Monday, June 22, 2020

লকডাউনের সুফলঃ প্রসব কমেছে হাসপাতালে, বেড়েছে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার


করোনা পরিস্থিতিতে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে প্রসবের হার নেমেছে অর্ধেকে। বাড়ছে মাতৃ ও শিশুমৃত্যু। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে বড় হাসপাতাল পর্যন্ত সবখানেই কমেছে প্রসব। অন্যদিকে ব্যাপকভাবে বেড়েছে বাসায় প্রসবের সংখ্যা। কেবল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক মাসে প্রসব হয়েছে ৮৭৫টি, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিমাসে যা গড়ে ছিল দেড় হাজার। বাসা বাড়িতে অদক্ষ ধাত্রীর হাতে প্রসব বাড়ায় প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণসহ নানা জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে আসছেন মায়েরা। অধ্যাপক ডা. নিলুফা সুলতানা বলেন, প্রচণ্ড খিঁচুনি নিয়ে রোগী আসছেন। কোনো কোনো রোগীদের জরায়ু জড়িয়ে নিয়ে আসছে। অধ্যাপক ডা. সায়েদা আক্তার বলেন, হোম ডেলিভারি বেড়ে গেলে অবশ্যই মাতৃ মৃত্যু বাড়বে। শিশুমৃত্যুও বাড়বে। (https://bit.ly/2TSQiSI)

এটা হচ্ছে লকডাউনের সুফল। আপনি যাতায়াত বন্ধ করে রাখবেন, মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরী করে রাখবেন, ফলে স্বাভাবিকভাবে এর প্রভাব পড়বে স্বাস্থ্যসেবার উপর। মায়েরা হাসপাতালে যেতে পারবেন না। ফলে তৈরী হবে নানান সংকট।

খবরে লক্ষ্য করুণ- ঢাকা মেডিকেলে প্রসবের সংখ্যা কমেছে অর্ধেক বা ৫০% এর মত। এই হিসেব যদি সারা বাংলাদেশে করি তখন কি হবে ?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের হিসেব মতে বাংলাদেশে এখন প্রতি মিনিটে জন্ম নেয় ৯ জন শিশু। তাহলে প্রতি দিন জন্ম নেয়া শিশুর পরিমাণ প্রায় ১৩ হাজারের মত। (https://bit.ly/3dnbF6o)
তাহলে ৬৫ দিনের লকডাউনের বাংলাদেশে জন্ম নেয়ার কথা প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষ শিশু।
এর মধ্যে ৫০% লকডাউনে বাধাগ্রস্থ হয়ে বাসায় প্রসবের চেষ্টা করেন, তবে তার পরিমাণ দাড়ায় প্রায় ৪ লক্ষ ২৫ হাজার। এর মধ্যে যদি মাত্র ৫% মা বা শিশু মারা যায়, তবে এর পরিমাণ হবে প্রায় ২১ হাজার। আর যদি ১০% মা বা শিশু যদি জটিল শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হোন, তবে এর পরিমাণ ৪২ হাজারের মত। বাসায় চেষ্টা করলে ৫% মা-শিশুর মৃত্যু বা ১০% জটিল সমস্যায় আক্রান্ত হওয়া খুব স্বাভাবিক, বরং হিসেব এর থেকেও বেশি হতে পারে।

শিশু জন্মদানের সময় মা যদি সঠিক ট্রিটমেন্ট না পায়, লকডাউন দিয়ে যদি তাকে নানান বাধাগ্রস্ত করা হয়, তবে মা ও শিশু মৃত্যুর মত চিরন্তন সত্যকে আমরা এড়িয়ে যেতে পারবো না। কিন্তু অতি দুঃখের বিষয়, আমরা বাস্তবতা এড়িয়ে থেকে এখন মরিচিকার পেছনে ছুটছি। ৬৫ দিনে করোনায় কত লোকের মৃত্যু হয়েছে, সেটা নিয়ে অনেক মিডিয়া সরব হলেও লকডাউনের কারণে কত মা ও শিশুর কিংবা সাধারণ মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করলো তার কোন হিসেব বা পরিসংখ্যান নেই। ব্রিটেনের একটা হিসেব পেয়েছিলাম, তারা একটি পরিসংখ্যানে দেখিয়েছিলো, লকডাউন বা করোনাভীতির কারণে মানুষ হাসপাতালে যাচ্ছে না, এতে সপ্তাহে মৃত্যুর সংখ্যা ৩ হাজারের মত। (https://archive.is/2eKCW)

আবার
আজকে মিডিয়ার খবরে দেখলাম, যার শিরোনাম -
অফিস খোলার প্রথম দিনে ৪০ জনের মৃত্যু।
(https://bit.ly/3cjrJEX)

লক্ষ্য করুণ- খবরে শিরোনাম দেখে মনে হচ্ছে, এই ৪০ জন মনে হয় অফিস করতে গিয়ে মারা গিয়েছিলো।
অথচ বাস্তবতার ভিত্তিতে শিরোনাম হওয়া উচিত ছিলো-
“৬৫ দিনের লকডাউনে ঘরে বসে থেকে ইমিউন সিস্টেম ড্রপ, মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৪০”
কিংবা
“আতঙ্ক বৃদ্ধি পাওয়ায় ইমিউন সিস্টেম ড্রপ, মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৪০”
(Stressful event অথবা Negative emotions মানবদেহের Immune System কে দুর্বল করে দেয়। ফলে সহজে শরীর ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া দিয়ে আক্রান্ত হয়)
কিংবা-
“বিভিন্ন ওষুধের ট্রায়ালে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা”।

এগুলো হলো বাস্তবতা ও বিজ্ঞান। কিন্তু কোনটির দিকে না যেয়ে, অফিস খোলাকে আজকের মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য দায়ী করা হলো। যদিও অফিস খোলার কারণে কিছু হয়েছে কি না, এটা বুঝতে বুঝতে আরো ১৫ থেকে ২১ দিন সময় দরকার। কিন্তু সেটা না করে, লকডাউনের দোষকে লকডাউন খোলার উপর চাপিয়ে দিয়ে চাইছে মিডিয়া।

আসলে আমরা সবাই নিজের স্বার্থের কথা ভেবে কথা বলি। কিন্তু নিজের স্বার্থে টান পড়লে ছাড় দিতে চাই না। গতমাসে দেখেছিলাম- কিছু প্রাইভেট কোম্পানির মানুষজনও লকডাউনের পক্ষে বলছে।
কিন্তু এ মাসে অনেকের বেতন-বোনাস বন্ধ হওয়াতে সবাই এখন লকডাউনের বিপক্ষে।
এখনও ফেসবুকে কেউ কেউ লকডাউনের পক্ষে বলছে।
এখন শুধু সরকারী চাকুরীজীবিদের বেতন অর্ধেক করে দেন, কিংবা ব্যাংকে যারা ডিপোজিট রেখে সুদ খায়, তাদের সুদের হার অর্ধেক করে দেন। অথবা মিডিয়া কর্মীদের বেতন অর্ধেক করে দেন। দেখবেন- লকডাউনের পক্ষের লোকগুলো নিমিষেই লকডাউনের বিপক্ষে বলা শুরু করবে।

তাই লকডাউনের পক্ষে যারা আছে, তারা অবাস্তবতাবাদী হোন কিংবা স্বার্থবাদী কিংবা দালালবাদী হোন, তারা সেগুলো ছেড়ে অবিলম্বে মূল ধারায় ফিরে আসবেন, এটাই কাম্য।

Thursday, June 18, 2020

করোনা নিয়ে অতি আতঙ্ক ও হাতুড়ে ডাক্তারি ছড়িয়ে লক্ষ লক্ষ রোগীকে বৈষম্যের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে

ফেনীর একটি খবর আজকে ভাইরাল হয়েছে। খবরটি হলো-
“ফেনীর সোনাগাজীতে করোনাভাইরাস আক্রান্তের উপসর্গ জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বদ্ধ ঘরে মৃত্যু হওয়া সাহাব উদ্দিনের (৫৫) মৃত্যুর পূর্বে বীভৎস চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। মৃত্যুর আগে পরিবারের লোকজন তাঁকে ঘরে একা রেখে বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে রাখে। দেওয়া হয়নি দুপুরে খাবার। মৃত্যুর সময় পানি চেয়েও পায়নি। মৃত্যুর পরও কাছে আসেননি স্ত্রী, ছেলে–মেয়ে ও জামাতাসহ কোন স্বজন। মৃত্যুর পর পায়নি স্থানীয় মসজিদের খাটিয়া, কেউ দেয়নি কবর খোঁড়ার কোদালও।”
(https://bit.ly/2XTiJBl)

করোনা ভাইরাসের নামে আমাদের যে সব হাতুড়ে ডাক্তারি চাপিয়ে দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে অণ্যতম যেটি বার বার প্রচার করা হয়েছে, “কারো লক্ষণ পাওয়ার সাথে সাথে তাকে পরিবার থেকে আলাদা করে দেন, কেউ যেন তার কাছে না আসে।” মনে হচ্ছে সে যে বিরাট অপরাধ করে ফেলেছে, তার বোধ হয় সেবা-সুশ্রুষার দরকার নেই।

অথচ মানুষ অসুস্থ হইলে- তার সেবা করা সব থেকে বেশি জরুরী। সেবা ও মানসিক প্রশান্তি দিয়ে একটা মানুষকে অনেকাংশে সুস্থ করে ফেলা সম্ভব। কিন্তু সেটা না করে, একটা মানুষ অসুস্থ হওয়া মাত্র যদি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয়, তাকে এক ঘরে বন্দি করে রাখা হয়, তার বাড়িতে পুলিশ এসে লকডাউন করে ফেলে, তাদের বাড়িশুদ্ধু মানুষকে খাদ্য-পানীয় ব্যতিত বন্দি করে রাখে, বাড়িওয়ালা বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার জন্য হুমকি দেয়, গ্রামবাসী বাড়ির মধ্যে ইটপাটকেল ছুড়ে, তবে ঐ রোগীর মানসিক অবস্থা কি হবে একবার চিন্তা করেছেন ?
ফেনীর ঘটনা শুধু একটা নয়, আমার জানা মতে করোনা রোগী বা তার সাসপেক্টের সাথে এমন বহু নির্মম ঘটনা ঘটেছে, শুধু পরিবার থেকে নয়, হাসপাতাল থেকে, এলাকাবাসী থেকে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী থেকে, আত্মীয়-স্বজন-বন্ধুবান্ধব থেকে অহরহ ঘটেছে এমন ঘটনা। রাস্তা/বাসা/হাসপাতালে অনেক লোক অসুস্থ হয়ে ছটপট করতে করতে মারা গেছে, কিন্তু কেউ তার সাহায্যে বিন্দুমাত্র এগিয়ে আসেনি।

ছোটবেলায় প্রবাদ পড়েছিলাম- পাপকে ঘৃণা করো, পাপীকে নয়।
তেমনি রোগের বিরুদ্ধচারণ আমাদের কাজ হবে, রোগীর বিরুদ্ধে অবশ্যই নয়।
কিন্তু আমরা তো রোগের নামে রোগীর বিরুদ্ধচারণ করে চরম অমানবিক কাজ করে ফেলেছি।

কিছুদিন আগে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে আগুন লেগে ৫ জন করোনা রোগী মারা গিয়েছিলো। কথা হচ্ছে, আগুন লাগার পর সবাই বের হতে পারলেও করোনা রোগীদের কেন বের করা হলো না ? এরজন্য কি শুধু আগুন দায়ী? নাকি করোনা রোগী বলে ভয়ে কেউ তাদের সাহায্যে যায়নি, যদি তার করোনা হয়ে যায়, এই ভয়ে। আর তাতেই মৃত্যু হয়েছে রোগীদের ?

অনেক আগে এক পোস্টে-
ইউরোপ-আমেরিকায় করোনায় উচ্চমৃত্যুর পেছনে আমি একটি অন্যতম কারণ উল্লেখ করেছিলাম, সেটা হলো বৈষম্য-অবহেলা। ইউরোপে দেখা গিয়েছে- মৃত্যুর একটি বড় অংশ হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমে। সন্তানরা বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসে, কিন্তু করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর সেখান থেকে সেবকরা ভয়ে পালিয়ে যায়। এতে বিনা দেখাশোনায় মারা অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। এর জন্য কিন্তু করোনা ভাইরাস দায়ী নয়, যদি ঐ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের ঠিক মত আদরযত্ন করা হতো, তবে হয়ত অনেকেই বাচানো সম্ভব ছিলো। কিন্ত তাদের অযন্ত অবহেলায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। আবার আমেরিকায় মৃতের একটা বড় অংশ হলো কৃষ্ণাঙ্গ। এক নার্সের দাবী হলো, হাসপাতালগুলোতে কালোদের প্রতি বৈষম্য করা হয়েছিলো, যার কারণে কালোদের মধ্যে মৃত্যুহার অনেক বেড়ে যায়।

এজন্য অনেক আগে এক পোস্টে আমি বলেছিলাম-
করোনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভুল হলো করোনাকে পাত্তা দেয়। করোনাকে যদি পাত্তা না দেয়া হলো, এবং স্বাভাবিক সব রোগের মত সব হাসপাতালে এন্টিবডি টেস্ট করে স্বাভাবিক করোনার চিকিৎসা করা যেতো, চিকিৎসা সিস্টেম না ভাঙ্গা হতো, তবে মৃত্যু বা হয়রানির সংখ্যা অনেক হ্রাস পেতো। কারণ তখন করোনা রোগীরাও চিকিৎসা পেতো আবার অন্য রোগীরাও চিকিৎসাহীন থাকতো না। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীরা আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে হাসপাতালে যাচ্ছে না, বাসায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে ক্রিটিকাল সিচুয়েশনে চলে যাচ্ছে, অনেকে মারা যাচ্ছে। লকডাউনকালে প্রসূতি নারীদের হাসপাতালে গমন অর্ধেক নেমে যাওয়া, এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ। অনেক হাসপাতালে করোনা টেস্ট ছাড়া ভর্তি নিচ্ছে না, এতে শুধু টেস্ট করতে গিয়ে ২-৪ দিন ঘুরে অর্ধমৃত-মৃত হয়ে পড়ছে অনেকে।

অনেকে হয়ত বলবে, লকডাউন, সোশ্যাল ডিসটেন্সিং বা আইসোলেশন করা হয়েছিলো হাসপাতালে আগমনের কার্ভকে খাটো করা জন্য।
কিন্তু ভাই ! আপনার হাসপাতালেই তো চিকিৎসা নেই। করোনা রোগীদের বক্তব্য হাসপাতালে ঠিকমত ডাক্তাররা যায় না, দিনে এক বার যায়। গেলেও ভয়ে আড়াল থেকে কথা বলে। নার্সরাও ঠিক মত তদারকি করে না। আপনি কার্ভকে খাটো করলেন (যদিও এর কোন প্রুভ নেই), কিন্তু হাসপাতালে করোনার ট্রিটমেন্টই দিতে পারলেন না, তাহলে এই কার্ভ খাটো করার লাভ কি হলো ? আবার অন্য রোগীদের চিকিৎসা শিকেয় তুললেন, ভোগান্তি মৃত্যু বাড়িয়ে দিলেন, তবে এই কার্ভ খাটোর করার কি গুরুত্ব থাকতে পারে ? একবার বলুন।

কথা হচ্ছে-
স্বাভাবিক মানুষের প্রতি মানবিক ব্যবহার না করলে আমরা বলি অমানবিক। কিন্তু একজন রোগীর প্রতি যখন এমন জঘন্য আচরণ করা হয়, তখন তাকে কি বলে সংজ্ঞায়িত করা হয়, তা আমার জানা নাই। আজকে আমেরিকায় একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে শেতাঙ্গরা বৈষম্য করে মেরে ফেলেছে বলে কত তোলপাড় হচ্ছে, তা নিয়ে কত মানবিকতার বুলি আওড়াচ্ছে মিডিয়া ও সুশীল সমাজ। কিন্তু সেই মিডিয়া ও সুশীল সমাজ যখন করোনা নিয়ে অতি আতঙ্ক ও হাতুড়ে ডাক্তারি ছড়িয়ে লক্ষ লক্ষ রোগীকে বৈষম্যের দিকে ঠেলে দেয়, মৃত্যুর মুখে পতিত করে, সেটা নিয়ে কেন কেউ কথা বলে না ? কেন সেটা নিয়ে কেউ আন্দোলন করে, কেন সেই জঘন্য অমানবিকতাকারীদের বিচার চায় না, সেটা আমি জানতে চাই।


লকডাউনের সুফলঃ প্রসব কমেছে হাসপাতালে, বেড়েছে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার

করোনা পরিস্থিতিতে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে প্রসবের হার নেমেছে অর্ধেকে। বাড়ছে মাতৃ ও শিশুমৃত্যু। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে বড় হাসপাতাল পর্যন্ত সবখানেই কমেছে প্রসব। অন্যদিকে ব্যাপকভাবে বেড়েছে বাসায় প্রসবের সংখ্যা। কেবল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক মাসে প্রসব হয়েছে ৮৭৫টি, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিমাসে যা গড়ে ছিল দেড় হাজার। বাসা বাড়িতে অদক্ষ ধাত্রীর হাতে প্রসব বাড়ায় প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণসহ নানা জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে আসছেন মায়েরা। অধ্যাপক ডা. নিলুফা সুলতানা বলেন, প্রচণ্ড খিঁচুনি নিয়ে রোগী আসছেন। কোনো কোনো রোগীদের জরায়ু জড়িয়ে নিয়ে আসছে। অধ্যাপক ডা. সায়েদা আক্তার বলেন, হোম ডেলিভারি বেড়ে গেলে অবশ্যই মাতৃ মৃত্যু বাড়বে। শিশুমৃত্যুও বাড়বে। (https://bit.ly/2TSQiSI)

