের তোর তশতরীতে শির্‌নী তৌহিদের।
তোর দাওয়াতে কবুল করবে হজরত হয় মনে উম্মীদ।।
তোরে মারল' ছুঁড়ে জীবন জুড়ে ইট পাথর যারা
সেই পাথর দিয়ে তোলরে গড়ে প্রেমেরই মসজিদ।
১৯৩১ সালে লেখা এই গানটি মুসলমানদের অনেক কিছু শিক্ষা দেয়। আমি যতটুকু বুঝতেছি-
(১) ঈদে খুশি করতে হবে ধর্মীয় পন্থা মেনে
(২) ঘুমন্ত মুসলমানদের জাগিয়ে তুলতে জাকাত দিতে বলা হচ্ছে,
(৩) ঈদের জামাতের মাধ্যমে জিহাদ-গাজি-শহীদের চেতনা জাগিয়ে তুলতে হবে।
(৪) মুসলমানদের নিজস্ব বিভেদ ভুলে এক হতে হবে।
কাজী নজরুল ইসলাম আমার অন্যতম পছন্দের কবি। তার লেখার মধ্যে অনেক শিক্ষা আছে। ঈদ মুসলমানদের ধর্মীয় দিবস। আর সেখান থেকে মুসলমানদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। পহেলা বৈশাখ থেকে সংস্কৃতির চেতনাবাজরা শিক্ষা নেয়, দূর্গা পূজা থেকে হিন্দুরা শিক্ষা নেয়, ভ্যালেন্টাইনস ডে থেকে প্রেমিকরা শিক্ষা নেয়। তাহলে ঈদের থেকে মুসলমানদের শিক্ষা নেওয়া বা চেতনা জাগ্রত হওয়া কোথায় ?
বর্তমান কালে আমরা ঈদ বলতে দেখি, ভারতীয় অনুকরণে পোষাক, ছেলেদের ধূতির মত পায়জামা, সেলফিবাজি, জোরে গান বাজানো, নৃত্য আর মোজমাস্তি। আর টিভিতে হয় ঈদের নাটক, ঈদের সিনেমা, ঈদের নাচ, ঈদের ব্যান্ডশো আর ঈদের ফ্যাশন শো, জুয়েল আইচ ওরফে গৌরাঙ্গ লাল রায়ের যাদুবাজি। কিন্তু এগুলোর কোনটাই ঈদের আসল শিক্ষা নয়। অন্তত কাজী নজরুল ইসলামের লিখিত “ও মোর রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ” গানটি তা বলে না।
ধর্ম হচ্ছে একটা জাতির নিজস্ব পরিচয়গত সংস্কৃতি। সেই সংস্কৃতিতে যখন ভাঙ্গন ধরানো যায়, তখন ঐ জাতির অস্তিত্বতেও ভাঙ্গন ধরানো সম্ভব। আমরা ইতিহাসে দেখতে পাই, ইহুদীরা কৌশল করে খ্রিস্টানদের ধর্মটা শেষ করে দিছে। খ্রিস্টান ধর্মটা সেক্যুলার করে দিয়ে তাদের পরিচয়হীন করে তুলেছে। এরপর সেই খ্রিস্টান জাতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে ইহুদীরা।
বর্তমানে মুসলমানদের ঈদের মত ধর্মীয় বিষয়গুলো যেভাবে সেক্যুলার বা অধর্ম দিয়ে পূর্ণ করা হচ্ছে তাতে খ্রিস্টানদের মত নিজ ধর্মেরও বিলীনের দিকে যাচ্ছে মুসলমানরা। আর ধর্ম যত বিলীন হবে, মুসলমানরা তত বেশি কোনঠাসা হতে থাকবে। মুসলমানরা যদি নিজের অবস্থান ধরে রাখতে চায়, তবে ধর্মের নামে অধর্ম বন্ধ করার বিকল্প নাই।

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

0 comments:

Post a Comment