Wednesday, May 16, 2018

স্যার জাফর ইকবাল, ইতিহাস সাক্ষী ১৯৭১ সালে তো আপনিও ‘আমি রাজাকার’ হতে চেয়েছিলেন


জাফর ইকবাল স্যার নতুন করে কোটা আন্দোলনের বিরুদ্ধে একটা আর্টিকেল লিখছে (https://bit.ly/2Ido9y2)। আর্টিকেলটা পড়ে আমি সত্যিই হতাশ হলাম, বুঝলাম, তার বয়স হয়েছে। এখন তার রিটায়ার্ডে যাওয়া উচিত। অনেক তো হলো। তার বানানো চেতনার মসল্লা আর ছাত্ররা খাইছে না, কারণ ছাত্ররা চলে ‘কোরআই -৯’ প্রসেসরে আর তিনি পড়ে আছেন পেন্টিয়াম-১ যুগে। তাই এ যুগে তিনি অচল, তার এখন গার্বেজে যাওয়াই শ্রেয়।

১) কোটা আন্দোলনের সময় অনেক ছাত্র বুকের মধ্যে ‘আমি রাজাকার’ লিখেছে দেখে তিনি মারাত্মক রাগান্বিত হয়েছেন। তিনি বলেছেন,
- “যখন দেখি একজন ছাত্র নিজের বুকে ‘আমি রাজাকার’ কথাটি লিখে গর্বভরে দাঁড়িয়ে আছে, আমি সেটি বিশ্বাস করতে পারিনি। মাথায় আগুন ধরে যাওয়া বলে একটা কথা আছে, এই কথাটির প্রকৃত অর্থ কী আমি ওই ছবিটি দেখে প্রথমবার সেটি অনুভব করেছি।”
-এরপর বলেছেন, “কোটাবিরোধী আন্দোলন করে যে বাংলাদেশের মাটিতে নতুন রাজাকারের পুনর্জন্ম হয়েছে, এ দেশের তরুণরা নিজেদের রাজাকার হিসেবে পরিচয় দিয়ে গর্ব করতে শিখেছে, আমাদের সংবাদমাধ্যম সেই খবরটি আমাদের কেন জানাল না?”
- “(কোন ছাত্র বলবে) আমি ২০১৮ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলন করেছিলাম, খবরের কাগজে আমার ছবি ছাপা হয়েছিল, আমার বুকে লেখা ছিল ‘আমি রাজাকার’। তখন আমি (জাফর স্যার) অবধারিতভাবে গলায় আঙুল দিয়ে তার ওপর হড়হড় করে বমি করে দেব।”

স্যার জাফর ইকবালের ভাষায়, “ছাত্ররা বুকের মধ্যে ‘আমি রাজাকার’ শব্দটা গর্বভরে লিখেছিলো।”
কিন্তু আসলেই কি তাই ?
ছাত্ররা ‘রাজাকার’ শব্দটা লিখেছিলো ক্ষোভ থেকে, রাগে-দুঃখে লিখেছিলো। অনেকে লিখেছিলো; “চাইতে গেলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার” এটা তো গর্বকরে লেখা নয়। জাফর ইকবাল ছাত্রদের অপবাদ দিয়েছেন। যদিও যে উপলক্ষ্য করে (মতিয়া চৌধুরীর বক্তব্য) ছাত্ররা এ শ্লোগান ঝুলালো সেটা তিনি কৌশলে এড়িয়ে গেছেন।

২) ‘আমি রাজাকার’ শব্দটা কেন লেখা হয়েছে এটা কোরআই-৯ প্রজন্ম ভালোভাবে বুঝে। বর্তমানে পৃথিবীতে মি-টু হ্যাশ ট্যাগ দিচ্ছে অনেকে। হলিউডের এক পরিচালক অভিনেত্রীদের যৌন নির্যাতন করতো, সেই থেকে এই ট্যাগের সূচনা। এখন পৃথিবীর অনেকেই মি-টু হ্যাশ ট্যাগ দেয়। তাই বলে সবাই যে যৌন নির্যাতিত বিষয়টি তা নয়। এর আগে বাংলাদেশে একটি প্রচারণা হয়েছিলো, ‘আমি মালউন’ শ্লোগান দিয়ে। ‘মালউন’ মানে অভিশপ্ত। ঐ সময় জাফর ইকবাল কিন্তু এটা নিয়ে কোন ঘোষণা দেয়নি। একই ঘটনা কিন্তু ঘটেছিলো নারায়নগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তির কান ধরে উঠবস নিয়ে। ঐ সময় তার সমগোত্রীরাও কান ধরে উঠবসা করে। ঐ সময় স্যার জাফর ইকবাল কি লিখেছিলো আসুন দেখি: “আমি নিজে একজন শিক্ষক। আমি জানি, আমাদের দেশের সকল শিক্ষকের কাছে মনে হয়েছে এটি তার নিজের অপমান। শ্যামল কান্তি ভক্তকে একা কান ধরে উঠ-বস করানো হয়নি, এদেশের সকল শিক্ষককে একসঙ্গে কানে ধরে উঠ-বস করানো হয়েছে।” (https://opinion.bdnews24.com/bangla/archives/36190)
কি বুঝলেন ? তিনি কিন্তু কানে ধরে উঠবস কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বলেননি, বরং সেই আন্দোলনকে পক্ষে বলে সব শিক্ষককে কানে ধরে দিয়েছেন।

৩) জাফর ইকবাল লিখেছেন, “ঢাকা শহরের মানুষকে জিম্মি করে আন্দোলন করার জন্য আমি যথেষ্ট বিরক্ত হয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগে একটি লেখা লিখেছিলাম (সেই সময়ে আমার মেয়ে হাসপাতালে ছিল, তাই ঢাকাশহরকে জিম্মি করে ফেললে হাসপাতালে রোগীদের কী ধরনের কষ্ট হয় আমি নিজে সেটি জানতে পেরেছি)। ”

