Wednesday, May 9, 2018

রমজান মাসে পরীক্ষা ও মুসলমানদের দূরাবস্থার কারণ অন্বেষণ



গত এপ্রিল মাসে আমি একটা লেখা লিখেছিলাম। লেখার ভেতর দুটি বিষয় তুলে আনি, একটি হলো ব্যক্তি স্বার্থ, আরেকটি হলো জাতিগত বা ধর্মীয় স্বার্থ। সে লেখায় আমি বলেছিলাম, বর্তমান মুসলমানরা ব্যক্তি স্বার্থের দিকে বেশি করে ঝুঁকে আছে। সবাই ব্যক্তিগতভাবে উপকৃত হতে চায়, ব্যক্তিগতভাবে উপকৃত হলেই ভাবে সব হয়ে গেলো। কিন্তু জাতিগত বা ধর্মীয় স্বার্থকে কেউ প্রাধান্য দেয় না। ভাবে “ব্যক্তি স্বার্থ উদ্ধার হলেই হলো, ধর্মীয় স্বার্থ গেলে কি বা আসে যায় ?”

কিন্তু মুসলমানরা এখানেই ভুল করে, কারণ ব্যক্তিস্বার্থ তাকে সাময়িকভাবে উপকৃত করতে পারে, কিন্তু জাতিগত বা ধর্মীয় স্বার্থ দীর্ঘমেয়াদী প্রটেকশন দেবে। প্রায় সাড়ে ১২শ’ বছর সুপার পাওয়ার থাকা মুসলমানরা ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে ইহুদীদের অধীনে চলে গেছে, আর ইহুদীরা জাতিগত স্বার্থকে আড়কে ধরে থাকায় ৫শ’ বছর খ্রিস্টানদের এবং সাড়ে ১২শ’ বছর মুসলমানদের অধীনে থেকেও ফের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে।

ছবিতে দেখুন, ডিগ্রি পরীক্ষার রূটিন। পুরো রমজান মাস ধরে ১ম বর্ষের পরীক্ষা চলবে। এই রুটিন নিয়ে ফেসবুকে দেখলাম মুসলমানদের মধ্যে দুইভাগ হয়ে গেছে। একদল বলছে, “রমজান মাসে রোজা, তারাবী, কোরআন পাঠ ইত্যাদি করে পরীক্ষা দেয়া সম্ভব না। অনেকেই রোজা ভঙ্গ করবে।”
আরেকদল মুসলমান বলছে: পরীক্ষা যত তাড়াতাড়ি হয়, তত লাভ। পরীক্ষা পেছানো মানে সময় নষ্ট, সেশনজট হওয়া। তাই রমজানের কারণে পরীক্ষা পেছানোর পক্ষপাতি তারা নয়।

আমার যতদূর মনে পরে:
১) সরস্বতী পূজা থাকায় হিন্দুদের আন্দোলনের কারণে ২০১৭ সালের অনার্স ২য় বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
২) পূজার কারণে ২৯ সেপ্টেম্বর (মূল ছুটি ৩০ তারিখ) বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড এর পরীক্ষা স্থগিত হয়।
৩) পূজার কারণে ২৯ সেপ্টেম্বর (মূল ছুটি ৩০ তারিখ) চট্টগ্রাম বন্দরের পরীক্ষা স্হগিত করা হয়।
৪) পূজার কারণে গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৭ কলেজের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

অনেকেই বলে, আওয়ামী সরকার হিন্দুদের অনেক সুযোগ সুবিধা দেয়। কিন্তু মুসলমানদের নির্যাতন করে। আমি তাদের বলবো- এ কারণেই তারা বেশি সুবিধা পায়। কারণ তারা সম্মিলিতভাবে জাতিগত শক্তিকে বেশি ফুটিয়ে উঠায়। এজন্য সরকার হিন্দুদেরকে একটা শক্তি হিসেবে কাউন্ট করে। অপরদিকে মুসলমানরা নিজেদের স্বার্থই চায় না, তাই মুসলমানদের দুইটাকা দিয়ে পাত্তা দেয় না সরকার। একই কারণে ভারতে হিন্দুরা এখন ক্ষমতায় আর মুসলমানরা বেকুবের মত মার খাচ্ছে।

মুসলমানরা যতদিন ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে, জাতিগত স্বার্থকে প্রাধান্য না দিতে পারবে, ততদিন তারা নির্যাতিত হবে, মার খাবে, অপমানিত হবে। মনে রাখতে হবে, ব্যক্তিস্বার্থের জণ্য মীর জাফর ব্রিটিশদের সহায়তা করেছিলো, কিন্তু ব্রিটিশরা সময়মত মীর জাফরকের সরিয়ে দিয়েছে। যে সব মুসলমান নিজস্ব স্বার্থের কথা চিন্তা করে ধর্মীয় বা জাতিগত স্বার্থ ত্যাগ করতে চায়, তাদের অবস্থাও একই হবে।

রমজান মাসে তাই সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা-অ্যাসাইনমেন্টের বিরুদ্ধে বলুন। দেশে ধর্মীয় চেতনা বৃদ্ধিতে সমর্থন করুন। মনে রাখবেন, ধর্মীয় চেতনা-ই আপনাকে জাতিগতভাবে রক্ষা করবে, কিন্তু ধর্মীয় চেতনা দূরে ঢেলে ব্যক্তি (ক্যারিয়ারের) স্বার্থ নিয়ে লাফালাফি করে কোন লাভ হবে না। বরং ধর্মীয় চেতনা শেষ করতে পারলেই ওরা আপনার ঘাড় মটকে ধরবে। তাই সাবধান।


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

0 comments:

Post a Comment