Saturday, December 29, 2018

ইশতেহার : ‘জেগে ওঠো বাংলাদেশ ২০১৮’



১. সংবিধান, আইন ও বিচার ব্যবস্থা
১.১) সংবিধানে আল্লাহ’র উপর আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে।
১.২) সংবিধানের রাষ্ট্রধর্ম অবমাননার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড আইন করতে হবে। রাষ্ট্রধর্মবিরোধী সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
১.৩) সংবিধানে বর্ণিত রাষ্ট্রধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক কোন মূলনীতি করা যাবে না, থাকলে বাদ দিতে হবে।
১.৪) রাষ্ট্রধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক আইন বাতিল করে, রাষ্ট্রধর্মের সাথে সমন্বয়পূর্ণ আইন চালু করতে হবে।
১.৫) সুপ্রীম কোর্টে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।
১.৬) দেশের প্রতি থানায় ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট এবং প্রতিবিভাগে হাইকোর্টের শাখা থাকতে হবে।
১.৭) হাইকোর্টের অতিরিক্ত ছুটি বাতিল করে সরকারী নিয়ম অনুসারে ছুটি দিতে হবে।
১.৮) শুধু আইন দিয়ে নয়, বরং সর্বত্র ধর্ম ও নৈতিকতার মাধ্যমে অপরাধ হ্রাসের উদ্যোগ নিতে হবে।
১.৯) শুধু মুখে নয়, বাস্তবে সকল মাদক নিষিদ্ধ করতে হবে। এমনকি ধূমপানের ব্যাপারেও কড়াকড়ি করতে হবে। ‘প্রকাশ্যে ধূমপান করলে জরিমানা’, যদি কোন নাগরিক কোন ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে ধূমপানে ধরিয়ে দেয়, তবে ঐ জরিমানাকৃত অর্থের অর্ধেক তাকে দিতে হবে। মদ, জুয়াসহ যাবতীয় অবরাধ নিয়ে সংবিধানের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবে জারি করতে হবে।

২. শিক্ষা ও গবেষণা:
২.১) শিক্ষা ও গবেষণাখাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়াতে হবে। সববিষয়ে গবেষণা চালু করতে হবে, বিদেশী গবেষণা নির্ভর থাকলে চলবে না।
২.২) অবাস্তবমুখী ও সময় অপচয়কারী শিক্ষাপদ্ধতি বাতিল করে বাস্তবমুখী শিক্ষা, যা বাস্তব জীবনে কাজে লাগে তা প্রণয়ন করতে হবে। শিক্ষা গ্রহণে ‘সময় কার্যকরী’ পদ্ধতি দিতে হবে। একজন ছাত্র যেন ২০ বছরের মধ্যে সাধারণ শিক্ষা সময় পার করে চাকুরী পেতে পারে সে ব্যবস্থা রাখতে হবে।
২.৩) অপরাধ, দুর্নীতি, ঘুষ, অনিয়ম, নারী নির্যাতন, সন্ত্রাস হ্রাসের জন্য সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থা বাদ দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে নৈতিকতা বৃদ্ধি করতে হবে।
২.৪) ধর্মীয় গবেষণার জন্য আলাদা বরাদ্দ দিতে হবে, ধর্মীয় বিষয়গুলো নিয়ে কেউ গবেষনা করতে চাইলে সরকারি বরাদ্দ পাবে।
২.৫) একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। একটি নির্দ্দিষ্ট ক্লাস পর্যস্ত সবাই একসাথে লেখাপড়া করবে। এর মধ্যে কমপক্ষ ৩০% ধর্মীয় শিক্ষা থাকবে। বাকিগুলোও ধর্মের আলোকে হবে। এই নির্দ্দিষ্ট সংখ্যক ক্লাস শেষ করার পর চাহিদা অনুযায়ী কেউ ধর্মীয় উচ্চতর, কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং উচ্চতর, কেউ ডাক্তার বা কেউ অর্থনীতি নিয়ে লেখাপড়া করবে।
২.৬) ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত চলমান ‘পরীক্ষা পদ্ধতি’ বাতিল করতে হবে।
২.৭) ছাত্র-ছাত্রীদের ধর্ম পালনের সুবিধা দিতে হবে। রুটিন এমনভাবে করতে হবে যেন, ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকে।
২.৮) মেধাপাচার রোধ করতে হবে। দেশের মেধাবীরা যেন দেশেই থাকে সে জন্য তাদের সুযোগ করে দিতে হবে।
২.৯) দেশজুড়ে সার্টিফিকেটহীন দেশজুড়ে অনেক মেধাবী/প্রতিভাধর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। সমাজ থেকে এদের তুলে আনতে হবে। তাদের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দিয়ে রাষ্ট্রের কাজে লাগাতে হবে।
২.১০) দেশের সবচেয়ে মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় নিয়ে আসতে হবে। শিক্ষক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্কতা বজায় রাখতে হবে। ভিন্ন সম্প্রদায়ের শিক্ষক দিয়ে ছাত্রদের মধ্যে গোলযোগ তৈরী করা যাবে না।
২.১১) ইতিহাস নিয়ে লুকোচুরি/কাটছাট বাদ দিতে হবে। শুধু ৭১’র চেতনা নয়, ৪৭’র চেতনা, অর্থাৎ বাংলাদেশ প্রকৃতপক্ষে কিভাবে সৃষ্টি হলো তা পড়াতে হবে।
২.১২) মুসলমানদের ইতিহাস/সভ্যতার জন্য গবেষণা, তা উৎঘাটন এবং প্রচারে আলাদা বরাদ্দ করতে হবে।
২.১৩) মুসলিম কবি সাহিত্যিকদের বইসমূহ পুনঃমুদ্রণ করতে।
২.১৪) ‘লাইব্রেরী’ একটি স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মর্যাদা পাবে । দেশে যত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে, সেই অনুপাতে লাইব্রেরীও থাকবে, যেখানে সকল বয়সের মানুষ প্রবেশ করে জ্ঞান চর্চা করতে পারবে। এতে একজন ব্যক্তি ছোটবেলা থেকেই গবেষণাভিত্তিক মনন নিয়ে বেড়ে উঠবে।
২.১৫) প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক নামাজের স্থান রাখতে হবে।

৩.চাকুরী/ব্যবসা:
৩.১) সরকার বেকার জনগোষ্ঠীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ (চাকুরী/ব্যবসা) করে দিতে বাধ্য থাকবে।
৩.২) শুধু চাকুরী নয়, তরুণ প্রজন্মকে উদ্যোক্তা হতে বা ব্যবসা করতে উৎসাহ দিতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ট্রেনিং দিতে হবে এবং সরকারকেই বিনিয়োগ করতে হবে। কেউ বৈধ ব্যবসা করতে চাইলে সরকার তাকে সব ধরনের সহায়তা করবে। কারণ তার মাধ্যমে অনেকের চাকুরী হবে তথা বেকারত্ব দূর হবে।
৩.৩) ব্যবসা করার জন্য সরকারের থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। তবে এই লাইসেন্স নেয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি কোর্স করা বাধ্যতামূলক থাকবে। ঐ কোর্সে ঐ নির্দ্দিষ্ট ব্যবসা করার জন্য প্রয়োজনীয় ধর্মীয় নীতিমালার শিক্ষা দেয়া হবে। যে সেই কোর্সে পাশ করবে, সেই লাইসেন্স পাবে। যে পাশ করবে না সে লাইসেন্স পাবে না। উদহারণস্বরূপ, একজন দোকানদার দোকানব্যবসা শুরুর আগে ঐ কোর্সে গিয়ে শিখবে- দোকানদারের জন্য ধর্মীয় নীতিমালা কি ? যেমন: মাপে কম দিলে, মানুষকে মিথ্যা বলে পণ্য দিলে ধর্মে কি বলা হয়েছে। এরফলে সকল পেশার মানুষের মধ্যে একটি নৈতিকতা কাজ করবে এবং তার পেশাকে সমাজের জন্য ‘আমানত’ মনে করবে।
৩.৪) বিদেশীদের চাকুরী নয়, দেশের মানুষকে আগে চাকুরী দিতে হবে। দেশের বেকারদের চাহিদা পূরণ হওয়ার পর বিদেশীদের দিতে চোখ দিতে হবে। দেশীয় কোন কাজের টেন্ডার পাওয়ার ক্ষেত্রে একই রকম দেশীয় কোম্পানিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কোন কাজ দেশের লোক না পারলে, তাদের বিদেশ থেকে ট্রেনিং দিয়ে নিয়ে এসে সেই কাজ করানো যায় কি না, সে চেষ্টা করতে হবে।
৩.৫) মসজিদের ইমাম/খতিবদের চাকুরীকে প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা দিতে হবে।
৩.৬) চাকুরীতে কোন ধরনের কোটা থাকবে না, যোগ্যতা অনুসারে সবাই চাকুরী পাবে। প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকার আলাদা ভাতার ব্যবস্থা করবে।
৩.৭) সরকারী চাকুরীতে এখনও কয়েক লক্ষ পদ খালি আছে। সেগুলো দ্রুত পূরণ করতে বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। সরকারী চাকুরীর সংখ্যা আরো কয়েকগুন বাড়াতে হবে।
৩.৮) সরকারী চাকুরীর বেতন এতটুকু উন্নীত করতে হবে, যেন জীবন নির্বাহের জন্য তাকে অসুদপায় অবলম্বন করতে না হয়।
৩.৯) চাকুরীতে যোগদানের বয়স বৃদ্ধি, অবসর গ্রহণের বয়স বৃদ্ধি এবং চাকুরী শেষে সংশ্লিষ্ট স্থানে উপদেষ্টা/পরামর্শদাতা হিসেবে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে।

৪.অর্থনীতি:
৪.১) সুদের গ্রাস থেকে মানুষকে রক্ষা করতে হবে, সুদবিহীন অর্থনীতির প্রণয়ন করতে হবে। ব্যাংকগুলো থেকে বৈধ ব্যবসায় ঋণের বদলে বিনিয়োগ করতে হবে।
৪.২) রিজার্ভ ডলারে না রেখে স্বর্ণে নিয়ে আসতে হবে। এতে মূদ্রাস্ফীতি কমে আসবে । আন্তর্জাতিকভাবে অনেক রাষ্ট্র বর্তমানে ডলার ব্যতিত নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেন করছে। ডলারের পরিবর্তে স্বর্ণ করলে আগামীতে আমাদের রিজার্ভের উপর কোন হুমকি আসবে না।
৪.৩) অযথা বিদেশী ঋণের বোঝা না বাড়িয়ে দেশের সম্পদ দিয়ে কাজ পূরণ করতে হবে। সরকারী/বেসরকারীভাবে চেষ্টা করতে হবে। প্রকল্প প্রয়োজন অনুসারে অনুমোদন পাবে, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প হ্রাস করতে হবে।
৪.৪) চলমান ট্যাক্স ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে, জাকাত ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৪.৫) বর্তমানে জনগণের থেকে আদায় করা ট্যাক্স/মাসুল হচ্ছে সরকারের আয়ের একমাত্র উৎস। জনগণের থেকেই আয় করা টাকা দিয়েই জনগণের জন্য উন্নয়ন করে সরকার। কিন্তু জনগণের টাকা জনগণের জন্য ব্যয় করলে সেটা উন্নয়ন বলা যায় না, বিনিময় বলা যেতে পারে।
৪.৬) জনরফতানির থেকে কোম্পানি/প্রতিষ্ঠান রফতানি (বিদেশে গিয়ে প্রতিষ্ঠানিক ব্যবসা) অনেক বেশি লাভজনক। এ কারণে বাংলাদেশ সরকারকে জনরফতানির থেকে বিভিন্ন কোম্পানিকে বিদেশে রফতানি (বিদেশে গিয়ে ব্যবসা) করতে বেশি সুযোগ করে দিতে হবে।
৪.৭) বিদেশীরা বাংলাদেশে এসে চাকুরী করলে যত ক্ষতি হয়, তার থেকে বেশি ক্ষতি হয় বিদেশী কোম্পানি এসে কাজ করলে (কাজ আমদানি)। বিদেশী কোম্পানির কাজের লাগাম টেনে ধরতে তাদের উপর শক্ত ট্যাক্স বসাতে হবে।
৪.৮) সরকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দেশে-বিদেশে ব্যবসা করতে বিনিযোগ করবে এবং তাদের ব্যবসায় অংশীদার হয়ে ইনকাম করবে।
৪.৯) কাউকে ফ্রি ট্রানজিট দেয়া যাবে না। পৃথিবীর অনেক রাষ্ট্র ট্র্রানজিটের বিনিয়য়ে অর্থ সংগ্রহ করে অনেক ধনী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ যদি বিদেশী কোন রাষ্ট্রকে ট্র্রানজিট দেয়ও, তবে সেখান থেকে আন্তর্জাতিক রেট মেনে অর্থ আদায় করতে হবে। এবং সেই টাকাও সরকারের সোর্স অব ইনকাম হবে। ট্রানজিট দেয়ার ক্ষেত্রে নৌ ও রেল ট্র্যানজিট দেয়া যেতে পারে, তবে নিরাপত্তার জন্য সড়ক ট্র্যানজিট এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
৪.১০) সাধারণভাবে কোরবানির হাট বরাদ্দ দেয়ার সময় যে সর্বোচ্চ টেন্ডারমূল্য দেয়, তাকে হাট ইজারা দেয়া হয়। এই পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। এর বদলে যে ইজারাদার কাস্টমারদের থেকে সবচেয়ে কম হাসিল নিবে এবং সর্বোচ্চ পাবলিক সার্ভিস দেওয়ার নিশ্চয়তা দিবে, তাকেই হাট ইজারা দিতে হবে। কোরবানি ঈদের ছুটি আরো দুইদিন (জিলহ্জ্জ মাসের ৭ ও ৮ তারিখ) বাড়িয়ে ৫ দিন করতে হবে, এতে গ্রামীন অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।
৪.১১) ইকোনোমিক জোনগুলোতে বিদেশী কোম্পানি আসতে পারে, তবে শর্ত দিতে হবে, শুধু শ্রমিক নয়, বরং মূল প্রসিসেং বা গবেষণা বিভাগে বাংলাদেশীদের চাকুরী দিতে হবে।
৪.১২) ব্লু’ইকোনমি বা সমুদ্র সম্পদ নিয়ে তাড়াহুড়া করে বিদেশীদের কাছে বর্গা নয়। দেশীয় সক্ষমতা অর্জন করে দেশের সম্পদ দেশে কিভাবে সর্বোচ্চ রাখা যায়, সে চেষ্টা করতে হবে।

