Wednesday, May 23, 2018

খেলা দেখবেন আপনি, লাভ হবে কার? ক্ষতি হবে কার?


ইহুদীবাদী কর্পোরেটোক্রেসি নিয়ে আমি আগেও অনেক আলাপ করেছি।
বলেছি, কিভাবে আপনার টাকা শুষে নেবে ইহুদী কর্পোরেটরা
আর সামনে নাচাবে এন্টারটেইনার বা সাকিব-মেসিদের।

বিষয়টা তুলনা করা যায়, অনেকটা গ্রা্ম্য মেলার পুতুল নাচের সাথে।
আপনি যখন পুতুল নাচ দেখতে মেতে উঠবেন, তখন একদল পেছন থেকে আপনার পকেট কেটে টাকা নিয়ে যাবে।

খেলায় ঠিক এই জিনিসটা হয়, মানুষ মত্ত থাকে এন্টারটেইনারদের নিয়ে
আর সে সুযোগে ইহুদীবাদী কর্পোরেটরা মানুষের পকেটের টাকাগুলো লুটে নিতে থাকে।
সে জানেও না কিভাবে তার পকেটের টাকা চলে যাচ্ছে ইহুদী কর্পোরেটদের হাতে।

ছোটবেলায় ১০ টাকা দামের কোকের কাচের বোতল পাওয়া যেতো।
তখন একবার শুনেছিলাম, কোকের ভেতর যে পানিটা থাকে ওটার মূল্য নাকি মাত্র ১ টাকা, আর ৫-৬ টাকা নাকি বিজ্ঞাপন মূল্য, বাকিটা কোম্পানি-ডিলার-বিক্রেতাদের লাভ।

এ হিসেব সত্য মিথ্যা জানি না। তবে এতটুকু বুঝি কর্পোরেট দুনিয়ায় বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকের মনে পণ্যের ব্যাপক আকাঙ্খা তৈরী করা হয়, এতে খরচও হয় অনেক। কিন্তু গ্রাহক জানেই না ঐ বিজ্ঞাপনের টাকা তার পকেট থেকেই আদায় করছে কোম্পানিগুলো। ফলে পন্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে বহুগুনে।

একবার দোকানে গিয়েছিলাম প্লাস্টিকের বালতি কিনতে।
দোকানি বললো- “আরএফএল বালতি ছাড়া আর কোন কোম্পানির বালতি নেই। দাম- ১২০ টাকা।”
আমি বললাম- “অন্য কোন কোম্পানির বালতি নেই কেন ?”
সে নিজেই বললো- “টিভিতে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ এত বিপুল পরিমাণে বিজ্ঞাপন দেয়, পাবলিক পুরো ব্রেইন ওয়াশড। আরএফএল যে বালতি ১২০ টাকা দিচ্ছে তার থেকে ভালো মানের বালতি অনেক কোম্পানি ৮০ টাকায় দেয়। কিন্তু পাবলিক কিনতে নারাজ। কারণ শুধু বিজ্ঞাপন।”

ফিরে আসি, খেলার কথায়। আমি খেলোয়াড়দের তুলনা করেছি এন্টারটেইনার বা পুতুলের সাথে।
এ সম্পর্কে একটা ঘটনা মনে আছে। একবার বাংলাদেশের জনগন ক্রিকেট খেলা নিয়ে খুব মত্ত হয়ে গেলো। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তুলনা শুরু করে দিলো।
তখন বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি জনগনের ভুল শুধরে দিলো। বললো, আমরা মুক্তিযোদ্ধা নই, আমরা হচ্ছি এন্টারটেইনার, আপনাদের আনন্দ দেই। (সূত্র: দৈনিক কালেরকণ্ঠ, ১৭ জুলাই, ২০১৫, লিঙ্ক-https://bit.ly/2s5A9uG

)

তারমানে দাড়াচ্ছে,
খেলোয়াড়রা হচ্ছে পুতুল, তাদের পেছন থেকে নাচাচ্ছে কর্পোরেটরা।
আর জনগণ সে পুতুল নাচ দেখতে গিয়ে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় বিজ্ঞাপন দেখছে
তার ব্রেনের সাব-কনসাস মাইন্ডে যুক্ত হচ্ছে- অমুক পন্যটা কিনতে হবে।
পরবর্তীতে ঐ বিজ্ঞাপনের টাকা এবং পন্যচাহিদা অনুসারে লভ্যাংশ উভয় সংযুক্ত হচ্ছে পন্যের সাথে
ফলে ১ টাকার পন্য কিনতে হচ্ছে ১০ টাকা দিয়ে।
একজন মানুষ খেলা দেখে ভাবছে, - এতে আবার ক্ষতিটা কি ?
কিন্তু তাকে যে কৌশলে ফুতুর করছে কর্পোরেটরা, সেটা তার মাথার এন্টেনার বহু উপর দিয়ে যাচ্ছে।
এই যে মেসির দাম এত এত কোটি, সাকিবকে আইপিএল এত কোটি টাকা দিয়ে কিনছে,
এগুলো সব আপনার পকেটেরই টাকা। কিন্তু নেয়া হচ্ছে ধোঁকা দিয়ে। এজন্য আমি এটাকে তুলনা করেছি, পুতুল নাচের সময় পেছন থেকে পকেট মারার সাথে।

