চালের দাম নিয়ে কয়েকদিন ধরে স্ট্যাডি করছি, বোঝার চেষ্টা করছিলাম কি কারণে চালের দাম বাড়ে। চালের দাম কিভাবে কমানো সম্ভব সেটাও চিন্তা করেছি।
চালের দাম নিয়ে আমার উদ্বিগ্ন হওয়ার আরেকটি কারণ-
বর্তমানে যে মোটা চালটি ৬০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, সেই চালের ধানের মূল্য ছিলো গত বছর ১২.৫-১৩ টাকা কেজি (৫০০-৬০০ টাকা মন)।
কিন্তু এবার ধান বিক্রি হয়েছে ২৫টাকা কেজি (৯০০-১০০০ টাকা মন)। সেদিক থেকে গতবারের হিসেব করলে চালের দাম বৃদ্ধি পেতে থাকলে আগামী ১ বছরে মোটা চালের দাম ১২০টাকায় পৌছাতে পারে, তাই এখন থেকে জনগণ যদি সচেতন না হয়, তবে দেশে বড় ধরনের কৃত্তিম দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে।
কৃষকের থেকে মিল মালিকরা ধান ক্রয় করে প্রসেসিং করে চাল বানায়।
৭৫ কেজি ধান প্রসেসিং করে ভালো চাল পাওয়া যায় ৫০ কেজি।
সে হিসেবে ১২.৫ কেজি দরের টাকার ধানের থেকে প্রাপ্ত চালের দাম সর্বোচ্চ হতে পারে ২৫-৩০ টাকা।
কিন্তু তা না হয়ে এক লাফে ৬০ টাকা হচ্ছে কেন ?
এর মূল কারণ মিল মালিক সিন্ডিকেট । মিল মালিকরাই চাল গুদামজাত করছে এবং সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।
স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসতে পারে, সরকারের কি কোন মনিটরিং নাই।
উত্তর হবে- না নেই।
বরং সরকারের কারণেই চালের দাম আরো বাড়ছে।
মূলত, প্রত্যেক জেলার মিল মালিক সমিতির কাছ থেকে নিয়মিত চাদা নেয়- জেলার ডিসি, স্থানীয় এমপি এবং খাদ্য অধিদফতর। এই চাদাবাজির কারণে একদিকে যেমন চালের দাম বাড়ে, অন্যদিকে মিল মালিকদের সিন্ডিকেট করে চালের মূল্যবৃদ্ধিতে বৈধতা দেয়া হয়।
তবে ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে, যেহেতু সামনে ইলেকশন তাই, এই ইলেকশনের খরচপাতিতে চাদাবাজি আরো বেড়ে যাবে, পাশাপাশি ধানের দাম গতোবারের ডবল হওয়াতে আগামী এক বছরের মধ্যে চালের দাম কেজি প্রতি ১২০-১৫০ টাকায় পৌছানো অস্বাভাবিক কিছু নয়।
চালের দাম কমানোর জন্য যেটা প্রয়োজন তা হলো সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের চাদাবাজি বন্ধ করা, নিয়মিত মনিটরিং করা এবং ভর্তুকি। কিন্তু সমস্যা হলো সরকার কৃষি সেক্টরে ভর্তুকি দিতে চায় না। সরকার ফ্লাইওভার, সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিমানবন্দরসহ নানান ভৌত কাঠামো বানিয়ে অনুৎপাদনশীল খাতে বাজেট শেষ করছে, কিন্তু উৎপাদনশীল খাত যেমন কৃষিতে সরকার খরচ করতে চায় না। এ ব্যাপারে অবশ্যই সম্রাজ্যবাদীদের দিকনির্দেশনা থাকে। বিশেষ করে সম্রাজাবাদীদের সংস্থা আইএমএফ দিক নির্দেশনা থাকে অনুৎপাদনশীল খাতে বাজেট বেশি দেয়ার জন্য এবং উৎপাদনশীল খাতে বাজেট হ্রাস করার জন্য। এ প্ল্যান বাস্তবায়নে অর্থমন্ত্রী পদেও বসানো হয় সম্রাজ্যবাদী আইএমএফের কোন দালালকে। বর্তমান অর্থমন্ত্রী মাল মুহিত সম্ভবত সে ধাচেরই লোক। তারা দাদা ব্রিটিশদের দালালি করে খান বাহাদুর উপাধি পেয়েছিলো। তবে তারা এসব অপকর্ম করার সুযোগ পায় জনগণের অসচেতনার জন্য। কারণ সাধারণ জনগণ উৎপাদনশীল আর অনুৎপাদনশীল খাত বোঝে না, তারা বড় একটা সেতু, ফ্লাইওভার দেখলেই খুশি, কৃষি সেক্টরে বাজেট বাড়ালো না কমলো সেটা তাদের দেখার বিষয় না।
তবে এসব ক্ষেত্রে এক বড় ভূমিকা ছিলো মিডিয়ার, কিন্তু মিডিয়াও দেশের সাথে বেঈমানি করে। তারা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ দিয়ে- অপু-শাকিবের ডিভোর্স, সাকরাইন উৎসব, ক্রিকেট খেলা টাইপের ফালতু ইস্যুগুলো বেশি হাইলাইট করে, আর জনগণও সেগুলো মজা পেয়ে ঝাপিয়ে পড়ে।
তাই চাল বা বিভিন্ন দ্রব্যমূল্য হ্রাসের একমাত্র পন্থা হচ্ছে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রতিবাদ। যেহেতু এখন স্যোশাল মিডিয়া আছে, তাই জনগণ যদি অন্তত সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ করে, তবে আসছে কৃত্তিম দুর্ভিক্ষ ঠেকানো সম্ভব।
===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/
--------------------------
0 comments:
Post a Comment