৫. কৃষি:
৫.১) কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। উৎপাদন খরচ হ্রাস এবং মান উন্নয়নের জন্য গবেষণা বাড়াতে বাজেট বরাদ্দ করতে হবে । কৃষকদের বিনাশর্তে ঋণ দিতে হবে। কৃষকের ফসল যেন নষ্ট না হয়, সেজন্য দেশজুড়ে পর্যাপ্ত হিমাগার তৈরী করতে হবে।
৫.২) জিএমও’র এখন চূড়ান্ত গবেষায় পৌছায়নি, তাই এখনই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা ঠিক হবে না। কৃষিযন্ত্র নিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। এতে উৎপাদন খরচ কমবে।
৫.৩) বিদেশী বিজের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে, দেশী বীজের বৈশিষ্ট্য ঠিক রাখতে সরকারি উদ্যোগে আলাদা বীজগার তৈরী করতে হবে।
৫.৪) রাসায়নিক সার ও কিটনাশকের ব্যবহার বাদ দিয়ে অর্গানিক ফুডের উপর জোর দিতে হবে।
৫.৫) দেশে যে সকল ফসল পর্যাপ্তহারে উৎপাদিত হয়, সেসব ফসল আমদানির উপর উচ্চহারে ট্যাক্স বসাতে হবে।
৫.৬) কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
৫.৭) কৃষি ক্ষেত্রে কৃষকের সহায়তার জন্য ২৪ ঘন্টা কল সেন্টারের সার্ভিস রাখতে হবে। যেখানে কৃষিবিগণ কৃষকের যে কোন সমস্যার সমাধান দিবেন। কৃষক সমস্যায় পড়লে ১২ ঘন্টার মধ্যে কোন কৃষিবিদকে মাঠে গিয়ে পরামর্শ দিতে হবে। , এতে পরামর্শের নাম দিয়ে আন্তর্জাতিক বহুজাতিক কোম্পানিগুলো কৃষকদের প্রতারণা করে ব্যবসা করার সুযোগ পাবে না।
৫.৮) সরকারের একটি জরিপ বিভাগ থাকবে, যার মাধ্যমে জানা যাবে, কোন ফসল কতটুকু চাষের প্রয়োজন। সেই প্রয়োজন অনুসারে কৃষকরা চাষ করবে এবং অনলাইনে চাষের তথ্য আপডেট করবে। একটি পূরণ হয়ে গেলে অন্যটির চাষের উপর জোর দিবে। এই তথ্য ও জরিপের কারণে কোন ফসল অতিরিক্ত হারে উৎপাদনের কারণে নষ্ট হওয়ার সুযোগ হ্রাস পাবে।
৫.৯) জনগণের জন্য রেশন সিস্টেম চালু করতে হবে।
৫.১০) সরকারী উদ্যোগে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতেহবে। পানি বিশুদ্ধকরণ জটিল কোন প্রযুক্তি নয়, তাই পানি পরিশোধনের কথা বলে বিদেশী কর্পোরেট কোম্পানির হাতে দেশের পানি ব্যবস্থাকে তুলে দেয়া যাবে না, দেশীয় কোম্পানির মাধ্যমে কাজ করাতে হবে।
৫.১১) খাদ্যে ভেজালের সাথে সংযুক্ত ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড/যাবজ্জীবন বিধান রেখে আইন পাশ করা।

৬. খনিজ সম্পদ ও শিল্প-কারখানা:
৬.১) গ্যাস আমদানি না করে, গ্যাস উত্তোলন করতে হবে। সক্ষমতা বাড়িয়ে দেশীয় কোম্পানি দিয়ে গ্যাস উত্তোলনে জোর দিতে হবে।
৬.২) রিনিউয়েবল এনার্জি বা নবায়নযোগ্য শক্তি, বিশেষ করে সৌর শক্তির উপর জোর দিতে হবে, গবেষণা বাড়াতে হবে।
৬.৩) কারাখানাগুলোতে প্রয়োজন মাফিক গ্যাস-বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
৬.৪) অব্যবস্থাপনার কারণে গার্মেন্টস, রিয়েল স্টেট বা চামড়ার মত বড় শিল্পগুলো যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সরকারী অব্যবস্থাপনার কারণে চামড়াজাত পন্য গার্মেন্টস পণ্যের মত বড় রফতানির উৎস হয়ে উঠতে পারেনি। এদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
৬.৫) শিল্পাঞ্চলগুলো নদীর কাছাকাছি হতে হবে। নদীপথকে পণ্য পরিবহনে ব্যবহার করতে হবে। শিল্প বর্জ্যের কারণে নদীগুলো যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিকতা আনতে হবে।
৬.৬) সঠিক আদমশুমারি করে সে অনুপাতে প্রত্যেক এলাকার মানুষের কি কি চাহিদা লাগবে, তার তালিকা তৈরী করতে হবে। যেগুলোর সরবারহ ইতিমধ্যে আছে, সেগুলো বাদে বাকিগুলো দেশীয় উদ্যোগে কলকারখানা নির্মাণ করে তা তৈরী করার উদ্যোগ নিতে হবে। এতে দেশে প্রচুর কলকারখানা বৃদ্ধি পাবে, সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান।
৬.৭) জনগণ একটি বিরাট সম্পদ। দেশে শিল্পাঞ্চল তৈরী করে, সেখানে বিদেশীদের কলকারখানা নির্মাণ করলে, দেশের জনসম্পদ বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়া হয়। এজন্য দেশের শিল্পাঞ্চলে দেশীয় শিল্পকারখানা নির্মাণে বেশি জোর দিতে হবে।
৬.৮) বিদেশী সংস্থা ও বিদেশি পুঁজির জাতীয় স্বার্থবিরোধী অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। এমন কোন বিদেশী পুঁজি প্রবেশ করানো যাবে না, যার কারণে দেশী শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
৬.৯) দেশের রফতানি খাতকে এক শিল্প নির্ভর না করা। রফতানি সেক্টরকে বহুমুখী করা, যেন ভবিষ্যতে কোন রাষ্ট্র অর্থনৈতিক অবরোধ তৈরী করে দেশের অর্থনীতিতে খুব বেশি প্রভাব বিস্তার না করতে পারে।
৬.১০) দেশে প্রয়োজন মাফিক পণ্য তৈরীতে উদ্যোগ নেয়া এবং জনগণকে দেশীয় পণ্য ব্যবহারে উব্ধুদ্ধ করা। বিদেশী পণ্য ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে হবে।
৬.১১) কোন রফতানিকারকের প্রাপ্য অর্থ বিদেশী কোন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান আটকে দিলে রাষ্ট্রীয়ভাবে সর্বোচ্চ সহযোগীতা প্রদান করতে হবে।

৭. সরকার ও প্রশাসন:
৭.১) উপজেলা চেয়্যারম্যান ও কমিশনার পদে দাড়াতে নূন্যতম এইচএচসি, এমপি/মেয়র হওয়ার জন্য নূন্যতম স্নাতক পাশ হতে হবে।
৭.২) এমপিদের থেকে ৯০% মন্ত্রী হবে, সংবিধানের এই ধারা পরিবর্তন করতে হবে। কোন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হতে ঐ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বা বিশেষ অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৭.৩) শুধু ভোটের আগে জনগণের পাশে, এই সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে। নির্বাচিত হওয়ার ২ বছর পর একটি নিরপেক্ষ জরিপ করা, “এমপিরা কত পার্সেন্ট জনগণের পাশে থাকলো”। সেই জরিপে ফলাফল কম আসলে এমপি পদ বাতিল হওয়ার নিয়ম করতে হবে।
৭.৪) সংসদে অপ্রয়োজনীয় আলাপ, রাজনৈতিক চাটুকারিতা নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা প্রয়োজন ছাড়া সংসদে অপ্রয়োজনীয় কথা বলবে, তাদের শাস্তির ব্যবস্থা রাখতে হবে। যার সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে ‘সংসদ সদস্য পদ’ বাতিল।
৭.৫) আন্তর্জাতিক চুক্তির ক্ষেত্রে সরকার একা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। অবশ্যই চূক্তির প্রতিটি ধারা জনগনের সামনে উন্মুক্ত করে তারপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

৮. সমাজ ও সংস্কৃতি:
৮.১) ধর্মকে ব্যক্তির মধ্যে আটকে রাখার কূট-পরিকল্পনা বাদ দিতে হবে। সমাজের প্রতিটি সেক্টরে ধর্মীয় নিয়ম-প্রথার চর্চা করতে দিতে হবে।
৮.২) বিজাতীয় সংস্কৃতি প্রমোট করে এমন মিডিয়া নিষিদ্ধ করতে হবে। মিডিয়ায় অশ্লীলতা বন্ধে কঠোর কার্যক্রম প্রণয়ন করতে হবে।
৮.৩) ধর্ম যার যার উৎসব সবার, এই শ্লোগান বাদ দিতে হবে। ধর্ম যার যার উৎসবও তার তার, এই শ্লোগান চালু করতে হবে। এক ধর্মের অনুষ্ঠানকে সেক্যুলার অনুষ্ঠান নাম দিয়ে সকল ধর্মের উপর চাপিয়ে দেয়া যাবে না।
৮.৪) বিজাতীয় দিবস পালন নিষিদ্ধ করে, ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন উৎসব পালন করতে সর্বোচ্চ সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা দিতে হবে।
৮.৫) বিয়ের জন্য কোন বয়স নির্ধারণ করা যাবে না। কেউ উপযুক্ত হলে বিয়ে করতে পারবে। সরকারীভাবে বিয়েতে সাহায্য করতে হবে। তবে প্রেম/ব্যাভিচারে ধরা পড়লে আইনত দণ্ড দেয়া হবে।
৮.৬) মিশনারীর নামে কেউ রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম করলে ফাঁসির ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৮.৭) উপনেবেশিক আমলে ব্রিটিশ দালালদের নামে যে সমস্ত জেলা/উপজেলা/গ্রাম/শহর/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ যে সব নামকরণ হয়েছে, তার সবগুলো পরিবর্তন করতে হবে। এদেশীয় চেতনায় নামকরণ করতে হবে।
৮.৮) অন্যদেশের জাতীয় কবি নয়, বরং বাংলাদেশের জাতীয় কবির সংগীতকে জাতীয় সংগীত করতে হবে।
৮.৯) ছোট নয় বড় ও যৌথ পরিবার সুখ ও নিরাপত্তার কারণ, এই ধারণার তৈরী করতে হবে।
৮.১০) সমাজে বিশৃঙ্খলতা তৈরী হতে পারে বা অন্যকে অন্যায়ে উব্ধুদ্ধ করতে পারে এমন কোন পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করা যাবে না। সমাজে সুশৃঙ্খলতা বজায় থাকে, এমন পোশাক-পরিচ্ছেদ নারী-পুরষকে পরিধান করতে বলতে হবে।