এটা হচ্ছে লকডাউনের সুফল। আপনি যাতায়াত বন্ধ করে রাখবেন, মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরী করে রাখবেন, ফলে স্বাভাবিকভাবে এর প্রভাব পড়বে স্বাস্থ্যসেবার উপর। মায়েরা হাসপাতালে যেতে চাইবেন, কিন্তু পারবেন না। ফলে তৈরী হবে নানান সংকট।

খবরে লক্ষ্য করুণ- ঢাকা মেডিকেলে প্রসবের সংখ্যা কমেছে অর্ধেকের মত। এই হিসেব যদি সারা বাংলাদেশে করি তখন কি হবে ?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের হিসেব মতে বাংলাদেশে এখন প্রতি মিনিটে জন্ম নেয় ৯ জন শিশু। তাহলে প্রতি দিন জন্ম নেয়া শিশুর পরিমাণ প্রায় ১৩ হাজারের মত। (https://bit.ly/3dnbF6o)
তাহলে ৬৫ দিনের লকডাউনের বাংলাদেশে জন্ম নেয়ার কথা প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষ শিশু।
এর মধ্যে ৫০% যদি লকডাউনে বাধাগ্রস্থ হয়ে বাসায় প্রসবের চেষ্টা করেন, তবে তার পরিমাণ দাড়ায় প্রায় ৪ লক্ষ ২৫ হাজার। এর মধ্যে যদি মাত্র ৫% মা বা শিশু মারা যায়, তবে এর পরিমাণ হবে প্রায় ২১ হাজার। আর যদি ১০% মা বা শিশু যদি জটিল শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হোন, তবে এর পরিমাণ ৪২ হাজারের মত। বাসায় চেষ্টা করলে ৫% মা-শিশুর মৃত্যু বা ১০% জটিল সমস্যায় আক্রান্ত হওয়া খুব স্বাভাবিক, বরং হিসেব এর থেকেও বেশি হতে পারে।

শিশু জন্মদানের সময় মা যদি সঠিক ট্রিটমেন্ট না পায়, লকডাউন দিয়ে যদি তাকে নানান বাধাগ্রস্ত করা হয়, তবে মা ও শিশুমৃত্যুর মত চিরন্তন সত্যকে আমরা এড়িয়ে যেতে পারবো না। কিন্তু অতি দুঃখের বিষয়, আমরা বাস্তবতা এড়িয়ে থেকে এখন মরিচিকার পেছনে ছুটছি। ৬৫ দিনে করোনায় কত লোকের মৃত্যু হয়েছে, সেটা নিয়ে অনেক মিডিয়া সরব হলেও লকডাউনের কারণে কত মা ও শিশুর কিংবা সাধারণ মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করলো তার কোন হিসেব বা পরিসংখ্যা নেই। ব্রিটেনের একটা হিসেব পেয়েছিলাম, তারা একটি পরিসংখ্যানে দেখিয়েছিলো, লকডাউন বা করোনাভীতির কারণে মানুষ হাসপাতালে যাচ্ছে না, এতে সপ্তাহে মৃত্যুর সংখ্যা ৩ হাজারের মত। (https://archive.is/2eKCW)

আবার
আজকে মিডিয়ার খবরে দেখলাম, যার শিরোনাম -
অফিস খোলার প্রথম দিনে ৪০ জনের মৃত্যু।
(https://bit.ly/3cjrJEX)

লক্ষ্য করুণ- খবরে শিরোনাম দেখে মনে হচ্ছে, এই ৪০ জন মনে হয় অফিস করতে গিয়ে মারা গিয়েছিলো।
অথচ বাস্তবতার ভিত্তিকে শিরোনাম হওয়া উচিত ছিলো-
“৬৫ দিনের লকডাউনে ঘরে বসে থেকে ইমিউন সিস্টেম ড্রপ, মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৪০”
কিংবা
“আতঙ্ক বৃদ্ধি পাওয়ায় ইমিউন সিস্টেম ড্রপ, মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৪০”
(Stressful event অথবা Negative emotions মানবদেহের Immune System কে দুর্বল করে দেয়। ফলে সহজে শরীর ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া দিয়ে আক্রান্ত হয়)
কিংবা-
“বিভিন্ন ওষুধের ট্রায়ালে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা”।

এগুলো হলো বাস্তবতা ও বিজ্ঞান। কিন্তু কোনটির দিকে না যেয়ে, অফিস খোলাকে আজকের মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য দায়ী করা হলো। যদিও অফিস খোলার কারণে কিছু হয়েছে কি না, এটা বুঝতে বুঝতে আরো ১৫ থেকে ২১ দিন সময় দরকার। কিন্তু সেটা না করে, লকডাউনের দোষকে লকডাউন খোলার উপর চাপিয়ে দিয়ে চাইছে মিডিয়া।

আসলে আমরা সবাই নিজের স্বার্থের কথা ভেবে কথা বলি। কিন্তু নিজের স্বার্থে টান পড়লে ছাড় দিতে চাই না। গতমাসে দেখেছিলাম- কিছু প্রাইভেট কোম্পানির মানুষজনও লকডাউনের পক্ষে বলছে।
কিন্তু এ মাসে অনেকের বেতন-বোনাস বন্ধ হওয়াতে সবাই এখন লকডাউনের বিপক্ষে।
এখনও ফেসবুকে কেউ কেউ লকডাউনের পক্ষে বলছে।
এখন শুধু সরকারী চাকুরীজীবিদের বেতন অর্ধেক করে দেন, কিংবা ব্যাংকে যারা ডিপোজিট রেখে সুদ খায়, তাদের সুদের হার অর্ধেক করে দেন। অথবা মিডিয়া কর্মীদের বেতন অর্ধেক করে দেন। দেখবেন- লকডাউনের পক্ষের লোকগুলো নিমিষেই লকডাউনের বিপক্ষে বলা শুরু করবে।

তাই লকডাউনের পক্ষে যারা আছে, তারা অবাস্তবতাবাদী হোন কিংবা স্বার্থবাদী কিংবা দালালবাদী হোন, তারা সেগুলো ছেড়ে অবিলম্বে মূল ধারায় ফিরে আসবেন, এটাই কাম্য।

চাদ পৃথিবীর কোন এলাকায় কবে যাবে (দৃশ্যমান হবে), এটা নিয়ে কিন্তু অনেক ওয়েবসাইট আছে

আজকাল অনেক ওয়েবসাইটেই ঘূর্ণিঝড় কোন কোন রাস্তায় যাবে, তার গতিপথ দেখা যায়। তেমনি চাদ পৃথিবীর কোন এলাকায় কবে যাবে (দৃশ্যমান হবে), এটা নিয়ে কিন্তু অনেক ওয়েবসাইট আছে।

সেখানে ম্যাপে দেখা যায়, কোন এলাকায় কবে চাদ দৃশ্যমান হতে পারে, কিভাবে দৃশ্যমান হবে তার সম্ভাব্য বর্ণনা। সেটা দেখেও আপনি কিছু ধারণা করতে পারেন, আসলে চাদটা কোথায় আছে?
এ রকম একটি ওয়েবসাইট হলো- https://www.moonsighting.com/

এই ওয়েবসাইটে আগামীকাল শনিবার চাদ কোন কোন এলাকায় দৃশ্যমান হবে তার সম্ভাব্য একটা দিক নির্দেশনা দিয়েছে। যেমন-
১) হলুদ কালার দিয়ে যে অংশটায় নিউমুন থাকবে (যার বাংলা অর্থ আমাবস্যা)।
২) সবুজ কালার দিয়ে বুঝাইছে শনিবার সে অংশটায় খালি চোখে চাদ দেখা যাবে।
৩) আকাশী কালার দিয়ে বুঝাইছে, শনিবার অনেকগুলো শর্ত যদি মিলে যায়, তবে ম্যাপের সে অংশে দেখা যাইতেও পারে, আবার শর্তগুলো না মিললে দেখা নাও যাইতে পারে।
৪) ধূসর কালার দিয়ে বুঝাইছে, শনিবার ঐ অংশটায় চাদ খুজতে বিশেষ দূরবিক্ষণ যন্ত্রের সাহায্য লাগবে। খালি চোখে দেখা যাবে না।
৫) লাল রং দিয়ে বুঝাইছে, শনিবার ঐ অংশটুকুতে চাদ বিশেষ দূরবিক্ষণ যন্ত্র দিয়েই দেখতে হবে।

আমার মনে হয়, এটুকু ধারণা রাখলে চাদের অবস্থান সম্পর্কে অনেক কিছুই আপনারা আগে থেকে সম্ভব্য ধারণা করতে পারেন।

“ঘরে থাকুন, নিরাপদ থাকুন”- শ্লোগানটির পেছনে ব্যবসায়ীক ধান্ধা

“ঘরে থাকুন, নিরাপদ থাকুন”- শ্লোগানটি সুন্দর।
কিন্তু এই সুন্দর শ্লোগানগুলোর পেছনে কারো ব্যবসায়ীক ধান্ধা নেই তো ?
করোনার সময় অনেক সাধারণ ব্যবসায়ীর পতন হলেও সর্বকালের রেকর্ড লাভ ছাড়িয়ে গেছে ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের ব্যবসায়ীদের। এর মধ্যে অন্যতম হলো অনলাইন শপ অ্যামাজনের মালিক জেফ বেজোস। করোনা আতঙ্ক যখন শুধু শুরু হয়, মানে জানুয়ারী থেকে মার্চ, তখনই অ্যামাজনের বিক্রি পূর্বের রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। ৩ মাসে বিক্রি হয় ৭৫ বিলিয়ন ডলার, যা পূর্বের তুলনায় ২৬% বেশি। কোম্পানিটি এই তিন মাসে প্রতি ঘণ্টায় ইনকাম ছিলো ৩৩ মিলিয়ন ডলার। তবে এপ্রিল ও মে মাসে তাদের বিক্রি কতটুকু বেড়েছে সেই হিসেব এখনও পাওয়া যায়নি। একই সাথে অ্যামাজনের শেয়ারের দাম সর্বকালের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যায় এসময়। (https://bit.ly/2zQIiuD, https://cnb.cx/2zSleLR)
এ বিষয়টি নিয়ে দ্য গার্ডিয়ানে ইতিমধ্যে খবরও এসেছে,- করোনাকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আড়াই কোটি লোক বেকার হলেও জেফ বেজোসের মত বিলিয়নিয়ারা হাতিয়ে নেবে ৩০৮ বিলিয়ন ডলার। (https://bit.ly/2LJJQJl)
কথা হচ্ছে, মানুষ যত ঘরে থাকবে, সে তত অনলাইন কেনাকাটায় ঝুকবে,
সেটাই স্বাভাবিক। তাহলে যারা বিশ্বব্যাপী অনলাইনে কেনাবেচায় করে, তারা তো চাইবেই যেন মানুষ ঘরের মধ্যে বন্দি হয়ে থাকে, কারণ মানুষ যত বন্দি থাকবে, তাদের ব্যবসা তত বেশি হবে। এজন্য তারা যদি মিডিয়া, হু বা পরিবশবাদীদের কিছু উপরি দিয়ে বলে, তারা যেন মানুষকে ভয় দেখায় ঘরে বন্দি রাখে, “ঘরে থাকুন, নিরাপদ থাকুন” শ্লোগান শিখিয়ে দেয় তবে মন্দ কি ? ১০ টাকা ইনভেস্ট করলে ১০০ টাকা লাভ আসবে।
কথা হচ্ছে- করোনা দমনে এখন পর্যন্ত লকডাউন বা সোশ্যাল ডিসটেন্সিং এর কার্যকরীতা প্রমাণিত নয়। বরং তার সাইড ইফেক্ট নিশ্চিত। কোন ভ্যাকসিন বাজারে ছাড়ার আগে তা ইফিকেসি ও সেফটি পরীক্ষা করে ছাড়া হয়। কিন্তু লকডাউন বা সোশ্যাল ডিসটেন্সিং এর ইফিকেসি ও সেফটি নিশ্চিত না করেই কেন তা জোর করে জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়া হলো ? এটা কি এমনি এমনি হয়েছে ? নাকি জেফ বেজোসের দেয়া উপরি টাকার গুনে হয়েছে ???
উল্লেখ্য, করোনার দমনে সোশ্যাল ডিসটেন্সিং বা লকডাউন জনগণের উপর জোর করে চাপিয়ে দেয়ার মূলে ছিলো ডেমোক্যাটিক ব্লকভূক্ত পরিবেশবাদীরা। আর এই পরিবেশবাদীদের গত ফেব্রুয়ারীতে ১০ বিলিয়ন ডলার দেয় জেফ বেজোস। (https://n.pr/2ZnwXwQ)
বিষয়টি তো খুব স্বাভাবিক। একটি দল অতি-জনদরদি হয়ে আপনাকে স্যোশাল ডিসটেন্সিং শিখাবে, আপনাকে জীবনের ভয় দেখিয়ে ঘরে বন্দি থাকতে বলবে । দোকানপাট ঠিকমত খুলতে দিবে না। প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হলে ৬ ফুট দূরে দাড়াতে বলবে। আপনি বলবেন, এত ঝামেলা করে লাভ কি বাপু? অনলাইনে অর্ডার দিয়ে দেই। ব্যস তাহলেই তাদের লাভ।
২০২৬ সালের মধ্যে নাকি অ্যামাজনের মালিক জেফ বেজোস প্রথম ট্রিলিয়নিয়ার হবে (৮০ লক্ষ কোটি টাকার মালিক)। এরজন্য যদি পৃথিবীর কয়েক কোটি লোককে দুর্ভিক্ষে মরতে হয় কিংবা ২০-৩০ কোটি স্বচ্ছল লোককে ভিক্ষুক হতে হয়, তবে এসব ধনীদের কিছুই আসে যায় না। কারণ সাধারণ মানুষকে এরা মানুষই মনে করে না, ছাগল-ভেড়া মনে করে। তাই কিছু ছাগল-ভেড়া মরলে ক্ষতি কি ??

করোনা কি আমাদের অমানুষ বানিয়ে দিলো ?


অনেককে দেখলাম, গতকালকে ফেরিপারাপারের ভীড়ের ছবিকে আপলোড করে এই মানুষগুলোকে গালাগালি করছে। কেউ শুওরের বাচ্চা, কুক্তার বাচ্চা বলতেও দ্বিধা করতেছে না।

যারা এই গালিগুলো দিচ্ছেন, তারা মানুষের ভীড়কে উপলক্ষ করেই দিচ্ছেন,
কিন্তু মানুষগুলো যে কি অবর্ণণীয় কষ্ট করছে, সেটা তারা দেখতে পারছেন না।

আমি দেখেছি, মিডিয়াতে প্রায় একটা কথা বলে, দেখুন মানুষ কিভাবে অপ্রয়োজনে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আসলে মানুষ কিন্তু অপ্রয়োজনে ঘুড়ে বেড়ায় না, অবশ্যই তার কোন না কোন প্রয়োজন আছে,
কার দরকার এত কষ্ট করে প্রয়োজনে ভীড় ঠেলে যাওয়ার?
কিন্তু সে এমন কোন কঠিন সিচ্যুয়েশনে পড়েছে, যার কারণে সে যেতে বাধ্য হচ্ছে । আর বাংলাদেশে মানুষের ঘনবসতি বলে যদি অল্প সংখ্যক মানুষের জরুরী প্রয়োজন থাকে, তবে সেটাই দেখতে অনেক বেশি মনে হয়।

কথা হচ্ছে, ঈদে কিছু মানুষের জরুরী প্রয়োজন থাকতেই পারে,
সব প্রয়োজন লিখে শেষ করা যাবে না,
এজন্য উচিত ছিলো কিছুটা হলেও গণ পরিবহন চালু রাখা।
কিন্তু যাদের প্রাইভেট গাড়ি আছে, তারা গণ পরিবহনের গুরুত্ব বুঝতে পারে না।
ঢাকা শহরে দেখুন, প্রাইভেট গাড়িগুলো কিন্তু প্রতিদিনই এখন মোড়ে মোড়ে যানজট তৈরী করছে,
কিন্তু সমস্যা হইলো গরীবের গণ পরিবহণ নিয়ে। জোর করে তারা গরীবের উপর কষ্ট চাপিয়ে দিচ্ছে।

ছবিতে দেখুন, একজন পিতা কত কষ্ট করে একটা ৬ মাস বয়সী শিশুকে উপরে তুলে রেখেছেন।
এত গরমে, এত ভীড়ে কত মানুষ যে কত কষ্ট করছে, তার কোন শেষ নেই।
অথচ আমরা এসি প্রাইভেট গাড়িতে ঘুরে, এসি রুমে বাপ-মা’র সাথে বসে ফেসবুকে তাদের কুক্তার বাচ্চা-শুয়রের বাচ্চা বলে গালি দিতে ভুল করছি না।

আসলে, একটা কথা আমি আগেও বলেছিলাম এখনও বলছি-
ছোয়াছে বিশ্বাস মানুষকে স্বার্থপর ও অমানুষ বানিয়ে দেয়। এর বহু উদাহরণ গত ২ মাসে দেখা গেছে। আজকে যারা ফেসবুকে এসব ছবি দেখে গালাগালি করছে, তারা ঐ শ্রেনীর লোক। তাদের বিশ্বাস এই ভীড়ের মধ্যেই করোনা ছড়াচ্ছে, তাই লোকগুলোর কষ্ট বা প্রয়োজন তারা দেখতে পাচ্ছে না, তারা তাদের স্বার্থপরতা ও অমনুষ্যত্ব প্রকাশ করতেই তারা বেশি ব্যস্ত।

ইথোফেন বা কার্বাইড দিয়ে আমরা পাকালে তা বিষাক্ত হয় না।

কলাবিজ্ঞানী মানে আর্টস বা মানবিক বিভাগে পড়া বিজ্ঞানীদের কাজ,
যার বিরুদ্ধে আমি বহু বছর ধরেই সোচ্চার।
গতকাল রাজধানীর বাতামতলী কলাবিজ্ঞানীদের ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম ৪০ টন আম জব্দ করেছে, ৪১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে। (https://bit.ly/2Wq61e1)

তাদের দোষ তারা কার্বাইড দিয়ে আম পাকিয়েছে।
খবরের শিরোনাম নিশ্চয়ই দেখছেন- “করোনার মধ্যেও ফলে বিষ দিচ্ছে তারা!”
অথচ কলাবিজ্ঞানীরা জানেই না, কার্বাইড দিয়ে কিভাবে আম পাকায়।
প্রাকৃতিক উপায়ে পাকানোর সাথে এর কোন পার্থক্য নেই। ফলে এখানে বিষাক্ত কিছুই নেই।
এটা নিয়ে অনেকবার বিশেষজ্ঞরা বলেছে,
ইথোফেন বা কার্বাইড দিয়ে আমরা পাকালে তা বিষাক্ত হয় না।
(https://bit.ly/3fHLyJg)

কিন্তু কে শোনে কার কথা ?
করোনা নিয়ে যেমন কলাবিজ্ঞানীরা গো ধরে বসে আছে,
আম নিয়ে গো ধরে বসে আছে।
এ্ কলাবিজ্ঞানাদের বুঝাবে কে ?
অনেক ফলই এমনভাবে বাইরে থেকে কৃত্তিমভাবে পাকানো হয়,
এতে বিষাক্ত কিছুই হয় না।
কৃষিবিদ্যায় এটা বহু আগে থেকে স্বীকৃত।

হ্যা যে আম কিনবে সে তো, টেস্ট করেই কিনবে।
আমের দাম তো ফিক্সড নেই।
আপনি যদি গাছপাকা আম কিনতেই চান, তবে আরো অপেক্ষা করুন।
আরেকজনের ব্যবসা কেন নষ্ট করছেন ?
একজন ব্যবসায়ীকে ধ্বংস করা মানে তার অধীনে যতগুলো লোক চাকুরী করে সবাইকে বেকার বানানো।

কি বলবেন ? তারা মানুষকে ধোকা দিচ্ছে ?
এসব আমে পুষ্টিগুন নেই। ইত্যাদি।
কেন আপনারা কি পুষ্টিগুন টেস্ট করেছেন ?
আমে স্ট্যান্ডার্ড পুষ্টির মাত্রা কত ?
টেস্ট করে দেখেন, যদি স্বাভাবিকের তুলনায় কম পুষ্টিগুন থাকে, তখন সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন, এর আগে মিথ্যা বিষাক্ত ট্যাগ দিয়ে ধ্বংস করছেন কেন ?