স্যারের এ ধরনের বক্তব্য পড়ে আমি বুঝলাম তিনি কতটা স্বার্থপর। ঐ সময় তার মেয়ে হাসপাতালে ছিলো বলে তিনি ঢাকাবাসীর কষ্টটা বুঝছেন। তার মেয়ে হাসপাতালে না থাকলে তিনি বিষয়টি বুঝতেন না। আহহারে। কিন্তু এই আন্দোলন আর কয়দিনের, ঢাকা শাহবাগের যখন মাসের পর পর মাস ধরে রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন চলছিলো, তখন তিনিও ঐ আন্দোলনের ছিলেন, এবং স্ত্রী পাশে নিয়ে মাইকে বক্তব্য দিয়েছেন। তখন কিন্তু ঐ এলাকায় মিডফোর্ড, বারডেম, ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো । শাহবাগে জাফর স্যারের সেই বক্তব্য দেখুন (https://youtu.be/E_tlh_AxXOQ), দৃশ্য বলে দিচ্ছে- যে পরিমাণ রাস্তায় ভীড় একজন রোগির পক্ষে ঐ রাস্তা দিয়ে যাওয়া সম্ভব না।

৪) জাফর স্যার আর্টিকেলের শুরুতে বলেছেন, “আমি শেষবার এই কথাটি শুনেছিলাম ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর কিংবা অক্টোবর মাসে। তাড়া খাওয়া পশুর মতো দেশের নানা জায়গা ঘুরে শেষ পর্যন্ত ঢাকায় এসে আশ্রয় নিয়েছি।”
স্বাভাবিকভাবে একটা প্রশ্ন আসে, ঐ সময় তো তিনি টগবগে যুবক (সার্টিফিকেট বয়স ১৯), তাহলে তিনি মুক্তিযুদ্ধ করলেন না কেন ? কেন তিনি জীবন বাচানোর জন্য পশুর মত পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন, কেন মানুষের মত মুক্তিযুদ্ধ করলেন না ?
জাফর স্যার নিজের মুখে বলেছেন, রাজাকার একটি ঘৃণ্য শব্দ। ছাত্ররা ‘আমি রাজাকার’ শব্দ লাগানোয় তিনি বোমি করবেন। আচ্ছা স্যার জাফর ইকবাল, আপনি এবং আপনার ভাই দু’জনেই তো লিখেছেন, ১৯৭১ সালে যখন সারা দেশের হত্যাযজ্ঞ চলছিলো, তখন আপনি এবং আপনার ভাই আপনাদের এলাকার একটি রাজাকার মাদ্রাসায় ভর্তি হতে গিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিলো ঐ সময় যদি আপনারা ‘আমি রাজাকার’ সেজে থাকেন, তবে আপনাদের জীবনটা বাচবে। (https://bit.ly/2I5prip)
জাফর ইকবাল স্যার, আপনি আর্টিকেলে বলেছেন “একটি সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া তরুণদের পচে গলে পূতিগন্ধময় রাজাকার নামক আবর্জনায় পরিণত হয়ে যাওয়া নিয়ে আমার ঘৃণাটি প্রকাশ করতাম। ”
তাহলে বর্তমান প্রজন্মও তো বলতে পারে: “ ১৯৭১ সালে টগবগে যুবক হয়েও মক্তিযুদ্ধ না করে রাজাকারদের মাদ্রাসায় ‘আমি রাজাকার’ সাজতে যাওয়াটা কি আপনার অপরাধ হয়নি? আপনার এ ইতিহাস শুনে কি ছাত্ররা মুখে আঙ্গুল দিয়ে বমি করবে না ?

জাফর স্যার, আপনাদের মূল সমস্যাটা বর্তমান প্রজন্ম বুঝে। আপনারা মুখে বলেন, ছাত্ররা সৃজনশীল হোক, কিন্তু বাস্তবে চান, বর্তমান প্রজন্ম যেন অন্ধের মত আপনাদের অনুসরণ করে। আপনারা যা বলেন, তাই মুখ দিয়ে গড় গড় করে আওড়াক। নিজের বিবেক বুদ্ধি না খাটায়। ‘তুই রাজাকার’ এর উৎপত্তি সম্পর্কে আপনি নিজেই বলেছেন, এই শ্লোগানটা হুমায়ুন আহমেদ ‘টিয়া পাখি’র মুখ দিয়ে সর্বপ্রথম বলেছিলো, সেই থেকে ‘তুই রাজাকার’র উৎপত্তি। টিয়া পাখির কিন্তু বিবেক বুদ্ধি নেই। সে নিজ থেকে কিছু বলতে পারে না। তাকে যা মুখস্ত করানো হয়, তাই সে বলতে পারে, এর বেশি না। আপনারা চান, নতুন প্রজন্ম টিয়া পাখি হয়ে থাকুক। আপনারা যা বলে দিবেন, সেটাই তারা মুখস্ত বলুক, নিজেদের বিবেক বুদ্ধি না খাটাক। কারণ ছাত্ররা নিজেদের বিবেক বুদ্ধি খাটানো শুরু করলেই আপনাদের সমস্যা। মুখোশ খুলে যাবে আপনাদের। বের হয়ে যাবে আপনাদের ব্যবসায়ী চরিত্র। তখন উল্টো প্রমাণিত হবে “জ-তে জাফর, তুই রাজাকার... তুই রাজাকার”।

পড়তে পারেন:
কেন জাফর ইকবাল কোটা আন্দোলন নিয়ে ইউটার্ন নিলেন ? - https://bit.ly/2jPYzV8


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

0 comments:

Post a Comment