৯. জনসংখ্যা, শহরায়ন, নগরায়ন ও আবাসন:
৯.১) যানজট সমস্যা নিরসনে ঢাকা শহরের মধ্যে জনসংখ্যা জড়ো না করে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। অন্য বিভাগ ও জেলাশহরগুলো উন্নত করতে হবে। গার্মেন্টস কারখানাসহ বিভিন্ন কর্মক্ষেত্র দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিতে হবে।
৯.২) গণহারে ফ্লাইওভার, এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। দুর্ঘটনাপ্রবণ সড়ক ও আকাশ যোগাযোগের বদলে নৌ ও রেলপথকে যাতায়তের মূল মাধ্যমে হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
৯.৩) নতুন করে সিএনজি অটোরিকশার রেজিস্টেশন চালু করতে হবে।
৯.৪) দুর্যোগে গৃহহীনদের জন্য সরকারী উদ্যোগে স্থায়ী বাসস্থান নির্মাণ করে দিতে হবে। রাজনৈতিক নেটওয়ার্কে নয়, প্রকৃতভূমিহীনদের মধ্যে খাস জমি বিতরণ করতে হবে।
৯.৫) বিভাগগুলোকে প্রদেশে রূপান্তর করতে হবে। এবং প্রদেশ ভিত্তিক নিয়ম অনুসারে প্রশাসন পরিচালনা করতে হবে।
৯.৬) শহরের যাবতীয় স্থাপনা কমপক্ষে ১০০ বছরের প্ল্যান নিয়ে করতে হবে। রাস্তায় সুয়ারেজ লাইন, পাানির লাইন, গ্যাসের লাইন, টেলিফোন লাইন যাবতীয় কাজ একসা
থে করতে হবে, যেন বছর বছর রাস্তা খুড়তে না হয়।
৯.৭) পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট ব্যবস্থা, বিশেষ করে নারীদের জন্য আলাদা পাবলিক টয়লেট তৈরী করতে হবে।
৯.৮) শহর সাজাতে এমন ভাস্কর্য তৈরী করা যাবে না, যা জনগণের মধ্যে অস্থিরতা তৈরী করে। শাপলা চত্বরের শাপলা, বিজয় স্মরণীর প্লেন বা হোটেল সোনারগাও মোড়ের ঝরনার মত ভাস্কর্য বা স্থাপত্য তৈরী করে শহর সাজাতে হবে। দেশের বিভিন্ন ভার্সিটির চারুকলা বিভাগে abstract art বা বিমূর্ত শিল্প এর উপর জোর দিতে হবে। চীনের মত রাষ্ট্রগুলো abstract art আর্টের কাজ করে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার কামাচ্ছে। বাংলাদেশের চারুকলাকে আর্থিক উৎপাদনশীল খাতের দিকে নিয়ে যেতে হবে।

১০. নদী ও পরিবেশ:
১০.১) নদীগুলো দ্রুত খনন করতে হবে। ভারতের সাথে দরকষাকষিতে যেতে হবে, যেন তারা নদীর পানি ছাড়ে। এব্যাপারে প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে। নদীমাতৃক দেশে নদীমাতৃকতা ফিরিয়ে আনতে হবে।
১০.২) নদী ভাঙ্গন রোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। ঘুমিয়ে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জাগাতে হবে।
১০.৩) বাংলাদেশে কৃষি নির্ভর দেশ, কিন্তু নেদারল্যান্ড কৃষি নির্ভর নয়।। দুইদেশ ব-দ্বীপ হলেও ভৌগলিক ক্ষেত্রে অনেক কিছুই মিলে না। তাই নেদারল্যান্ডের বুদ্ধিতে নতুন করে অত্যন্ত ব্যয়বহুল প্রকল্প গ্রহণ না করে, দেশীয় বাস্তবসম্মত জ্ঞানের আলোকে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
১০.৪) পরিবেশের সাথে সাংঘর্ষিক এমন কোন স্থাপনা করা যাবে না।
১০.৫) বাংলাদেশের মত ছোট দেশে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মত ঝুকিপূর্ণ কাজ ব্ন্ধ করতে হবে।
১০.৬) দেশজুড়ে এখনও কৃষির জন্য ক্ষতিকর লক্ষ লক্ষ ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছ আছে। সেগুলো চিহ্নিত করে কেটে ফেলা।
১০.৭) ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের উপর আলাদা জোর দেয়া। এতে অতিরিক্ত লোকবলকে চাকুরী দিতে হবে। ইনোভেটিভ ডাস্টবিন সম্পর্কে জনগণকে ধারণা দিতে হবে। রিসাইকেলিং এর মাধ্যমে আবর্জনাকে সম্পদে রুপান্তর করতে হবে ।

১১. চিকিৎসাখাত:
১১.১) চিকিৎসাখাতকে আরো সমৃদ্ধ করতে হবে। দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। প্রত্যেক জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন করতে হবে। বিভাগগুলোতে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে, গবেষনা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তির চিকিৎসা, স্বল্পমূল্য এবং চিকিৎসক-নার্সের ভালো ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে ছুটতে হবে না। প্রয়োজনে চিকিৎসক-নার্সদের কাস্টমার সার্ভিস ট্রেনিং দিতে হবে।
১১.২) মায়েদের অহেতুক সিজার (সি-সেকশন) অপারেশন হ্রাস করতে হবে। হাসপাতালে যেকোন ধরনের বানিজ্য বন্ধ করতে কঠোর নজরদারী করতে হবে।
১১.৩) শুধু অ্যালোপ্যাথি নয়, হোমিও, আয়ুর্বেদ, দেশীয় ভেষজ চিকিৎসা ব্যবস্থাগুলোর মধ্যেও গবেষণা বাড়াতে বরাদ্দ দিতে হবে।
১১.৪) গর্ভপাত নিষিদ্ধ, এই আইন বাস্তবে কার্যকর করতে হবে। ব্যাঙের ছাতার মত দেশজুড়ে গজিয়ে ওঠা কথিত মেটারনিটি ক্লিনিকগুলোতে নজরদারী বাড়াতে হবে, কেউ অবৈধ গর্ভপাত করলে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
১১.৫) বিদেশ থেকে আসা ফ্রি ওধুষ/টিকা/ক্যাপসুল শিশুদের দেয়া বন্ধ করতে হবে। কেউ অনুদান দিতে চাইলে নগদ অর্থ দিবে, সেই অর্থ দিয়ে বাংলাদেশে তৈরী ঔষধ জনগণের কাছে পৌছাতে হবে।

১২. সামরিক বাহিনী:
১২.১) সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে বিদেশ থেকে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র আমদানি করতে হবে। দেশে অস্ত্র কারখানা তৈরী করে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
১২.২) আন্তর্জাতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে সামরিক অফিসারদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে অ্যানালিস্ট ট্রেনিং দিতে হবে। গোয়েন্দা বাহিনীর কার্যক্রম বৃদ্ধি, ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতে হবে । সামরিক অফিসারদের মাঝে গবেষণা বাড়তে হবে । এতে বহিঃবিশ্বে প্রভাব বাড়বে।
১২.৩) খেলাধূলা নামক সময় অপচয়কারী বিষয়গুলো বাদ দিতে হবে। তরুণ সমাজকে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হবে।

১৩. বহির্বিশ্বের সাথে সম্পর্ক:
১৩.১) বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করতে হবে, কোনরূপ বিরুপ সম্পর্ক করা যাবে না। বিশ্বের কোন দেশে মুসলমানরা আক্রান্ত হলে সবাই এক হয়ে ঐ দেশের মুসলমানদের সাহায্য করার উদ্যোগ নিতে হবে।
১৩.২) কোন বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক করতে গেলে দেশের স্বার্থ সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে, নিজ দলের রাজনৈতিক স্বার্থ নয়। এমন ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া যাবে না, যাতে দেশের জন্য ক্ষতিকর হয়। প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করে নিজ দেশের স্বার্থ আদায় করতে হবে।
১৩.৩) বিদেশে গিয়ে নিজ দেশের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর সম্পর্কে বিচার দেয়ার সংষ্কৃতি বন্ধ করতে হবে। শত্রুকে হাসতে দেয়া যাবে না। দেশের স্বার্থে সবাই এক, এই নীতিতে অটল থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে যতই দ্বন্দ্ব থাক, দেশের স্বার্থে সবাই এক হতে হবে।
১৪.৪) প্রবাসীদের অর্থ ও পরিবারের নিরাপত্তা দিতে হবে। বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের একজন নাগরিকও যদি বিপদে পড়ে তবে রাষ্ট্রের শীর্ষমহল থেকে তার সহায়তায় এগিয়ে আসতে হবে।
১৪.৫) তুরষ্কের সাথে ‘হালাল পর্যটন শিল্প’ বিস্তারে যে চূক্তি হয়েছে, তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

১৪. মিডিয়া ও আইটি:
১৪.১) গণমাধ্যমকে প্রকৃত অর্থেই জনগণের মাধ্যম বানাতে হবে। জনগণ যা চায় গণমাধ্যম সেটা প্রচার করে কি না, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। যারা নিজেদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যকে গণমানুষের চাওয়া হিসেবে প্রচার করবে, সেসব মিডিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
১৪.২) বাংলাদেশের বিভিন্ন ভার্সিটির সাংবাদিকতা ও মিডিয়া স্ট্যাডি বিভাগসমূহকে বিদেশী সম্রাজ্যবাদীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সংযোগ থেকে রক্ষা করতে হবে।
১৪.৩) পর্নগ্রাফী নিষিদ্ধ এবং এইজরেস্ট্রিকডেট সকল পেইজ-সাইট বন্ধ করতে হবে।
১৪.৪) প্রত্যেক উপজেলায় সরকারি উদ্যোগে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌছাতে হবে। এবং সরকারী বা বেসরকারী উদ্যোগে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট জনগণের ঘরে ঘরে পৌছাতে হবে।

১৫. সংখ্যালঘু:
১৫.১) গৃহহীন বাঙালীদের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় পুনর্বাসন করতে হবে। উপজাতি গোষ্ঠীগুলোকে এক এলাকায় জড়ো না করে পুরো দেশে কর্মসংস্থান দিয়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। উপজাতিদের বাংলাভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ দিতে হবে। উপজাতিরা শুধু একস্থানে তাদের ভাষা ও সংষ্কৃতির উপর আটকে থাকলে তাদের ব্যবহার করে শত্রু রাষ্ট্র বাংলাদেশকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পাবে। রাষ্ট্রবিরোধী কোন সংগঠন বা গোষ্ঠীকে কোনরূপ প্রশ্রয় দেয়া যাবে না।
১৫.২) সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় ছুটি শুধুমাত্র সংখ্যালঘুরাই ভোগ করবে, সংখ্যাগুরুরা নয়।
১৫.৩) সাম্প্রদায়িকতা এড়ানোর জন্য সংখ্যালঘুরা নিজেদের ভূমি/যায়গায় ধর্মীয় রীতি/অনুষ্ঠান পালন করবে, সংখ্যাগুরুদের যায়গায় নয়।
১৫.৪) দেশে গোলযোগ তৈরীকারী অর্পিত সম্পত্তি আইন বাতিল করতে হবে।

১৬. মানবাধিকার:
১৬.১) শিশুদের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। স্কুলগুলোতে বেত ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে।
১৬.২) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হল/সিট ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। র‌্যাগিংনিষিদ্ধ করতে হবে।
১৬.৩) প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের বৃদ্ধা পিতামাতাকে লালন/পালন বাধ্যতামূলক করতে হবে। সন্তানহীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের লালন পালনের জন্য সরকারী উদ্যোগে বৃদ্ধনিবাস করতে হবে।
১৬.৪) আত্মহত্যা রোধে ধর্মীয় চেতনা বৃদ্ধি করতে হবে।
১৬.৫) বস্তিবাসী ও হকারদের উচ্ছেদ নয়, বরং তাদের স্থায়ী পুনবার্সন করতে হবে।
১৬.৬) বিধবা বা ডিভোর্সী নারীদের বিয়ে নিয়ে সামাজিক কু-ধারনা পরিবর্তন করতে হবে। সরকারী উদ্যোগে প্রয়োজনে তাদের দ্রুত বিয়ের ব্যবস্থা করতে হবে ।
১৬.৭) সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সমস্যা হ্রাস করতে পশ্চিমা নারীবাদী ধারণা নিষিদ্ধ করে, ধর্মীয় নীতির ভিত্তিতে নারী-পুরুষের মাঝে সহমর্মিতা বৃদ্ধি করতে হবে।
১৬.৮) নারী নির্যাতন বন্ধ করতে নারীদের জন্য আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শপিং কমপ্লেক্স, যানবাহন, হাসপাতাল, তৈরী করতে হবে। নারীদের জন্য পৃথক প্রতিষ্ঠানে নারীরা কাজ করবে, ফলে অনেক নারীর নিরাপদ কর্মসংস্থান হবে।
১৬.৯) সিনেমা, বিজ্ঞাপন, মডেলিং, পোস্টার যে কোন স্থানে নারীকে পণ্য বানানোর মাধ্যমে অবমাননা নিষিদ্ধ করতে হবে। কেউ করলে তাকে কঠোর শাস্তির ব্যবহার করতে হবে ।
১৬.১০) ফ্ল্যামিলি প্ল্যানিং নামক শিশু হত্যা নিষিদ্ধ করতে হবে।
১৬.১১) বিদেশে পুরুষ শ্রমিক যেতে পারবে, তবে নারী শ্রমিক রফতানি নিষিদ্ধ করতে হবে।
১৬.১২) কারাগারগুলোতে আরও সুযোগ সুবিধা তৈরী করা। অমানবিকতা বন্ধ করতে হবে। কারাগার শুদ্ধ হওয়ার স্থান, সেখানে গিয়ে যেন মানুষ উল্টা আরো অপরাধপ্রবণ না হয়ে উঠে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ধর্মীয় পরিবেশ ও মনোচিকিৎসার মাধ্যমে অপরাধীকে ভালো করতে হবে। থানার হাজতগুলোতেও অমানবিকতা বন্ধ করতে হবে। রিমান্ডে নির্যাতন নিষিদ্ধ করতে হবে।
১৬.১৩) পতিতাবৃত্তি সর্বাধিক অমানবিক কাজ। সংবিধানে ‘পতিতাবৃত্তি নিষিদ্ধ’ এই আইন দেশজুড়ে জারি করতে হবে। পতিতাদের বিয়ে ও পুনর্বাসানের ব্যবস্থা করতে হবে।
১৬.১৪) হিজড়াদের আলাদা কর্মের ব্যবস্থা করতে হবে। সমাজে বিশৃঙ্খলা/চাঁদাবাজি করতে দেয়া যাবে না।
১৬.১৫) ভিক্ষুকদেরও পুনর্বাসন করতে হবে। যদি বৃদ্ধ-বৃদ্ধা হয় তবে সরকারী বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাতে হবে। যদি শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়, সরকারের তরফ থেকে তৈরী প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠাতে হবে।
১৬.১৬) পথশিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় শিক্ষা এবং তাদের পুনর্বাসন করতে হবে। এদেরকে মাদক, মিশনারী ও বিদেশী মদদপুষ্ট এনজিওদের খপ্পর থেকে রক্ষা করতে হবে। মা-বাবাহীন সন্তানদের নিঃসন্তান ভালো দম্পত্তিদের মাঝে তাদের বণ্টন করে দিতে হবে।

