Thursday, February 28, 2019

গাইবান্ধায় সাওতালপল্লীতে আগুন দেয়ার কথা মনে আছে ?


পুলিশবাহিনী নিজেই সেই আগুন দিয়েছিলো।
কিন্তু মিডিয়ার ক্যামেরায় সেই আগুন ধরা পড়ায় এবং মিডিয়া সেটা প্রকাশ করায় সবার নজরে আসে। নয়ত সেই আগুনও হয়ত, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট বা চুলার আগুন বলে প্রচার করা হতো।

এখানে একটি বিষয় বোঝার আছে, বাংলাদেশে সাওতাল সংখ্যালঘুদের পক্ষে হলো মার্কিনপন্থী এবং তাদের অনুগত মিডিয়াগুলো। তাদের স্ট্র্যাটেজি, সংখ্যালঘু দিয়ে সংখ্যাগুরু দমন।
এজন্য তারা সাওতালপল্লীতে আগুন দেয়ার গোমর ফাঁস করে দিয়েছিলো।
একইভাবে আজকে ভাষানটেক বস্তিতে আগুন নিয়েও দৈনিক প্রথম আলো একইরকম নিউজ প্রকাশ করেছে, যার শিরোনাম: ‘উচ্ছেদের আগেই পুড়ল জাহাঙ্গীরের বস্তি’ (https://bit.ly/2Trfscs), নিউজের মধ্যে তারা সন্দেহ প্রকাশ করেছে, ‘‘এই আগুন লাগানো হতে পারে”।  তারমানে বোঝা যায়, ভাষানটেক বস্তি উচ্ছেদের বিরুদ্ধে মার্কিনপন্থী প্রথম আলো। এর কারণ সম্ভবত ভাষানটেক বস্তি উচ্ছেদ করে সেনাবাহিনীর কোন প্রজেক্ট হবে। (https://bit.ly/2NFAUFj)
যেহেতু মার্কিনপন্থীদের অবস্থান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে, তাই তারা এখানে উচ্ছেদের বিরোধিতা করবে, এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু সমস্যা হলো, পুরান ঢাকায় যে কারণে আগুন দেয়া হয়েছে, সেটা সরকার ও মার্কিনপন্থী উভয়ের স্বার্থ মিলে গেছে, এ কারণে চকবাজারের আগুনের মূল গোমরটা ফাঁস করছে না মিডিয়া, বরং অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।  আর সাধারণ মানুষও বিষয়টি বুঝতে পারছে না, দুই গ্রুপের ধোকায় পড়ছে।

আরেকটি বিষয় বলতে হবে,
গতকালকে সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের সাথে কেমিকেল ব্যবসায়ীদের একটি মিটিং হয়েছে এবং সংবাদে এসেছে কেমিকেল ব্যবসায়ীরা নাকি রাজী হয়েছে তাদের গোডাউন টঙ্গী এবং কদমতলীতে সরিয়ে নেয়ার।  (https://bit.ly/2IFi5D6)
এখানে কয়েকটি কথা বলতে চাই-
ক) বাণিজ্যমন্ত্রনালয়ের সাথে মিটিং এ কি আসলেই কেমিকেল ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল সরিয়ে নিতে রাজি হয়েছেন ? তাদের বক্তব্য হুবুহু প্রকাশ করা হোক। নাকি মিডিয়া কথা কাটছাট করে তাদের নামে মিথ্যা প্রচার করছে ?
খ) যে সব ব্যবসায়ী মন্ত্রনালয়ের সাথে মিটিং করেছে, তারা কি আসলেই কেমিকেল ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করে ? নাকি আওয়ামী নেতাকে কেমিকেল লিডার সাজিয়েছে মিডিয়া সামনে উপস্থাপন করেছে সরকার ?
গ) যে টঙ্গী বা কদমতলীতে গোডাউন সরিয়ে নেয়ার কথা বলা হচ্ছে, সেটা কতটুকু উন্নত ? সেখানে গোডাউন রাখার কতটুকু সুযোগ ‍সুবিধা আছে ? সেটা আগে বিস্তারিত প্রকাশ করা হোক।  দেখা যাবে, ঐ স্থানগুলো সম্পূর্ণ  অণুপযোগী, কিন্তু মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে কেমিকেল গোডাউনগুলো নষ্ট করার পায়তারা করছে সরকার।
ঘ) পুরান ঢাকার কেমিকেল গোডাউন কেরানীগঞ্জে সরাটা যুক্তিযুক্ত, কিন্তু পুরো উল্টাপাশে মানে টঙ্গী-গাজীপুরে সরার কোন যুক্তি দেখি না। এত দূরে নিয়ে পোষাবে তো ?


এদিকে, আজকে সকালে পুরান ঢাকার কোন কোন বাসায় কথিত কেমিকেল পেয়ে গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে টাস্কফোর্স।  অথচ ঐ বাসাগুলো বাসিন্দারা বলছে, এগুলো কেমিকেল গোডাউন নয়।  অযথাই তাদেরকে হয়রানি করা হচ্ছে। (https://bit.ly/2Vq0z7y)

এই কথাটা আমি অনেকদিন আগে থেকে বলে আসছি।  মিডিয়া যেভাবে ঢালাওভাবে ‘কেমিকেল’ ‘কেমিকেল’ বলে প্রচার করছে (যেহেতু কেমিকেল শব্দটার প্রতি বাঙালীর এলার্জি আছে), পুরান ঢাকায় কেমিকেল ব্যবসার সংজ্ঞাটা কিন্‌তু অন্যরকম। অথচ মিডিয়াতে সকল ব্যবসার উৎপানের কাচামালকে কেমিকেল ট্যাগ দিয়ে সবকিছু উচ্ছেদের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।  উল্লেখ্য‘কেমিকেল’ শব্দটা বাংলা অর্থ হচ্ছে ‘রাসায়নিক’, তো রসায়ন তো সব যায়গায় আছে।  কোন যায়গায় রসায়ন নেই বলুন ? প্রতিটা অনু-পরমাণুর মধ্যে রসায়ন চলছে, সে হিসেবে পুরো দুনিয়াটাই তো রাসায়নিক বা কেমিকেল। সত্যিই বলতে পুরো পুরান ঢাকায় বিভিন্ন ব্যবসা-বানিজ্য ও পণ্যের গোডাউন আছে এবং সেটা থাকতেই হবে, নয়ত ব্যবসা চলবে কিভাবে ? কিন্তু মিডিয়া ও সরকারি লোকজন যেভাবে ‘কেমিকেল এলার্জি’ ব্যবহার অপপ্রচার চালিয়েছে, তাতে পুরান ঢাকায় সকল ব্যবসা কেমিকেল ট্যাগ খেয়ে বন্ধ করে দিতে হবে।

পূরান ঢাকায় ‘কেমিকেল’ ‘কেমিকেল’ করে আমরা নিজেদের পায়ে নিজেরা কুড়াল মারছি না তো ?