আর স্ট্যান্ডার্ডের তুলনা করলে বলতে হয়-
-ব্র্যাকের আড়ং যে দুধ বিক্রি করছে, সেখানে কত পার্সেন্ট দুধ আছে?
-ইউনিলিভারের লাক্সে যে গোলাপের ছবি দেখিয়ে বিক্রি হচ্ছে, সেখানে কি সত্যিই গোলাপ মিশ্রিত আছে?
-প্রথম আলো ৯ মে তারিখে ট্রান্সকমের এসকেএফের রেমডেসিভিরকে যে করোনা প্রতিরোধে কার্যকর ওষুধ হিসেব প্রচার করলো তার শাস্তি কোথায়?
র‌্যাবের সারোয়ার আলম তখন কেন অভিজান করলো না?
মাহবুব কবির মিলন সেটা নিয়ে কেন কোন স্ট্যাটাস দিলো না ??
আসলে আইন ও নিয়ম হচ্ছে শুধু গরীবের বেলায়।
যারা উপর তলা বা নিজেদের লোক তাদের জন্য মিডিয়াও নেই, আইনও নেই।

উল্লেখ্য লাক্স-আড়ং এর জামা কিংবা রেমডিসিভিরের দাম কিন্তু ফিক্সড, সেখানে দরদামের সুযোগ নাই, কিন্তু আমে দরদাম করার সুযোগ আছে। আবার ঐ কোম্পানিগুলো কিন্তু প্রকাশ্যে মিডিয়াতে বিজ্ঞাপন দেয়, কিন্তু আমওয়ালা কিন্তু বিজ্ঞাপন দেয় না। যারা প্রকাশ্যে বিজ্ঞাপন দিয়ে ফিক্সড প্রাইজ করতেছে, তাদের তো আগে ধরা উচিত।

উল্লেখ্য এর আগে মিডিয়া ফরমালিন গুজবে রটিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত দিয়ে ৪০ হাজার টন মাছ-ফল ধ্বংস করে বহু সাধারণ ব্যবসায়ীকে পথে বসায়। পরে প্রমাণ হয়, ঐ মেশিনেই সমস্যা ছিলো। (https://bit.ly/3fDbQfA)

আসলে মানুষ এসব কলাবিজ্ঞানীদের কথা শুনে ভাবে- মনে হয় অনেক উপকৃত হচ্ছে,কিন্তু কলাবিজ্ঞানীদের আলটিমেট লক্ষ্য জনগণের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা।
তারা এর নাম দিয়েছে ‘প্ল্যানড ইকোনোমি’।
শুনতে কথাটা সুন্দর। কিন্তু কথিত প্ল্যানের নামে তারা সাধারণ ব্যবসায়ীদের ফেলে দিয়ে শুধু নিজেরা ব্যবসা করবে।
অর্থাৎ তারা হবে মালিক, আর বাকিরা হবে তাদের চাকুরে বা চাকর।
অন্য কোন মালিককে তারা সহ্য করবে না।

রীক্ষার হারের তুলনায় সনাক্তের হার কিন্তু প্রায় এক মাস ধরে একই

বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণের হার যদি খেয়াল করেন,
তবে দেখবেন দীর্ঘদিন কিন্তু তা একই মাত্রায় রয়েছে।
বাংলাদেশের মানুষ যে খুব লকডাউন-সোশ্যাল ডিসটেন্স মেনেছে তা নয়,
কিন্তু তারপরও পরীক্ষার হারের তুলনায় সনাক্তের হার কিন্তু প্রায় এক মাস ধরে একই।
অর্থাৎ যে হারে করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে, সেই অনুপাতেই করোনা ধরা পড়েছে,
খুব বেশি তার পরিবর্তন হয় নাই।

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত মোট পরীক্ষা হয়েছে ১১৬৯১৯টি
এবং সনাক্ত হয়েছে ১৩৭৭০ জন।
অর্থাৎ শতকরা হিসেবে দাড়াচ্ছে ১১% বা ৯ জনের পরীক্ষায় ১ জন করোনা ধরা পড়েছে।
এই গড় হিসেবটা কিন্তু বহুদিন ধরে প্রায় একই রয়েছে, বৃদ্ধি পায়নি।

কথা হচ্ছে, মানুষকে শেখানো হচ্ছে-
বাংলাদেশে গার্মেন্টস খুললে করোনায় লাশের স্তুপ পড়বে,
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জানাজায় জমায়েত হলে লাশের স্তুপ পড়বে,
মসজিদ খুললে করোনার লাশের স্তুপ পড়বে,
শপিং কমপক্স খুলরে লাশের স্তুপ পড়বে,
গণ পরিবহন খুললে লাশের স্তুপ পড়বে,
এগুলো ফালতু ও প্রমাণ বিহীন কথা ছাড়া কিছু নয়।

বরং সব কিছু খুলে স্বাভাবিক করে দেন,
কেউ করোনায় আক্রান্ত হোক আর না হোক,
তাকে ঠিক মত চিকিৎসা নিতে দেন,
আতঙ্ক হ্রাস করুন, যাতায়াত সহজ করুন।
তখন দেখবেন- এখন দেশে যে মৃত্যু হচ্ছে (করোনা বা করোনা ছাড়া)
তা আরো কমে আসবে।
কারণ যাতায়াত ব্যবস্থা বন্ধ, হাসপাতাল চিকিৎসাহীন,
আতঙ্কে মানসিক সমস্যা বৃদ্ধির কারণেই বরং মৃতের সংখ্যা বাড়ছে।

কয়েকদিন আগে সুইডেন সরকার একটা নির্দেশনা জারি করেছিলো,
নির্দেশনাটা ছিলো-
ডাক্তাররা যখন করোনা রোগীর কাছে যায়, তখন তারা মুখের সামনে এক ধরনের স্বচ্ছ প্লাস্টিকের শিট ব্যবহার করে । ডাক্তাররা আগে এই প্ল্যাস্টিকের শিটের ভেতর আবার মাস্ক পড়তো।
নির্দেশনায় বলা ছিলো- যেহেতু প্লাস্টিকের শিট আছে, তাই মাস্কের কোন দরকার নাই।
কারণ ডাক্তার মাস্ক পড়লে রোগী আরো বেশি আতঙ্কগ্রস্ত হবে, যা রোগীর জন্য ক্ষতিকর।

এখানে কিন্তু আমাদের জন্য শিক্ষা আছে।
করোনা নিয়ে আমাদের আতঙ্ক হ্রাস করতে হবে।
কিন্তু আতঙ্কবাদীরা শুধু আতঙ্কই তৈরী করতে চাচ্ছে,
অমুক হইলে লাশের স্তুপ পড়বে, তমুক হইলে লাশের স্তুপ পড়বে।
কিন্তু জনসমাগম হইলেই যদি লাশের স্তুপ পড়তো, তবে বাংলাদেশ হইতো সবচেয়ে বেশি লাশের স্তুপের দেশ। বস্তিগুলোতে আপনি লাশের স্তুপ গুনে শেষ করতে পারতেন না। কিন্তু তার কিছুই হয়নি বাংলাদেশে।

তাই অযথা আতঙ্ক তৈরী না করে সব স্বাভাবিক করুন,
বিশেষ করে গণ পরিবহণ চালু করে, মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করুন,
মানুষের কষ্ট লাঘব করুন।

ব্র্যাকের আড়ং, ইহুদী বহুজাতিক বাটা কিংবা এমপির এপেক্স কিন্তু বন্ধ নেই

আমি অনেক অগে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম-
“তুমি বন্দি আমি মুক্ত”
মানে যারা আমাদের বন্দি হতে শিখাচ্ছে, তারা কি নিজেরা বন্দি হয়েছে ?
মিডিয়া সরকার রাজনৈতিক দল কিংবা প্রশাসন ?
না হয়নি। তারা তাদের কাজ চালিয়ে গেছে।
এবং দিন শেষে দেখবেন, আমি-আপনি বন্দি হয়েও স্বাস্থ্যগত যতটুকু ক্ষতি হয়েছি,
তারাও ঠিক ততটুকু ক্ষতি হয়েছে।
কিন্তু আমরা নিজেদের বন্দি রেখে যতটুকু অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতি হয়েছে,
তারা কিন্তু তার থেকে বহুগুনে লাভবান হয়েছে ।

আজকে বিভিন্ন দোকান মালিক সমিতিকেও ভয় দেখিয়ে হয়ত মার্কেট বন্ধের ঘোষণা নেয়া হচ্ছে,
কিন্তু মিডিয়ার নেটওয়ার্কের
ব্র্যাকের আড়ং, ইহুদী বহুজাতিক বাটা কিংবা এমপির এপেক্স কিন্তু বন্ধ নেই।
তারা কিন্তু তাদের ঈদের ব্যবসা ঠিকই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বোকা দোকান মালিকরা ভরা মৌসমে বরং দোকান বন্ধ রাখরে তাদের বিক্রি আরো বাড়বে।

আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি-
আমাকে কেউ একটি পলিসি দিচ্ছে, কিন্তু সে নিজের মধ্যে সেটা বাস্তবায়ন করছে কি না, সেটা আগে দেখা উচিত। দেখা গেলো, সে আমাকে আমাকে বলছে এক রকম, কিন্তু তার বাস্তব জীবনে সে ঐ রকম করতেছে না। তারমানে তার নিজের দেয়া পলিসির মধ্যে ঘাপলা আছে, নয়ত সে নিজেই তার জীবনে সেটা পালন করতো।

বিভিন্ন শপিং কমপ্লেক্স কি উদ্দেশ্য নিয়ে দোকান বন্ধ করছে তা আমার জানা নাই, কিন্তু মিডিয়ার মত মাফিয়ার খপ্পরে পড়ে যদি করে তবে সিদ্ধান্ত ভুল হবে, সঠিক হবে না কখন।

খবরের সূত্র: https://bit.ly/3fywZr6

বাস্তব কোভিড যোদ্ধা হচ্ছে মানুষের শরীরের ভেতর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

কোভিড-১৯ এ প্রথম ১০০ জন মৃতের বয়সের চার্ট করেছে আইইডিসিআর।

সেখানে ১০০ জন মৃতের মধ্যে ৫ জন হচ্ছে ০-৩০ বছর বয়সী।
উল্লেখ্য বাংলাদেশে ০-৩০ বছর বয়সীদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৬০%।
আবার কোভিড-১৯ (Ro- ২.২) এর ক্ষেত্রে হার্ড ইম্যুনিটি এচিভ করতে প্রয়োজন ৬০% লোকের।
তাই জেনারেশন জেড এর আধিক্যের দেশ বাংলাদেশে হার্ড ইম্যুনিটির জন্য যদি তরুণ প্রজন্ম এগিয়ে আসে, তবে তাদের মৃত্যুর হার মোট মৃত্যু হারেরও ১০০ ভাগের তুলনায় মাত্র ৫ ভাগ হবে।
আপনারা জানেন,
কোভিড-১৯ এ এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে মিলিয়নে মৃত্যু মাত্র ১ জন।
তাহলে তরুণ প্রজন্মের ক্ষেত্রে তার হিসেব গিয়ে দাড়াবে প্রতি ১০ কোটিতে ৫ জন।

আরেকটি বিষয়-
আইডিসিআর এর হিসেবে ১০০ জন মৃত্যুর মধ্যে ৭৩% হচ্ছে পুরুষ, এবং ২৭% হচ্ছে নারী।

আচ্ছা বলুন তো পুরুষের তুলনায় নারীর মৃত্যুর হার এত কম কেন ?
আমি জানি, লকডাউনের পক্ষের লোকেরা বলবে, “নারী পুরুষের তুলনায় বাইরে কম ঘুরে তাই।”

আসলে বিষয়টি তেমন না।
মূলত নারীর দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পুরুষের তুলনায় বেশি।
তাই পুরুষের তুলনায় নারীর মৃত্যুর হার অনেক কম।
যদিও নারী ফিজিকাল কন্ডিশন পুরুষের তুনলায় দৃশ্যত্ব দুর্বল।

এখানে দুটি জিনিস প্রমাণ হয়
এক, বাস্তব কোভিড যোদ্ধা হচ্ছে মানুষের শরীরের ভেতর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই।
দুই, বাহ্যিক ফিজিকাল কন্ডিশন দেখে আসলে কারো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাচাই করা যায় না।

যদিও একদল কলাবিজ্ঞানী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ‘ভ্রম’/আলাউদ্দিনের দৈত্য এবং দৃশ্যত্ব দুর্বল-সবল দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বিচার করে ফেসবুকে প্রচার চালিয়ে থাকে।

পঙ্গপাল - ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের পরিবেশবাদী উপদলের ইস্যু

কয়েকদিন আগে এক স্ট্যাটাসে আমি বলেছিলাম, সাসটেইনএবল ডেভেলপমেন্ট গোল ২০৩০ (এসডিজি) এর অনেকগুলো পয়েন্ট হচ্ছে ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের পরিবেশবাদী উপদলের ইস্যু। এ কারণে তারা বিভিন্ন পরিবেশবাদী ইস্যুগুলোকে হাইলাইট করবে এবং তার মাধ্যমে তাদের অনেক প্ল্যান বাস্তবায়ন করবে। বলেছিলাম- করোনা ভাইরাসের নামে লকডাউন, সোশ্যাল ডিসটেন্সিং এগুলো হচ্ছে তাদেরই চাপিয়ে দেয়া বিষয়।

তবে পরিবেশবাদীরা একটা বিষয় নিয়ে কখনই থেমে থাকবে না, নিত্য নতুন ইস্যু তারা তৈরী করে রাখবে নিশ্চিত। সম্প্রতি টেকনাফে কথিত পঙ্গপাল সদৃশ্য পোকা পাওয়া গেছে টাইপের নিউজ নিয়ে বিবিসি, ডয়েচে ভেলের মত ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের মিডিয়ার অত্যন্ত লাফালাফি, অতঃপর সেই পোকা দেখতে জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের ফিল্ডে যাওয়াকে আমার কাছে সুবিধার মনে হচ্ছে না। বাংলাদেশে এ রকমের বহু পোকাই আছে, কিন্তু এবারে কথিত পোকা দিয়ে তাদের আন্তর্জাতিকভাবে মাখামাখি বিশেষ কোন কাজের অংশকেই ইংগিত করে।

আমার ধারণা হচ্ছে, ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের পরিবেশবাদী উপদল এই কথিত পঙ্গপালকে কেন্দ্র করে নতুন করে আতঙ্ক তৈরী করতে চাচ্ছে এবং সেটাকে কেন্দ্র করে তাদের নতুন কোন কার্যক্রম বা পলিসি জনগণের উপর চাপিয়ে দিতে পারে। এজন্য প্রয়োজনে তারা তাদের পলিসিকে আইন করার জন্য সরকারকে চাপ দিবে এবং প্রশাসনের অস্ত্র দিয়ে সেই আইন জনগণের উপর প্রয়োগ করতে বাধ্য করবে। জনগণ তাদের পলিসি পালন করলে ডেমোক্র্যাটিকদের ব্লকের রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক উপকার হবে, কিন্তু বাস্তবে জনগণের কোন উপকার হবে না, বরং ক্ষতি হবে।
আমার মনে হয়, ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের পরিবেশবাদী উপদলের ষড়যন্ত্রগুলো থেকে এখনই সচেতন থাকা খুব জরুরী হয়ে দাড়িয়েছে।

লকডাউন/শ্যাটডাউনের সাথে করোনা মহামারী হওয়ার কোন সম্পর্কই নাই

-লকডাউন তুলতে চান ?
লকডাউন উঠালে যদি করোনা পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায় ?
-তারমানে লকাডাউনের (আসলে শ্যাটডাউন) কারণে কি করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে ?
গ্রাফ তো বলছে যে অনুপাতে টেস্ট বেড়েছে, প্রায় সে অনুপাতেই রোগী সনাক্ত হয়েছে (আক্রান্ত নয়, বরং আক্রান্তদের মধ্য থেকে সনাক্ত),
আর মৃতের সংখ্যাও স্ট্যাবলই রয়েছে।
লকডাউন/শ্যাটডাউনের আগে যা ছিলো পরে প্রায় তাই আছে, খুব বেশি পার্থক্য হয় নাই।

