Thursday, June 18, 2020

করোনা কি আমাদের অমানুষ বানিয়ে দিলো ?


অনেককে দেখলাম, গতকালকে ফেরিপারাপারের ভীড়ের ছবিকে আপলোড করে এই মানুষগুলোকে গালাগালি করছে। কেউ শুওরের বাচ্চা, কুক্তার বাচ্চা বলতেও দ্বিধা করতেছে না।

যারা এই গালিগুলো দিচ্ছেন, তারা মানুষের ভীড়কে উপলক্ষ করেই দিচ্ছেন,
কিন্তু মানুষগুলো যে কি অবর্ণণীয় কষ্ট করছে, সেটা তারা দেখতে পারছেন না।

আমি দেখেছি, মিডিয়াতে প্রায় একটা কথা বলে, দেখুন মানুষ কিভাবে অপ্রয়োজনে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আসলে মানুষ কিন্তু অপ্রয়োজনে ঘুড়ে বেড়ায় না, অবশ্যই তার কোন না কোন প্রয়োজন আছে,
কার দরকার এত কষ্ট করে প্রয়োজনে ভীড় ঠেলে যাওয়ার?
কিন্তু সে এমন কোন কঠিন সিচ্যুয়েশনে পড়েছে, যার কারণে সে যেতে বাধ্য হচ্ছে । আর বাংলাদেশে মানুষের ঘনবসতি বলে যদি অল্প সংখ্যক মানুষের জরুরী প্রয়োজন থাকে, তবে সেটাই দেখতে অনেক বেশি মনে হয়।

কথা হচ্ছে, ঈদে কিছু মানুষের জরুরী প্রয়োজন থাকতেই পারে,
সব প্রয়োজন লিখে শেষ করা যাবে না,
এজন্য উচিত ছিলো কিছুটা হলেও গণ পরিবহন চালু রাখা।
কিন্তু যাদের প্রাইভেট গাড়ি আছে, তারা গণ পরিবহনের গুরুত্ব বুঝতে পারে না।
ঢাকা শহরে দেখুন, প্রাইভেট গাড়িগুলো কিন্তু প্রতিদিনই এখন মোড়ে মোড়ে যানজট তৈরী করছে,
কিন্তু সমস্যা হইলো গরীবের গণ পরিবহণ নিয়ে। জোর করে তারা গরীবের উপর কষ্ট চাপিয়ে দিচ্ছে।

ছবিতে দেখুন, একজন পিতা কত কষ্ট করে একটা ৬ মাস বয়সী শিশুকে উপরে তুলে রেখেছেন।
এত গরমে, এত ভীড়ে কত মানুষ যে কত কষ্ট করছে, তার কোন শেষ নেই।
অথচ আমরা এসি প্রাইভেট গাড়িতে ঘুরে, এসি রুমে বাপ-মা’র সাথে বসে ফেসবুকে তাদের কুক্তার বাচ্চা-শুয়রের বাচ্চা বলে গালি দিতে ভুল করছি না।

আসলে, একটা কথা আমি আগেও বলেছিলাম এখনও বলছি-
ছোয়াছে বিশ্বাস মানুষকে স্বার্থপর ও অমানুষ বানিয়ে দেয়। এর বহু উদাহরণ গত ২ মাসে দেখা গেছে। আজকে যারা ফেসবুকে এসব ছবি দেখে গালাগালি করছে, তারা ঐ শ্রেনীর লোক। তাদের বিশ্বাস এই ভীড়ের মধ্যেই করোনা ছড়াচ্ছে, তাই লোকগুলোর কষ্ট বা প্রয়োজন তারা দেখতে পাচ্ছে না, তারা তাদের স্বার্থপরতা ও অমনুষ্যত্ব প্রকাশ করতেই তারা বেশি ব্যস্ত।

0 comments:

Post a Comment