চকবাজারে যে স্থানে কয়েকদিন আগে আগুন লাগলো, তার পাশেই ছিলো প্লাস্টিক গুটির গোডাউন। ‘প্লাস্টিক গুটি’ তথা প্লাস্টিক অবশ্যই দাহ্য পদার্থ ( দাহ্য পদার্থ আর বিষ্ফোরক পদার্থ কিন্তু এক নয়। আপনার বাসায়ও প্রচুর প্লাস্টিক আছে)।  মিডিয়ায় অপপ্রচার এবং সরকারী দমন নিপীড়নের ফলে পুরান ঢাকা থেকে যদি প্লাস্টিক কারখানা উচ্ছেদ করে পুরো ব্যবসাটা ধ্বংস করা হয়, তবে আমাদের লাভ হবে নাকি ক্ষতি হবে সেটার হিসেব করার দরকার আছে।
আমার মনে আছে, একটা সময় ঢাকা শহর জুড়ে পলিথিন ও প্লাস্টিক বোতলে সয়লাব ছিলো।  প্লাস্টিক এমন এক জিনিস, যা হাজার বছরেও পরিবেশে থাকলে তা নষ্ট হয় না।  এতে পুরো পরিবেশ বিপর্যযের অবস্থা তৈরী হলো। কিন্তু হঠাৎ করে ঢাকা শহরে এসব বোতল ও প্লাস্টিক উধাও হওয়া শুরু করলো। এর কারণ প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টোকাই এসব তুলে নিয় যায়।  নিয়ে যায় পুরান ঢাকায়, সেখানে কেজি দরে বিক্রি করে।  পুরান ঢাকায় চকবাজার থেকে কামরাঙ্গীরচর পর্যন্ত এ ধরনের ৩০০ প্ল্যাস্টিক রিসাইক্লিং ফ্ল্যাক্টরি তৈরী হয়েছে, যারা এসব বোতল বা অন্যান্য প্ল্যাস্টিক সংগ্রহ করে, গুটিও তৈরী করে আবার রিসাইক্লিং করে অন্য প্ল্যাস্টিক সামগ্রি (চেয়ার, টেবিল, বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্য, গার্মেন্টেসের বিশেষ ধরনের সুতাসহ হাজারো সামগ্রী) তৈরী করতেছে।  এগুলো তৈরী করে শুধু দেশীয় চাহিদা নয়, বরং চীনে এই ‘প্ল্যাস্টিক রেজিন’ রফতানি হচ্ছে, যা সত্যিই বিষ্ময়কর।  একইসাথে এই ব্যবসার সাথে যুক্ত হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে। অথচ কেমিকেল বা দাহ্য অজুহাত দিয়ে যদি পুরান ঢাকার শুধু প্ল্যাস্টিক ব্যবসা ধ্বংস করা হয়, তবে পুরো ঢাকা শহর প্লাস্টিকের পাহাড়ে পরিণত হবে, বিপর্যস্ত হবে পরিবেশ।  তাছাড়া এই ৩০০ কারখানায় যুক্ত নিম্ন আয়ের মানুষ এবং এতে যোগানদাতা লক্ষ লক্ষ টোকাই কর্মহীন হয়ে পড়বে।  তখন এসব লক্ষ লক্ষ টোকাই এবং নিম্ন আয়ের মানুষ কর্মহারিয়ে বিভিন্ন অপরাধের সাথে যুক্ত হবে, খুন, ছিনতাই, মাদকের ব্যবসা শুরু করে পুরো দেশকে তারা অস্থিতিশীল করে তুলবে, মেক্সিকো বা আফ্রিকার মত বাংলাদেশ হয়ে উঠবে অপরাধে স্বর্গরাজ্য।

সবশেষে বলবো, পুরান ঢাকায় যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, তাতে চোরে (সরকার) চোরে (মার্কিনপন্থী) মাশতুতো ভাই মিলে গেছে।  তাই কেউ আপনাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে এটা চিন্তা করা বোকামি। তাই  আমার মনে হয়, পুরান ঢাকাবাসী এবং ব্যবসায়ীরাই এক হয়ে এগিয়ে আসুন।  সবাই এক হয়ে, এসব দখলদারীত্ব ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্য করুন।  সংবাদ সম্মেলন করুন, বিক্ষোভ, মিছিল করুন, কথিত টাস্কফোর্সকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করুন।  সবাই যদি এক হয়ে কিছু না করতে পারেন, তবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বেশিদিন টিকতে পারবেন বলে মনে হয় না।
----------------------------------------------------------
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

Wednesday, February 27, 2019

বুলডোজারে পরিষ্কার হয় কম, আগুনে বেশি


১) ১৪ই ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
ভাষানটেক বস্তি উচ্ছেদের খবরে উত্তাল মিরপুর
ক) https://bit.ly/2BRvaTR
খ) https://bit.ly/2GOhKw7

২) ১৯শে ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
ভাষানটেক ৫ হাজার বস্তিঘর উচ্ছেদ, টার্গেট ১৫ হাজার ঘর
ক) https://bit.ly/2Vq1oNv
খ) https://bit.ly/2tKKblX
গ) https://bit.ly/2TmsSX4

৩) ২৮শে ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
ভাষানটেক বস্তিতে ভয়াবহ আগুন  (https://bbc.in/2GO0Qhl)

মন্তব্য : বুলডোজারে পরিষ্কার করা ঝামেলা, খরচ বেশি, মিডিয়ার ধকলও বেশি। কিন্তু আগুনে পরিষ্কার করা সহজ ও ঝামেলামুক্ত।

সাবেক অর্থমন্ত্রী মাল মুহিতের বাণী
“২০২৪ সালের পর দেশে আর কেউ গরীব থাকবে না”
(https://bit.ly/2ElVCW7)

গরীব থাকবে না মানে, “দারিদ্রতাকে নয় বরং দরিদ্রকেই ভ্যানিশ করে দেয়া হবে।”

বিশেষ দ্রষ্টব্য (পরে সংযোজন):
‍গুগল ম্যাপ বলছে ভাষণাটেক পুরো বস্তি এলাকা হলো ঠিক ‘নির্ঝর আবাসিক এলাকা’র পিছনের এলাকা। বাংলাদেশে সবচেয়ে এক্সক্লুসিভ এলাকা মনে হয় নির্ঝর আবাসিক এলাকা (সেনাসদস্য ও অফিসারদের জন্য)  । তাই নির্ঝর আবাসিক এলাকা যদি এক্সটেনশন করতে হয় অথবা তার প্রয়োজনে যদি অন্য কোন স্থাপনা করতে হয়, অথবা সেই একইমানের অন্য কোন আবাসিক এলাকা (ভিউ: লেকের পারে)  নির্মাণ করতে হয় তবে ভাষাণটেকের বস্তি সরানোর কোন বিকল্প দেখি না। নির্ঝর আবাসিক এলাকা দেখতে: https://youtu.be/2x3Lr1pdmc8, https://youtu.be/bs3oF4xCGQU

----------------------------------------------------------
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

চকবাজারে আগুনের মূল কারণ ‘ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন’

নিমতলী আর চকবাজার এই দুই অগ্নিকাণ্ডের মাঝের তফাৎ ছিলো ১টি মাত্র বিষয়।  সেটা হলো ‘কেমিকেল ট্রেড লাইসেন্স’।  ২০১০ সালে নিমতলীর ঘটনার অজুহাতে ২০১৩ থেকে আর কোন ব্যবসায়ীকে কেমিকেল ট্রেড লাইসেন্স দেয়া হয়নি, কিন্তু ব্যবসায়ীদের ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে অবশেষে সরকার ট্রেড লাইসেন্স নবায়নে আবার ফিরে আসে। এবং আগুন লাগার মাত্র ১ দিন আগে ৫টি কোম্পানিকে ট্রেডলাইসেন্স নবায়ন করে দেয়।  দীর্ঘ ৬ বছর পর ট্রেড লাইনেন্স নবায়ন শুরু করার পরের দিনই অর্থাৎ ২০শে ফেব্রুয়ারী আগুন লাগে এবং আবারও কথিত কেমিকেল বিরোধী সেন্টিমেন্ট ছড়িয়ে দেয়া হয়।  (https://bit.ly/2VpCUEf, https://bit.ly/2BVFZ7u)

এ সংবাদটি বলে দিচ্ছে, চকবাজারের আগুনের সেন্টার পয়েন্ট হচ্ছে, কেমিকেল লাইসেন্স নবায়ন।  কোন একটি গোষ্ঠী চাইছে না, কেমিকেল ব্যবসা থাকুক।  যেই লাইসেন্স নবায়ন শুরু হলো, আবার আগুন লাগিয়ে সেটা বন্ধ করে দেয়া হলো।  কিন্তু কথা হলো, এতে ঐ গোষ্ঠীর লাভ কি ?