যখন ইতালি, স্পেন, আমেরিকায় প্রচুর লোক মারা যেতে থাকলো, তখন আমি বলেছিলাম,
আপনারা শীতের দেশ (৩০ ডিগ্রি ল্যাটিচিউডের উপরে) গুলোর সাথে বাংলাদেশের তুলনা দিয়েন না,
নিচের দেশগুলোর সাথে তুলনা দেন, নিচের দেশগুলোতে করোনা যেমন হবে,
বাংলাদেশেও তেমন হবে।
এখন পর্যন্ত কিন্তু নিচের দেশগুলোর মতন করেই কিন্তু বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কথা হলো- এই যে বাংলাদেশে যতটুকুই নিয়ন্ত্রণে আছে (মানে স্পেন-ইতালি-আমেরিকার মত মহামারী হয় নাই),
এর কৃতিত্ব কি লকডাউন/শ্যাটডাউনের ?
নাকি আবহাওয়া জনিত কারণে ?
৩০ ডিগ্রি ল্যাটিচিউডের নিচের দেশগুলোর আবহাওয়া অনুসারে যেমন হওয়ার কথা তেমনই তো হইছে।
৩০ ডিগ্রি ল্যাটিচিউডের উপরের দেশগুলো তো লকডাউন/শ্যাটডাউন দিয়েও তাদের মহামারী ঠেকাইতে পারে নাই।
তাহলে লকডাউন/শ্যাটডাউনের কৃতিত্ব কোথায় ?
বাংলাদেশে যতটুকু নিয়ন্ত্রণে আছে (মহামারী হয় নাই) সেটা কৃতিত্ব আবহাওয়া জনিত কারণে,
লকডাউন/শ্যাটডাউনের না। যদি লকডাউন/শ্যাটডাউন দিয়ে মহামারী ঠেকানো যেতো তবে স্পেন/ইতালি/আমেরিকা তা আগে ঠেকাতে পারতো।

সোজা ভাষায়-
লকডাউন/শ্যাটডাউন তুললে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার প্রশ্নই আসে না, কারণ লকডাউন/শ্যাটডাউনের সাথে করোনা মহামারী হওয়ার কোন সম্পর্কই নাই।
কিন্তু তারপরও একটা বিশেষ শ্রেণী চোখ-মুখ বুজে অন্ধের মত লকডাউনের পক্ষে বলেই চলেছে।
আশ্চর্য এদের চিন্তাধারা ! আশ্চর্য এদের মূর্খতা !

এন্টিবডি টেস্ট করালে করোনার ক্ষেত্রে সুস্থতা, ইম্যুনিটি, হার্ড ইম্যুনিটি ও মৃত্যু নিয়ে যে মিথ তৈরী হয়েছে তা মুহুর্তেই ফকফকে পরিষ্কার হয়ে যাবে

বাংলাদেশে ৪০% লোকের শরীরে ইতিমধ্যে করোনার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরী হয়ে থাকতে পারে : অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী বলেছেন, “গত ৩-৪ মাসে অনেক ব্যক্তি লক্ষণহীনভাবে ঘুরে বেড়িয়েছে। অনেকের লক্ষণ ছিলো, আমরা হয়ত ধরতে পারিনি। যার ফলে ১০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০% পর্যন্ত লোক পাওয়া যাবে, যারা ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের কোন লক্ষণই প্রকাশিত হয়নি। এবং তারা ইতিমধ্যে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরী হয়েছে। ” এন্টিবডি পরীক্ষার মাধ্যমে এই লোকগুলোকে খুজে পাওয়া সম্ভব। (https://tinyurl.com/yaduucak)

উল্লেখ্য, সুইডেনও একই কথা বলছে, তাদের ৫০% লোক ইতিমধ্যে করোনার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরী করে ফেলেছে, যা আগামী মাসের মধ্যে ৬০% এ পৌছাবে এবং তখন হার্ড ইম্যুনিটি তৈরী হবে। তবে এরজন্য তারা এন্টিবডি টেস্টের বিষয় দেখছে।

কিন্তু সমস্যা হলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বার বার পিসিআর টেস্টের কথাই বলছে কিন্তু এন্টিবডি টেস্ট করাতে মৌখিকভাবে বাধা দিচ্ছে। হু এর বাধা দেয়ার পেছনে তারা যে কারণ উল্লেখ করছে- একজন ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হলে সাথে সাথে পিসিআর টেস্ট করলে তার সঠিক রেজাল্ট পাওয়া যাবে। কিন্তু এন্টিবডি টেস্ট এর ক্ষেত্রে ৭ দিনের মধ্যে রেজাল্ট আসবে না। অর্থাৎ এই ৭ দিনের মধ্যে টেস্ট করালে তার রেজাল্ট নেগেটিভ আসবে, তাই এর কোন গুরুত্ব নেই। কিন্তু এন্টিবডি টেস্টের ভালো দিক হচ্ছে, এর মাধ্যমে বেড়িয়ে আসবে- প্রচুর পরিমাণে মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে গেছে অথবা সুস্থ হওয়ার পথে।
উল্লেখ্য, এন্টিবডি টেস্ট করাতে মাত্র ১৫-২০ মিনিট সময় লাগে এবং খুব সহজ পদ্ধতি এবং খরচ নামেমাত্র। প্রত্যেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তা করা যাবে। বিএসএমএমইউ করোনা বিষয়ক টাস্কফোর্স সহকারী সমন্বয় অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, খুবই সহজ টেস্ট এটা। মাঠেই করা যায়। কোনো এক্সপার্টও লাগবে না। অপরদিকে পিসিআর টেস্ট করতে ২ দিন সময় লাগে এবং খুব জটিল পদ্ধতি এবং ব্যয়বহুল এবং মান সম্মত ল্যাব না হলে সেটা করাও যাবে না। (https://bit.ly/3boMmjz)

আমার মনে হয়, হু এন্টিবডি টেস্টে বাধা দিচ্ছে, কারণ-
১) এন্টিবডি টেস্ট করালে বেড়িয়ে আসবে, করোনাকে যে বিরাট এক দৈত্য বলে প্রচার করা হয়েছে তা আসলে ভুয়া। কারণ বহু মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে গেছে, কিন্তু টেরই পায়নি।
২) যাদের শরীরে পর্যাপ্ত এন্টিবডি আছে, তাদের রক্ত নিয়ে প্লাজমা থেরাপী দেয়া যাবে, ফলে করোনায় কিছু লোকের মৃত্যু বা গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে যে ভীতি তৈরী হচ্ছিলো, সেটা নেমে আসবে।
৩) যদি সত্যিই বেড়িয়ে আসে, এখন বাংলাদেশে ৪০% লোকের শরীরে এন্টিবডি আছে, তাহলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তা ৬০% এ পৌছাবে। অর্থাৎ প্রাকৃতিকভাবে হার্ড ইম্যুনিটি এচিভ করা কোন ব্যাপার না। এটা যদি পাবলিক বুঝে যায় তবে ভ্যাকসিন কোম্পানি বা এন্টি ভাইরাল ড্রাগ বা ভেনটিলেটর কোম্পানিগুলো যে বিরাট ব্যবসার ধান্ধা করেছিলো সেটাও মাঠে মারা যাবে।
৪) করোনা নিয়ে অতি প্রচারের পেছনে আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদীদের কিছু প্ল্যান আছে, সেগুলো তার করতে পারবে না।
৫) লকডাউন, সোশ্যাল ডিসটেন্স বাস্তবে এগুলোর যে কোনগ যে ভোগাস সিস্টেম তা পাবলিকের নজরে চলে আসবে।
[জাফরুল্লাহসহ অনেকেই এন্টিবডি টেস্ট কীটের কথা বলেছিলো, এ কারণবশতঃ সম্ভবত সেটা এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। ]

সোজা ভাষায় এন্টিবডি টেস্ট করালে করোনার ক্ষেত্রে সুস্থতা, ইম্যুনিটি, হার্ড ইম্যুনিটি ও মৃত্যু নিয়ে যে মিথ তৈরী হয়েছে তা মুহুর্তেই ফকফকে পরিষ্কার হয়ে যাবে। পাবলিক তখন বুঝতে পারবে, করোনা নিয়ে এতদিন তাদের সাথে যা করা হয়েছে সব ধোকা। এজন্য সম্ভবত হু করোনার জন্য এন্টিবডি টেস্টের অনুমতি দিতে চায় না।

লকডাউন, সোশ্যাল ডিসটেন্স, স্কুল বন্ধ করা, বর্ডার ক্লোজ করা এগুলোর কোন বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয় নয় এবং সম্পূর্ণ ভুল পলিসি

পৃথিবীর অন্যতম সিনিয়র এপিডেমিওলজিস্ট, সুইডিশ সরকারের উপদেষ্টা, ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিস প্রিভেনশন এবং কন্ট্রোল এর প্রথম প্রধান বিজ্ঞানী এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেলের উপদেষ্টা অধ্যাপক জোহান জিসেককে বলেছে-

লকডাউন, সোশ্যাল ডিসটেন্স, স্কুল বন্ধ করা, বর্ডার ক্লোজ করা এগুলোর কোন বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয় নয় এবং সম্পূর্ণ ভুল পলিসি। কারণ শেষ পর্যন্ত এটি হার্ড ইম্যুনিটির দিকেই যাবে। শুরুতে যুক্তরাজ্য যা করেছিলো (হার্ড ইম্যুনিটিকে প্রাধান্য দিয়ে) সেটা ছিলো অধিকতর ভালো সিদ্ধান্ত, কিন্তু ১৮০ ডিগ্রি ইউটার্ন নিয়ে তারা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। “ইমপেরিয়াল কলেজ পেপার” (যে পেপারে বরাত দিয়ে বিভিন্ন মিডিয়া ভবিষ্যতবানী করছিলো, যেমন- করোনাতে যুক্তরাষ্ট্রে ২২ লক্ষ লোক, যুক্তরাজ্যে ৫ লক্ষ লোক মারা যাবে) মোটেও ভালো কিছু ছিলো না। এটা ছিলো খুব বেশি হতাশাব্যঞ্জক এবং সন্দেহজনক। সে কোনদিনই এ ধরনের আনপাবলিশ পেপারের প্রভাব মানুষের উপর এত দেখে নাই। লকডাউনের মাধ্যম দিয়ে ফ্ল্যাটারিং কার্ভ (উপবৃত্তকে খোটো) করার কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু এটা আসলে হচ্ছে ঝূকিপূর্ণ ব্যক্তিদের মৃত্যুর মাধ্যম দিয়েই। এবং এটা সব দেশের জন্য রেজাল্ট প্রায় সমান। কোভিড-১৯ খুবই সাধারণ রোগ এবং ফ্লু এর মতই, তবে এটা নতুন হওয়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরী করেছে। কোভিড-১৯ এর মৃত্যুহার এ অঞ্চলের জন্য (ইউরোপ) ০.১% এবং যুক্তরাজ্য এবং সুইডেনের জনগণকে গণহারে এন্টিবডি টেস্ট করা হলে দেখা যাবে, ৫০% লোক ইতিমধ্যে তা দ্বারা আক্রান্ত হয়ে গেছে। যুবকদের জন্য কি করনীয় এই জবাবে সে বলে, “দাদা-দাদি দের কাছ থেকে দুরে থাকো।”
“ব্রিটেনে অনেক মানুষ লকডাউনের পক্ষে বলে” উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রফেসর জোহান জিসেককে হেসে উঠেন। বলেন- এটা সাধারণ জনসাধারণ এর দুর্ভোগ আনবে। আর কেউই কার্যকারিতা র যথেষ্ট প্রমাণ দিতে পারবে না। তাই শেষে সবাই সুইডেনএর পথ অবলম্বন করবে । কারন কত দিন লকডাউন করে রাখা সম্ভব? একটা সময় মানুষ ঠিক ঘরের বাহিরে আসবে।
জোহান জিসেককে মনে করেন স্বাস্থ্য সচেতনতা জরুরি কিন্তু লকডাউন সোসাল ডিসটেনসিং এর কোন দরকার নেই । কারন এর সমাধান কেবল হার্ড ইম্যুনিটির এর মাঝে আছে। জোহান জিসেককে এই সিস্টেম ছাড়া এর ভালো সমাধান দেখছে না। এর সাথে সে আরও যোগ করে, যেসব দেশ আগে লকডাউন করেছে, তারাও এখন সুইডেন এর পথেই আগাচ্ছে।

তথ্যসূত্র: https://bit.ly/3atSINr

দুইটা খবর-

(১)
সুইডেনের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ঘোষণা দিয়েছে,
আগামী মাসের মধ্যেই তারা করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে হার্ড ইম্যুনিটি অর্জন করবে।
উল্লেখ্য সুইডেন কোন লকডাউন দেয়নি, শুধুমাত্র ৭০+ বয়সী এবং অসুস্থদের বাসায় থাকার নির্দেশনা দিয়েছে।
(https://bit.ly/2XMaV5T)

(২)
মার্কিন সিনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অ্যান্থনি স্টিফেন ফাউসি বলেছে, “করোনাভাইরাস একটি মৌসুমি ফ্লু’র প্রকৃতি ধারণ করবে। (https://bit.ly/2KdD9P0)

স্টিফেন ফাউসির কথা বুঝতে গেলে আসলে হার্ড ইম্যুনিটির বিষয়টি বুঝতে হবে।
আমার মনে হয়, বাংলাদেশে যারা করোনা ভাইরাসের জন্য হার্ড ইম্যুনিটির বিরোধীতা করে,
তারা অনেকেই আসলে বুঝে না, হার্ড ইম্যুনিটি কি জিনিস ?

ধরুন, কোন একটি এলাকায় ১ লক্ষ লোক বাস করে।
এর মধ্যে ৬০ হাজার লোক কোন একটি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পর যখন সুস্থ হবে, তখন তাদের শরীরে যে ইম্যুনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরী হবে, সেটা তাদের সহ মোট ১ লক্ষ লোককে প্রটেকশন দিবে। অর্থাৎ ৪০ হাজার লোক আক্রান্ত না হয়েও ঐ ৬০ হাজার লোকের সাথে থাকার কারণে সেফ জোনে থাকবে বা ফ্রি সুবিধা পাবে।
যে ৬০ হাজার লোকের দ্বারা সেফ জোন তৈরী, ধরে নিলাম, ১ বছর পর সেই ৬০ হাজার লোকের মধ্যে ২০০ লোক কোন কারণবশতঃ মারা গেলো। পরের বছর যখন করোনা ভাইরাস আসবে, তখন সে ঐ ২০০ লোকের স্থান পূরণ করতে যতজনকে আক্রান্ত করতে হয় ততজনকে আক্রান্ত করবে, এবং ২০০ ইম্যুনাইজড হয়ে গেলে করোনা ভাইরাস আবার ঐ এলাকা থেকে বিদায় নিবে। কিন্তু পরের বছর অনেক কম লোক আক্রান্ত হওয়ায় কেউ সেটাকে আর পাত্তা দিবে না। অর্থাৎ সে একটা সিজনাল ফ্লুতে পরিণত হবে। এই নিয়মেই সৃষ্টির শুরু থেকে ভাইরাস ও প্রাণীর মধ্যে ব্যালেন্স চলে আসছে।

এখানে আলোচনার বিষয় হলো, কোন নতুন যখন ভাইরাস পরিবেশে আসে,
তখন সে অনেককে আক্রান্ত করতে থাকে এবং এটাই চিরাচরিত নিয়ম।
এবং যতগুলো লোক আক্রান্ত হলে হার্ড ইম্যুনিটি এচিভ হয়, ততগুলো লোককে সে আক্রান্ত করতে থাকে। এবং হার্ড ইম্যুনিটি এচিভ (করোনার ক্ষেত্রে ৬০% লোক) হওয়ার সাথে সাথে সে আবার আড়ালে চলে যায়। কিন্তু হার্ড ইম্যুনিটির প্রয়োজনীয় সংখ্যক লোক পরের বছর হারিয়ে গেলে, সে আবার সেই ঘর পূরণ করার জন্য ফিরে আসে। করোনার ক্ষেত্রেও সেটা হবে, অর্থাৎ সে সিজনাল ফ্লু হয়ে ফিরে আসবে হার্ড ইম্যুনিটির শূণ্যস্থান পূরণ করার জন্য। মার্কিন সিনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অ্যান্থনি স্টিফেন ফাউসি সেই কথাটাই বলতে চেয়েছে।

তাহলে উপায় কি ?
উপায় হলো সুইডেন যেটা করেছে।
অর্থাৎ লকডাউন খুলে দেয়া এবং বয়স্ক ও অসুস্থদের ঘরে সাবধানে রাখা।
তাহলে সব সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে।
উল্লেখ্য, সুইডেনের তুলনায় বাংলাদেশে তরুণদের সংখ্যা দ্বিগুন এবং ৬৫+ বয়সীদের সংখ্যা ৩ ভাগের ১ ভাগ। (মোট জনসংখ্যা অনুপাতে)

অনেকে হয়ত ভ্যাকসিনের জন্য অপেক্ষা করতে পারেন।
বলতে পারেন- হার্ড ইম্যুনিটি এচিভ করবো, কিন্তু সেটা ভ্যাকসিনের মাধ্যমে নিরাপদ উপায়ে।
কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষ দূত ডেভিড নাবারো বলেছে, করোনার ভ্যাকসিন হয়তো কখনই পাওয়া যাবে না”। (https://bit.ly/2KdD9P0)

উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত কোন ইনফ্লুয়েঞ্জারই কার্যকরী ভ্যাকসিন আবিস্কার হয়নি।