পিডিএফ আকারে পেতে : https://bit.ly/2A2Kb4p


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

বাচ্চাদের হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দিয়েছে কে ? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, থুক্কু আন্তর্জাতিক সম্রাজ্যবাদীরা


গত কয়েকদিন ধরে একটা খবর দেখছি, প্রাথমিকের শিশুদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়ার জন্য একটি উৎসব চালু করেছে সরকার, যার নাম বই উৎসব। সেখানে বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছোট বাচ্চাদের হাতে নতুন বই তুলে দিচ্ছে এবং ফটোসেশন করছে। আওয়ামলীগের বিভিন্ন ফেসবুক পেইজ থেকে সরব উঠেছে, “বাচ্চাদের হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দিয়েছে কে ?”
“জোরে বলো- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা”।

যারা বাচ্চাদের হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দেওয়ার কৃতিত্বটা শেখ হাসিনাকে দিতে চান, তাদের জ্ঞাতার্থে বলছি, এই বিনামূল্যে বই তুলে দেয়ার পেছনে শেখ হাসিনার কোন অবদান নেই। বইয়ের টাকাটাও শেখ হাসিনা নিজের বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন নাই, টাকাটা নিয়েছে বিভিন্ন সম্রাজ্যবাদী ও স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর থেকে। মূল ফান্ড দাতা বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। পাঠ্যবইগুলো তাদের টাকায়ই ছাপা।

গত জুন মাসে বিশ্বব্যাংকের সাথে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি -৪) তে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা (https://bit.ly/2ET8ohS) এবং অক্টোবরে একই প্রকল্পে ৪ হাজার ২শ’ কোটি অর্থাত প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা বিদেশী সম্রাজ্যবাদীদের থেকে গ্রহণ করে সরকার। (https://bit.ly/2RiIfi3)

বিশ্বব্যাংক বা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের মত সম্রাজ্যবাদীদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যে কূট উদ্দেশ্য ঋণ দেয়, এটা পুরো দুনিয়ার সবাই জানে। মাঝে মাঝে বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী মতিয়া কিংবা অর্থমন্ত্রী মাল মুহিতও তা মুখ ফসকে বলে ফেলে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য এই সব সম্রাজ্যবাদী প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিলে যদি সমস্যা হয়, তবে কোমলমতি শিশু, যারা আমাদের ভবিষ্যত তাদের শিক্ষার জন্য এই কোটি কোটি টাকা ঋণ নেয়ার মানেটা কি ? তারা কি এমনি এমনি ঋণ দিচ্ছে, নাকি ঋণের বিনিময়ে তাদের বেধে দেয়া পাঠ্যসূচি ও পলিসি ঢুকানো হচ্ছে বইয়ের ভেতর ? বইয়ের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের মন-মস্তিষ্কে প্রবেশ করানো হচ্ছে অদৃশ্য বিষ ?

উল্লেখ্য, এনসিটিবি অনুমোদিত হিজড়াদের নিয়ে লেখা ‘বৈচিত্র্যময় মানুষ’নামে একটি সম্পূরক বই ষষ্ঠ শ্রেণির সহস্র শিক্ষার্থীকে পরীক্ষামূলকভাবে দেওয়া হবে। এই বইয়ের জন্য অর্থায়ন করছে গ্রাম-গঞ্জে সমকামীতা ছড়িয়ে দিতে যে এনজিওটি কাজ করছে, “বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি (বন্ধু)” নামক এনজিওটি। অধ্যাপক জাফর ইকবালের একটি প্রবন্ধসহ মোট চারটি প্রবন্ধ নিয়ে ‘তৃতীয় লিঙ্গ’র মানুষ সম্পর্কে বাচ্চাদের ধারণা দিতে পরীক্ষামূলকভাবে ১ হাজার বই নির্বাচিত ১০টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে। (https://bit.ly/2BIa3CU)

আমি আপনাদেরকে বলেছিলাম, সম্রাজ্যবাদী ইহুদীরা সারা বিশ্ব শাসন করার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা বা মাস্টারপ্ল্যান তৈরী করেছে, যাকে বলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি (https://bit.ly/2rYIn85 )। সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে যে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিদেশ থেকে কাড়ি কাড়ি লোন আনছে, সেই মহাপরিকল্পনার লক্ষ্যই হচ্ছে এসডিজি বাস্তবায়ন বা শিশুদের মধ্যে সম্রাজ্যবাদী ইহুদীদের সেই ধারণা পাঠ্যবইয়ের মাধ্যমে বদ্ধমূল করা। (https://bit.ly/2RhTd7A)

আমি সব সময় একটা কথা বলি, বিদেশ থেকে আসা ফ্রি ওষুধ বাচ্চাদের খাওয়ায়েন না, কারণ সেখানে তারা এমন কিছু মিশিয়ে দেবে যেটা আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য ক্ষতিকর। ঠিক একইভাবে বলতে হয়, বিদেশ থেকে নিয়ে আসা বিনামূল্যের বই আমাদের শিশুদের মাঝে দয়া করে দিয়েন না। ওষুধ যেমন আমাদের নতুন প্রজন্মের ক্ষতিকর হতে পারে, ঠিক তেমনি এই সব বইও আমাদের নতুন প্রজন্মকে বুদ্ধিহীন, পঙ্গু সম্রাজ্যবাদীদের দাসে পরিণত করতে পারে।

সত্যি বলতে, দুর্নীতিবাজরা সব সময় চায় বিদেশ থেকে উন্নয়নের কথা বলে টাকা নিয়ে আসতে, কারণ তখন ১ টাকা খরচ করলে ১০ টাকা মেরে দেয়ার সুযোগ থাকে। টাকা চলে যায় ক্ষমতাসীনদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে, কিন্তু ঋণের বোঝা চেপে বসে পুরো দেশের উপর। অন্যদিকে সম্রাজ্যবাদীরা শাসকগোষ্ঠীকে দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়ে আড়াল করে জনগণের উপর নিজের গোপন স্বার্থ হাসিল করে, পুরো জাতীকে পরিণত করে দাসে।

আমার মনে হয়, বাংলাদেশের মানুষের এব্যাপারে আরো সচেতন হওয়া জরুরী। সরকার যেভাবে সামান্য অর্থের লোভে আমাদের তরুণ প্রজন্মের বোধ বুদ্ধি নষ্ট করে দিচ্ছে, সেটা আমাদের কিছুতেই মেনে নেয়া উচিত নয়। আমরা চাই আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাড়াক, কিন্তু ইহুদীবাদীদের বানিয়ে দেয়া পাঠ্যসূচি পড়ে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও ইহুদীবাদীদের নিকট দাস হয়ে থাকুক, এটা আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারি না।


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

ব্লাউজের অর্থনীতি ও বাংলাদেশ


কয়েকদিন আগে এক চলচ্চিত্র অভিনেত্রী টকশোতে এসে আওয়ামী সরকার অর্থনীতির অনেক উন্নয়ন করেছে, এর উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেছে, গ্রামের নারীরা আগে ব্লাউজ পড়তো না, এখন পরে। এই ব্লাউজ শেখ হাসিনার অবদান।”

ব্লাউজ দিয়ে অর্থনীতিতে শেখ হাসিনার অবদান যাচাই করা যায় কি না, তা আমার জানা নাই। কিন্তু আমি যেটা বুঝি, কোন একটা দেশের উৎপাদন খাতের বৃদ্ধি ঐ দেশের অর্থনীতির বৃদ্ধি নির্দেশ করে। দেশের উৎপাদন বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য-শিল্পখাতে যখন বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়, তখনই বুঝতে হবে দেশের অর্থনীতিতে বৃদ্ধি হচ্ছে।

ব্যবসা-বাণিজ্যের কি অবস্থা ? এই কথা আপনি যে কোন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নিরপেক্ষভাবে জিজ্ঞেস করেন, আমি নিশ্চিত, সে উত্তর দিবে, “আগের মত ভালো না।”
গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের কাছে জিজ্ঞেস করেন, বলবে- “আগের মত ভালো না।”
চামড়া ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞেস করেন, বলবে- “আগের মত ভালো না।”
রিয়েলস্টেট ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞেস করেন, বলবে- “আগের মত ভালো না।”
ঔষধ ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞেস করেন, বলবে- “আগের মত ভালো না। ”
শেয়ার ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞেস করেন, বলবে- “আগের মত ব্যবসা নেই।”
মৎস ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞেস করেন, বলবে- “আগের মতো নেই।”
শপিং কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞেস করেন, বলবে- “আগের মত বেচা বিক্রি নেই।”

এই যদি হয়, সকল উৎপাদকের অবস্থা, তাহলে দেশের অর্থনীতিতে উন্নয়ন হচ্ছে এটা কে বলতে পারবে? যে অভিনেত্রী অঞ্জনা গ্রামের নারীদের ব্লাউজ নিয়ে উৎফুল্ল হইতেছে, তাকে জিজ্ঞেস করেন তো, “আপনি যে সিনেমা শিল্পে কাজ করেন, তার কি অবস্থা?” আমি নিশ্চিত সে বলবে, “খুব খারাপ অবস্থা, নূন আনতে পান্তা ফুরোয়।”
কয়েকদিন আগে যুগান্তরে একটা খবর আসে, “ঢালিউডে বাড়ছে বেকারত্ব”। খবরের ভেতরে আছে, চলচ্চিত্র শিল্পীদের অবস্থা এখন এতটাই খারাপ যে, তাদের এফডিসিতে আসার গাড়ি ভাড়া পর্যন্ত নেই। এ থেকে অবশ্য অনুমান করা যায়, অঞ্জনার মত অভিনেতা-অভিনেত্রীরা সংসার চালাতে বাধ্য হয়েছে এফডিসির সীমানা পার হয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে টু-পাইস কামাতে।

কথা বলছিলাম, উৎপাদনশীল খাতসমূহ নিয়ে। এটা ঠিক বাংলাদেশে ব্যবসা বাণিজ্য কৃষি ক্ষেত্রে অবস্থা খারাপ হয়েছে, তবে যারা সরকারি চাকুরীজীবি তাদের অবস্থা কিন্তু ভালো হয়েছে। কারণ ১৬ কোটি জনগণের ট্যাক্সের টাকা বাগিয়ে ১০ লক্ষ লোকের বেতন ডবল করে দিয়েছে সরকার। এতে সরকারী চাকুরী করা মাত্র ০.৬% লোকের জন্য উপকার হয়েছে এটা ঠিক, কিন্তু তার প্রভাব গিয়ে পড়েছে দেশের বাকি ৯৯.৪% লোকের দ্রব্যমূল্যে। একইসাথে মেধাবীরা ব্যবসায় না গিয়ে চাকুরীর দিকে ঝুকছে, এটাও খারাপ লক্ষণ।

তেলে দাম বাড়ছে, গ্যাসের দাম বাড়ছে, বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। সরকার দেশের জ্বালাানি উত্তোলন না করে বিদেশ থেকে আমদানি করার উদ্যোগ নিয়েছে, এতে খুব শিঘ্রই দেশের জ্বালানি খাতে খরচ আরো বাড়বে, আর জ্বালানি খাতে খরচ বৃদ্ধি মানে দ্রব্যমূল্য আরো কয়েকগুন বৃদ্ধি হওয়া।

আমি আপনাদের জন্য ‘কর্পোরেটোক্রেসি’ নিয়ে অনেকগুলো লেখা লিখেছিলাম। শেখ হাসিনা তার সময়ের অর্থনীতির উন্নয়ন বলে যে গপ্পো প্রচার করছে, সে আসলে কর্পোরেটোক্রেসির উন্নয়ন। এবং সেই উন্নয়ন দেখানোর জন্য কিছু ‘ফেক ডামি’ আছে, যার গোপন কৌশল বুঝা সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয়।
আপনি নিজেই চিন্তা করে দেখুন, একমাত্র আওয়ামীলীগ বলতেছে, দেশের অর্থনীতির উন্নতি হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে মানুষ দেখতেছে অর্থনীতি আরো সংকুচিত হচ্ছে। কিন্তু আওয়ামীলীগের বানানো গপ্পো আর বাস্তবতার মধ্যে ফারাকটা কোথায় সেটা কেউ ধরতে পারতেছে না, অথবা যারা ধরতে পারবে তারাও বিশেষ কারণে তা প্রকাশ করতেছে না।