কেমিকেল ব্যবসায় লাইসেন্স না দেয়ায় ২০১৮ সালে অগাস্টে কেমিকেল ব্যবসায়ীরা মতিঝিলে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলো, “কেমিকেল সম্পর্কে ভুল রটানো হচ্ছে।  প্রত্যেকটি কারখানায় কেমিকেল প্রয়োজন হয় এবং সব কেমিকেলই দাহ্য নয়।  কিন্তু রটানো হচ্ছে সব কেমিকেল খারাপ।  আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহার্য সবকিছুর মধ্যে কেমিকেল আছে। ”(https://bit.ly/2Ex5sFX)

এ খবর দ্বারা ব্রডওয়েতে একটা কথা বলা যায়, যারা চায় না বাংলাদেশে কেমিকেল ব্যবসায়ীরা লাইসেন্স পাক, আসলে প্রকৃতপক্ষে তারা চায় না পুরান ঢাকায় কোন কারখানা চলুক বা প্রডাকশন বা উৎপাদন হোক।

উৎপাদন বা প্রডাকশন কি ? কেন বিদেশী বহুজাতিকরা বাংলাদেশে প্রডাকশন বিরোধী ??

একটা ডিম, একটু তেল, একটু আটা মিলে হচ্ছে একটা কেক।  ডিম, কেক আর আটার সব মিলিয়ে খরচ ১০ টাকা। কিন্তু একটা কেকের দাম ৩০ টাকা।  এই যে ১০ টাকাকে ৩০ টাকায় রূপান্তর করা হলো, এইটা হলো প্রডাকশন বা উৎপাদন।

ধরুন, বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস পাওয়া গেলো।  এই গ্যাস রফাতানি করা কি লাভজনক ?
না, কোন র’ ম্যাটেরিয়াল রফতানি করা লাভজনক নয়।  ঐ গ্যাস দিয়ে যদি বিদ্যুৎ তৈরী করে, সেই বিদ্যুৎ রফতানি করা হয়, তবে লাভ অনেক বেশি হবে।  গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরীকে আমরা বলছি প্রডাকশন বা উৎপাদন।

বাংলাদেশের শ্রমিকরা বিদেশ যায়।  এই শ্রমিক পাঠানো কি লাভজনক ?
না।  এই শ্রমিকদের ট্রেনিং দিয়ে, কোন দেশী কোম্পানির আন্ডারে দেয় হয় এবং তারপর ঐ কোম্পানিকে যদি রফতানি করা হয়, তবে এর মাধ্যমে আরো বহুগুণ লাভবান হওয়া সম্ভব।  র’ শ্রমিক থেকে কোম্পানি বানানোটা এক ধরনের প্রডাকশন বা উৎপাদন।

অর্থাৎ কোন র’ মেটেরিয়াল রফতানি করা লাভজনক নয়, বরং সেই র’মেটেরিয়াল দিয়ে কোন প্রডাক্ট বা সিস্টেম বানিয়ে সেটা রফতানি করলে অনেক বেশি লাভবান হওয়া যায়।  এই জন্য ব্যক্তিগতভাবে আমি কোন র’ মেটেরিয়াল রফতানির পক্ষে নই।

আবার আমদানির ক্ষেত্রে ঠিক উল্টা।  মানে র’ মেটেরিয়াল আমদানি বা সংগ্রহ করে যদি আমরা নিজেরা কোন প্রডাক্ট তৈরী করতে পারি তবে খরচ অনেক কমানো সম্ভব এবং সেটাই লাভজনক।   একাধিক র’ মেটেরিয়াল এক করে যারা নতুন প্রডাক্ট তৈরী করতে পারে, তাদের বলে কারিগর।  পুরান ঢাকায় বর্তমানে এমন অনেক কারিগর তৈরী হয়েছে, যারা দুই-চারটা প্রডাক্ট এক করে নতুন প্রডাক্ট তৈরী করতে পারে বা প্রডাকশন করতে পারে।  এই সকল কারিগরের কারণে আমরা অনেক খরচ থেকে বেচে যাই, যা আমরা নিজেরাই জানি না।  উদাহরণ স্বরূপ, পুরান ঢাকায় অসংখ্য রং এর অনেক দোকান আছে।  এরা ৩-৪টা কেমিকেল মেটেরিয়াল এক করে ব্যবহার্য রং তৈরী করতে পারে।  ধরেনিলাম, পুরান ঢাকা থেকে ১ পাউন্ড রং বানানোর পর বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।  কিন্তু বিদেশ থেকে তৈরীকৃত সমপরিমাণ রং এর দাম পড়তো ১ হাজার টাকা।  এক্ষেত্রে বাংলাদেশে উৎপাদন বা প্রডাকশনের কারণে ৯০০ টাকা সেভ হচ্ছে।  এতে জনগণও কমমূল্যে জিনিস পাচ্ছে আবার অনেক লোকেরও কর্মসংস্থান হচ্ছে।  আজকে ফেসবুক-অনলাইনে যে অতি উৎসাহি সমাজ কেমিকেল কারখানা গুদাম সরাও, সরাও বলে চিৎকার করছে, আমার ধারণা- তারা নিজেরাও জানে না, তার দৈনন্দিন ব্যবহার্য অনেক কিছুই আসে পুরান ঢাকার সেস কারখানা থেকে।  এসব উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলে তাকে অনেক কিছুর জন্যই বিদেশ নির্ভর হতে হবে এবং এ কারণে তার জীবনব্যয় কয়েকগুন বৃদ্ধি পাবে।

শেষে শুধু একটা কথাই বলবো-
নিমতলীর ঘটনার পর লাইসেন্স নবায়ন না হলেও পুরান ঢাকা থেকে কিন্তু কেমিকেল সরে নাই।  বৈধ-অবৈধ যেভাবেই হোক তারা ব্যবসা চালিয়ে গেছে।  এই সময় কিন্তু কোন অগিকাণ্ডও হয় নাই।   কিন্তু লাইসেন্স নবায়ন শুরু করার মাত্র ১দিন পর আবার অগ্নিকাণ্ড প্রমাণ করে, আগুনের পেছনে কেমিকেল বা সিলিন্ডার কোনটাই দায়ী নয়, আসল দায়ী হলো, একটা মহল, যারা চায় না কেমিকেল লাইসেন্স নবায়ন করা হোক।
এভাবে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে এতগুলো জীবন কেড়ে নেয়াকে কখন সমর্থন করা যায় না।  তাই এতগুলো নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার জন্য পর্দার অন্তরালে থাকা খুনি ও তাদের প্রকাশ্য সহযোগীদের বিচার দাবী করছি।