আমি জানি, এতটুকু পড়ে অনেকেই বলবেন- “দাদা এত বড় কথা বইলেন না, টিভিতে খেলা দেখলে সমস্যা। কিন্তু আপনি যে ফেসবুক ব্যবহার করতেছেন, সে ফেসবুকেও অনেক বিজ্ঞাপন আসে। ঐ বিজ্ঞাপন কোম্পানিগুলো ফেসবুককে টাকা দেয়, আর সেই টাকা পাবলিকের থেকে কেটে নেয়।”

মানছি আপনার কথা। তবে কথার মধ্যে একটু গ্যাপ আছে।
আপনারা রাস্তা দেখেছেন নিশ্চয়ই। রাস্তা ওয়ান ওয়ে হয়, আবার টু-ওয়েও হয়।
টিভি হচ্ছে ওয়ানওয়ে, ওরা শুধু দিবে আর আপনি গ্রহণ করবেন। ও যা দিবে, আপনাকে তাই গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু আপনি তথ্য বা মতামত এক্সচেইঞ্জচ করতে পারবেন না।

অপরদিকে ফেসবুক হচ্ছে টু-ওয়ে। মানে এখানে এক্সচেইঞ্জ করা যায়। সেও দিবে, আপনিও দিবেন। আর যেখানে এক্সচেইঞ্জ করা যায়, সেখানেই পাবলিকের লাভ তৈরী হয়।। ইন্টারনেটে নলেজ বা তথ্য আরো অধিন নয়, যা উপকারি, ফলে অনেক গোপন নলেজ বেড়িয়ে আসে। সোশাল মিডিয়ার কল্যানে ফিল্ড পর্যায়ের পাবলিকের মতামত জাতীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উঠছে, এতে ভুয়া সেলিব্রেটিদের পতন হয় এবং রিয়েল সেলিব্রেটিদের উত্থান হয়, সাধারণ জনগণের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পৌছে যায়, যা আগে কখন সম্ভব ছিলো না এবং মিডিয়া দ্বারাও সম্ভব নয়। তাই ফেসবুকে হয়ত কর্পোরেটদের লাভ হচ্ছে, কিন্তু জনগণেরও যে উপকার হচ্ছে, সেটা নিশ্চয়ই অস্বীকার করতে পারবেন না।

এ কারণে অনেক রাষ্ট্রে, টিভি মিডিয়াকে নিরুৎসাহিত করা হয়, অনলাইন মিডিয়াকে উৎসাহিত করা হয়। যেমন পশ্চিমের অনেক দেশে প্রত্যেকটি টিভি চ্যানেলের জন্য আলাদা আলাদা পে করতে হয়। ফলে টিভি মিডিয়া তাদের জন্য এক্সপেনসিভ। অপরদিকে হাইস্পিড ইন্টারনেট অনেক সস্তায় সরবরাহ করা হয়। উদ্দেশ্য জনগণের ব্রেন আপডেট করা।

অপরদিকে বাংলাদেশে টিভি মিডিয়াকে উৎসাহিত করা হয়, ইন্টারনেটকে নিরুৎসাহিত করাহয়। যেমন : মাত্র ২০০ টাকা দিয়ে সারা মাস এক-দেড়শ’ টিভি চ্যানেল দেখা যায়, কিন্তু অতি উচ্চ মূল্য দিয়ে ইন্টারনেট ডাটা কিনতে হয়। ইন্টারনেট উচ্চ মূল্য হওয়ায় অনেক মানুষ এখনও সচেতন হতে পারছে না।

আমার মনে হয়, ইহুদীবাদী কর্পোরেটোক্রেসির পতন হতে হলে এবং মুসলমানদের উত্থানের জন্য খেলা বজর্ন করা জরুরী।


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

1 comment:

  1. ”নয়ন চ্যাটার্জী” যদি আপনার নাম হয় তার মানে হচ্ছে আপনি হিন্দু। যেখানে হিন্দু-মুসলিম বিদ্বেষের অন্ত নেই সেখানে আপনি নিজে একজন হিন্দু হয়েও কিভাবে মুসলিমদের বিভিন্ন দিক যেমন অধপতন , নির্যাতন , করণীয় ইত্যাদি গভীরতম বিষয়গুলো নিয়ে লেখালেখি করছেন??? [পজেটিভ]

    ReplyDelete