বাংলাদেশে হার্ড ইম্যুনিটি এচিভ করা অনেক সহজ।

বাংলাদেশে হার্ড ইম্যুনিটি এচিভ করা অনেক সহজ।
কারণ বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্মের সংখ্যা অনেক বেশি।
জনমিতি বলছে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার শিশু থেকে ২৯ বছরের জনসংখ্যা হলো মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬০%।
(https://en.wikipedia.org/wiki/Demographics_of_Bangladesh)
আর করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে ৬০% জনসংখ্যা প্রয়োজন হার্ড ইম্যুনিটি এচিভ করতে।
(https://www.sciencemediacentre.org/expert-comments-about-herd-immunity/)
0-29 বছরের শরীরের নিঃসন্দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রচুর শক্তিশালী থাকে।
পৃথিবীর কোন দেশে তরুণ প্রজন্মের সংখ্যা কিন্তু এত বেশি নয়।
যে সুইডেন হার্ড ইম্যুনিটি এচিভ করার জন্য লকডাউন/সোশ্যাল ডিসটেন্স মানতেছে না তাদেরও ০-২৯ বছর পর্যন্ত জনসংখ্যা ৩০% এর মত হবে। সেখানে বাংলাদেশে তাদের ডবল।

অনেকে হয়ত বলবেন, “ভাই লকডাউন তুলে দিলে স্রোতের মত রোগী আসতে থাকবে।”
 আসবে কিভাবে ?
 যারা আসবে তাদেরকেই বাসায় লকডাউন দেন। মানে বৃদ্ধ, অসুস্থ ও দুর্বলদের বাসায় সোশ্যাল ডিসটেন্স মানতে বলুন। তারা মানলেই তো আর হাসপাতালে ক্রিটিকাল রোগীর সংখ্যা বাড়বে না। যারা ক্রিটিকাল সিচুয়েশন নিয়ে হাসপাতালে আসার কথা, তারাই যদি সোশ্যাল ডিসটেন্স মানে, তাহলেই তো হয়। সবার ঘরে বন্দি হওয়ার দরকার কি?
 এটা কি মানা যাবে ? বাসার ভেতর কি সোশ্যাল ডিসেটেন্স মানা যায় ?
 আরে ভাই ! ১৬ কোটি মানুষকে দিয়ে জোর করে সোশ্যাল ডিসটেন্স মানাতেই চান, কিন্তু ১ কোটি বৃদ্ধ, অসুস্থকে সোশ্যাল ডিসটেন্স মানাইতে চান না ? এটা কেমন কথা ?
 বাংলাদেশে সরকারী অবসরের বয়স ৫৭ বছর, বেসরকারী কোম্পানিগুলোতেও যে খুব বেশি বৃদ্ধ কাজ করে তাও নয়। যেহেতু বৃদ্ধরা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তেমন সম্পৃক্ত নয়, তাই তাদের বাসায় রাখা সহজ। কিন্তু বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্ম অর্থনৈতিক কাজে বেশি সম্পৃক্ত। মোটামুটি ৬০% জনসংখ্যা ইম্যুউন হয়ে গেলে, তখন বৃদ্ধ/অসুস্থরাও সেফ হয়ে যাবে। তারা হার্ড ইম্যুনিটির প্রটেকশন পাবে। কিন্তু যতদিন হার্ড ইম্যুনিটি হচ্ছে না, ততদিন হাসপাতালগুলোও যে তাদের ভালোভাবে সাপোর্ট দিতে পারছে, তাও তো নয়।
 হার্ড ইম্যুনিটি হলো অদৃশ্য প্রটেকশন, আর দৃশ্যত্ব প্রটেকশন হলো প্লাজমা থেরাপী। অর্থাৎ তরুণদের থেকে রক্ত নেয়াও তখন সহজ হবে, যা বৃদ্ধ ও অসুস্থদের জীবন বাচাবে।

যারা শুধু বৃদ্ধ বা অসুস্থদের ঘরে না রেখে সবাইকে গণহারে বাসায় বন্দি করে রাখতেছেন, সেটার সাইড ইফেক্ট তো আরো অনেক বেশি। বহু মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাবে, অনেকে আত্মহত্যা করবে, অর্থনীতি শেষ হয়ে সবার অবস্থা কঠিন হবে। শুধু যাদের সোশ্যাল ডিসটেন্স মানা দরকার, তারা করলেই যদি যথেস্ট হয়। অথচা সবাইকে গণহারে করা মানে বোকামি করা, সবাইকে নিয়ে আত্মহত্যা করা, আর কিছু নয়।

আরেকটি বিষয় না বললেই না, এই সব মানুষ গনহারে বাসায় মধ্যে বন্দি হয়ে আছে, মানে সূর্যের আলো বা ভিটামিন ডি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ ভিটামিন ডি’র সাথে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার একটি সম্পর্ক আছে। ভিটামিন ডি’র ঘাটতি হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। বহু লোক ঘরের মধ্যে বন্দি হয়ে আছে, এতে তারা ভিটামিন ডি শুন্য হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরো হ্রাস পাচ্ছে। অথচ করোনার মোকাবেলায় এখন পর্যন্ত একমাত্র শক্তি হচ্ছে শরীরের ভেতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। যার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যত বেশি, সে তত সহজে করোনাকে সামাল দিতে পারছে। কিন্তু লকডাউন-সোশ্যাল ডিসটেন্সের নাম করে এত মানুষকে ঘরের মধ্যে বন্দি করে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই তো হ্রাস করে দেয়া হচ্ছে। এদের তো তখন আরো সহজে করোনা বা অন্যান্য রোগ কুপোকাত করতে পারবে। তাই লকডাউন বা সোশ্যাল ডিসটেন্স কিভাবে একটি বৈজ্ঞানিক উপায় হতে পারে, সেটা আমার মাথায় আসে না।

স্প্যানিশ ফ্লু মহামারীর সময় ব্যবহার করা প্ল্যাজমা থেরাপী

অনেকেই কোভিড-১৯ এর জন্য উদাহরণ হিসেবে ১৯১৮ সালে ‘স্প্যানিশ ফ্লু’ মহামারীর উদাহরণ নিয়ে আসে। কিন্তু একটা বিষয় এড়িয়ে যায়,
স্প্যানিশ ফ্লু মহামারীর সময় ব্যবহার করা প্ল্যাজমা থেরাপীর বিষয়টি। ঐ সময় প্ল্যাজমা থেরাপীর ব্যবহার করে মৃত্যুর হার অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছিলো। শুধু ১৯১৮ এর স্প্যানিশ ফ্লু নয়, ১৯২১ এ ডিপথেরীয়া মহামারী, ১৯৩০ এর হাম মহামারী, ১৯৫০ এ কোরিয়ান যুদ্ধের সময় হান্টা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্ল্যাজমা থেরাপীর সফল ব্যবহার হয়। (https://bit.ly/3bj4hYX)

হঠাৎ কোন একটি অসুখ ছড়িয়ে পড়লে তার ওষুধ বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু মানুষের শরীরের যে প্রাকৃতিক উপায়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মাচ্ছে, তার ব্যবহার হলো ঐ রোগ দমনের সবচেয়ে সহজ উপায়। এ কারণে বিভিন্ন মহামারীর সময় এই পদ্ধতি সবক্ষেত্রে সফল ভাবে ব্যবহার হয়।

কিন্তু সমস্যা হলো, কেউ বিষয়টি নিয়ে পরিস্কার কোন বিবৃতি দিতে রাজী নয়। কারণ কোন একটি রোগ বিস্তৃতি লাভ করলে বিভিন্ন ওষুধ, ভ্যাকসিন বা ভেনটিলটর কোম্পানির বড় ব্যবসা করার সুযোগ তৈরী হয়। এক্ষেত্রে এন্টিভাইরাল ড্রাগ, ভ্যাকসিন বা ভেনটিলরের বিষয়টি করপোরেট পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে ব্যাপক প্রচার প্রসার লাভ করে। কিন্তু প্লাজমা থেরাপির বিষয়টি ব্যক্তি পর্যায়ে হওয়ায় তাতে কোম্পানিগুলোর তেমন লাভ করার সুযোগ পাবে না, এই কারণে প্লাজমা থেরাপির বিষয়টিও পৃষ্ঠপোষকতা অভাবে প্রচার পায় না। অথচ প্ল্যাজমা থেরাপী ব্লাড ডোনেশনের মত সহজ বিষয়, জটিল কোন বিষয় না। এবং ক্রিটিকাল রোগীরাই এতে সুস্থতা লাভ করে।

লক্ষ্য করবেন, এই যে সোশ্যাল ডিসটেন্স, লকডাউন এগুলো কিন্তু কোন সমাধান নয়। এগুলো মানুষকে আটকে রাখা, বুঝিয়ে শুনিয়ে রাখা যে যতদিন ঐ ওষুধ কোম্পানিগুলো ভ্যাকসিন বা এন্টি ভাইরাল ড্রাগ বের না হয়, ততদিন অসুখ থেকে লুকিয়ে থাকুন। এটা করপোরেট ধান্ধাবাজি ছাড়া কিছু নয়। কারণ মানুষ সামাজিক জীব, সমাজ ছাড়া সে বাচতে পারে না। কিন্তু সোশ্যাল ডিসটেন্স মানে হলো সমাজকে বর্জন করা, সমাজকে ভেঙ্গে ফেলা। এমনকি বলা হচ্ছে তুমি তোমার ঘরে পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে দূরে থাকো। তাদের দেয়া আজগুবি থিউরীর কারনে মানুষ আজকে সমাজবিহীন হয়ে যাচ্ছে, পরিবারবিহীন হয়ে যাচ্ছে। সবাই স্বার্থপর হয়ে উঠছে, সমাজে তৈরী হচ্ছে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি।

তারা শুধু নিজেদের স্বার্থে এ ধরনের একটি অসম্ভব বিষয় শত শত কোটি মানুষের উপর জোর করে চাপিয়ে দিচ্ছে, কিন্তু তাদের কথা শুনে যে বহু মানুষের প্রাণ যাচ্ছে এবং বহুর প্রাণ ওষ্ঠাগত সে খেয়াল তাদের নেই। অথচ ফ্লু লাইক পেনডেমিক এর ক্ষেত্রে প্ল্যাজমা থেরাপীর ব্যবহার ১০০ বছর পুরাতন। কিন্তু সেই সিস্টেমটার কথা তারা তুলতে চায় না, কারণ সেখানে তাদের ব্যবসা নেই।

এখন যেটা করা যায়-
১) বাংলাদেশে টেস্টের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে করোনা রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। এখান থেকে একটি বিষয় অনুমান করা যায়, যারা করোনা পজিটিভ হয়ে ধরা পড়ছে, তাদের ছাড়াও আরো করোনা রোগী আছে, যাদের হয়ত লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে না, বা মৃদু লক্ষণ আছে। করোনার ক্ষেত্রে ৭০-৮০% রোগীর লক্ষণ প্রকাশ পায় না বা চিকিৎসারও দরকার হয় না। তারা হয়ত টেস্ট করাচ্ছে না। এদের খুজে বের করতে হবে।
২) চলমান পিসিআর টেস্টের পাশাপাশি কোভিড-১৯ এর স্ট্রেইন সেনসেটিভ এন্টিবডি টেস্ট করতে হবে। পিসিআর টেস্ট জটিল ও সময় সাপেক্ষ প্রক্রিয়া, কিন্তু ‘কোভিড-১৯ এর স্ট্রেইন সেনসেটিভ এন্টিবডি টেস্ট’ রক্ত পরীক্ষা করে সহজেই কয়েক ঘন্টার মধ্যেই পাওয়া সম্ভব।
৩) যাদের শরীরে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে এন্টিবডি পাওয়া যাবে, তাদের ব্লাড সংগ্রহ করে রাখা এবং প্রয়োজনীয়ভাবে ব্যবহার করা।
৪) তবে এক্ষেত্রে যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের করোনা নিয়ে যে আলগা ভীতি তৈরী হয়েছে, সেটা দূর করতে হবে। কারণ করোনা হওয়া একটা মানসম্মানের ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। কেউ করোনা হয়ে সেরে গেছে, সে হয়ত তা প্রকাশ করতে চাইবে না। কারণ সে এটা মানহানীর বিষয় হিসেবে দেখবে। প্রয়োজনে রক্তদানের জন্য অর্থ দিতে হবে। অর্থের কথা শুনলে অনেকেই অনেকেই হয়ত টেস্ট করাবে।
৫) করোনা হলে যাদের ক্রিটিকাল সিচুয়েশন হওয়ার সম্ভবনা আছে, যেমন-বৃদ্ধ, অসুস্থদের ঘরে সাবধানে রাখতে হবে। অপরদিকে তরুণ, যুবক বা সুস্থদের চলাচল স্বাভাবিক করে দিতে হবে। কারণ তাদের শরীর যদি ভাইরাসের সংস্পর্ষে নাই আসে, তবে শরীরে এন্টিবডি তৈরী হবে কিভাবে ? অর্থাৎ রোগীর তুলনায় এন্টিবডি সমৃদ্ধ রক্ত এভেইএবল হতে হবে। আপনি যদি তরুণ-যুবক-সুস্থদের ঘরে আটকে রাখেন, তবে প্রয়োজনীয় রক্ত সংকট হবে। বাংলাদেশের যেহেতু তরুণদের সংখ্যা অনেক বেশি এবং বৃদ্ধদের সংখ্যা কম, তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে দিলেই পর্যাপ্ত রক্তও পাওয়া সম্ভব।

ডাক্তাদের মধ্যে হঠাৎ করে করোনা বৃদ্ধি পাইছে

শুনলাম, ডাক্তাদের মধ্যে হঠাৎ করে করোনা বৃদ্ধি পাইছে,
এর পেছনে কি বাংলাদেশের করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি দায়ী, নাকি চীনের পাঠানো এই সব সেকেন্ডহ্যান্ড পিপিই দায়ী ?
হয়ত অনেকে বলবেন, সেকেন্ডহ্যান্ড তো কি হয়েছে, তারা তো Autoclave (উচ্চ তাপমাত্রায় ভাইরাসমুক্ত) করে পাঠাইছে।
হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। সব কিছু যে কথা মত হয় তার গ্যারান্টি কি ? আপনি নিজেই কি পরীক্ষা করে দেখতে পেরেছেন ??

২৫ তারিখে প্রচুর পরিমাণে এইসব সেকেন্ডহ্যান্ড সরঞ্জামাদী চীন থেকে আসে (https://bit.ly/2K0gO7i)

এরপর খুমেকের পরিচালক এগুলো নিতে অস্বীকার করলে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয় (https://bit.ly/3ecF1VT)

এইসব সেকেন্ডহ্যান্ড জিনিস আসার পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি কোন দিকে গেলো, সেটা চিন্তা করা দরকার।

আমার মনে হয়, এইসব পিপিইসহ চীনের পাঠানোর বিভিন্ন সেকেন্ডহ্যান্ড জিনিসগুলোকে বেশি ভয় করা উচিত।
করোনা থেকে বাচতে যেটা গ্রহণ করছি, সেটাতেই যে করোনা হচ্ছে না, তার কি গ্যারান্টি ??

করোনার ক্ষেত্রে সাইন্সের মধ্যে আর্টস ঢুকে গেছে

হুজুর বলছে- থানকুনি পাতায় করোনা সারে, “ধর শালারে, ওরে জেলে ঢুকা”।
হুজুর বলছে- কালোাজিয়ায় করোনায় সারে, “ধর শালারে, ওরে জরিমানা কর।”
সব হুজুররা হইলো গুজব রটনাকারী।

কথা হইলো- থানকুনি পাতা আর কালোজিরায় করোনা সারুক বা না সারুক,
কারো কিন্তু কোন ক্ষতি হবে না। কেউ থানকুনি পাতা খাইলে মারা যাবে না, কালোজিরা খাইলেও মারা যাবে না।
বরং শরীরের উপকার হবে।
আর যেহেতু এখনও করোনার কোন ওষুধ বের হয় নাই, তাই থানকুনি বা কালোজিরা খাওয়ার পরামর্শ দিলেও,
সেটা যে ভুল পরামর্শ সেটাও তো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। সুতরাং সেটা গুজব বলার সুযোগ নাই। তারপরও হুজুরদের জেল-জরিমানা করতে ছাড়ছে না কেউ।

কিন্তু আমরা যাকে মেইনস্ট্রিম মিডিয়া বলি, তারা তারা এগুলো কি ছড়াচ্ছে ?
ইথালন দিয়ে নাকি করোনা সারবে, আবার কেউ বলছে ভেনটিলেটর দিয়ে সিংহভাগ করোনা রুগি সুস্থ হয়ে যাবে ? এর প্রুভ কি ???
“একাত্তর টিভিতে ইথানল দিয়ে করোনা সারবে”- (https://bit.ly/2y6Key2)
এই খবর প্রচার করার পর একজন ডাক্তার একে ভয়ঙ্কর বলে বলে উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, ইথানলের ভাপ নিলে যে কেউ কোমায় চলে যেতে পারে, কারো ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এটা কোন প্রমাণিত বিষয় না বলে, তিনি এটাতে মারাত্বক মৃত্যুঝুকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন। এবং ইরানে একই কাজ করতে গিয়ে অনেকে মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে, সেটাও তিনি উল্লেখ করেছেন। (https://bit.ly/2XtxGeW)

আবার সময়টিভি যে বলতেছে, ভেনটিলেটর দিয়ে শতভাগ করেনাা সারানো সম্ভব,
(https://bit.ly/2VlByMb)
অথচ যে দেশের ডাক্তাররা প্রচুর পরিমানে করোনা রোগী ফেস করছে, তাদের দাবী হলো,
করোনা রোগীকে ভেনটিলেটরে দিলে তাদের মৃত্যুঝুকি আরো বেড়ে যায়।
(https://abcn.ws/2Vg1AAn)