বি:দ্র: একটি ঘটনা থেকে একেক জন একেক রকম ফায়দা নিতে পারে। পুরান ঢাকার কারখানার প্রডাকশন বন্ধ হলে অনেক বাসাবাড়ি খালী হবে। ফলে সেসব বাসাবাড়ি ভেঙ্গে সেখানে পর্যটন ব্যবসা করবে আরেকটি মহল, সেই ব্যবসার জন্য বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করবে। তারপর সেখান থেকে কমিশন লাভবান হবে।

----------------------------------------------------------
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

পুরান ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে সরকারের যুদ্ধ ঘোষণা

পুরান ঢাকায় শত বছর ধরে গড়ে ওঠা ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে শেখ হাসিনা সরকার।  বুড়িঙ্গার তীর জুড়ে পর্যটন ও বিনোদন নগরী, বাণিজ্য উচ্ছেদ করে হেরিটেজ পার্ক এবং নতুন শহর নির্মাণ (আরবান ল্যান্ড রিডেভেলপমেন্ট প্রকল্প) করার জন্য সাম্প্রতিক সময়ে চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে তৈরী জনমতকে কাজে লাগতে চাইছে সরকার।  আসুন, এ সম্পর্কিত কিছু খবর দেখি-

১)  ৩ দিনের মধ্যে গোডাউন ছাড়বেন, ৬ মাসের মধ্যে নতুন গোডাউন পাবেন !
দৈনিক প্রথম আলোর খবর; “২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে টাস্কফোর্সের অভিযান” (https://bit.ly/2UeGvox)
খবরের ভেতর- তিন দিনের মধ্যে পুরান ঢাকায় কেমিকেল গোডাউন বিরোধী অভিজান শুরু করবে বিশেষ বাহিনী, কোন বাড়িতে কেমিকেল পাওয়া  গেলে ঐ বাড়ির গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে দেবে। সাথে নেয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা। ১ মাসের মধ্যে পুরো পুরান ঢাকা কেমিকেল গোডাউন শূণ্য হবে।
এরপর খবরে নিচের অংশে বলা হচ্ছে, “শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, রাসায়নিকের গুদাম সরিয়ে নিতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে শিল্পনগর তৈরি করে দেবে শিল্প মন্ত্রণালয়।  সভা শেষে সাংবাদিকদের জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় রাসায়নিক পল্লির জমির পরিমাণ ৫০ একর থেকে বাড়িয়ে ২০০ একর করার চিন্তা করা হচ্ছে। এ জন্য কেরানীগঞ্জে নতুন কয়েকটি জায়গা দেখা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কাজ শুরু হয়েছে। সরকারি প্রকল্পের বিভিন্ন ধাপ থাকে, সেটা এড়িয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। এ ক্ষেত্রে ছয় মাসের বেশি লাগবে না বলে আশা করা হচ্ছে।”
তারমানে যদি সরকার তড়িৎ কাজও করে (যদিও এখনও জমি ঠিক হয়নি) তবে ৬ মাস পর কেরানীগঞ্জ কেমিকেল গোডাউন প্রস্তুত হবে।  এবার নিজেই একটু বিবেক খাটিয়ে চিন্তা করে দেখুন তো, কোন বাড়িয়ালা আপনাকে বললো, “৩ দিনের মধ্যে বাসা ছাড়বেন, আর ৬ মাস পর নতুন বাসা পাবেন। ” বিষয়টা কেমন ? আপনি নিজে যদি থাকতেন, তবে না হয় স্টেশন, পথে ঘাটে ঘুমাতেন। কিন্তু  কোটি কোটি টাকার মালামাল নিয়ে কোথায় যাবেন ? ৬ মাস রাস্তায় থাকবেন ? খোলা আকাশের নিচে এসব মালামাল রাখলে তা ৬ মাস তো দূরের কথা, ৬ দিন থাকবে না।  সরকার যদি সত্যিই চাইতো, এসব ব্যবসা টিকে থাকুক, তবে সঠিক উপায়ে কেমিকেল গোডাউনের পুনর্বাসন করতো, এভাবে উচ্ছেদ চাইতো না।  এখানে স্পষ্ট, সরকার নিজেই চাইছে পুরান ঢাকায় দীর্ঘদিনের গড়ে ওঠা ব্যবসা-বাণিজ্যের পতন ঘটুক।

(২) বলপ্রয়োগ করে হলেও কেমিক্যাল গুদাম সরাতে হবে: নাসিম (https://bit.ly/2ExhMpM)
মন্তব্য : আপনার ও আপনার পুত্রের লুটপাট ও চুরির দরুন বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন যে পরিমাণ রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে, তার বিচার হবে কবে ?

(৩) এলসি বন্ধ হলেই পুরান ঢাকা ছাড়বেন ব্যবসায়ীরা :  এনবিআর চেয়ারম্যান (https://bit.ly/2NvcSwi)
কয়েকদিন আগে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনসি বলেছিলো, আওয়ামী সরকার হলো ব্যবসাবান্ধব সরকার।  তখন আমি স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছিলো, আওয়ামী সরকার ব্যবসা বান্ধব সরকার নয়, আওয়ামী সরকার হলো ব্যবসাখেকো সরকার (https://bit.ly/2VfkkOS)।  পুরান ঢাকার ব্যবসা বন্ধ করে রিয়েল স্টেট ও পর্যটন ব্যবসা চালু করতে সরকারী কর্মকর্তাদের হুমকি ধামকি দেখলে সেটা সহজে অনুমেয়।

(৪) কেমিকেল গোডাউনের সংখ্যা কত ?
বাংলানিউজ২৪ একটি প্রতিবেদন বলছে, এর সংখ্যা ৯ হাজার। (https://bit.ly/2tHV8Vn), এমন গোডাউন আছে, যেখানে শত-হাজার কোটি টাকার মালামালও আছে।  এগুলো ৩ দিনের মধ্যে উচ্ছেদ করে, ৬ মাসের মধ্যে নতুন বাসা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে রাস্তায় নামিয়ে দেয়া কতটুকু যুক্তিযুদ্ধ, আপনি বিচার করুন।

সারা বিশ্ব এখন নিজের দেশে উৎপাদনের উপর জোর দিয়েছে।  চায়না নিজস্ব শিল্পের উপর জোর দিয়ে এখন বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যে কর্তৃত্ব করছে।   ট্র্যাম্প নিয়েছে ‘মেক অ্যামেরিকা গ্রেট এগেইন' কর্মসূচি।  মোদি নিয়েছে ‘মেইক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি।  সবাই চায় নিজের দেশে উৎপাদন বা প্রডাকশন হোক।  কিন্তু বাংলাদেশের আওয়ামী সরকার দেশের সামান্য একটু অঞ্চলে গড়ে ওঠা প্রডাকশনকে ধূলায় মিশিয়ে দিয়ে পুরোপুরি বিদেশ নির্ভর হওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে ।  এই তাদের দেশপ্রেম  ! ছি :

----------------------------------------------------------
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

দাহ্য কেমিকেল সরাবে ভালো কথা, কিন্তু সেটা জায়েজ করার জন্য ১৫০ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করতে হবে কেন??

