Tuesday, July 23, 2019

৪৭’ সাল থেকে হিন্দু নির্যাতনের হিসেব করলে বাংলাদেশে কোন হিন্দু থাকতে পারবে না

প্রিয়া সাহা বলেছে ৩ কোটি ৭০ লক্ষ হিন্দু গায়েব হইছে
কেউ কেউ বলছে, “সে মুখ ফসকে বেশি বলে ফেলেছে। তবে ৩ কোটি ৭০ লক্ষ না হোক, অন্তত এক-দেড় কোটি হিন্দু তো গায়েব বা দেশান্তরী হইছে,১৯৪৭ থেকে হিসেব করেন, হিন্দু-মুসলিম জনসংখ্যা অনুপাত দেখলে বুঝতে পারবেন।”



এখানে আমার একটা ‘কিন্তু’ আছে। সেটা হলো-
হিসেবটা ১৯৪৭ থেকে করবো কেন ?

এখানে আপনাদের একটা ইতিহাস জানা প্রয়োজন-
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হইছিলো মুসলমানদের ইচ্ছায়, কিন্তু তার বিরোধীতা করায় ১৯১১ সালে তা রদ হয়ে যায়।
কিন্তু ১৯৪৭ সালে বাংলাভাগ কিন্তু মুসলমানদের ইচ্ছায় হয় নাই, হয়েছিলো হিন্দুদের ইচ্ছায়।
তাহলে ১৯৪৭ সালে বাংলাদেশ থেকে যদি হিন্দুরা চলে যায়, তবে তার দায়ভার বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের মুসলমানরা নিবে কেন ?
জয়া চ্যাটার্জির লেখা বই-
বাঙলা ভাগ হল (হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা ও দেশ-বিভাগ ১৯৩২-১৯৪৭) বইয়ে স্পষ্ট লেখা আছে,
১৯৪৭ সালে বাংলাভাগ হইছিলো হিন্দুদের কারণে।
মুসলমানরা চাইছিলো বাংলা যেন ভাগ না হয়।
কিন্তু হিন্দু নেতারা বললো যেহেতু ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হচ্ছে, সেহেতু পশ্চিমবঙ্গ যদি বাংলাদেশের সাথে যুক্ত হয় তবে দুইবঙ্গ মিলিয়ে জনসংখ্যার অনুপাতে হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে যাবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ যদি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতের সাথে যুক্ত দেয়, তবে তারা হিন্দু রাষ্ট্রের অধিনে থাকতে পারবে। এক্ষেত্রে হিন্দুরা বাংলা জাতীয়তাবাদ ত্যাগ করে হিন্দু জাতীয়তাবাদের দিকে আকৃষ্ট হয়। ফলে হিন্দুদের ইচ্ছার কারণে বাংলা ভাগ হয়ে যায়, এবং পূর্ব বাংলার হিন্দুদের একটা অংশ দেশ ক্রস করে নব্য ভারতে চলে যায়। কথা হলো, হিন্দুরা যদি না চাইতো বাংলাভাগ না হোক, তবে অবশ্যই পূর্ব বাংলার হিন্দুদের দেশ ত্যাগ করতে হতো না।

এরপর হিন্দুরা ব্যাপক হারে বাংলাদেশ (পূর্ব পাকিস্তান) ত্যাগ করে ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের সময়। এটাও সবার জানা ১৯৬৫ সালের যুদ্ধ শুরু করেছিলো ভারত, পাকিস্তান নয় (অনেকে পাকিস্তানের কাশ্মীর প্রবেশকে অজুহাত করে বলে ৬৫ সালের যুদ্ধ হয়েছিলো, এটা সঠিক নয়। প্রমাণ- ভারত তার যুদ্ধ কাশ্মীরের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে পুরো পাকিস্তানকে টার্গেট করে করে)। এখানেও একটি প্রশ্ন আসে, যে যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের হিন্দুরা দেশত্যাগী হয়েছিলো, সেই যুদ্ধ যদি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ভারত লাগায়, তবে সেটার দায়ভার বাংলাদেশ বা মুসলমানরা নিবে কেন ?

পাঠক! একটু খেয়াল করুনঃ- ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হইছিলো ধর্মের উপর ভিত্তি করে। যেহেতু পাকিস্তান সৃষ্টি হইছিলো শুধু মুসলমানের জন্য, এজন্য তার ভূখণ্ড ছোট ছিলো। অপরদিকে ভারত বলে সে ধর্মনিরপেক্ষ থাকবে, এ কারণে সে বড় ভূমি পায়। তাই ৪৭ থেকে যদি হিসেব করতেই হয়, তবে বাংলাদেশে ১টা হিন্দুর থাকার অধিকার নেই। কারণ ৪৭ এর শর্তই ছিলো বাংলাদেশ হবে শুধু মুসলমানদের ভূমি। এটাই ৪৭ এ দেশভাগ করার রীতি, এখানে কারো হাত নেই।

কিন্তু সেই সময় মুসলমানরা দয়া করে কিছু হিন্দুকে থাকতে দিয়েছে।
কিন্ত সেই হিন্দু যদি আবার দাবী করে বাংলাদেশে তার বড় ভাগ আছে, তখন কেমন লাগে?
শুধু তাই নয়, তার ভাগ দেখিয়ে যদি বিদেশী শত্রুদের দেশ দখলের আহবান করে, তখন বিষয়টি কেমন হবে, বলুন?

ছোট বেলায় একটা বাক্য পড়েছিলাম- “এক মুরগী তিন বার জবাই করে খাওয়া।”
 তখন বিষয়টি বুঝতাম না, এক মুরগীকে তিন বার কিভাবে জবাই করা যায়।
এখন হিন্দুদের দেখে বিষয়টি বুঝতে পারি, এক মুরগী তিনবার জবাই কাহাকে বলে।

এই যেমন প্রিয়া সাহা।
সে নিজের পুরাতন বাড়িতে নিজেই আগুন দেয়,
এরপর সেই আগুনকে অজুহাত করে মুসলমানের নামে মামলা দিয়ে মুসলমানকে বাড়িছাড়া করে।
এরপর সেই পোড়াবাড়ি দেখিয়ে সরকারি সাহায্য লাভ করে নতুন ঘর তুলে।
এরপর সেই বানোয়াট ঘটনাকে পূজিকে বহিঃশত্রুকে আমন্ত্রণ করে দেশ দখলের জন্য।

কি অদ্ভূত! হিন্দুরা একই গেম বার বার খেলে,
আর প্রতিপক্ষ বোকা মুসলমানরা সেই হিন্দুর কাছেই বার বার মাইর খায়।
“চুপকর! খামোশ!! হিন্দুদের বিরুদ্ধে কিছু বলবে না, সব হিন্দু খারাপ না।”