কথা হইলো- শুধু হুজুররা ৫ জনের বেশি জামাত করতে পারবে না,
ফাক ফাক করে দাড়াতে হবে।
কিন্তু সাংবাদিকরা ৫০ জন একত্রে ঠাসাঠাসি করে দাড়াতে পারবে তাদের দ্বারা কোন করোনা ছাড়াবে না।
এটা যেমন ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়ে গেছে।
ঠিক তেমনি-
আবার হুজুরা থানকুনি পাতা আর কলোজিরা খেতে বললে সেটা গুজব হবে, যদিও সেটাতে কোন মৃত্যু বা অর্থঝূকি নেই।
অথচ মিডিয়ার সাংবাদিকরা মদ দিয়ে করোনা সারবে, এমন প্রাণঘাতি গুজব রটালেও সেটাকে গুজব বলা হবে না, কিংবা ভেনটিলেটর দিয়ে সিংহভাগ করোনা সারবে, ভেনটিলেটর কোম্পানির এমন বিজ্ঞাপন প্রচার করলেও সেটা গুজব হবে না। তাদেরকে জেল-জরিমানা কোনটাই করা হবে না।

আমি তো আগেই বলেছি, করোনার ক্ষেত্রে সাইন্সের মধ্যে আর্টস ঢুকে গেছে।
এখন “যে দেখতে হুজুর, তার চলন বাকা”-- এটাই সাইন্স।

যারা করোনায় মারা যাচ্ছে, তাদের প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ করা জরুরী

এখানে দুইটা চিত্র আছে।
বামপাশের প্রথম চিত্রটি ইতালির। ইতালিতে যারা করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে, তারা অন্য কোন রোগে আক্রান্ত ছিলো কি না, এটার একটা চিত্র তারা গ্রাফ করেছে। দেখা যাচ্ছে, করোনাতে ইতালিতে যারা মারা গেছে, তাদের ৪৮.৫% কমপক্ষে ৩টি রোগে আক্রান্ত ছিলো, ২৫.৬% ছিলো ২টি রোগে আক্রান্ত, ২৫.১% ছিলো ১টি রোগে আক্রান্ত এবং ০.৮% লোকের অন্য রোগ ছিলো না, অর্থাৎ সুস্থ ছিলো।
২য় ছবিটা জার্মানির, ১৯শে মার্চ ফিনানসিয়াল টাইমসে আসছে। সেখানে তারা বলছে, তাদের ডেথ (ঐ তারিখ পর্যন্ত) অন্য দেশ থেকে কম।
এই দুইটা ছবির মধ্যে কিছু শেখার আছে আমাদের জন্য।

প্রথম কথা হলো- ইতালি যে কাজটা করেছে, যারা করোনায় মারা যাচ্ছে, তারা আর কতগুলো ক্রোনিক রোগে (কিডনী, লিভার, হার্ট) আক্রান্ত ছিলো সেটার চার্ট করেছে। বাংলাদেশে মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা শুরুতে যখন ব্রিফিং করতেন, তখন কিন্তু বলতেন, আজকে অমুক অমুক মারা গেছে, তাদের হার্টে অমুক সমস্যা ছিলো, কিডনী সমস্যা ছিলো, স্ট্রোক ছিলো ইত্যাদি। কিন্তু হঠাৎ করে তিনি কিন্তু এ কথাগুলো বলতেছেন না। বয়স বা এলাকার দিকে বেশি জোড় দিচ্ছেন, কিন্তু তার এ তথ্যে লুকোচুরিতে কিন্তু মূল সমস্যাটা লুকিয়ে আতঙ্কটা বেশি ছড়াচ্ছে। কারণ করোনা আসলে কাদের জন্য ভয়ঙ্কর, এটা যদি আমরা চিহ্নিত না করে ঢালাওভাবে প্রচার করি, তবে কিন্তু সঠিক সেইফটি নেয়া সম্ভব না। এবং এটা ডাক্তারি বিদ্যা না হয়ে বরং রাজনৈতিক বিদ্যা হয়ে যাবে।

এবার আসি জার্মানির চার্টের দিকে। জার্মানির মৃত্যুহার তুলনামূলক কম থাকার একটা কারণ হলো, কোন রোগী কোন কারণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং সেই রোগী যদি মারা যায়, তবে তার মৃত্যুটা ঐ রোগ হিসেবে কাউন্ট করেছে তারা। এতে তাদের হিসেবটা তুলনামূলক একুরেট আসছে এবং মৃত্যুহার কমে গেছে। যেমন- যেমন বাংলাদেশে কোন জেলায় সম্ভবত এক মহিলা স্ট্রোক করে মারা গেছে। কিন্তু তার শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে তার মৃত্যুর কারণ দেখানো হয়েচে করোনা ভাইরাস। কিন্তু জার্মানি সেক্ষেত্রে স্ট্রোকই করেছে, করোনা ভাইরাস করেনি।
আরো সহজ করে বুঝতে হলে- ধরে নিলাম, একজন করোনা ভাইরাস বাহী রোগী রোড এক্সিডেন্ট করে মারা গেলো, এখন তার মৃত্যু কি হিসেবে কাউন্ট করবেন ? করোনা হিসেবে নাকি রোড এক্সিডেন্ট হিসেবে। জার্মানি সেই কাজটাই করেছে, তাই মৃত্যুহার কম এসেছে।

কথা হচ্ছে, এই যে বাংলাদেশে ২৭ জন মৃত্যু হলো, এরা কি সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষ ছিলো ?
এদের কারো শরীরের কি অন্য ভয়ঙ্কর এক বা একাধিক রোগ ছিলো না ?
এটা জানা অব্যশই জরুরী।
এ তথ্য গোপন করা কখনই ঠিক নয়। এটা জন সম্মুক্ষে প্রকাশ করা উচিত।
কারণ করোনা ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ভাইরাস, এটা ধিরে ধিরে পুরো দেশেই ছড়াবে। অনেকের শরীরেই করোনা ভাইরাস থাকবে। আবার বাংলাদেশে দৈনিক দুই-আড়াই হাজার লোক মারা যায়, শতাধিক মারা যায় শ্বাসকষ্ট বা সিওপিডিতে, অ্যাজমায় মারা যায় অনেকে। হার্ট অ্যাটাক-স্ট্রোক, ক্যান্সারে মারা অনেকে। কথা হইলো কেউ করোনা ভাইরাসবাহী হইলেই কি তার মৃত্যুকে করোনার কারণে মৃত্যু হিসেবে কাউন্ট করা হবে??

যারা করোনায় মারা যাচ্ছে, তাদের প্রকৃত বিষয়টি যদি প্রকাশ না করা হয়, তবে আসলে করোনা জিনিসটা কি, কতটুকু ভয়ঙ্কর এবং সে হিসেবে আমাদের চিকিৎসা বা সতর্কতা কেমন হওয়া উচিত সেটা সম্পূর্ণ অধরাই থেকে যাবে। তথ্য গোপন করে মূল ঘটনা আলো আধারে রেখে যদি শুধু সংখ্যা প্রকাশ করা হয়, তখন সন্দেহ তৈরী হবে, আসলেই কি আমরা করোনা দমন চাচ্ছি, নাকি এর মাধ্যমে অন্য কোন এজেন্ডা বাস্তবায়ন চাচ্ছি।

পেনডামিক নয়,- ডেমপ্যানিক

করোনা ভাইরাস নিয়ে ডেমোক্র্যাটিক মিডিয়া যখন প্রথম চিল্লাচিল্লি শুরু করলো,
তখন রিপাবলিকানরা একে
পেনডামিক এর বদলে নাম দিলো- ডেমপ্যানিক।
PANDEMIC এর মাঝের DEM আগে নিয়ে আসলো, আর বাকি দুই পাশের অক্ষরগুলো জুড়ে দিলে হয় প্যানিক। ডেম হচ্ছে ডেমোক্র্যাটিকদের সংক্ষিপ্ত রূপ। অর্থাৎ তারা বুঝাতে চাইলো, মিডিয়াতে করোনা নিয়ে যা হচ্ছে তা হলো ডেমোক্র্যাটিকদের বানানো প্যানিক। এন্টি ডেমোক্র্যাটিক বিশেষ করে রিপাকলিকানরা নিশ্চিত ছিলো, এটা হচ্ছে তাদের ব্যবসা বাণিজ্য ধ্বংস করার জন্য ডেমোক্র্যাটিক প্ল্যান (রিপাবলিকানরা ব্যবসায় আধিপত্য)। এছাড়া ওয়ার্ল্ডওয়াইড এন্টি ডেমোক্র্যাটিক ব্লকদের আধিপত্য বাড়তে থাকায়, তাদের একটা নাড়াচাড়া দেয়া এবং সর্বপরি ক্রাইসিস ক্রিয়েট করে নতুন রাজনৈতিক ধারার সুযোগ নেয়ার উদ্দেশ্য ছিলো ডেমোক্র্যাটিক ব্লক সদস্যদের।

কিন্তু ততদিনে অনেক সময় পার হয়ে গেছে। মিডিয়া পাবলিককে এতটা উত্তেজিত করে ফেললো যে বিষয়টি ঘুড়ানো রিপাবলিকান বা অন্যদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছিলো না। তাই তারা নতুন ফন্দি আটলো। তারা চিন্তা করলো ডেমোক্র্যাটিকরা করোনাকে নিয়ে যে পাবলিককে উত্তেজিত করেছে, এটাকে এখন না আটকিয়ে বরং তারা সেটাকে ব্যবহার করবে, মনে কৌশলে তারা চালকের আসনে বসে পড়বে। এবং ডেমোক্র্যাটিকদের হাটিয়ে তারা সেখান থেকে ফায়দা নেবে।

লক্ষ্য করবেন- এন্টি ডেমোক্র্যাট ব্লকগুলো প্রথমে কিন্তু করোনাকে পাত্তা দিচ্ছিলো না, কিন্তু হঠাৎ করে তারা নিজেরাই দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করলো। এটা যেমন,ইউরোপের রিপাবলিকান ব্লক সদস্যরা করেছে, ঠিক তেমন করেছে আমেরিকার ট্র্যাম্প, আর বাংলাদেশে করছে শেখ হাসিনা। অর্থাৎ লাগাম ডেমোক্র্যাটিকদের হাত থেকে নিয়ে তারা এই গেম থেকে ফায়দা লুটবে।

যেহেতু, করোনা বিষয়টি ফুলিয়ে প্রচারের উদ্দেশ্য ছিলো বিপরীত রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়া, সেহেতু এক্ষেত্রে প্রথম দরকার ছিলো নিজেদের দলের অর্থনীতি বাচাতে প্যাকেজ ঘোষণা। এক্ষেত্রে ট্র্যাম্প ঘোষণা করেছে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ, শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছে ৭২ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ। এগুলো দিয়ে মূলত তারা নিজেদের দলের ব্যবসায়ীদের সেভ করবে। অর্থাৎ সবাই মারা পড়লেও প্রনোদনা পেয়ে নিজের দলের ব্যবসায়ীরা টিকে যাবে। তাই এখন যতই ক্ষতি হোক আওয়ামীপন্থীদের এটা নিয়ে চিন্তা করার কোন দরকার নাই। সবাই মরলেও তারা আপাতত সেফ।

তবে কারোনার কারণে আওয়ামীলীগের সবচেয়ে ভালো যে কাজটা হবে, সেটা হলো- এতদিন তারা যে দুর্নীতি করেছে, তার সবটাই ঢাকা পড়বে। তাদের অত্যাধিক দুর্নীতি ও ভুল অর্থনৈতিক পলিসির কারণে বড় ধরনের অর্থনৈতিক মন্দা আসন্ন ছিলো। কিন্তু করোনার কারণে এখন যা হবে, তার সবটাই করোনার ঘাড়ে তারা চাপিয়ে দিয়ে নিজেরা সাধু সাজতে পারবে। লুকিয়ে যাবে, তাদের সকল অর্থনতৈকি লুটপাটের চিত্র। বরং ১ মাস পর যখন এমনিতেই পরিবেশগত করোনা নিয়ন্ত্রণে আসবে, তার সবটাই ক্রেডিট নিয়ে নেবে নিজের ঘাড়ে। এছাড়া অনুদান, আর রাজনৈতিক একচেটিয়া প্রচারণার সুবিধা লাভের কথা না হয় বাদই দিলাম।

আমি বলবো-
বাংলাদেশে আগের করোনার ঘোষণা আর এখনকার করোনার ঘোষণার মধ্যে যথেস্ট তফাৎ আছে। এখন ব্রিফিং এর মূল উদ্দেশ্য হলো আতঙ্ক ছড়ানো। কালকে একটা ভিডিও দেখলাম, সেখানে ব্রিফিং দাতা, ব্রিফিং শেষ হওয়া মাত্র ক্যামেরা বন্ধ হয়ে গেছে এই আশায় মুখের মাস্ক ছুড়ে ফেললেন। অর্থাৎ তিনি ক্যামেরায় মাস্ক পড়েছিলেন, সচেতন হওয়ার জন্য নয়, বরং পাবলিককে দেখানোর জন্য।

বিশেষ করে এখন যে আক্রান্তের ঘোষণা আসছে, এটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
এছাড়া যাদের মৃত্যুর খবর আসছে, তাদের মৃত্যু নিয়েও সন্দেহ আছে।
আসলে যারা মারা গিযেছে, তারা কি কারণে মারা গিয়েছে, সেটা অজ্ঞাত করা হচ্ছে, মূল কথা প্রকাশ করা হচ্ছে না। পুরো বিষয়টির মধ্যে ঘোলাটেপনা আছে।

সমস্যা হচ্ছে, পাবলিক উত্তেজিত আর আবেগী।
আর নতুন স্টিয়ারিং আর গিয়ার পাওয়া আওয়ামীলীগ সেই সুযোগ পূর্ণ রূপে গ্রহণ করেছে।
আক্রান্ত আর মৃতের সংখ্যা কমবেশি করে মটরসাইকেলের মত গিয়ার দেয়, আর পাবলিক ‘ভো ভো’ করে লাফ দিয়ে উঠে।

বাংলাদেশে করোনা সৃষ্টি অর্থনৈতিক মন্দায় কত লোক মারা যাবে ?

ভারতের সাবেক প্রধান পরিসংখ্যানবিদ প্রণব সেন বলেছে,
লক ডাউনের মধ্যে যদি পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা না করা যায়, তবে খাদ্য দাঙ্গা অবশ্যাম্ভাবী। (https://bit.ly/2x0qoUT, https://bit.ly/2XcMY7o )

একটি গবেষণা বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসের কারণে যদি ১ থেকে ২ লক্ষ লোক মারা যায়, তবে সব কিছু বন্ধ করার কারণে যে অর্থনৈতিক মন্দা তৈরী হয়েছে, তাতে মারা যাবে ২২ লক্ষ মার্কিনী। (https://bit.ly/3aG2nRF)

অনেকেই ভাবছে, করোনার কারণে সব বন্ধ হলেও বাংলাদেশ সরকার যে ত্রাণ বিতরণ হচ্ছে,
তাতেই বোধহয় সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
যারা এমন ভাবছেন, আসুন, বাংলাদেশে যে ত্রাণ কার্যক্রম হচ্ছে, তার জন্য কিছু হিসেব মিলাই।

একটি জেলাকে প্রথম পছন্দ করুন। ধরে নেই জেলাটির নাম সাতক্ষীরা।

লক ডাউনের কারণে গরীবদের জন্য সাতক্ষীরার জেলায় চাল বরাদ্দ হয়েছে ৩১৫ মেট্রিক টন (https://bit.ly/2UEr8Z3)
১ মেট্রিক টন সমান যদি ১০১৬ কেজি ধরি, তবে হয়, ৩ লক্ষ ২০ হাজার ১৬ কেজি চাল।

এবার আসুন, সাতক্ষীরার জনসংখ্যর হিসেব করি।
২০১৩ সালের হিসেবে সরকারী হিসেবে সাতক্ষীরার জনসংখ্যা ২০,৭৯,৮৮৪ জন।
(https://bit.ly/2R9fy5T)
এর মধ্যে দরিদ্র সংখ্যা কত ?

সরকারী হিসেব বলছে,
২০১৭ সালে সারা বাংলাদেশে দরিদ্রের হার ছিলো ২৩.১ শতাংশে।
এবং অতি দরিদ্রের হার ছিলো ১২.১ শতাংশে।
এখানে কিন্তু দিনমজুরের হিসেব নেই, অনেক দিনমজুর দরিদ্রের মধ্যে নাও পড়তে পারে।
(https://bit.ly/2xGqS2B)

তাহলে সাতক্ষীরায় দরিদ্র সংখ্যা ৪ লক্ষ ৮০ হাজার এবং অতি দরিদ্র সংখ্যা ২ লক্ষ ৫১ হাজার।

এখন ধরে নিচ্ছি, সরকারীভাবে যে চাল বরাদ্দ হয়েছে (৩ লক্ষ ২০ হাজার ১৬ কেজি চাল।), তাতে কোন দুর্নীতি হলো না, যতটুকু বরাদ্দ হয়েছে, ততটুকুই বরাদ্দ হলো।
অর্থাৎ সাতক্ষীরায় যদি সরকারী বরাদ্দকৃত সকল চাল ঠিকমত বণ্টন হয়,
তবে-
দরিদ্রদের মাঝে যদি চাল বিতরণ হয়, তবে প্রত্যেক দরিদ্র পাবে – ৬৬৬ গ্রাম করে চাল,
আর যদি দরিদ্র নয় বরং শুধু অতি দরিদ্রের মধ্যে চাল বিতরণ হয়, তবে প্রত্যেকে গড়ে পাবে- ১ কেজি ২৭০ গ্রাম।

এখন একজন মানুষ প্রতি বেলায় কতটুকু ভাত খায় ?
এক হিসেব বলছে বাংলাদেশের মানুষ দৈনিক মানুষ দৈনিক ৯৪৭ দশমিক ৮ গ্রাম খাবার খায়।
(https://bit.ly/3dRckxS)

যেহেতু অন্য খাবারের পাচ্ছে না, তাই যদি চালই খায়,
তবে সাতক্ষীরার সরকারী বরাদ্দকৃত চাল দিয়ে-
প্রত্যেক দরিদ্রের ১দিনও পেট ভরবে না,
আর অতি দরিদ্রদের মাঝে বণ্টন হলে তা দিয়ে ১ দিন চলবে, কিন্তু দেড় দিন চলবে না।
১৫ দিন লক ডাউন চলবে কিভাবে ?
আর লক ডাউন পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দার কথা তো বাদই দিলাম।

এখানে একটি কথা না বললেই না, ত্রান কিন্তু দেখতে অনেক বেশি মনে হয়,
কিন্তু জনসংখ্যা অনুপাতে এই ত্রাণ কিন্তু কিছুই না।
যেমন- সাতক্ষীরায় দেয়া হচ্ছে- ৩১৫ মেট্রিক টন চাল।
এই চাল ধরতে ৫ টনী ৬৪টি ট্রাক লাগবে।
৬৪টি ট্রাক চাল ক্যামেরায় দেখতে অনেক চাল লাগতে পারে, কিন্তু জনসংখ্যা অনুপাতে এই ত্রাণ কিছুই না।

তারপরও কথা হচ্ছে, সরকার বলেছে, তালিকা করে সেই চাল দিবে।
কিন্তু মানুষের পেটের ক্ষুধা কিন্তু তালিকার জন্য বসে থাকবে না।
১০ দিন ইতিমধ্যে অতিবাহিত হয়ে গেছে, এখনও যদি কিছু না পায়,
তবে কি ক্ষুধায় মরে গেলে তারপর পাবে ?