একটা ছেলে তার স্ত্রীকে হারিয়ে খুব হতাশ।

তাকে কেউ বুদ্ধি দিলো, তুমি একটা বিমান হাইজ্যাকের নাটক ঘটাও, দেখবে ঐ ঘটনাটা মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার পাবে। ঐ ঘটনা যখন মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার পাবে, তখন সবার সামনে তুমি বলতে পারবে, তুমি তোমার স্ত্রীকে আবার তোমার কাছে ফেরত চাও। দেখবে তোমার জীবনে আবার সব ঠিক হয়ে যাবে।

বুদ্ধিদাতার বুদ্ধি অনুসারে ছেলেটা কাজটা করে ফেললো। মুভি জগতের সাথে যুক্ত ছেলেটি জীবনটাকেই মুভির মত ভাবতো। তাই বুদ্ধিদাতার বুদ্ধি অনুসারে চলতে তার কষ্ট হলো না। কিন্তু কাজটা শেষে যখন ছেলেটা আসল কথা সবার সামনে বলতে যাবে, তার আগেই ছেলেটাকে ঐ বুদ্ধিদাতাই হত্যা করে ফেললো। কারণ ঐ বুদ্ধিদাতা চায় না, ঐ ছেলেটি কখন মিডিয়ার সামনে ফাঁস করুক, কে তার এই ‘বুদ্ধিদাতা’। মজার বিষয় হলো, এই ‘বু্দ্ধিদাতা’ ব্যক্তিটি সাধারণ কোন ব্যক্তি হতে পারে না। খুব স্বাভাবিক হচ্ছে, এই বুদ্ধিদাতা ব্যক্তিটি কোন গোয়েন্দা সংস্থার লোক। হয়ত ঐ ছেলেটি কখন কোন কারণে গ্রেফতার হয়েছিলো। গ্রেফতারের পর আইন-প্রশাসনের কাজেই ঐ ছেলেটির সাথে ঐ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তার মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরী হয়। সেই সম্পকটাকে কাজে লাগিয়ে ‘বুদ্ধিদাতা’ ঐ ছেলেটিকে ঐ পথে নিয়ে যায়।

এখন বলতে পারেন, বুদ্ধিদাতা কেন ঐ ছেলেটিকে এই বু্দ্ধি দিলো ?
গোয়েন্দা সংস্থার লোকদের সাথে এমন অনেক ‘চিকি’ ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক থাকে। এই সম্পর্কটা অনেকভাবে তৈরী হতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, কোন কারণে হয়ত ঐ লোকটা কোনদিন গ্রেফতার হয়েছিলো। হয়ত তারপর আইন-প্রশাসনের সহযোগীতা করতে গিয়েই ঐ লোকটার সাথে গোয়েন্দা সংস্থার লোকটার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে।
একদিন গোয়েন্দা সংস্থার উর্ধ্বতন মিটিং এ সকল কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, উপরের মহল থেকে নির্দেশ আছে, অমুক তারিখে একটা ঘটনা ঘটায় মিডিয়া বাক নিতে হবে, তোমাদের হাতে কোন ‘চিকি’ আছে ? একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা দাড়িয়ে বললো, স্যার আমার হাতে একটা ‘চিকি’ আছে। টু-দ্য পয়েন্টে মিলে যাবে। যেমন কথা তেমন কাজ। যদিও ঐ ছেলের উদ্দেশ্য ছিলো ভিন্ন, কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থার লোক ঐ ছেলে দিয়ে ঘটনা ঘটিয়ে নিজের উদ্দেশ্য সফল করে নিলো। এ ধরনের ঘটনাকে বলে ‘ফলস ফ্ল্যাগ’।
ইউরোপে যখন প্রচুর পরিমাণে মুসলিম শরনার্থী প্রবেশ করতে থাকে, তখন অনেক রাজনৈতিক দল এ ঘটনা ঘটায়। কথিত মুসলিম হামলাকারী দিয়ে ঘটনা ঘটিয়ে অভিবাসী বা শরনার্থী বিরোধী সেন্টিমেন্ট তৈরী করে। এবং সেই সেন্টিমেন্টের পক্ষে বলে নির্বাচনে জয়লাভ করে। প্রায় সবগুলো ঘটনায় দেখা যায়, হামলাকারী আগেও গ্রেফতার হয়েছিলো এবং বেশিকিছুদিন পুলিশ হেফাজতে ছিলো। পুলিশ হেফাজত থেকে বের হয়েই সে ঘটনা ঘটিয়ে দিয়েছে। কিছুদিন আগে কাশ্মীরে পুলওয়ামা অ্যাটাকের ক্ষেত্রে একই ধরনের ঘটনা। অর্থাৎ হামলাকারী আগেও গ্রেফতার হয় এবং অনেকদিন পুলিশ হেফাজতে ছিলো। বলাবাহুল্য, নির্বাচনের মাত্র ৪ মাস আগে পুলওয়ামা অ্যাটাকের ঘটনা ঘটিয়ে মোদিও পাকিস্তানবিরোধী চেতনা সৃষ্টি করে নিজের ভোট বাড়াতে চাইছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে কথিত বিমান ছিনতাইকারীও এক সময় গ্রেফতার হয়ে পুলিশ হেফাজতে ছিলো। খুব স্বাভাবিক তাকে দিয়েও মিডিয়ায় বাক নিতে চেয়েছে সরকার।

এজন্য আমি সব সময় বলি-
কোন ঘটনা ঘটলে সেই ঘটনার দিকে তাকাইও না,  সেই ঘটনা দিয়ে কে সুবিধা নিতে চাইছে সেটার দিকে তাকাও। তাহলেই ঘটনার গোমর ফাঁস হয়ে যাবে। পুরান ঢাকার অগ্নিকাণ্ডের পর আমি বলেছিলাম, এ ঘটনার দ্বারা কে কি সুবিধা নিতে চাইছে সেটার দিকে তাকানো উচিত। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে পুরান ঢাকার ব্যবসা বাণিজ্য বিশেষ করে প্রডাকশনের কাচামালের উপর হাত দিতে চাইছে একটি মহল। সকল কাচামালকে কেমিকেল ট্যাগ দিয়ে এলাকাছাড়া করতে চাইছে উদ্দেশ্য পুরান ঢাকা থেকে সকল বাণিজ্য উচ্ছেদ করে এ এলাকাকে পর্যটন এলাকা বানানো।

তারই ধারাবাহিকতায় আজকে মেয়র সাঈদ খোকন ঘোষণা দিয়েছে, আগামী ৩ দিন পর পুরান ঢাকায় বাড়িতে বাড়িতে সে গোডাউন তালাশ করবে, যেখানে গোডাউন পাবে, সেই বাড়ির মালিকের গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিবে। আমার মনে হয়, ঐ এলাকার মানুষ একটা ভুল করছে। দাহ্য কেমিকেল সরাবে ভালো কথা, কিন্তু সেটা জায়েজ করার জন্য ১৫০ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করতে হবে কেন (এলাকাবাসীর দাবি নিহত হয়েছে ১৫০ জন)? এটা কি স্থানান্তরে ভালো পরিবেশ তৈরী করে, জনগণকে সাথে নিয়ে করা যেতো না ??

আমার মনে হয়, সাঈদ খোকন কেন ১৫০ জন নিরাপরাধ মানুষ হত্যা করলো সেটার আগে বিচার আগে উচিত। পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীদের উচিত খুনি সাঈদ খোকন ও তার বাহিনীকে পুরান ঢাকায় অবাঞ্চিত ঘোষণা করা এবং সাইদ খোকনের ফাসির দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলা।

----------------------------------------------------------
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

শেখ হাসিনা এটা কি বললো ?

