এ কথাটা শুনতে তার আরেকটা কথা আমার মনে পড়ে গেলো:
“আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, আমি মানুষের শান্তি চাই!! মানুষের কষ্ট দেখলে আমার সহ্য হয়না..!”
প্রধানমন্ত্রী যে আসলেই পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীদের ব্যবসা নষ্ট করতে চান এবং ঐ কথার দ্বারা তিনি নিজের দায় এড়িয়ে গেছেন, সেটা তার অন্যান্য কার্যক্রম দেখলে স্পষ্ট:
(১) তিনি কিন্তু মুখে বলেছেন, আগে তিনি যায়গা দেবেন, তারপর তিনি কারখানা সরায় নিবেন। অথচ উনার বক্তব্যের পরও গতকাল ১৫টি কারখানা ও গোডাউন বন্ধ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বন্ধ হয়েছে শতাধিক গোডাউন ও কারখানা। (https://bit.ly/2HlHXBI)
তারমানে তিনি মুখে যেটা বলছেন, করছেন তার উল্টা।
(২) এই কথা তিনি কিন্তু অভিজান শুরুর আগেও বলেছিলেন। শিল্প মন্ত্রনালয়ের মাধ্যম দিয়ে বলা হয়েছিলো, গোডাউনগুলো টঙ্গী-শ্যামপুরে সরিয়ে নেয়া হবে (https://bit.ly/2EGtb5C)। সেই কথার উপর ভিত্তি করে অভিজান চালিয়ে অনেক কারখানা গোডাউন বন্ধ করেও দেয়া হয়। কিন্তু পরে দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদনে প্রকাশ পায়, সে স্থানে গোডাউন সরিয়ে নেয়ার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে আসলে অন্য কিছু আছে। সেগুলো না ঠিক করেই অভিজান, যেন এতগুলো ব্যবসা বাণিজ্য আসলে ছেলে খেলা ((https://bit.ly/2Tm7GkK)। তারমানে তিনি জেনে শুনেই অভিজান শুরুর জন্য মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
(২) তিনি বলেছেন, গোডাউন সরিয়ে নিয়ে শো-রুম থাকবে।
কিন্তু পুরান ঢাকায় কিন্তু অনেক কারখানা আছে, সেগুলোর সম্পর্কে তিনি কিছু বলেননি। সেগুলো কোথায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, সেটা সম্পর্কে স্পষ্ট কোন বক্তব্য তার ছিলো না। অবশ্য সিটি কর্পোরেশন কর্মকর্তা স্পষ্ট বলেছে, “পুরান ঢাকায় কোন ধরনের কারখানা থাকবে না” (https://bit.ly/2EXtFFX), তারমানে দেশীয় শিল্পকে তিনি সম্পূর্ণ উহ্য করে ধ্বংসের ইঙ্গিত দিচ্ছেন।
(৩) পুরো ষড়যন্ত্রে ৪টি কৌশলগত শব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে
--ক) কেমিক্যাল: ‘কেমিক্যাল’ শব্দটা কৌশলগত শব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, কারণ কেমিক্যাল শব্দটার প্রতি সাধারণ মানুষের এলার্জি আছে । পুরান ঢাকার ব্যবসা সম্পর্কে যাদের অভিজ্ঞতা আছে, তারা জানেন, পুরান ঢাকায় কেমিক্যাল ব্যবসা মানে একটি নির্দ্দিষ্ট ব্যবসা , যার বেশিরভাগ পরিচালিত হয় মিডফোর্ডের আশেপাশে। কিন্তু এখানে কেমিক্যাল শব্দ দিয়ে মূলত সকল ব্যবসায়ীক কাচামাল নির্দেশ করা হচ্ছে। পুরান ঢাকার অধিকাংশ ব্যবসায়ী কাচামাল আমদানি করেন, যেহেতু কাচামালের অধিকাংশই ‘কেমিক্যাল’, তাই তাদের ট্রেড লাইসেন্স কেমিক্যাল ব্যবসায়ী হিসেবেই নিতে হয়। তাই মুখে কেমিক্যাল ব্যবসা বললেও আসলে টার্গেট সকল ব্যবসা।
--(খ) বলা হচ্ছে নিষিদ্ধ দাহ্য পর্দাথ। অথচ দাহ্য পর্দাথ কিন্তু নিষিদ্ধ নয়। নিষিদ্ধ হলো বিষ্ফোরক পর্দাথ। কাপড়ও কিন্তু দাহ্য। আমরা প্রত্যেকেই কাপড় পরি, দাহ্য বলে কিন্তু আমরা কাপড় পরিধান বাদ দেই না, শরীরের সাথে লাগিয়ে রাখি। আমাদের বাসাবাড়িতে কাপড় রাখার আলমারি বা গোডাউন আছে, সেগুলোও কিন্তু রাখা ঠিক নয়। এখানে পলিসি হলো, যেহেতু বিষ্ফোরক পর্দাথ নেই, তাই বিষ্ফোরকের স্থলে দাহ্য ব্যবহার করা হচ্ছে, কিন্তু সাধারণ মানুষ বিষয়টি ধরতে পারতেছে না।
--(গ) গোডাউন: গোডাউন বলতে কত কেজি মালামাল এটা কিন্তু নির্দ্দিষ্ট নাই। আপনি বাসায় ১০০ কেজি চালের বস্তা রাখেন, তাহলে কি আপনার বাসায় চালের গোডাউন আছে ? স্বাভাবিকবাবে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা কারখানা চালাতে কিছু পণ্য তো জমা রাখতেই হবে, একটা মেশিন চালাতে ১০০ কেজি তেল স্টক রাখতে হবে।। কিন্তু সেটাও গোডাউন ট্যাগ দিয়ে উচ্ছেদ করা হয়, তবে বিষয়টি কেমন?