কর্পোরেটোক্রেসির বিষয়টি বুঝতে হলে, জন পার্কিন্সের লেখা একজন অর্থনৈতিক ঘাততের স্বীকারক্তি বইটা পড়তে পারেন। সেখানে দেখবেন, ভৌত অবকাঠামো, মানে ফ্লাইওভার-এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে-মেট্রোরেল এগুলো আসলে উন্নয়ন নয়, বরং জাতিকে ঋণের চাপায় ফেলা, বিদেশী অর্থনৈতিক ঘাতকদের শর্তের বেড়াজালে ফাঁসানো এবং সরকারের লুটপাটের উপলক্ষ মাত্র।

উৎপাদনশীল খাত ঝুকিপূর্ণ হওয়ার কারণে মানুষ ব্যবসার থেকে চাকুরীর দিকে ঝুকছে। ফলে উৎপাদন খাত আরো হ্রাস পাওয়ার অবস্থা হচ্ছে। দেশী ব্যবসা বন্ধ হয়ে বিদেশী থেকে আমদানি নির্ভর অর্থনীতি তৈরী হচ্ছে, এটা যে দেশের অর্থনীতির জন্য কত ভয়ঙ্কর লক্ষণ সেটা কিন্তু মানুষ বুঝতেছে না।
৯৯টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বানিয়ে সেগুলোকে বিনা ট্যাক্সে বিদেশীদের কাছে বর্গা দেয়া হচ্ছে (লুকায়িত কমিশন থাকা অস্বাভাবিক নয়)। ঐসব কলকারখানাতে বিদ্যুৎ সার্ভিস দিতে দেশজুড়ে রূপপুর-রামপালের মত পরিবেশবিধ্বংসী বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলা। দেশের ইপিজেডগুলোতে বিদেশীরা কারাখানা বানিয়ে অতিস্বল্পমূল্যের শ্রমিক সুবিধা নিয়ে যাচ্ছে, অথচ বাংলাদেশের মানুষ নির্ভরতার অভাবে ব্যাংকগুলোতে অলস অর্থ ফেলে রাখছে, বিনিয়োগ করার সাহস পাচ্ছে না। স্বল্পমূল্যের শ্রমিক সুবিধা বিদেশীরা নিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা নিতে পারছে না।

পৃথিবীতে যে সব রাষ্ট্র কর্পোরেটোক্রেসির স্বীকার হয়েছে, তাদের দেশে অনেক উন্নত রাস্তাঘাট, বিমানবন্দর, সেতু ফ্লাইওভার, পাচ তারকা হোটেল আছে। কিন্তু সেসব দেশে অধিকাংশ মানুষ দুইবেলা দু’মুঠো খাবার পায় না, এটাই হলো কর্পোরেটোক্রেসি। অর্থনৈতিক ঘাতকরা তাদের শর্ত অনুসারে চললে জিডিপি’র বৃদ্ধি দেখিয়ে দেবে, যা দিয়ে মূর্খ মানুষকে ধোকা দেয়া অনেক সহজ। কারণ সাধারণ মানুষ বুঝে না- জিডিপি খায়, না মাথায় দেয়। তারা বুঝে না, এই জিডিপির মধ্যে মারপ্যাচটা কি ? তারা বুঝে না, খাদ্যসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি পেলেও জিডিপি বাড়ে, বিভিন্ন প্রকল্পের নামে লুটপাটের ক্ষেত্র বাড়ালেও জিডিপি বাড়ে। এই জিডিপি বৃদ্ধিতে পানামা পেপারস আর প্যারাডাইস পেপারসে সরকারদলীয় লোকজনের নাম বাড়বে, কিন্তু জনগনের ভাগ্যের চাকার কোন পরিবর্তণ হবে না।

তাই আওয়ামীলীগ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা কখনই বলতে পারে না, তাদের কারণে দেশের অর্থনীতি উন্নত হয়েছে, বরং তারা বলতে পারে- জনগণ দেশ-দেশান্তরে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশের অর্থনীতিকে যতটুকু সমৃদ্ধ করেছে, তারা ব্যাপক লুটপাট চালিয়ে সেটাকে পুরোপুরি ধ্বসিয়ে দিতে পারেনি, কেড়ে নিতে পারেনি গ্রামের নারীর ব্লাউজ।
তবে হা! সুযোগ দিলে আগামী ৫ বছরে সেই শেষ সম্বল ‘ব্লাউজ’টাও কেড়ে নেয়া হবে।


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

আপনারা যাই বলেন, আমি কিছুতেই এই গণতান্ত্রিক সিস্টেমটা পছন্দ করি না।

আজ থেকে ২৩শ’ বছর পূর্বে গণতন্ত্রকে মূর্খের শাসন বলে অ্যাখ্যায়িত করেছিলো প্লেটো।
প্লোটো কোন দিক লক্ষ্য করে কথাটা বলেছিলো তা আমার জানা নাই,
কিন্তু গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটের মাধ্যমে যে জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়, বাস্তবে সে সিস্টেমটাই মূর্খ ব্যক্তিকে সামনে নিয়ে আসে।
ধরুন, দেশ বা রাষ্ট্র হচ্ছে একটা বড় কোম্পানি।
কোম্পানি সিইও আছে, এমডি আছে, ডিরেক্টর আছে, ম্যানেজার আছে, দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মচারি আছে, তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারি আছে, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারি আছে, কারখানা হলে অসংখ্য শ্রমিক আছে। এখন সবাই মিলে ভোট করলো, কে হবে কোম্পানির প্রধান, যে সবচেয়ে বেশি সমর্থন পাবে সেই হবে। দেখা গেলো কারখানা কোন এক শ্রমিক সবচেয়ে বেশি জনসমর্থন পেলো। ব্যাস তাকে বানিয়ে দেয়া হলো পুরো কোম্পানির প্রধান, সে কি এখন কোম্পানি চালাতে পারবে ??
বাস্তবে বাংলাদেশে বিভিন্ন সরকারী অফিসে নির্বাচন হয়, কিন্তু সেটা হয় শ্রেণী ভিত্তিক। মানে প্রথম শ্রেণী কমিটি নির্বাচন , দ্বিতীয় শ্রেণী কর্মচারি নির্বাচন, তৃতীয় শ্রেনী কর্মচারি নির্বাচন, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারি নির্বাচন। একটা অফিসে যদি শ্রেণী ভিত্তিক নির্বাচন হয়, তবে দেশে কেন সাধারণভাবে নির্বাচন হয়? মানে একজন পিএইচডি ডিগ্রিধারীর ভোটের মান যেখানে একজন নিরক্ষর ব্যক্তির ভোটের মান সমান। দুইজনের বুঝ বা সমঝ বা চিন্তাধারা কি এক ? দুইজন কি সমভাবে প্রতিনিধি নির্বাচন করার যোগ্যতা রাখে ?
বর্তমানে এমপি পদে গায়ক, গায়িকা, নায়ক নায়িকা, খেলোয়ারের আধিক্য দেখা যাচ্ছে। তাদের নির্বাচনে দাড়ানোর মূল কারণ তাদের অনেক লোক চিনে-জানে। ব্যস এতটুকু ?
কথা হলো কি হিসেবে চিনে ?
নায়ক হিসেবে, গায়ক হিসেবে, খেলোয়ার হিসেবে।
কিন্তু আইন প্রণেতা বা এমপি হিসেবে চিনে কি ?
অশিক্ষিত মানুষ তো আইন প্রণেতা আর গায়ক-নায়ক-খেলোয়ারের যোগ্যতার প্রার্থক্য করতে পারে না।
তাই সে যাকে বেশি চিনে, তাকেই সমর্থন দেয়, সে হয়ে যায় এমপি। এমনকি সে যদি শারীরকভাবে প্রতিবন্ধীও হয় তবুও সে নির্বাচনে দাড়াতে পারে (কিছুদিন আগে হাজী সেলিম স্ট্রোক করে বাক ও বুঝ শক্তি হারিয়েছেন, তবুও সে নির্বাচনে দাড়িয়েছে)।
সম্প্রতি সুজন নামক একটি এনজিও এমপি প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে একটা জরিপ পরিচালনা করেছে। সেখানে তারা দেখিয়েছে আওয়ামীলীগ বা মহাজোটের ৫০% প্রার্থী এবং বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্টের ৫৮% প্রার্থী হচ্ছে আন্ডার এসএসসি, এসএসসি বা এইচএসসি পাশ। এরা কেউ স্নাতক পাশ করতে পারেনি।(https://bit.ly/2SkZXyL)
বিষয়টি আপনারা যেভাবেই দেখেন, আমার কাছে এটা কিন্তু খুব ভয়ের কথা। কারণ এইসব এমপিদের থেকে বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হবে। দেখা যাবে শিক্ষামন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পাবে একজন আন্ডার এসএসসি, অর্থমন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পাবে একজন এসএসসি, কিংবা শিল্প মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পাবে এইচএসসি পাশ কেউ । শিক্ষা সেক্টরে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রকৃত শিক্ষা প্রদান, অর্থনীতির কঠিন কঠিন সূত্র বা শিল্প মন্ত্রনালয়ের আন্তর্জাতিক মারপ্যাচ তারা বুঝবে কিভাবে ? এই সব অশিক্ষিত মূর্খরা দায়িত্ব নিয়ে একদিকে যেমন উল্টা-পাল্টা কাজ করবে, অন্যদিকে সম্রাজ্যবাদীরা তাদের বুদ্ধি দেয়ার নাম করে খুব সহজেই তাদের দ্বারা দেশ ও জাতিবিরোধী কাজগুলো বাস্তবায়ন করবে।
আপনারা যাই বলেন, আমি কিছুতেই এই গণতান্ত্রিক সিস্টেমটা পছন্দ করি না। প্লেটো গণতন্ত্রকে যে মূর্খের শাসন বলে অ্যাখায়িত করেছিলো, বাস্তবে আমার কাছে বার বার সেটাই মনে হয়। যোগ্যতা আর পরিচিত মুখ কখনই এক জিনিস না। কোম্পানির দারোয়ানের চেহারা সবাই চিনে, তাই বলে দারোয়ান কখন কোম্পানির প্রধান হতে পারে না। কথাটা শুনতে খারাপ মনে হলেও বাস্তবতা এটাই।
আমরা চাই আমাদের দেশ এগিয়ে যাক। জ্ঞান, বিজ্ঞান, মনন-মানসিকতায় এগিয়ে যাক। কিন্তু সেটার ড্রাইভিং ফোর্স হিসেবে যাদের কাছে আমরা দায়িত্ব দিচ্ছি, তাদের কাছে নিজেদের ড্রাইভার হওয়ার লাইসেন্স থাকা চাই। মনে রাখবেন-“যতদিন মূর্খের হাতে থাকবে দেশ, পথ হারাবে বাংলাদেশ”
দাবি: “ উপজেলা চেয়্যারম্যান ও কমিশনার পদে দাড়াতে নূন্যতম এইচএচসি, এমপি/মেয়র হওয়ার জন্য নূন্যতম স্নাতক পাশ হতে হবে।” (সূত্র- ইশতেহার : ‘জেগে ওঠো বাংলাদেশ ২০১৮’-https://bit.ly/2T8iLRK)

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

বাংলাদেশের মুসলমানরা যেহেতু বহুদলে বিভক্ত, তাই তারা কোন নেতাকে কেন্দ্র করে একত্রিত না হয়ে, একটা পলিসির উপর একত্রিত হোক, তাহলে দ্রুত কাজ হবে।