গত শনিবার ঢামেক বার্ন ইউনিটে চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে আহতদের পরিদর্শনে গিয়ে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছে, নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনার পরে রাসায়নিকের গোডাউন সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কেরানীগঞ্জে তাঁদের জন্য জায়গাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তাতে রাজি হয়নি। একে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছে হাসিনা। (https://bit.ly/2SUpLWR)

কথা হলো, সত্যিই কি  ২০১০ সালে নিমতলীর ঘটনার পর সরকার কোন কার্যকরী ও বাস্তবমূখী পদক্ষেপ নিয়েছিলো ?
কখনই নয়। নিমতলীর ঘটনার পর কেরানীগঞ্জে কেমিকেলপল্লী নির্মাণের কথা বললেও সেটার পরিকল্পনা (ডিপিপি) করতে বিসিক সময় নেয় ৫ বছর। ৫ বছর পর ২০১৫ তে আজগুবি পরিকল্পনায় তারা ৭ তলা ভবনের ১৭টি স্ট্র্যাকচার করার কথা বলে, যার ব্যয় ধরা হয় ১৪১৮ কোটি টাকা। বলা হয় কেমিকেল ব্যবাসায়ীরা এই খরচ বহন করবে। কিন্তু ২০১৬ সালে ব্যবসায়ীরা এই পরিকল্পনার বিস্তারিত জেনে তার প্রতিবাদ করে এবং বলে, সম্পূর্ণ পরিকল্পনা ভুল হয়েছে। ৭ তলা গোডাউন বানালে দুর্ঘটনার সম্ভবনা আরো বেড়ে যাবে। আর এত উচ্চমূল্যের প্রজেক্টের খরচ তারা বহন করতে পারবে না। ফলে এই ব্যয়বহুল ও ফালতু পরিকল্পনাটি বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০১৭ সালে সরকার নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করে, যেখানে ৩০০টি প্লট বরাদ্দের কথা বলা হয় এবং এর খরচ ২০৩ কোটি টাকা। এই পরিকল্পনাটি প্রক্রিয়াধীন আছে। (https://bit.ly/2Nq2yWB)

উল্লেখ্য, কেমিকেল পল্লী বানাতে ব্যবসায়ীদের পকেটের টাকা দিতে হবে। তাই তারা হিসেব করবে, এই ঠিক। তাই অযাচিত ও ভুল প্রজেক্টের জন্য তারা প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ করতে কখন রাজি হবে না এবং এটা বাস্তব সম্মত নয়। অথচ এই ভুল পরিকল্পনার পেছনে ব্যয় হয়ে গেছে ৭ বছর এবং এই ভুল পরিকল্পনায় ব্যবসায়ীরা না করেছে। কিন্তু এটার জন্য শেখ হাসিনা কি ব্যবসায়ীদের দায়ী করতে পারেন ? নাকি সরকারী সংস্থা “বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন, বিসিক’কে দায়ী করবে ? “খুব ভালো হয়েছে! তখন ঐ প্রজেক্ট নিলি না কেন ? এবার বুঝ ঠ্যালা”- এই ধরনের ইনটেনশন তো দেশের প্রধানমন্ত্রী দেখাতে পারেন না। তাছাড়া ২০১৭ সালে মাত্র ৩০০টি প্লট বরাদ্দের কথা বললেও ২ বছরে সেখানে কতটুকু সুযোগ সুবিধা গড়ে তুলেছে সরকার ? কোন সুযোগ সুবিধা না গড়ে তুলে যদি চকবাজারের স্যাবোটেজকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীদের ফাকা মাঠে সরাতে জোর করা হয়, তবে তো বুঝতে হবে সরকার নিজেই চাইছে পুরান ঢাকায় দীর্ঘদিন ধরে গড়ে এই বাজার নষ্ট হয়ে যাক। ঠিক যেভাবে ট্যানারিওয়ালাদের জোর করে সাভার সরিয়ে দিয়ে চামড়া শিল্পকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দিয়েছে সরকার।

অগ্নিকাণ্ডের উৎস কি ?
অগ্নিকাণ্ডের উৎস নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলছেন। কেউ বলছে কেমিকেল থেকে, কেউ বলছে সিলিন্ডার বিষ্ফোরণ। যেটাই হোক, একটা জিনিস মনে রাখতে হবে দাহ্য পদার্থ (flammable) আর  বিস্ফোরক পদার্থ (explosive) কিন্তু আলাদা। আগুনের গতি বাড়াতে দাহ্য পদার্থ (flammable) কাজ করতে পারে। কিন্তু শুরুতে কিন্তু একটা বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, যা সিসিটিভি ফুটেছে যা দৃশ্যমান হয়েছে। এই শুরুর বিস্ফোরক(explosion)টা কে ঘটালো? দাহ্য পদার্থ এমনি এমনি বিষ্ফোরণ ঘটাতে পারে না। এই রহস্য আগে পরিস্কার হওয়া দরকার। উল্লেখ্য, সাধারণভাবে কেমিকেল হিসেবে যা প্রচার চলছে, সেগুলো সর্বোচ্চ দাহ্য পদার্থ। তবে সেগুলো যদি উচ্চচাপে সিলিন্ডারের মধ্যে সংরক্ষণ করা হয় তবে সেগুলোও কিন্তু এক্সপ্লোসিভ হয়ে যায় (পারফিউমের বোতলও এক ধরনের ছোট সিলিন্ডার বলা চলে। সেক্ষেত্রেও বড় উচ্চচাপের সিলিন্ডার বা অবস্থা থেকে ছোট ছোট সিলিন্ডারে সংরক্ষণ করা হয়, অর্থাৎ দোষ সেই সিলিন্ডারের, দাহ্য কেমিকেলের নয়)। আমার ধারণা সাধারণ মানুষ বা মিডিয়া দাহ্য পদার্থ আর বিষ্ফোরক পর্দার্থ এক করে ফেলছে। শুরুটা বিষ্ফোরক কিছু থেকে হয়েছে, অথচ দাহ্য পদার্থের বিরুদ্ধে যত কথা হচ্ছে, বিষ্ফোরক নিয়ে কেউ বলছে না। শুরুর বিষ্ফোরণটা কে ঘটালো সেই রহস্য আগে বের করা দরকার।
আরেকটি বিষয় না বললেই নয়, কয়েকদিন আগে পুরান ঢাকায় হয়ে গেলো সাকরাইন উৎসব। মিডিয়া বিষয়টি খুব হাইলাইট করেছে, ফলে আগামীবার আরো বড় আকারে সেটা ধারণ করতে পারে তাতে সন্দেহ নাই। এই সাকরাইন উৎসবে আতশবাজি জ্বালানো হয়। এগুলো সাধারণত ভারত থেকে আমদানি করা হয়। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে এই আতশবাজির ব্যবহার বাড়ছে। বিশেষ করে সরকার কোন উন্নয়নের খবর প্রচার করলেই কোটি কোটি টাকার আতশবাজি পোড়ায়। এছাড়া সাইকরাইনের দিনও প্রচুর আতশবাজি লাগছে। এই অবস্থায় পুরান ঢাকায় কেউ আতশবাজির কারখানা নির্মাণ করতেই পারে। এই আতশবাজিতে ব্যবহৃত পর্দাথ কিন্তু বিষ্ফোরক। সাকরাইনকে মিডিয়ায় অত্যধিক হাইলাইট যে পুরান ঢাকায় আতশবাজির কারখানার জন্মদিতে পারে, এটা কিন্তু কেউ বলেনি।