--(ঘ) আবাসিক এলাকা: পুরান ঢাকাকে আবাসিক এলাকা হিসেবে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যেন সেই প্রচার দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য উচ্ছেদ করতে সহজ হয়। পুরান ঢাকা মূলত শিল্প (ক্ষুদ্র) ও বাণিজ্যের এক বিশাল সমন্বয়, যেসব লোক পুরান ঢাকায় থাকেন, তাদের অধিকাংশই ঐ এলাকার শিল্প ও বাণিজ্যের সাথে কোন না কোনভাবে জড়িত। এবং নিজের প্রয়োজনেই (যাতায়াতের খরচ ও সময় বাচাতে) সেই ঘিঞ্জি এলাকার মধ্যে থাকেন।
পুরান ঢাকার সমস্ত কারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্য সারা দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেয়া হোক, সেটা আমিও চাই। কিন্তু সেটা সঠিক উপায়ে, আগে যায়গা, পরে স্থানান্তর। অবশ্যই কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করে নয়, উচ্ছেদ করে নয়। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার যেটা করছে, সেটা স্পষ্ট ব্যবসা নষ্ট করার নিম্মিত্তে। পুরান ঢাকায় যখন অভিজান শুরু হয়, তখন অনেক ব্যবসায়ী কেরাণীগঞ্জে তাদের গোডাউন সরিয়ে নিচ্ছিলো, তখন সরকারী উদ্যোগে কেরানীগঞ্জেও মাইকিং করা হয়, যেন সেখানেও কেউ তাদের গোডাউনের জন্য যায়গা ভাড়া না দেয় (https://bit.ly/2EQi1N7)।
সবার শেষে বলবো: পুরান ঢাকার সকল ব্যবসায়ী যে খুব ধনী বিষয়টি সেরকম নয়। অনেকে আছে দিনে লাভ করে রাতে খায়। এদের রয়েছে দোকানের উচ্চভাড়া, ঋণ, স্ট্যাফ-শ্রমিক খরচ। পয়সা-পয়সা হিসেব করে তারা ব্যবসা করে। কিন্তু গত ৩ সপ্তাহ তাদের উপর যে ধকল গেছে তাদের অধিকাংশ ব্যবসায়ীর অবস্থাই এখন বিধ্বস্ত। আমি ব্যক্তিগতভাবে খবর নিয়ে জেনেছি, ইতিমধ্যে অনেক ব্যবসায়ী অনিশ্চয়তার মধ্যে তাদের ব্যবসায়ীক কাচামাল মূল দামের দশ ভাগের এক ভাগ দামে বিক্রি করে, ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে। এছাড়া গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ বন্ধ করায় বাড়িওয়ালারাই তাদের চাপ দিয়ে বের করে দিচ্ছে। এরকম পরিস্থিতি যদি আরও ২-৩ সপ্তাহ চালানো যায়, আমি নিশ্চিত প্রায় ৮০% ব্যবসায়ী এমনিতেই পথে বসে যাবে, সফল হবে শেখ হাসিনার উন্নয়নের মিশন।
--------------------------
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/ noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
(https://www.facebook.com/
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/ Noyon-Chatterjee-6-20264727 0140320/)
-------------------------- -------------------------- --------------------------------------------
(https://www.facebook.com/
--------------------------
0 comments:
Post a Comment