শেষ কথা হলো-
মানুষ শুধু করোনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে হিসেব নিকেষ করছে।
কিন্তু ভারতের প্রাক্তণ প্রধান পরিসংখ্যানবিদ যে খাদ্য দাঙ্গার কথা বললো,
কিংবা আমেরিকানরা করোনা সৃষ্টি অর্থনৈতিক মন্দায় ২২ লক্ষ লোকের মত্যুর কথা আলোচনা চলছে, বাংলাদেশেরও সেই খাদ্য দাঙ্গা বা মৃতের সংখ্যা হিসেব নিকেষ শুরু করা উচিত।

এবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলতেছে- এই রোগ বায়ু বাহিত কোন রোগ না।

এবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলতেছে-
এই রোগ বায়ু বাহিত কোন রোগ না।

তারা আগে অবশ্য বলছিলো- বাতাসে এই জীবানু ১১ ঘণ্টা পর্যন্ত বেচে থাকে।
(https://bit.ly/2vUM1FP)
আর চীনাদের দাবী ছিলো- বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়।
(https://bit.ly/2vYR5sO)

লক্ষনীয় হইলো-

১) চীনারা বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় এমন দাবী করেই কিন্তু উহান-এ লক ডাউন দিছিলো। এবং তাদের থিউরী সবাই অনুসরণ করছিলো। যদিও সেটা অনুসরণ করে শীতল দেশগুলোর লাভ হয় নাই, বরং যা ক্ষতি হওয়ার তাই হইছে । কথা হইলো চীনাদের থিউরী যদি ভুল হয়, তবে সেই লক ডাউন কিভাবে অনুসরণ করা যায় ?

২) হু এর দাবী অনুসারে যদি বাতাসে না ছড়ায়, তবে শুধুমাত্র মাস্ক ব্যবহার আর হাত ধোয়াই এই রোগের জন্য যথেষ্ট। এর বাইরে এত লকডাউন-ফক ডাউন দেয়ার কোন মানেই হয় না।

উল্লেখ্য এর আগে দাবী করা হইছিলো, অধিক তাপমাত্রায় এই রোগ বিশাল ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে, এখন আবার দাবী করা হচ্ছে, অধিক তাপমাত্রায় এই রোগ তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। অথচ সেই ভুল তথ্যের উপর ভিত্তি করে সারা দেশকে আবদ্ধ করে বহু লোককে ইতিমধ্যে মেরে ফেলা হইছে এবং আরো হচ্ছে।
(https://tinyurl.com/sgx2tro)

চিটিংবাজি খবর করে আর কত দিন ??

অবশেষে প্রথম আলো বা ডেমোক্র্যাটিক ব্লক স্বীকার করে নিলো তাপমাত্রা বেশি হলে করোনা ভাইরাস কম মারাত্মক হয় বা শক্তি হারিয়ে ফেলে।
এই কলা-বিজ্ঞানীর দলরা কিন্তু এই কথাটা এতদিন স্বীকার করতো না বা প্রচার করতো না, কিন্তু মানুষ তো আর কলা-বিজ্ঞানীদের মত মূর্খ না, তাই এখন তাদের গোমর ফাঁস হওয়া শুরু হয়েছে, এখন তারা খবর করছে- হ্যা বেশি তাপমাত্রায় করোনা ভাইরাস অত মারাত্মক হয় না।

কিন্তু প্রথম আলো বা কলা বিজ্ঞানী ডেমোক্র্যাটিক সাঙ্গপাঙ্গরা হলো পুরোটাই ধাপ্পাবাজ। প্রথম আলোর এই খবরটা দেখুন- সে প্রথমে বেশি তাপমাত্রায় ভাইরাস দুর্বল হয়, এই কথা বলে নিউজের শেষে তার মতবাদই প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে। উদাহরণ হিসেবে এনেছে চীনের গুয়াংজি প্রদেশ এবং সিঙ্গাপুরের কথা। কারণ সেখানে তাপামাত্রা বেশি, তাহলে সেখানে ছড়ালো কিভাবে ?? এবং সেই যুক্তি দিয়ে তারা তাদের বানানো লক ডাউন বা স্যোশাল ডিসটেন্সের পক্ষে সাফাই গাইছে !! (https://tinyurl.com/sgx2tro)

পাঠক ! মানুষ যে কত বড় ধাপ্পাবাজ হয় তার প্রমাণ, প্রথম আলোর এই খরব।
কারণ চীনের গুয়াংজি প্রদেশে করোনায় আক্রান্ত হইছে ২৫৪ জন, এর মধ্যে ২৫০ জন পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছে এবং মৃত্যু হয়েছে মাত্র ২ জনের (https://www.pharmaceutical-technology.com/features/coronavirus-affected-countries-china-outbreak/)। অপরদিকে সিঙ্গাপুরে ৬৮৩ জন, এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে মাত্র ২ জনের (https://www.worldometers.info/coronavirus/)। তারা এই দুইটা যায়গায় মাত্র ৪ জন মৃত্যুর উদাহরণ দিয়ে করোনা ভীতির পক্ষে এবং লক ডাউনের মত একটি বিধ্বংসী জিনিসকে জায়েজ করতে চাইছে। অথচ তাদের লক ডাউন বা সোশ্যাল ডিসটেন্স বা ভীতি প্রচারের কারণে ইতিমধ্যে বাংলাদেশে শত শত লোক বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে, না খেয়ে আছে কোটি কোটি মানুষ। অর্থনীতি পঙ্গু হওয়ার পথে। এখন পর্যন্ত মিডিয়ায় খবর এসেছে বাংলাদেশে ৩ জন আত্মহত্যা করেছে শুধু করোনার ভীতির কারণে (গাইবান্ধায়, পঞ্চগড় ও রাজবাড়িতে)।

কথা হইলো-
-ভাইরাস অধিক তাপমাত্রায় দুর্বল হয়, এটা অনেক পুরাতন কথা,
-ফ্লু শীত প্রধান দেশে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ লোকের জীবন কেড়ে নেয়, এটাও পুরাতন কথা,
-এবং ফ্লু তে অধিক বয়স্করা মারা যায়, তাই যে দেশে বয়স্ক সংখ্যা বেশি তাদের ভয় বেশি, এটাও পুরাতন কথা।

এতগুলো পুরাতন ও বৈজ্ঞানিক কথা আড়াল করে কিভাবে করে শীত ও বয়স্কের দেশ ইতালির উদাহরণ দিয়ে বাংলাদেশে এই লক ডাউনের মত একটি ভুয়া অবৈজ্ঞানিক জিনিস চলতে পারে তা আমার মাথায় আসছে না। কলাবিজ্ঞানীর হাতে যখন দেশ, সব কিছুই সত্যিই শেষ।

শীত প্রধান দেশগুলোতে ফ্লু একটি কমন বিষয়

প্রথম ছবিটা ইতালির সাবেক ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার রিপাবলিকান ব্লকের মাত্তিও সালভিনি’র। সে করোনার আতঙ্ক উড়িয়ে দিয়ে রোমের রাস্তায় মাস্ক ছাড়া বান্ধবিসহকারে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে। দ্বিতীয় ছবিতে একটি নিউজে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্প করোনা ভাইরাসকে বলছে ডেমোক্র্যাটদের ধাপ্পাবাজি।

এখানে আসলে বোঝার বিষয় হলো-
আমাদের নদীমাতৃক দেশে যেমন বন্যা একটা সাধারণ বিষয়। ঠিক তেমনি শীত প্রধান দেশগুলোতে ফ্লু একটি কমন বিষয়। প্রতি বছরই ফ্লুতে শীত প্রধান দেশগুলোতে অনেক বৃদ্ধ মারা যায়। যেমন ২০১৮ সালে ফ্লুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৮০ হাজার লোক মারা গিয়েছিলো। তবে সেটাতে ডেমোক্র্যাটিক মিডিয়া ফোকাস করেনি, এখন যেভাবে করছে। তবে কোন কোন ফ্লু তুলনামূলক মারাত্মক হয়, কিন্তু এটা তাদের জন্য স্বাভাবিক বিষয়। আমরা যেমন বন্যা কমবেশিকে মেনে নেই, শীত প্রধান দেশগুলো এই ফ্লুয়ের উৎপাত স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয়। এ বছর করোনা ভাইরাস নামক ফ্লু এর উৎপাত ঠিক তেমন।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এবছর ডেমোক্র্যাটিক ব্লক এই ফ্লুয়ের সুযোগটা রাজনৈতিকভাবে নিতে চাচ্ছে। বলা যায়, এবার বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ হলো তাদের সংঘবদ্ধ আক্রমণ। এর কারণও আছে, ওয়াল্র্ড ওয়াইড ডেমোক্র্যাটিক ব্লক রাজনৈতিকভাবে পেছনে চলে যাচ্ছিলো। ওয়াল্র্ড ওয়াইড রিপাবলিকানদের উত্থান, ইউরোপে ম্যাক্রোর নতুন রাজনৈতিক ধারার সূচনা, রাশিয়ার ফিরে আসা, চীনের অবস্থান শক্তিশালী হওয়া, তুরস্ককেন্দ্রীক ইসলামিস্টদের উত্থান, সবমিলিয়ে ধিরে ধিরে আবদ্ধ হয়ে পড়ছিলো ডেমোক্র্যাটিক ব্লকরা। তাই তারা চাইছিলো একটি সংঘবদ্ধ আক্রমণ করে নতুন করে তাদের অবস্থান তৈরী করা, যেটা তারা করলো কোভিড-১৯ এর নাম করে।

আসলে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের রাজনীতি যদি দেখেন, তবে দেখবেন তারা ক্রাইসিস ক্রিয়েট করে পরে ত্রাণকর্তা সেজে রাজনীতি করে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যদি দেখেন, তবে ১৯৮০, ১৯৯৭, ২০০৮ সালে বিশ্বে বিভিন্ন যে অর্থনৈতিক মন্দা হয়েছে তার পেছনে এই ডেমোক্র্যাটিক ব্লকদের হাত ছিলো এবং এই মন্দায় অন্যান্য ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লাভবান হয়েছে সরোসের মত ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের বিজনেসম্যানরা।
আবার রাজনৈতিক উত্থাণের ক্ষেত্রে যদি দেখি, তবে ১৯৯০-৯২ এর মধ্যে বাংলাদেশ মিয়ানমার সহ বেশ কয়েকটি দেশে গণতন্ত্রের উত্থানের নামে ডেমোক্র্যাটিকরা অবস্থান দৃঢ় করেছে, তখন কিন্তু সেই দেশগুলোতে ক্রাইসিস তৈরী করেই তারা রাজনীতি করেছে। ২০১০-২০১২ পর্যন্ত যে আরব বসন্ত হলো, সেটাও কিন্তু ডেমোক্র্যাটিক প্ল্যান, ওরা নিজেরাই ক্রাইসিস ক্রিয়েট করে সেখানে রাজনীতি করে এবং প্রতিপক্ষকে ফেলে দিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করে। এতে বহু সাধারণ জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কিন্তু তাদের মূল উদ্দেশ্য রাজনীতি করা সেটা যেভাবেই হোক। হয়ত নামকাওয়াস্তে তাদের সেলিব্রেটি দিয়ে কিছু ত্রাণ দিবে, কিন্তু সেখানেও নিজেদের প্রচার করবে, যদিও বাস্তবে জনগণের সেটাতে কোন উপকার হবে না। বিশেষ করে এই ঘটনার পর ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের পরিবেশবাদী (তাদের ভাষায় গ্রিন মুভমেন্ট) দের একটা উত্থান হতে পারে।

একটা জিনিস মনে রাখবেন, ডেমোক্র্যাটিকরা যার পক্ষ নেয়, বাস্তবে তারা ওর লাভ নয় বরং ক্ষতি করে। যেমন ডেমোক্র্যাটিকরা নারীদের (নারীবাদীদের) পক্ষ নিছে। এতে কিন্তু নারীদের উপকার হয় নাই, বরং ক্ষতি হইছে, তারা নারীদের পক্ষ নিয়ে উল্টা নারীদের ব্যবহার করে তাদের স্বার্থ সিদ্ধি করছে। একইভাবে এই যে তারা ভাইরাস-টাইরাসের নাম দিয়ে পাবলিকের পক্ষ নেয়ার ভান করতেছে, বাস্তবে এতে পাবলিকের কোন উপকার হবে না, বরং ক্ষতি হবে। আমার কথা বিশ্বাস না হয়, করোনা ভাইরাস শেষ হলে সমীকরণ মিলিয়ে দেইখেন, করোনা মানুষের কতটুকু ক্ষতি করলো, আর তাদের কৃত্তিম ক্রাইসিস কতটা ক্ষতি করলো, মাঝখান দিয়ে ডেমোক্র্যাটিকরা কতটুকু নিজেদের লাভ তৈরী করে নিলো, তাহলেই বুঝতে পারবেন।

অর্থনৈতিক ক্ষতির চেয়ে প্রবীণদের মরে যাওয়া ভালো।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ড্যান প্যাট্রিক বলেছে, “
অর্থনৈতিক ক্ষতির চেয়ে প্রবীণদের মরে যাওয়া ভালো।” সে আরো বলেছে, আমার বার্তা হলো: কাজে ফিরে চলুন, জীবনে ফিরে চলুন, এটা নিয়ে স্মার্ট হোন, আর আমরা যারা সত্তোরোর্ধ আছি, আমরা নিজেরাই নিজেদের খেয়াল রাখবো’।
প্যাট্রিক বলে, পুরো দেশ ত্যাগ স্বীকার করুক তা আমি চাই না। আমি শত শত মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি… আর সবাই প্রায় একই কথা বলেছে: আমরা পুরো দেশ হারাতে পারি না। আমাদের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে’। প্যাট্রিক বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট যে রকম বলেছে মৃত্যুর হার খুবই কম। এই কারণে আমাদের পুরো দেশ বন্ধ করে দিতে হবে? আমার মনে হয় আমরা কাজে ফিরে যেতে পারি’। (https://bit.ly/2y0G2jg)

লক্ষ্য করুণ-
১) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৬৫+ বৃদ্ধ সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ১৩%। তারপরও তারা এমন কথা বলছে। অথচ বাংলাদেশে ৬৫+ বছরের বৃদ্ধ সংখ্যা মোট জনসংখ্যার মাত্র ৬% তারপরও আমরা এমন কথা বলতে পারছি না।

২) যুক্তরাষ্ট্র লক ডাউনের কারণে তাদের অর্থনীতি নিয়ে শংকিত। অথচ তাদের অর্থনীতি একটি বহুমাত্রিক ভিত্তির উপর নির্ভরশীল। তাদের ডলার বিশ্বমুদ্রা হিসেবে প্রচলিত, পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের রিজার্ভ ডলারে রাখা। আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য ডলার প্রচলিত। তারপরও তারা বলছে, লকডাউনের মাধ্যমে তাদের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে উঠবে। অথচ বাংলাদেশের অর্থনীতির এমন কোন ভিত্তিই নেই। তারপরও কোন আশায় আমরা দেশ লক ডাউন করে মানুষকে পথের ফকির বানিয়ে দিচ্ছি?