পুরান ঢাকা কি বাণিজ্যিক এলাকা নাকি আবাসিক এলাকা ?
অনেকে বলছে, আবাসিক এলাকায় এত এত কেমিকেল কেন ? আমার প্রশ্ন হলো, পুরান ঢাকা কি আবাসিক এলাকা নাকি বানিজ্যিক এলাকা ?
আমরা জানি, ঢাকার গোড়া পত্তন হয়েছিলো, বুড়িগঙ্গার তীরে, যার সীমানা ছিলো ঢাবির দোয়েল চত্বরের পাশে ঢাকা গেট পর্যন্ত। শুরুতে সবাই সেই ঢাকায় বসবাস করতো আবার ব্যবসা বাণিজ্য করতো। কিন্তু ধিরে ধিরে পুরান ঢাকা একচেটিয়া বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে থাকে, আর আবাসনের জন্য নতুন ঢাকাকে সবাই বেছে নেয়। পুরান ঢাকা এখন বাসাবাড়িগুলো গোডাউন আর কারখানায় রুপান্তর হয়েছে। তবে অনেক বাসিন্দা থাকেন, কিন্তু সেটাও তাদের বিশেষ প্রয়োজনে। কিন্তু বেসিক্যালী পুরান ঢাকা বানিজ্যিক এলাকাই। তাই এখন যদি কেউ বলে, পুরান ঢাকা আবাসিক এলাকা হিসেবে বাণিজ্য সরে যাবে, নাকি বানিজ্যিক এলাকা হিসেবে আবাসন সরে যাবে, এই প্রশ্ন করলে বলতে হবে দ্বিতীয়টিই বেশি গ্রহণযোগ্য হবে।

কেমিকেল নাকি কাচামাল ?
মিডিয়াতে যাকে কেমিকেল বলে একচেটিয়া প্রচার করা হচ্ছে, সেটা আসলে কোন কোন প্রডাক্টের কাচামাল। দুই তিনটি কাচামাল এক করে নতুন পণ্য তৈরী হচ্ছে, যাকে আমরা অর্থনীতির ভাষায় বলছি উৎপাদন বা প্রডাকশন। তাই আপনি যদি কেমিকেলের বিরুদ্ধে বলেন, তারমানে বুঝতে হবে আপনি কাচামালের বিরোধীতা করতেছেন এবং সেই বিরোধীতাটা পৌছে যাচ্ছে প্রডাকশন বা উৎপাদনের উপর।  আর আপনি উৎপাদন বন্ধ করলেই সেই স্থানটি দখল করবে বিদেশ থেকে আগত তৈরী প্রডাক্ট। অর্থাৎ দেশী উৎপাদন বন্ধ করো বিদেশী প্রডাক্ট গ্রহণ করো।

পর্যটন আর হেরিটেজ, দুই দুইয়ে চার
আগের পোস্টে আমি বলেছিলাম, সরকার বুড়িগঙ্গার তীর ঘেষে একটি অত্যাধুনিক পর্যটন কেন্দ্র করতে চায়, যার নাম “বুড়িগঙ্গা রিভার ডেভলপমেন্ট এন্ড এন্টারটেইনমেন্ট মেগা প্রজেক্ট” (এ সম্পর্কে দুটো আর্টিকেল আছে, পড়তে পারেন: https://bit.ly/2NlB707, https://bit.ly/2TcfJzG)  কিন্তু পুরান ঢাকার এই প্রডাকশন বা উৎপাদন কারখানা থাকলে তাদের ভাষায় কথিত দূষণের কারণে তা সম্ভব হবে না। ফলে উক্ত প্রজেক্টে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করাও সম্ভব না। তাই এই প্রডাকশন বা উৎপাদন বন্ধ করতেই চক বাজারের আগুন এবং অতঃপর কেমিকেল নাম দিয়ে কাচামালের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া হলো কি না তা যাচাই করা উচিত। তবে এক্ষত্রে আপনাদের আরেকটা তথ্য জানিয়ে রাখি, ২০০৯ সালে সরকার পুরান ঢাকার একটা বিরাট অংশকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করে। এই ঘোষণার কারণে ঐ এলাকাগুলো কিন্তু আর পাবলিকের সম্পত্তি থাকলো না, সরকারের সম্পত্তি হয়ে গেলো। এ সম্পর্কে নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, “রাজউকের নেতৃত্বে নগর উন্নয়ন কমিটি নামের একটি কমিটি পুরান ঢাকার অধিকাংশ অঞ্চলকে ২০০৯ সালে হেরিটেজ ঘোষণা করে। যার অর্থ ওইসব অঞ্চল ও সেখানকার অবকাঠামো, খোলা জায়গা সব কিছুর ব্যক্তি মালিকানা থাকলেও তা রাষ্ট্রিয় সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে। সরকারের নির্ধারিত সংস্থার অনুমতি ছাড়া সেখানে কোনো কিছুই করা সম্ভব না। তাই যদি হয় তাহলে এখানে কীভাবে রাসায়নিকের কারখানা থাকে, কীভাবে রাসায়নিকের গোডাউন গড়ে ওঠে ?” (https://bit.ly/2Nq6qXJ) তারমানে বুড়িগঙ্গীর তীর গড়ে ওঠা পুরান ঢাকায় হেরিজেট আর পর্যটন কেন্দ্র দুই দুইয়ে চার হিসেবে, যার ফলাফল পুরান ঢাকা থেকে ব্যবসা, বাণিজ্য আর প্রডাকশন বন্ধ, সবাই পুরান ঢাকা এখন থেকে “খুশির ঠেলায় ঘোরতে” বের হওয়ার যায়গা।

 সাংবাদিকদের দেশবিরোধী অবস্থান ও জনগণের করণীয়:
একটু আগে দেখলাম, সময় টিভির ক্যামেরা বিভিন্ন কারাখানায় ঘুড়ে ঘুড়ে অযাচিত মিথ্যা সংবাদ করছে। মনে হচ্ছে সেখানে কারখানা স্থাপন করে বিরাট নিষিদ্ধ কোন কাজ করে ফেলেছে (https://bit.ly/2GGJx1r)। কালেরকন্ঠ নিউজ করেছে, “কেমিকেল দেখলেই  ৯৫৫৬০১৪ নম্বরে কল”  (https://bit.ly/2NoB7fO)। মিডিয়াগুলো স্পষ্ট দেশীয় শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। তাই পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী ভাইদের বলবো,
ক) আপনাদের আশেপাশে কোন সাংবাদিক দেখলেই গণপিটুনী দিয়ে তাদের এলাকা ছাড়া করুন।
খ) এই বিরাট ষড়যন্ত্র বন্ধ করার জন্য সবাই এক হয়ে সংবাদ সম্মেলন করুন, আপনাদের ক্ষয়ক্ষতি হিসেব এবং ষড়যন্ত্রের বিষয়টি প্রকাশ করুন। এছাড়া আপনাদের মোট কত ব্যবসায়ী আছে তার সঠিক হিসেব প্রকাশ করুন এবং তাদের গোডাউন লাগলে কত বড় এলাকা লাগতে পারে এবং কি কি সুবিধা লাগতে পারে সেটার হিসেব প্রকাশ করুন।
গ) পাশাপাশি ভালো অ্যাডভোকেট ধরে বিচারবিভাগীয় ব্যবস্থা নিন বা রিট করুণ।

লেখার শেষে আবার বলবো, শেখ হাসিনা যে কেমিকেল পল্লীর কথা বলে সমস্ত গোডাউন সরাতে বলেছে, পারলে সেই কেমিকেল পল্লীর একটা ছবি প্রকাশ করুক। আমি নিশ্চিত সেটা ফাকা মাঠ ছাড়া কিছু নয়। ফাকা মাঠের নাম কেমিকেল পল্লী দিয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্মের অভিজ্ঞতায় গড়ে ওঠা পুরান ঢাকার এই ব্যবসায়ীক এলাকার উচ্ছেদ এবং লক্ষ লক্ষ মানুষকে পথের ফকির বানিয়ে দেয়া কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।

----------------------------------------------------------
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

বেগুনবাড়ি বস্তি থেকে হাতিরঝিল পুরান ঢাকা থেকে কি হবে ?