এক পোস্ট আগে আমি বলেছিলাম,
বাংলাদেশের মুসলমানরা যেহেতু বহুদলে বিভক্ত, তাই তারা কোন নেতাকে কেন্দ্র করে একত্রিত না হয়ে, একটা পলিসির উপর একত্রিত হোক, তাহলে দ্রুত কাজ হবে। কোন ইসলামী রাজনৈতিক দল থাকতে পারে, কিন্তু সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। আসলে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে, দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল অধিকাংশ স্থান দখল করে আছে এবং তৃতীয় কোন দল তৈরী হলে (যদি তার ব্যাপক জনসমর্থন বা গ্রহনযোগ্যতা থাকে) হয় সেটাকে তারা নিজের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করার চেষ্টা করবে, নয়ত দমন করার চেষ্টা করবে। তাই অন্তর্ভূক্তি বা দমন, এই দুইয়ের মধ্যে না গিযে কিভাবে নিজের স্বার্থ সর্বোচ্চ আদায় করা সেদিকে লক্ষ্য দেয়া সবচেয়ে জরুরী।
আমি আগেও বলেছি, রাজনৈতিক দল গঠন না করেও দাবি তাড়াতাড়ি আদায় করা সম্ভব,
এর উদাহরণ- কোটামুক্ত আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন কিংবা হেফাজতে ইসলাম।
এ আন্দোলনগুলো যে যে উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হয়েছিলো, তাদের প্রাথমিক দাবীগুলো কিন্তু ঠিকই আদায় হয়েছে।
কিন্তু- এ আন্দোলনগুলো ততক্ষণ সফল থাকে, যতক্ষণ আন্দোলনটা অরাজনৈতিক থাকে।
সমস্যা তৈরী হয় তখন, যখন এ ধরণের অরাজনৈতিক আন্দোলনে রাজনৈতিক অনুপ্রবেশ ঘটে এবং অরাজনৈতিক দাবী ছাপিয়ে তৃতীয় কোন রাজনৈতিক পক্ষ তা ব্যবহার করতে চায়। ফলশ্রুতি পতন ঘটতে পারে সুন্দর একটি আন্দোলনের। শুনেছিলাম, সাপ নাকি তখনই ছোবল মারে, যখন সে মনে করে কেউ তার ক্ষতি করতে এসেছে। তাই আন্দোলনগুলো যেন নির্দ্দিষ্ট দাবীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে এবং অন্য কোন রাজনৈতিক দলের দাবী (প্রতিপক্ষকে দমনের) যেন আন্দোলনের দাবী না হয়ে উঠতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরী।
ধরে নিলাম, মুসলমানরা প্রাথমিকভাবে একটা দাবীর উপর এক হলো। ধরুন, দাবীটি হতে পারে, “সংবিধানে ২০১১ সালে আল্লাহ’র উপর আস্থা ও বিশ্বাস অংশটা তুলো ধর্মনিরপেক্ষতা যোগ করা হয়েছে, সেটা পরিবর্তন করে আগের অবস্থা ফিরিয়ে নিয়ে আসা।”
যদি দাবীটির ধর্ম সংক্রান্ত হয় তবে ইসলামী দলগুলোর সবাইকে সেই দাবীর প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করতে হবে। সমস্যা হলো বাংলাদেশের ইসলামী দলগুলোর মধ্যে তো চরম বিভেদ, তারা একজন অন্যজনকে মারাকেই জিহাদ বলে ফতওয়া দেয়, তাহলে তারা এক হবে কিভাবে ?
উত্তর হলো, প্রত্যেক দল থেকে কিছু কিছু তরুণকে এগিয়ে আসতে হবে।
এ তরুণ প্রজন্ম হচ্ছে তারা, যারা চায় সারা বিশ্বে মুসলমানরা আবার এক হোক, মুসলমানদের পুরাতন ঐতিহ্য আবার ফিরে আসুক, মুসলমানরা অমুসলিমদের জুলুম নির্যাতন থেকে রক্ষা পাক, এরাই এক্ষেত্রে অগ্রগামী হবে। অবশ্যই এক দলের সদস্যের অন্য অন্য দলের মধ্যে বন্ধু-বান্ধব-আত্মীয়তা আছে। তারা নিজেদের মধ্যে আলাপ করুক- “আজকে থেকে আমরা নিজেদের মধ্যে অন্তদ্র্বন্দ্ব তৈরী হতে পারে এমন বিষয়গুলো এড়িয়ে যাবো, যে যারা পন্থা অবলম্বন করবো, কিন্তু একটি দাবীর উপর একত্রিত হবো, দাবীটি হলো, “সংবিধানে ২০১১ সালে আল্লাহ’র উপর আস্থা ও বিশ্বাস অংশটা তুলো ধর্মনিরপেক্ষতা যোগ করা হয়েছে, সেটা পরিবর্তন করে আগের অবস্থা ফিরিয়ে নিয়ে আসা।” এই দাবী ছাড়া অন্য কোন বিষয় আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু হবে না। এই দাবীর উপর আমরা একত্র হলাম এবং এই দাবীর পক্ষে আমরা বন্ধু হয়ে আন্দোলন গড়ে তুলবো। “ আমার মনে হয়, এভাবে বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনগুলোর মধ্যে তরুণরা একটা দাবীকে কেন্দ্র করে যদি চেইন বা শিকল তৈরী করতে পারে, তবে দাবী আদায়ে বেশি সময় লাগবে না।
আমার জানা মতে,
-কওমী মাদ্রাসা ও আহলে হাদীসদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হচ্ছে মাজহাব নিয়ে। তাহলে দুই দল একত্র হোন ঐ সংবিধান পরিবর্তনের দাবী নিয়ে, কিন্তু আপাতত মাজহাব নিয়ে আলোচনা এড়িয়ে যান।
-সুন্নী আর কওমী মাদ্রাসা ও আহলে হাদীসদের মধ্যে দ্বন্দ্ব মিলাদ বা মীলাদুন্নবী নিয়ে। এ বিষয়টি এড়িয়ে যান, শুধু ‘সংবিধান পরিবর্তনের দাবী’ নিয়ে একত্মতা ঘোষণা করুন।
-পীরকেন্দ্রীক ও পীর বিরোধী দলের দ্ব্ন্দ্বমূলক বিষয়গুলো এড়িয়ে যান, শুধু ‘সংবিধান পরিবর্তনের দাবী’ নিয়ে একত্মতা ঘোষণা করুন।
হতে পারে আপনাদের দলের কোন মুরব্বী বা বয়ঃবৃদ্ধ বলতে পারেন, “এটা কিভাবে সম্ভব, এতদিন আমরা আমাদের বিশ্বাসের উপর এক ছিলাম, এখন কিভাবে ভিন্ন বিশ্বাসের সাথে এক হবো?”
আপনি উত্তর দিবেন, “অবশ্যই সম্ভব। আমরা তো আমাদের বিশ্বাস নিয়ে কাড়াকাড়ি করছি না। আমরা যে বিশ্বাস বা দাবীর প্রতি একতাবদ্ধ হয়েছি, সেটা তো ঠিক আছে, তাহলে সমস্যা কোথায় ? আর এত দলাদলি করে কি লাভই বা হলো ? দল-উপদলের সংখ্যা তো দিনে দিনে বাড়ছেই। কওমী, আহলে হাদীস, সুন্নীদের মধ্যে কি অভ্যন্তরীণ দলাদলি বা গ্রুপিং নেই? বরং মুসলমানদের দলে দলে বিভক্ত করে অমুসলিমরা তো ঠিকই মুসলমানদের ঘাড়ে বসে ছড়ি ঘুড়াচ্ছে।
আমার মনে হয়,
প্রত্যেক দল থেকে যদি কিছু তরুণ সদস্য পরিবর্তনের শপথে এগিয়ে আসে,
মুসলমানদের এক করে অমুসলিম ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার চেষ্টা করে,
বিশ্বাসগত দ্বন্দ্ব নিয়ে আপাতত চুপ থেকে ‘বিশেষ দাবী’র উপর একত্র হতে থাকে এবং বিভন্ন দলের মধ্যে চেইন বা শিকল তৈরী করে, তবে খুব দ্রুত মুসলমানদের আসল অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব এবং সেটা খুব দ্রুত-ই সম্ভব ।
ইচ্ছা শুধু আপনার।

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

মুসলমানরা এক হউন, নয়ত নির্যাতিত হতেই থাকবেন। কিন্তু মুসলিম হয়ে অমুসলিম প্রার্থীকে ভোট দিলে কখনই সেই লক্ষ্য সফল হবে না।


নির্বাচনী প্রচারণা যখন শুরু হয়, তখন এক উগ্রহিন্দু ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়, “আওয়ামীলীগ-বিএনপি যেই হোক, হিন্দু প্রার্থীকে ভোট দেয়া চাই।”
অর্থাৎ হিন্দুরা সংখ্যায় কম হওয়ায় তারা ভিন্ন পলিসি গ্রহণ করে, তারা কোন একদলকে সাপোর্ট দেয় না, দুই দলের মধ্যে ঢুকে নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে। হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষা করে, আর মুসলমানদের বিরোধীতা করে। যদি আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসে তবে তাদের কি করতে হবে, আর যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে তবে তাদের কি করতে হবে, সেই প্ল্যান আগে থেকেই তারা করে রাখে।
হিন্দু যে দল করুক বা যে দলের সমর্থন করুক, সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার, সমস্যা হলো যখন তারা প্রকাশ্যে বাংলাদেশ ও সংখ্যালগরিষ্ঠ মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। অথচ এতকিছু করার পরও তা লুকিয়ে মুসলমানদের থেকে সুবিধা তালাশ করে।
গত কয়েক বছর যারা সংবাদের খবর রাখেন, তারা জানেন, অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের সংসদ সদস্য মেন্দি সাফাদি বেশ কিছুদিন যাবত বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। এই ড্রুজ ধর্মাবলম্বী সিরিয়ায় মুসলমানদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ বাধাতে ভূমিকা রেখেছিলো, এখন সেই মিশন শেষ করে এসেছে বাংলাদেশ নিয়ে খেলতে। বাংলাদেশের আওয়ামীলীগ থেকে মাগুরা-২ আসনে মনোনিত এমপি পদপ্রার্থী বীরেন শিদকারের সাথে তার ঘনিষ্ট ছবি মিডিয়ায় পাওয়া যায়। আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় গেলে বীরেন শিকদারের মাধ্যমে সাফাদি চাল চালবে না, সেটা কিন্তু বলা যায় না।
বিএনপির পক্ষ থেকে ঢাকা-৬ আসনে দাড়ানো সুব্রত চৌধুরীও উগ্রহিন্দুত্ববাদী কার্যক্রমের সাথে জড়িত। কয়েক বছর আগে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিতে প্রধান আইনজীবি হিসেবে কাজ করেছিলো সে, যদিও মুসলমানদের তৎপরতায় সফল হয়নি। এই উগ্রহিন্দুত্ববাদী ব্যক্তি যদি সংসদে যায়, তবে নির্ঘাৎ ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড করতে পিছুপা হবে না।
বিএনপির পক্ষ থেকে মাদারীপুর-২ আসন থেকে দাড়িয়েছে মিল্টন বৈদ্য নামক এক হিন্দু। ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট শিপন কুমার বসু (যে আওয়ামীলীগের সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থী হেপি বড়ালের ভাতিজা)- এর সাথে মিল্টন বৈদ্যের ঘণিষ্ট ও পারিবারিক ছবি ফেসবুকে পাওয়া যায়। একজন এমপি পদ মনোনিত প্রার্থী রাষ্ট্রবিরোধী মোসাদ এজেন্টের সাথে সম্পর্ক থাকায় তাকে কিছুতেই সমর্থন করা স্বাভাবিক হতে পারে না।

আপনাদের মনে থাকার কথা, ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার বড়দল সরকারপাড়া গ্রামে সাঁওতাল হিন্দু ও স্থানীয় মুসলমানদের মধ্যে এক সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে হিন্দুদের ছোড়া তীরের আঘাতে শাফিউল ইসলাম (২০) নামের এক মুসলিম তরুণ নিহত হন। এ ঘটনায় হিন্দুদের পক্ষে পেছন থেকে কাজ করেছিলো দিনাজপুর-১ আসনের এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল, যে এবারও একই আসন থেকে আওয়ামীলীগ পদপ্রার্থী।

আমি সব সময় বলি, মুসলমানরা এক হউন, নয়ত নির্যাতিত হতেই থাকবেন। কিন্তু মুসলিম হয়ে অমুসলিম প্রার্থীকে ভোট দিলে কখনই সেই লক্ষ্য সফল হবে না। আপনারা আওয়ামীলীগকে ভোট দেন, কিংবা বিএনপিকে ভোট দেন বা পছন্দের অন্যদলকেও ভোট দিতে পারেন, সেটা আপনাদের ব্যাপার। কিন্তু বিভিন্ন দল থেকে দাড়ানো হিন্দু, খ্রিস্টান ও উপজাতি প্রার্থীদের বয়কট করুন। মনে রাখবেন আপনি মুসলমান হয়ে ভিন্ন ভিন্ন দলকে সাপোর্ট করতে পারেন, কিন্তু তারা ভিন্ন ভিন্ন দলে দাড়ালেও তাদের সকলে এজেন্ডা এক, মুসলিম বিরোধীতা ও ইসলাম ধ্বংস। তাই আওয়ামীলীগ-বিএনপি সকল দল থেকে হিন্দুদের প্রার্থীতা বাতিলে জোর দাবি তুলুন।


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

“আপনার নির্বাচনের ইশতেহার অনেক ভালো, কিন্তু সেটা কেউ বাস্তবায়ন করবে না” “নির্বাচনে ইশতেহার দিলেন, কিন্তু আপনার মার্কা কোথায় ? কোন দল ?”