৩) সাধারণত যারা ৭০ বছরের বৃদ্ধ, তারা প্রত্যেক পরিবারের সন্তানদের উপর নির্ভরশীল। তাদের ওষুধপত্র, থাকা-খাওয়ার খরচ সন্তান বা পরিবারকেই বহন করতে হয়। কথা হইলো, আপনারা বৃদ্ধদের বাচাতে সন্তানদের আর্থিক অবস্থা খারাপ করে দিলেন, এখন সেই সন্তানরা বৃদ্ধদের খাওয়াবে কি ? দেখা যাবে, বৃদ্ধদের ওষুধপাতি, চিকিৎসা ব্যবস্থা আর খাবার পর্যাপ্ত দিতে না পারায় এমনিতেই বৃদ্ধরা মারা যাবে।

৪) ধরে নিলাম, আপনারা ২ বা ৩ সপ্তাহ পর লক ডাউন খুলে দিলেন, তখন তো ভাইরাসটা ঠিকই সবাইকে ধরবে, সেটা তো আটকে রাখতে পারবেন না। যারা আক্রান্ত হওয়ার ২-৩ সপ্তাহ পর তো ঠিকই হবে। আর ওষুধ কবে বের হবে তার তো কোন হিসেব নাই। ৬ মাস পরও বের হতে পারে, ১ বছর পরও বের হতে পারে। তাহলে কি ১ বছর লক ডাউন করে রাখবেন ? কথা হচ্ছে কিসের আসায় আপনারা ২-৩ সপ্তাহ লক ডাউন করে রাখলেন সেটা আগে স্পষ্ট করুন। যদি ওষুধ বের হওয়া পর্যন্ত লক ডাউন করতে চান, তবে ঠিক আছে সেটা ১ বছর হইলেও। কিন্তু ২-৩ সপ্তাহ লক ডাউন করা আর না করার মধ্যে তো কোন তফাৎ নাই। মাঝখান দিয়ে দেশের মানুষের আর্থিক অবস্থার ১২টা বাজায় দিলেন।

লকডাউন ফ্যান্টাসি

এ অঞ্চল অনেক দিন ব্রিটিশ উপনিবেশে থাকায়, এর মানুষগুলোর মধ্যে ইংরেজী শব্দ বা বাক্যগুলোর মধ্যে একটা ফ্যান্টাসি আছে। এই
ফ্যান্টাসির সুযোগ নিয়ে বেশ ভালো একটা রাজনৈতিক ব্যবহার দেখিয়েছিলো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সে তার জনপ্রিয়তা বাড়াতে ব্যবহার করেছিলো ‘সার্জিকাল স্ট্র্যাইক’ শব্দদ্বয়ের। অধিকাংশ ভারতীয়ই জানে না, সার্জিকাল স্ট্র্যাইকটা কি ? অথবা বাস্তবে সার্জিকাল স্ট্রাইক হয়েছিলো কি না, তারও কোন প্রমাণ নেই। কিন্তু যখন মোদি সরকার প্রচার করলো, “ভারত পাকিস্তানকে সার্জিকাল স্ট্যাইক করেছে।” ব্যস এতটুকু শুনেই তারা খুশিতে দিশেহারা হয়ে গেলো। ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ করে করে পুরো দেশ মেতে উঠলো। সিনেমা-নাটক-গান এমন কিছু নাই, যেখানে সার্জিকাল স্ট্রাইক নাই।

সম্প্রতি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি উদ্ভব হওয়ার পর পাবলিক শুনেছে ‘লকডাউন’ শব্দের ব্যবহার। পাবলিক আদৌ জানে না, এই শব্দের মাজেজা কি। কিন্তু তারপরও ফেসবুক-স্ট্যাটাসে কমেন্টে দেখি সবাই লকডাউন চায়।

লক ডাউন’র অর্থ খুজতে গিয়ে একটা অর্থ পেলাম-
কারাগারে যখন বন্দিরা দাঙ্গা করে তখন সেই দাঙ্গা নিয়ন্ত্রনের জন্য কারাগারে বন্দিদের তাদের কক্ষে বন্দি করাকেই লক ডাউন বলে।

আর ভাইরাস নিয়ন্ত্রনের জন্য লক ডাউন শব্দের অর্থ হলো-
কোন একটি এলাকায় কমিউনিটি ট্রান্সমিশন পেলে ঐ এলাকাকে বদ্ধ করে দেয়া যেন বাইরে থেকেও কেউ ঢুকতে না পারে আবার ভেতরেও কেউ প্রবেশ করতে না পারে।
আর ফুল লক ডাউন মানে হইলো- কোন নির্দ্দিষ্ট এলাকার কেউ বাড়ি থেকেই বের হতে পারবে না। ঘরের মধ্যে থাকবে। অর্থাৎ ভাইরাস ট্রান্সমিশন সর্বোচ্চ কমিয়ে নিয়ে আসাই এর কাজ।

অর্থাৎ যদি ধারণা করা হয়- কোন এলাকার কেউ জীবাণু আক্রান্ত হয়েছে, তবে ঐ এলাকা লক ডাউন অর্থ হলো, সেই এলাকার ভেতরের মানুষ যেন বাইরে না যায় আর বাইরের মানুষ যেন ভেতরে না আসে। এটা অনেকটা শেষ পরিণতি, তুমি মরলে ভেতরে মরো, বাইরে যেন কেউ আক্রান্ত না হয়।

যাই হোক, গতকাল সরকার অফিস আদালত বন্ধ করার পর দেখি পাবলিকের লক ডাউন চাওয়া বন্ধ হইছে।
আসলে পাবলিক মুখে মুখে লক ডাউন চাইলেও আসলে চাইছিলো শ্যাটডাউন।
মানে সব কিছু বন্ধ হোক, তাহলে পাবলিক দেশের বাড়িতে যাইতে পাড়বে।
ব্যস বিকাল ৫টায় বন্ধের ঘোষণা আসলো, আর সাথে সাথে পাবলিক ট্রেন-বাস-লঞ্চে ভীড় করে করে দেশের বাড়ি চলে যাওয়া শুরু করলো। ঠিক যেভাবে ঈদের ছুটিতে যায়।
যারা ভাইরাসের ছোয়াচে তত্ত্বে বিশ্বাস করে, তাদের বিশ্বাস অনুসারে এখন কি হলো?
তাদের বিশ্বাস অনুসারে যেটা ঘটলো- যেহেতু তাদের ভাষায় ঢাকা ইনফেকটেড, তাই ভাইরাস পুরো দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়লো। (চীনের গোপন নথিতে দেখা গেছে, অনেকে লক্ষণ প্রকাশ না করেও নাকি এই ভাইরাসের বহনকারী হতে পারে : সূত্র দৈনিক প্রথম আলো, ২২ মার্চ ২০২০)
তাহলে ভাইরাস নিয়ে এত জনসচেতনা তৈরী করে আদৌ কি কোন লাভ হলো ??

আসলে ঢাকার মত জনবহুল শহর যার প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বাস করে প্রায় ১ লক্ষ জনগণ,
মাত্র ২৬০ বর্গ কিলোমিটারে বাস করে প্রায় ২ কোটি জনগণ
আসলে সেখানে কখনই লক ডাউন সম্ভব না।
কারণ বাংলাদেশের সবকিছু রাজধানী কেন্দ্রীক করে তৈরী করা হয়েছে,
বাংলাদেশে অন্য দেশের মত বিকেন্দ্রীকরণ বা প্রাদেশীক সরকার নাই।
যেমন- জার্মানি লক ডাউন করছে মাত্র ২টি প্রদেশ (Bavaria, Saarland), বাকি ১৪টা এখনও করে নাই।
যেহেতু প্রত্যেক প্রদেশের আলাদা সিস্টেম, তাই ২টা লক ডাউন করলে বাকিগুলো তাদের কাজ চালায় নিতে পারবে।
একই কাজ করছে পাকিস্তান, তারা সিন্ধকে লক ডাউন করছে, কিন্তু বাকি ৩টা প্রদেশ করে নাই।
একইভাবে সৌদি আরবও, সে তার কাতিফ অঞ্চল লক ডাউন করে দিছে।
মানে কয়েকটা অঞ্চল পৃথক করে দিলেও, বাকিগুলো কাজ চালিয়ে নিতে পারবে।
কিন্তু বাংলাদেশে তো সব ঢাকা কেন্দ্রীক, প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা নাই।
ফলে ঢাকাকে লক ডাউন করা মানে পুরো দেশের হৃদপিণ্ড বন্ধ হয়ে যাওয়া।
তাহলে পুরো দেশ চালাবেই বা কে ?
যেহেতু লক ডাউন সম্ভব না, তাই সরকার শ্যাট ডাউন করে দিছে।
কিন্তু ঘটনা হইছে ঢাকাতে তো স্থায়ী বাসিন্দা খুব কম।
ইতালিতে সংকট হইছে, প্রবাসী বাংলাদেশীরা যেমন বাংলাদেশে চলে আসছে,
ঠিক তেমনি ঢাকাকে যখন তারা সংকটপূর্ণ মনে করছে, তখন তারা একই সূত্রে গ্রামের বাড়ি চলে গেছে।
ফলে ভাইরাস ভীতির সূত্র অনুসারে ইতালি থেকে যেমন ভাইরাস বাংলাদেশে আসছে,
ঠিক একইভাবে শ্যাট ডাউন করার কারণে ঢাকা থেকে ভাইরাস ৬৪ জেলা কিংবা ৮৫ হাজার গ্রামে ছড়ায় গেলো। হয়ত গাড়িঘোড়া কিছু বন্ধ করার প্ল্যান থাকতে পারে, কিন্তু তাতেও লাভ হবে না, বাংলাদেশ এত ছোট, কেউ যদি ঢাকা থেকে অন্য জেলায় যেতে চায়, তবে অন্য এলাকায় যাবেই, আটকাতে পারবে না।

আর তাছাড়া ইউরোপ-আমেরিকার মানুষের স্থায়ী নিবাস আর বর্তমান নিবাস বলে দুটি ঠিকানা আছে কি না, তা আমার জানা নাই, কিন্তু বাংলাদেশে মানুষের কিনতু দুইটা ঠিকানা আছে। ফলে গোলযোগ দেখা দিলে মানুষ বর্তমান নিবাস থেকে স্থায়ী নিবাসের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করবেই, সেটা কেউ আটকাতে পারবে না। ইউরোপ-আমেরিকা অনেক বড়, ফলে ট্রেন-বাস, রাস্তা বন্ধ করতে কাজ হবে, কিন্তু বাংলাদেশে সেটা সম্ভব না, কারণ বাংলাদেশ অনেক ছোট। সমস্যা হইলো ইউরোপ-আমেরিকার সিস্টেম কপি করে বাংলাদেশে চালাইলেই কাজ হবে, এমনটা ভাবা বোকামি।

তারমানে দাড়াচ্ছে, এই যে সব কিছু বন্ধ হয়ে গেলো,
ভাইরাস ভীতিতে যারা বিশ্বাস করে, তাদের হিসেবে মতেই এতে আসলে কোন উপকারই হলো না, বরং ক্ষতি আরো বৃহৎ পরিসরে ছড়ায় পড়লো। তাদের দৃষ্টিতেই করোনা হয়ে গেলো সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণহীন।

ছবি : গতকাল ছুটির ঘোষনার পর কমলাপুর রেল স্টেশনে টিকিট কাটার লাইন।

বাংলাদেশে দৈনিক মানুষ মারা যায় ২৫৬০ জন

হিসেব বলছে, বাংলাদেশে দৈনিক মানুষ মারা যায় ২৫৬০ জন।
এবং ঘণ্টায় মারা যায় ১০৬ জন।
এতগুলো মানুষের মধ্যে কারো না কারো তো জ্বর ঠাণ্ডা, কাশী থাকা স্বাভাবিক।
তাহলে ঐ সব লোকগুলো কি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ??

আরেকটি কথা হলো- বাংলাদেশে মানুষের গড় আয়ু ৭২.৭ বছর।
এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের গড় আয়ু ৭২.৭ এর থেকে বেশি।
কথা হচ্ছে- হিসেব মতই যদি মৃত্যু হয়, তবে সেই মৃত্যুর জন্য করোনাকে কতটুকু ভীত হওয়া যায় ??

মূল কথা হইলো-
বাংলাদেশে জ্বর, ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশী, বৃদ্ধের মৃত্যু সব কিছু মতই চলতেছে।
সমস্যা হইছে বাংলাদেশের মিডিয়া হঠাৎ সক্রিয় হঠে উঠছে সেই খবরগুলো ধারণ করার জন্য,
আমরা অগে যে খবরগুলো জানতাম না, সেগুলো একসাথে দেখে প্যানিক হয়ে যাচ্ছি,
আর ভাবতেছি না জানি কি হয়, নাকি জানি কি হয়।
স্কুল, কলেজ, রাস্তাঘাট, হাসপাতাল, দোকানপাট, রেস্তোরা, অফিস আদালত, মসজিদ বন্ধ করে দিতেছি।

আরে ভাই- করোনা আবির্ভাব শুরু হইছে ১২৭ দিন হইলো,
আর বাংলাদেশে মানুষ কিছুটা সক্রিয় হইছে মাত্র ১০ দিন যাবত।
এর আগেও আক্রান্ত বিদেশী দেশ থেকে বহু লোক আসছে।
তারা দেশের মানুষের মধ্যে ঘুরছে-ফিরছে।
অনেকে সংক্রমণের যে তত্ত্ব দেখায়, সেটা যদি বাস্তবেই ঘটতো
তবে বহু আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যে হাসপাতালে থাকার কথা ছিলো।
লাশের সারির যায়গা দিতে পারতেন না।
কিন্তু সেটার কিছুই দেখা যাচ্ছে না।

কিন্তু
মিডিয়া যে কৃত্তিম প্যানিক তৈরী করতেছে,
এর খেসারত দিতে হবে বাংলাদেশের জনগণকে।
অনেক মানুষকে কৃত্তিম দুর্ভিক্ষ ও অর্থনৈতিক মন্দা শিকার হবে,
যা ভুগাবে বহুদিন পর্যন্ত।

স্ট্যাটাসটা ছোট, কিন্তু এই স্ট্যাটাসের একটা গভীর মর্মার্থ আছে।

স্ট্যাটাসটা ছোট, কিন্তু এই স্ট্যাটাসের একটা গভীর মর্মার্থ আছে।
বর্তমান সময়ে করোনা নিয়ে বাংলাদেশে যা হচ্ছে, তার সবটাই করা হচ্ছে- `মানুষকে স্ট্যাটাসের কথাগুলো বিশ্বাস করানোর জন্য।।'
মিডিয়াতে এমনভাবে তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে-
যেন এই কথাগুলো কেউ মুখে বলে, আর কেউ বা অন্তরে বিশ্বাস করে।

যারা লক ডাউন চায়……….

--দুর্নীতিবাজ চিন্তা করে না সৎ কর্মকর্তার কি হবে ?
--যার জমানো টাকা আছে, সে চিন্তা করে না যার জমানো নাই তার কি হবে ?
--সরকারী চাকুরে চিন্তা করে না, বেসরকারী চাকুরের কি হবে ?
--মাস শেষে বেতন যার নিশ্চিত, সে চিন্তা করে না দিন মজুরের কি হবে ?
--ঘরে ল্যাপটপে বসে যার কাজ, সে চিন্তা করে না, রাস্তায় ঘুরে যার কাজ, তার কি হবে ?
--যার ঘরে বান্দা বুয়া আছে, সে চিন্তা করে না ফ্ল্যাট-বাড়িতে ছুটা বুয়া আসতে না দিলে কি হবে ?
--বাপের হোটেলে যে খায়, সে চিন্তা করে না বাপের টাকাটা কিভাবে আসবে ?
--৫ স্টার হোটলে যার খাওয়ার অভ্যাস, সে চিন্তা করে না চালের দাম কেজিতে ১০ টাকা বাড়লে গরীবের কি হবে ?
--যে বাড়িতে ৩ মাসের খাবার মজুদ করেছে, সে চিন্তা করে না যার ঘরে ৩ দিনের খাবার নাই, তার কি হবে ?

সবাই শুধু নিজের জন্য চিন্তা করে, লক ডাউন চায়।
কিন্তু সবার জন্য চিন্তা করে না। চিন্তা করে না, এভাবে সব বন্ধ হতে থাকলে সবার কি হবে ??

এই জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান করোনার জন্য লক ডাউন প্রসঙ্গে বলেছে,
“আমি এক দিকে করোনা রুগি বাচাবো, অন্যদিকে আমার দেশের মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাবে।”

সত্যি বলতে, বাংলাদেশে দুই-চার জন অতি বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পুরো দেশজুড়ে যেভাবে মিডিয়া করোনা ভীতি তৈরী করেছে, পুরো দেশকে অবরূদ্ধ করে দিয়েছে, তাকে ১ জন করোনার মৃত্যুর বিপরীতে ১০০০ জন সাধারণ মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাবে নিশ্চিত।

করোনার অজুহাতে দেশের মানুষকে দুর্ভিক্ষে হত্যা করা কখনই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
তাই অবিলম্বে সব কিছু খুলে দেয়া হোক।

“ইতালির গির্জা থেকে মহানবীর ব্যঙ্গচিত্র সরাও, নয়ত ‘করোনা মহাপ্রলয়’ থামবে না”

ইতালির গির্জার ভেতর থেকে মহানবীর ব্যঙ্গচিত্র না সরালে করোনা মহাপ্রলয় থামবে না বলে ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন অনেকে। এ সম্পর্কে আমার এক ফেসবুক পোস্টে অনেকেই তাদের মতামত জ্ঞাপন করেছেন। পাঠকদের মতামত হলো-
১. মহানবীর নিঃকৃষ্ট ব্যঙ্গচিত্র কারণেই আজকে ইতালির উপর এ ধরনের ভয়াবহ গজব নেমে এসেছে। উক্ত ব্যঙ্গচিত্রে দেখানো হয়েছে, একজন দাড়ি সম্বলিত নগ্ন ব্যক্তিকে নরকের ফেরেশতারা পেটাচ্ছে, ছবির নিচে মহানবীর নাম লিখিত।
২. বিশেষ করে ইতালির উত্তরাঞ্চলে যেখানে করোনায় মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি সেখানের এক গির্জায় এই ছবিটি রাখা আছে।
৩. কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন- কোরআনে সূরা লাহাব ও সূরা কাউসারে মহানবীর প্রতি বিদ্বেষকারীকে সম্পদ ও পরিবার নিয়ে সমূলে ধ্বংসের কথা বলা হয়েছে, ইতালিতে সেটাই ঘটছে।
৪. আবার অনেকে মন্তব্য করেছে, আমরা (মুসলমানরা) যদি এই ব্যঙ্গচিত্রের প্রতিবাদ না করি, তবে ইতালির গজব আমাদের উপরও পড়বে।

উল্লেখ্য ইতালির বোলগোনায় ‘San Petronio Basilica নামক গির্জায় Giovanni da Modena এর আঁকা ব্যঙ্গচিত্রটি ১৪১০ সাল থেকে সংরক্ষিত আছে। কিন্তু মুসলমানরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলো না। ২০০১ সালে ইতালির স্থানীয় মুসলমানরা প্রথম এই ব্যঙ্গচিত্রটি সরাতে ইতালি সরকারের কাছে দাবী উত্থাপন করে, কিন্তু ইতালি সরকার তাদের উপেক্ষা করে মুসলমানদের গ্রেফতার করে প্রতিবাদ দমনের চেষ্টা করে।

সূত্র:
ক. https://bit.ly/395rxru
খ. https://bit.ly/39bLXPs
গ. https://bit.ly/2QxL9hx
ঘ. https://nyti.ms/2U8YsHp
ঙ. https://bit.ly/2xYTIvh