Sunday, March 11, 2018

আগামী ২২শে মার্চ ঘোষণা আসছে, “বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হচ্ছে।”


বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করার জন্য ২০১৫ সাল থেকে জাতিসংঘে দেনদরবার করে আসছে আওয়ামী সরকার। এটা অনেকটা পলিটিকাল কারণ হতে পারে। কারণ নির্বাচনের আওয়ামীলীগ বলবে, “আমরা বাংলাদেশকে স্বল্প উন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করেছি।”

কিন্তু আওয়ামীলীগের এই নির্বাচনী বক্তব্য দেয়ার জন্য বাংলাদেশে কত মানুষকে পশ্চাৎদেশ দিয়ে বাশ নিতে হবে সেটা বাংলাদেশের মানুষ জানে না। ১টা টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট খেলায় জিতে আনন্দে ভাসছে পুরো বাংলাদেশ, কিন্তু আগামী ২২ মার্চ দেশে কি হতে যাচ্ছে, তার খবর কি জনগণের আছে ?

মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করলে আওয়ামী সরকারের কি লাভ হবে ?
উত্তর দুটো –
১) সরকার বিদেশ থেকে আরো অনেক ঋণ আনতে পারবে, ফলে সেখান থেকে আরো অনেক মারতে পারবে।
২) “আমরা বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশের পরিণত করেছি”- এটা আগামী নির্বাচনী শ্লোগান হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।

মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করলে জনগণের কি ক্ষতি হবে ?
উত্তর : অনেকগুলো।

প্রথমত, সরকার বেশি ঋণ পাবে এটা ঠিক, কিন্তু স্বল্প উন্নত দেশ হিসেবে ঋণের সুদ ও শর্তগুলো কিছুটা হলেও সহজ ছিলো। কিন্তু মধ্যম আয়ের দেশ হলে সুদ ও শর্ত বাড়বে। ফলে দেশ আরো বিদেশী ঋণের শিকলে বদ্ধ হবে, দেশ আরো বেশি সম্রাজ্যবাদীদের পেটের মধ্যে ঢুকবে।

দ্বিতীয়ত, স্বল্প উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বিদেশে শুল্কক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় পেতো। কিন্তু মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করলে বাংলাদেশে ১৮ হাজার কোটি টাকার বাজার হারাবে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে। ইইউ বর্তমানে বাংলাদেশের ৯৭ দশমিক ৮ শতাংশ পণ্যকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়। এই সুবিধা হারালে আমাদের রফতানি আয়ে বড় প্রভাব পড়বে। কর্পোরেটোক্রেসিরি সূত্র অনুসারে, বাংলাদেশের উৎপাদন খাতকে আরো বেশি গলাটিপে ধরা হবে। ফলে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত বা দরিদ্র হবে।

তৃতীয়ত , স্বল্প উন্নত দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো পেটেন্ট লাইসেন্স ছাড়াই ওষুধ উৎপাদন করতে পারে। কিন্তু এ ঘোষণার ফলে পেটেন্টের জন্য আলাদা টাকা দিতে হবে। ফলে ওষুদের দাম বেশ বৃদ্ধি পাবে। আমার জানা মতে, মিডলইস্টে ওষুদের দাম অনেক বেশি। বাংলাদেশে যে ওষধ ২ টাকা, মিডল ইস্টে ঐ ওষুধ ২০-৩০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়। বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করলে ওষুধের দাম লাফ দিয়ে বাড়বে। ফলে অনেকে ওষুধ না খেতে পেয়ে মারা যাবে।

‘স্বল্প উন্নত দেশ’ থেকে ‘মধ্যম আয়ের দেশ’ হলে আমার দৃষ্টিতে কি হবে ?
আমি যেটা বুঝলাম- ‘কর্পোরেটোক্রেসি’ পলিসির একটা সিস্টেম এটা। অর্থাৎ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে একটা দেশকে ধাপে ধাপে অক্টোপাসের মত চুষে খাবে সম্রাজ্যবাদীরা। প্যাটেন্ট, জলবায়ু, হাজারো নিয়মনীতি মাধ্যমে দেশের উৎপাদনশীল খাতকে আরো গলাটিপে ধরবে, দরিদ্র মানুষকে আরো দরিদ্র বানাবে। মানুষ না খেতে পেয়ে, না চিকিৎসা পেয়ে মারা যাবে। কিন্তু সম্রাজ্যবাদীরা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নীলকরদের মত রক্ত চুষে খাবে। সোজাভাষায় ধাপে ধাপে দেশ বিক্রি হবে।
তবে এক্ষেত্রে ঐ দেশের ক্ষমতাসীন সরকারকে দুর্নীতি করে পকেট ভরার আরো সুযোগ দেয়া হবে। তবে এসময় সম্রাজ্যবাদীরা বাংলাদেশকে ৪ বছর অবজারভেশনে রাখবে, তাদের কথামত কাজ করলে সূচকস্থায়ী করবে। এ অবজারভেশনের সময় দুর্নীতিবাজ সরকার ওদের কাছে সবকিছু বিলিয়ে দিতে কার্পন্য করবে না।

‘মধ্যম আয়ের দেশ’ কথাটা শুনতে ভালো লাগলেও বাস্তবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দরুণ চালের দাম ৭১ টাকা কেজি হওয়ায় জনগণ ভাত খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে, বাজারে গিয়ে দেখুন- বেচা-বিক্রি কমে গেছে। এ অবস্থায় তো দেশে প্রচ্ছন্ন দুর্ভিক্ষ দৃশ্যমান, ঠিক সে সময় অর্থনৈতিক সূচক অগ্রগতি রাজনৈতিক মোটিভ ছাড়া অন্য কারণে হতে পারে না।

তথ্যসূত্র:
১) http://bit.ly/2teLmNh
২) http://bit.ly/2Fz5UBC
৩) http://bit.ly/2DfRjcp


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

0 comments:

Post a Comment