নির্বাচন উপলক্ষে ইশতেহার ভাবনা (https://bit.ly/2T39p9P) নিয়ে একটা পোস্ট দেয়ার পর, অনেকেই এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। ভালো নির্বাচনী ইশতেহার কেউ বাস্তবায়ন করবে না কিংবা মার্কা ছাড়া ইশতেহার বাস্তবায়ন করা যায় না, আমি এ ধরনের ধারনার পক্ষে নই। আমি বিশ্বাস করি, নিজে নির্বাচনে না দাড়িয়েও গুরুত্বপূর্ণ ইশতেহার বা দাবিসমূহ পূরণ করা সম্ভব।
আপনারা যদি খেয়াল করেন, তবে দেখবেন হিন্দুদের মধ্যে বিভিন্ন গোষ্ঠী বেশ কয়েক মাস যাবত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দরবারে দৌড়া-দৌড়ি করছে। তারা দাবী-দাওয়ার একটা লিস্ট তৈরী করেছে এবং সেটা নিয়ে একবার আওয়ামীলীগের কাছে যায়, একবার বিএনপির কাছে যায়। বলে, “আমাদের কাছে ১ কোটি হিন্দু ভোটার আছে, যদি আমাদের এ দাবিগুলো পূরণের প্রতিশ্রুতি দেন, তবে আপনাদের ভোট দেবো।” অর্থাৎ দুই দলের মধ্যে দরকষাকষি করে।
হিন্দুদের ১ কোটি ভোটার আদৌ আছে কি নেই, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কিন্ত বাংলাদেশে এবার ১০ কোটি ৪১ লক্ষ ভোটারের মধ্যে কমপক্ষে ৯ কোটির উপর ভোটার যে মুসলমান তাতে কোন সন্দেহ নাই। এটা কি সম্ভব ছিলো না, মুসলমানরা একটি ইশতেহার প্রণয়ন করবে এবং সেটা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে দিয়ে বলবে, “এগুলো পূরণ করলে আপনাদের সমর্থন দেবো, আর যদি না মানেন তবে সমর্থন দেবো না। যদি ক্ষমতায় গিয়ে না ঠিক মত না চলেন, তখন আমরা সমর্থন তুলে নেবো, ফলে আপনার পতন হবে। ” এভাবে দু’দলের মধ্যে দরকষাকষি করবে। এটা মনে রাখতে হবে, আওয়ামীলীগ-বিএনপি হচ্ছে ক্ষমতার পাগল। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যে শর্ত দেয়া হবে, সেটা তারা মাথা পেতে নিবে। যদি বলায় হয়, “মাথা নিচে, পা উপরে দিয়ে সারা দিন দাড়িয়ে থাকতে” তবুও তারা রাজী। সুতরাং ক্ষমতা ঠিক থাকলে দাবী পূরণ কোন বিষয় নয়।
বিষয়টি ঘোড়ার লাগামের সাথে তুলনা করা যায়। ঘোড়া (আওয়ামীলীগ/বিএনপি) গাড়ি (দেশ) টেনে নিয়ে যাবে। তবে ঘোড়ার গলায় লাগাম সঠিক উপায়ে টেনে ধরতে হবে আপনাকে। আপনি যত শক্ত ও সুন্দর করে সেই লাগাম ধরতে পারবেন, ঘোড়া তত বেশি আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। বাংলাদেশে রাজনৈতিকদলগুলোর উপর বিদেশী শক্তিগুলো এভাবে লাগাম টেনে ধরে। রাজনৈতিক পলিসি দিয়ে, সমর্থন দিয়ে, গোপন তথ্য ব্ল্যাকমেইল করে, অবৈধ টাকা কামানো ও লুকানোর সুযোগ করে দিয়ে, মিডিয়া দিয়ে পক্ষ/বিপক্ষ হয়ে, অপকর্মের বৈধতা দিয়ে লাগাম টেনে ধরে। যে দলের উপর যে বিদেশী শক্তির লাগাম যত দৃঢ়, ঐ রাজনৈতিক দলের উপর ঐ বিদেশী শক্তির প্রভাব ততবেশি। ফলে ঐ রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় গেলে ঐ বিদেশী শক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে বেশি। আপনি মুখে যতই বলেন, “সরকার কেন জনগণের জন্য কাজ করে না”, এতে লাভ হবে না। কারণ সরকারের গলায় তো আপনার লাগাম নেই, আছে ঐ বিদেশীদের লাগাম, সুতরাং তাদের কথাই সরকার বেশি শুনবে।
এখানে লক্ষ্যনীয়,
যেহেতু বাংলাদেশে দুটি বড় রাজনৈতিক দল অনেকদিন ধরেই ক্ষমতায় আছে,
এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ভোটগুলো তাদের কাছেই যায়, সেহেতু বাংলাদেশে মুসলমানদের পক্ষ হয়ে যারা দরকষাকষি করবে প্রাথমিকভাবে তাদের নিরপেক্ষ হওয়া জরুরী।
তবে সে যদি দুই দলের এক পক্ষকে সমর্থন দেয় বা নিজেই নির্বাচনে দাড়িয়ে যায়, তবে সে নিরপেক্ষতা হারাবে, তার কথা কেউ শুনবে না।
পাশাপাশি, যে বা যেসব নেতা নিরপেক্ষ হয়ে মুসলমানদের পক্ষে কাজ করবে, তাদের দৃষ্টিভঙ্গী বর্ধিত করতে হবে। তাদের চিন্তা করতে হবে পুরো মুসলিম সমাজকে নিয়ে, দাবীগুলো হতে হবে সেরকম। কিন্তু নিজের গোষ্ঠীগত সুবিধা নিয়ে যদি সে পক্ষ-বিপক্ষ অবলম্বন করে বসে, তবে সে মুসলমানদের নিরপেক্ষ গোষ্ঠীর নেতা হতে পারবে না। যতক্ষণ সে নিরপেক্ষ থাকবে, ততক্ষণ তার মধ্যে আওয়ামীলীগ-বিএনপির সমর্থকরাও আসতে থাকবে। একই সাথে, নির্বাচনে না দাড়ানোয়, রাজনৈতিকদলগুলো মুসলমানদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ভাববে না এবং দমনও করবে না। বরং সব সময় সমর্থন আদায়ের চেষ্টায় থাকবে।
আমি জানি, আমার দেয়া এ পলিসি অনুসারে যদি কেউ কাজ করতে চায়, তবে প্রথম যে কথাটা উঠবে সেটা হলো, “একজন নেতা লাগবে, নেতা ছাড়া সবাই এক হবে কিভাবে?”
বাংলাদেশের যদি সবাইকে কোন এক মুসলিম নেতার আন্ডারে আসতে বলি, তবে মুসলমানদের মধ্যে মারামারি-কাটাকাটি লেগে যাবে। একজন বলবে, আমরা ধর্মীয় দলের নেতা শ্রেষ্ঠ, আরেকজন বলবে আমার জন শ্রেষ্ঠ। একজন অন্যজনের হুজুরকে মানবে না। এজন্য নেতা/হুজুরের প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। তার থেকে বরং নেতার বদলে একটি পলিসি তৈরী করা যেতে পারে, যার মধ্যে সকল মুসলমান সাধারণভাবে এক হবে। এরপর সেই পলিসি অনুসারে দরকষাকষি হবে।
আরেকটি কথা। অনেকে হয়ত বলবে, আরে দূর, “এসব করে লাভ হবে না। নির্বাচনে তো অমুক দল জিতে যাবে। ”
যারা এসব কথা বলবে, সম্ভবত তাদের নিজের কোন রাজনৈতিক পক্ষ আছে, আসছে নির্বাচনে তারা বিপক্ষকে দমন করার জন্য তাড়াহুড়ো করছে। তাদের পালে হাওয়া লাগিয়ে লাভ নেই। সাধারণ জনগণের পক্ষ তৈরী করতে সময় লাগবে। কারণ আওয়ামীলীগ-বিএনপি’র রাজনৈতিক সুচনা অনেক আগে থেকে। তাদের পেছনে যারা কাজ করছে, তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা অর্ধ শতাব্দীর বেশি পুরোনো। আমি আপনাদেরকে জনগণের পক্ষ নামক শক্তি দাড় করানোর জন্য যে বুদ্ধি দিচ্ছি, সেটা জনগণের জন্য একেবারেই নতুন। এই নতুন তত্ত্ব নিয়ে সামান্য সময়ের মধ্যে তাদের সাথে পেরে যাবো, এটা ভুল। তাই তাড়াহুড়ো করার কারণ নেই। ধিরে সুস্থে আগাতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ, আজকে তুরস্কে যে এরদোয়ানকে দেখা যাচ্ছে, সেটা ১০০ বছরের কষ্টের কারণে সৃষ্ট চেষ্টার ফসল। বাংলাদেশের মুসলমানদেরও সেরকম কিছু চিন্তা করতে হবে। ভুল পলিসিতে ৭১ বছরেও (১৯৪৭ থেকে) কিছু হয়নি। তাই তাড়াহুড়ো না করে সঠিক পলিসিতে এগোতে হবে।
শেষে আমি পুরো বিষয়টি আবারও সংক্ষেপে বুঝানোর চেষ্টা করছি,
ক) বাংলাদেশের মুসলমানদের নিজেদের একটি পলিসি থাকবে, যে পলিসির উপর তারা একমত হবে।
খ) যে সমস্ত রাজনৈতিক দল মুসলমানদের সেই পলিসির পক্ষে কাজ করবে, তাকেই সাপোর্ট দেয়া হবে।
গ) যতক্ষণ কাজ করবে, সাপোর্টও ততক্ষণ থাকবে। কাজও বন্ধ করবে, সাপোর্ট বন্ধ করে উল্টো বিরোধীতা করা হবে।
ঘ) মনে রাখতে হবে, সাপোর্ট দেয়া অর্থ মিশে যাওয়া নয়। উদাহরণস্বরূপ, আওয়ামীলীগ বা বিএনপি মুসলমানদের একটি পলিসির পক্ষে কাজ করলো। তাহলে ঐ ইস্যুতে আওয়ামীলীগ/বিএনপির পক্ষ নিতে হবে। কিন্তু এরমানে এই নয় যে আওয়ামীলীগ বা বিএনপির সাথে মিশে যেতে হবে। ঐ সময় আওয়ামীলীগ/বিএনপি মুসলমানদের পলিসির বিপরীত যতগুলো কাজ করবে, তার শক্তভাবে বিরোধীতা করতে হবে, সমর্থন তুলে নিতে হবে। অর্থাৎ সমর্থন হবে ইস্যু ভিত্তিক এবং বিরোধীতা হবে ইস্যু ভিত্তিক। অর্থাৎ যে যত পলিসি পালন করবে, তার দিকে সমর্থন ততবেশি যাবে। যে দল বেশি পলিসির বিপরীত করবে, তার দিকে বিরোধীতাও তত বেশি যাবে। এতে দুইটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রতিযোগীতা লাগবে কে কত বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের দাবী দাওয়া বেশি পূরণ করতে পারে।
আমি জানি, অনেক মুসলমান হয়ত বলবে, “এত পলিসির কি আছে, একবারে খিলাফত জারি করে ফেললেই তো হয়।”
আমি তাদের বলবো, আস্তে ভাই আস্তে। যে ময়লা শত-সহস্র বছর ধরে জমা হয়েছে, সেটা কি এক নিমিষেই সাফ করতে পারবেন ? কখনই না। ময়লা পরিষ্কার করতে সময় লাগবে, তবে পলিসি ও নিরপেক্ষতা যেন সঠিক থাকে, সেখানে যেন কোন ভুল না হয়, তাহলেই হবে।

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

সম্রাজ্যবাদীদের প্রক্সিওয়ারে ব্যবহৃত জনগণ, ‘জনগণের পক্ষ’ তৈরী হবে কবে ?

প্রক্সিওয়্যার শব্দটার সাথে জনগণ পরিচিত নয়। যদিও জনগণ প্রতিনিয়ত পরিচালিত হচ্ছে প্রক্সিওয়্যারের মাধ্যমেই। ‘প্রক্সি’ শব্দের শাব্দিক অর্থ ‘অন্যের পরবর্তিরূপে কাজ করা’ বা ‘বদলি কাজ’, ওয়্যার শব্দের অর্থ ‘যুদ্ধ’। ছোট বেলায় ক্লাসে উপস্থিত না হয়ে বন্ধুদের বলতাম, ‘দোস্ত আমার হয়ে প্রক্সি দিয়ে দিস’ । মানে আমি উপস্থিত থাকবো না, তুই আমার হয়ে হাজিরা দিয়ে দিস। আন্তর্জাতিক সম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো প্রতিনিয়ত নিজের স্বার্থ নিয়ে কামড়াকাড়িতে ব্যস্ত। সারা বিশ্বজুড়ে চলে তাদের এই যুদ্ধ। কিন্তু সাধারণভাবে সেটা দেখা যায় না, কারণ তারা নিজেরা কখন মাঠে নেমে যুদ্ধ করে না, তারা ভিন্ন একটি দেশকে ব্যাটলফিল্ড বা যুদ্ধক্ষেত্রে বানিয়ে সে দেশের জনগণ দিয়ে সেই যুদ্ধের প্রক্সি দেয়। কিন্তু এরমধ্যে চাতুরতা এত বেশি থাকে যে, সাধারণ মানুষ সেটা ধরতে পারে না। সে ভাবে, সে নিজের জন্য যুদ্ধ করছে, কিন্তু বাস্তবে সে সম্রাজ্যবাদীদেশগুলো স্বার্থের জন্য প্রক্সিওয়্যারে ব্যবহৃত হচ্ছে।
৪৭ এ বহু কাঠখড় পুড়িয়ে পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর, সেটা ভাঙ্গার প্রথম পরিকল্পনা ছিলো আমেরিকার। সেই প্রথম ঘি ঢালে জাতীয়বাদ থিউরী ছড়িয়ে। পাকিস্তানী শাসকদের মাথামোটা বক্তব্যে আমেরিকার থিউরী সফল হয়, সৃষ্টি হয় ৫২’র ভাষা আন্দোলন। ৬৬-৬৯ পাকিস্তান ভাগ করার পর্যায়গুলো মোটামুটি আমেরিকার নিয়ন্ত্রণেই থাকে, কিন্তু বিপত্তি ঘটে ৭০ এর নির্বাচনে এসে। আমেরিকার বদলে পাকিস্তান ভাগ করার আন্দোলন নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে চেষ্টা করে রাশিয়া। পাকিস্তানী শাসকদের মাথামোটা সিদ্ধান্তের দরুণ ২৫ মার্চের নির্মম গণহত্যা এবং বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার যদি না করা হতো, তবে আদৌ বাংলাদেশ নামক কোন দেশ জন্ম নিতো কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন ‘কনফেডারেশন’ টাইপের পূর্ব পাকিস্তান, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে চালকের আসনে বসে পড়ে পাক্কা রাশিয়ান এজেন্ট তাজউদ্দিন আহমেদ। আরেক রাশিয়ান ব্লকের সদস্য ভারতীয় কংগ্রেসের ইন্দিরা গান্ধী তখন ক্ষমতায়, মিলে যায় ক্ষাপে ক্ষাপ। আমেরিকার এতদিনের সখের ‘সূচ রাজা’র চোখের ‘সূচ’ সরানোর উদ্যোগ নিয়ে নেয় রাশিয়া। স্বাধীন হয়ে যায় বাংলাদেশ। রাশিয়ান ব্লকের নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে, আমেরিকা তো বসে থাকার পাত্র নয়। তাদের এজেন্ট জাসদসহ নাস্তিকগুলো দিয়ে দেশে তৈরী করতে থাকে বিশৃঙ্খলা। “ভাত দে, নয় মানচিত্র খাবো”, শ্লোগান দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভের সেন্টিমেন্টকে ঘুড়িয়ে এন্টি আওয়ামীলীগবিরোধী সেন্টিমেন্ট উস্কাতে থাকে। সিরাজ শিকদার হত্যা কিংবা বাকশাল প্রতিষ্ঠা সবাই ছিলো আমেরিকার বিরুদ্ধে রুশ প্ল্যানের অংশ। মার্কিনীদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর একের পর এক একশনে ক্ষেপতে থাকে আমেরিকা। বঙ্গবন্ধুরও মার্কিন বিরোধী প্ল্যান নিজ দেশ ছেড়ে বাইরে বর্ধিত হতে থাকে। পূর্বের বন্ধু ভুট্টোর সাথে ফের খাতির করে নতুন নতুন প্ল্যান নিতে থাকে বঙ্গবন্ধু। ক্ষেপে যায় সিআইএ। বাংলাদেশে কথিত সেনা অভ্যুথানের নাম দিয়ে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুকে, পাকিস্তানে ভুট্টোকে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সিআইএপন্থীরা ট্যাঙ্কে চড়ে উল্লাস করে। এরপর বাংলাদেশে সিআইএপন্থী ও রুশপন্থী সেনাসদস্যের মধ্যে ক্যু-পাল্টা ক্যু চলতে থাকে। টানা ৮ বছর চলে সেনাসদস্যদের মধ্যে সেই আত্মঘাতি প্রক্সিওয়্যার। হাজার হাজার সেনাসদস্য মারা যায়, যার মধ্যে অধিকাংশ মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন। ৮৩ সালে এসে ক্ষমতা নিয়ে নেয় সুযোগ সন্ধানী এরশাদ। এরশাদ ব্যক্তিগতভাবে চালাক ছিলো। সে নিজের জন্য অনেক কিছু-ই করতো, কিন্তু সম্রাজ্যবাদীদের কথা ডাইরেক্ট শুনতো না। এতে ক্ষেপে যায় সম্রাজ্যবাদীরা। মিডিয়ার মাধ্যমে ‘স্বৈরশাসক’ ট্যাগ লাগিয়ে মার্কিনপন্থী, চীনপন্থী আর রুশপন্থী সব এক হয়ে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে, ক্ষমতা থেকে নামাতে চায়। ১৯৯০ সালে ক্ষমতা থেকে নেমে যায় এরশাদ। ১৯৯১ সালে ফের মার্কিন-চীন ব্লকের (তখন মার্কিন-চীন জোট ছিলো) দল ক্ষমতায় চলে আসে। ইতিমধ্যে শেখ হাসিনাকে রুশব্লকের কংগ্রেস ট্র্রেনিং দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে তার ১০ বছর হয়ে গেছে, যদিও আওয়ামীলীগ ঠিক তখনও গুছিয়ে উঠতে পারেনি। তবে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ফিরে আসায় আওয়ামীলীগের আসার সম্ভবনা তৈরী হয়। তাছাড়া সম্রাজ্যবাদীরাও চায় গণতন্ত্র দিয়ে দেশ চলুক, কারণ সেনা শাসকরা সব সময় তাদের কথা শুনে না, এরশাদের মাধ্যমে তাদের সেই শিক্ষা হয়ে গেছে। আমেরিকা পাকিস্তান ভাগ করতে প্রথম ‘জাতীয়তাবাদের চেতনা’ উস্কে দিয়েছিলো, সেই আমেরিকা এবার নতুন মোড়কে নিয়ে আসে নতুন চেতনা ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’। কারণ আমেরিকার ভয় ছিলো শেখ হাসিনাকে দেশে নিয়ে এসেছে রুশব্লক। বঙ্গবন্ধূ কন্যা হওয়ায় রাশিয়া তাকে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নিয়ন্ত্রণ নেয় নাকি, তখন ফের ক্ষমতা রাশিয়ার হাতে চলে যাবে। তাই ১৯৯২ সালে আমেরিকাই তার সদস্য জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে কিছু মার্কিনপন্থী নাস্তিকদের নিয়ে তৈরী করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘গণ আদালত’। শুরু হয়ে যায় চেতনা ব্যবসা। তবে জাহানারা ইমাম খুব তাড়াতাড়ি ক্যান্সারে মারা যাওয়ায় হাফ ছেড়ে বাচে শেখ হাসিনা। যে কথাটা সাবেক এপিএস মতিয়ুর রহমান রেন্টুর লেখা `আমার ফাঁসি চাই বইয়ে আছে- “জাহানারা ইমাম মারা যাওয়ার পর শেখ হাসিনা আনন্দে নাচতে থাকে আর বলতে থাকেন মিষ্টি খাও, মিষ্টি। আমার একটা প্রতিদ্বন্দ্বী দুনিয়া থেকে বিদায় হয়েছে। আল্লাহ বাঁচাইছে। নেত্রী হতে চেয়েচিল। আমার জায়গা দখল করতে চেয়েছিল। ” জাহানারা ইমাম মারা গেলেও মার্কিন ব্লক সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চেতনা তৈরী অব্যাহত রাখে। ‘চেতনা তৈরী’ বলছি এ কারণে, মুক্তিযুদ্ধ একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, এই ঘটনার বিচার হবে ইতিহাসের ভিত্তিতে, কিন্তু মার্কিনপন্থীরা বানোয়াট গল্প কবিতা রচনা করতে থাকে, যার নেতৃত্বে থাকে হুমায়ুন আহমেদ, জাফর ইকবাল আর শাহরিয়ার কবিররা। সাথে ডিজিটাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ডকুমেন্টারি নিয়ে আসে মার্কিন এজেন্ট তারেক মাসুদ আর ক্যাথরিন মাসুদরা। বলাবাহুল্য, মার্কিনীদের চেতনা চর্চার সহরাওয়ার্দী উদ্যানের সেই ‘গণ আদালত’ ২০১৩ তে হয়ে যায় ‘শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ’। শুরুতে সেটার নিয়ন্ত্রন থাকে মার্কিনী এজেন্ট ইমরান এইচ সরকার ও কথিত ব্লগার এন্ড অনলাইন এক্টিভিস্টদের হাতে, কিন্তু পরে সেটা রুশব্লকের আওয়ামীলীগ হাইজ্যাক করে তা ব্যবহার করতে চায়। , ২০১৮ তে এসে শাহবাগ আন্দোলনের মূল মূল মার্কিনপন্থীদের জেলের ভাতও খাওয়া রুশব্লকের আওয়ামীলীগ, কিছুকে বিদেশ আর কিছুকে পরপারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
যাইহোক, আবার পেছনের ইতিহাসে ফেরত যাই। ৯৬ এ রুশব্লকের আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় চলে আসে, ২০০১ এ মার্কিন-চীনব্লকের বিএনপি। ২০০৬ এ গিয়ে ফের আমেরিকা দেখে তাদের বিএনপি দিয়ে ঠিক পোষাচ্ছে না, তাদের আরো অনুগত সরকার দরকার, কারণ ততদিনে চীনের সাথে আমেরিকার সম্পর্কে ফাটল ধরে গেছে, চীন-আমেরিকা শত্রুতা শুরু হয়ে গেছে। ফলে এ অঞ্চলে তাদের তাদের পলিসি চেঞ্জ করতে হবে। তাই তারা উদ্যোগ নেয় হাসিনা-খালেদাকে মাইনাস-টু করে হিলারী বন্ধু ড. ইউনুসকে বসাবে। ভর করা হয় কিছু সেনা অফিসারের উপর। তাদের দিয়ে রাজনৈতিকদলগুলোর উপর উপর শক্তি প্রয়োগ করাও হয়। কিন্তু সে সময় হাল ধরে শেখ হাসিনার মূল চ্যানেল রুশব্লকের ভারতীয় কংগ্রেস। গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ মনমোহন সিং তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘ওয়ান লাইফ ইজ নট এনাফ' স্পষ্ট লিখে কিভাবে সে শক্ত হস্তে শেখ হাসিনাকে ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় বসিয়েছে। ওয়ান ইলেভেনের পর মার্কিনপন্থীরা কিছু সেনা অফিসার দিয়ে তাদের যে প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে উদ্দত হয়েছিলো, তার খেসারত দিতে হয় রুশব্লকের শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার সাথে সাথে। কয়েক মাসের মধ্যে অর্থাৎ ২০০৯ সালে ঘটে যায় বিডিআর বিদ্রোহ। ঝরে যায় দেশের মহামূল্যবান অনেকগুলো সেনা অফিসারের প্রাণ। মার্কিনপন্থীদের উপর প্রতিশোধ নেয় রুশব্লক।
এখন ২০১৮ সালের নির্বাচন উপস্থিত। এখনও একটা দলের উপর ভর করেছে রুশব্লকের ভারতীয় কংগ্রেস। অন্য দলের উপর আমেরিকার সিআইএ। মাঝখানে দুইপক্ষের মাঝে সক্রিয় আছে সুপার পাওয়ার হতে চলা চীন। ১
১৯৪৭ থেকে ২০১৮ হয়েছে, ৭১ বছরের ইতিহাস। সম্রাজ্যবাদীরা নিজেদের মধ্যে স্বার্থ নিয়ে দ্বন্দ্ব করেছে, কিন্তু তারা ফিল্ডে নামেনি। নামিয়ে দিয়েছে আমাদের। তাদের কোন ক্ষতি হয়নি, কেউ বলতে পারবে না, এখানে একজন মার্কিন সৈণ্য বা রাশিয়ার সৈণ্য মারা গেছে। মারা গেছে অসংখ্য বাংলাদেশী, এক ভাই আরেকভাইকে মেরেছে, ভাইয়ের রক্তে রক্তাক্ত করেছে নিজের হাত। বলি হয়েছে সম্রাজ্যবাদীদের প্রক্সিওয়্যারের।
বহুদিন তো হলো, আর কত ? বহু রক্ত তো গেলো, আর কত আপন ভাইয়ের রক্ত চাই ?
জাতি আজ আওয়ামীলীগ-বিএনপিতে বিভক্ত। আসলে আওয়ামীলীগ আমাদের শত্রু নয়, বিএনপিও আমাদের শত্রু নয়। শত্রু হলো তাদের উপর যারা ভর করেছে তারা।
আমরা জনগণ যে দিন আওয়ামীলীগ-বিএনপি’র পর্দা ভেদ করে উপরের শত্রুদের দিকে তাকাতে পারবো, সেই দিন আমদের সামনে সব উন্মোচিত হবে। আমরা বুঝবো আওয়ামী-বিএনপি মারামারি নয়, আমাদের মারামারি করতে হবে পর্দার অন্তরালে দাড়িয়ে থাকা শত্রুদের সাথে, স্বার্থ নিয়ে টানাটানি করতে হবে তাদের সাথে। তখন তৈরী হবে জনগনের পক্ষ বা তৃতীয় পক্ষ।
গত দুইদিনে রাজনৈতিকদলগুলো তাদের ইশতেহার দিয়েছে। কিন্তু আমার মনে হয়েছে, সে ইশতেহারগুলোতে খুব সামান্যই আছে জনগণের চাওয়া-পাওয়া। বেশিরভাগ হলো সম্রাজ্যবাদীদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন এবং প্রতিপক্ষকে দমন করার কৌশল। কিন্তু কিভাবে জনগণের ভালো হবে, জনগণের উন্নতি হবে, সেটা খুব কমই বর্ণিত আছে সেই ইশতেহারগুলোতে। তবে এটার দোষ রাজনৈতিকদলগুলোকে আমি দেবো না, দেবো জনগণকে। জনগণ যেদিন প্রকৃতঅর্থেই নিজের ভালো বুঝবে,বুঝতে পারবে সম্রাজ্যবাদীদের প্রক্সিওয়্যারে হাওয়া না লাগিয়ে জনগণের পক্ষে হাওয়া লাগনো উচিত, সেদিন তৈরী হবে জনগণের পক্ষ বা তৃতীয় পক্ষ, সেই সময়ের অপেক্ষায়।
বি: দ্র:
আমি একটা ইশতেহার দাবি তুলেছি, যার নাম “ইশতেহার : জেগে ওঠো বাংলাদেশ ২০১৮”। যেখানে আমি চেষ্টা করেছি শুধু জনগণের পক্ষ হয়েই দাবি তুলতে।
(লিঙ্ক: https://goo.gl/nLuUMC, পিডিএফ আকারে পেতে : https://bit.ly/2A2Kb4p)

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------