'হাতিরঝিলে গেলে মনে হয়, প্যারিস শহরের কোনো অংশে এসেছি। আকাশ থেকে ঢাকা শহরকে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস মনে হয়। কুড়িল ফ্লাইওভার দেখলে মনে হয় এটি কোনো সিনেমার দৃশ্য।' বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বে দেশ বদলে গেছে মন্তব্য করে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। (https://bit.ly/2EtAeQp)

কথাটা ভুল না, সত্যিই আকাশ থেকে হাতিরঝিল দেখলে ফ্রান্সের প্যারিস মনে হতে পারে। কিন্তু তথ্যমন্ত্রীর কাছে এই তথ্য থাকাও দরকার ছিলো হাতিরঝিল কিন্তু এক সময় এমন নান্দনিক ছিলো না, হাতিরঝিল এক সময় ছিলো দৃষ্টিকটু বেগুনবাড়ি বস্তি। যে বস্তিতে সামান্য টাকায় থাকতো হাজার হাজার স্বল্প আয়ের খেয়ে খাওয়া মানুষ। সেই দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদ করে আজকে তৈরী হয়েছে বিনোদন স্পট হাতিরঝিল প্রকল্প।  তবে সেই উচ্ছেদের অনেকগুলো প্রক্রিয়া ছিলো। সবচেয়ে সহজ প্রক্রিয়া ছিলো অগ্নিকাণ্ড। হঠাৎ শর্ট সার্কিটে আগুন, অথবা গ্যাসের পাইপ লাইন ফেটে আগুন ছিলো বেগুন বাড়ির নিত্যনৈম্যত্তিক ঘটনা।  একেকবার আগুন লাগলে ৫-৭শ’ ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যাইতো, মারা পড়তো অনেকে। টিভি-পত্রিকায় সবাইকে অগ্নিকাণ্ড সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিতো, কিন্তু দিন শেষে লাভবান তারা হইতো, যাদের প্ল্যান ছিলো সেই বস্তিবাসীকে উচ্ছেদ করার। স্বাভাবিকভাবে এদের উচ্ছেদ করতে, অনেক কষ্ট করতে হতো, কিন্তু একটা আগুনের অজুহাত দিয়ে পুরো এলাকা খুব সহজেই পরিষ্কার হয়ে গেলো।

২০১৭ সালে গুলশান মার্কেটের আগুনের কথা মনে আছে, কত ভয়াবহ আগুন হয়েছিলো সেটা।  আগুন ধরার পর ব্যবসায়ীদের বক্তব্য প্রকাশ হয়েছিলো দৈনিক সমকালের ৪ঠা জানুয়ারী, ২০১৭ তারিখে: “রাজধানীর গুলশান-১ নম্বরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পরিকল্পিত বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। ওই মার্কেটে আগুন লাগার পর থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে আসছেন, তাদের মার্কেট থেকে উচ্ছেদ করতে পরিকল্পিতভাবে মার্কেটে আগুন দেওয়া হয়েছে। এটি নাশকতা। একই দাবিতে অনড় রয়েছেন তারা।  কোনও কোনও ব্যবসায়ীর দাবি, মাত্র আধাঘণ্টার আগুনে এভাবে ইট-পাথরের একটি ভবন সম্পূর্ণ বিধস্ত হতে পারে না। হাতে কোনো প্রমাণ না থাকলেও নানা সন্দেহজনক কার্যক্রমে ব্যবসায়ীদের বদ্ধমূল ধারণা, মার্কেট ভবনটি বিশেষ কারসাজিতে ধ্বংস করা হয়েছে।  গুলশান-বনানী জোনের দোকান মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলামের দুটি দোকানও পুড়েছে আগুনে। তিনি পুড়ে যাওয়া গুলশান ১ নম্বরের ডিএনসিসি মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বুধবার দুপুরে নুরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ১৯৮৩ সালে কাঁচা বাজারের ভবনটি তৈরি করা হয়। কোনো নাশকতা না থাকলে মাত্র আধাঘণ্টার আগুনে একটি মার্কেট ভবন এভাবে ধসে পড়তে পারে না। তিনি বলেন, মার্কেটের ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করে সিটি কর্পোরেশন ডেভলপার কোম্পানির কাছে মার্কেটটির জায়গা তুলে দিতেই এমন নাশকতা করতে পারে।  পাকা মার্কেট দোকান মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুলের দাবি, পরিকল্পিতভাইে তাদের শেষ করে দেওয়া হয়েছে।    (https://bit.ly/2EsHT1b)

পুরান ঢাকায় অগ্নিকাণ্ড কেন ?
আমার ধারণা, সরকার বুড়িগঙ্গার তীর ঘেষে একটি পর্যটন ও বিনোদন এলাকা তৈরী করতে চান, যা হবে আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন।  বিদেশীরা নদীর তীরে এইসব পর্যটন এলাকায় থাকবে আর বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা বাণিজ্য অবলোকন করবে। সরকার বিভিন্ন সময় বিদেশীদের কাছে লোন চায়, কিন্তু তাদের থাকার জন্য ভালো কোন এলাকা যদি তৈরী না করতে পারে, তবে কি হবে ? তাছাড়া এই পর্যটন এলাকা তৈরীর নাম করে বিদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে ঋণ আনা যাবে এবং সেখানে থেকেও বগলদাবা করা যাবে অনেক টাকা।
এ বিষয়ে খুজতে খুজতে একটা প্রজক্টের নাম পেলাম, যার নাম “বুড়িগঙ্গা রিভার ডেভলপমেন্ট এন্ড এন্টারটেইনমেন্ট মেগা প্রজেক্ট”।  এ সম্পর্কে দুটো আর্টিকেল আছে, পড়তে পারেন: https://bit.ly/2NlB707, https://bit.ly/2TcfJzG

আমার ধারণা বর্তমানে বুড়িগঙ্গার তীরে যে অভিযান চলছে সেটা ঐ এন্টারটেইনমেন্ট জোন তৈরী করার জন্যই প্রাথমিক কাজ এবং গত কয়েকদিন আগে চকবাজারে যে অগ্নিকাণ্ড ঘটলো সেটাও সেই প্রজেক্টের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। বুড়িগঙ্গার তীর ঘেষে আমরা যে বাণিজ্যিক পুরান ঢাকা চিনি, সেটা যদি থাকে, তবে আন্তর্জাতিক মানের পরিবেশের পর্যটন এলাকা হবে না, তাই বিদেশীদের কথা চিন্তা করে পুরো পুরান ঢাকা এলাকাই পরিষ্কার করা হবে ধিরে ধিরে। আর সে কথা চিন্তা করে, পুরান ঢাকা এলাকার পণ্য সামগ্রির ‘কাচামাল’কে ‘কেমিকেল’ ট্যাগ দিয়ে সকল ব্যবসার কলিজার মধ্যে হাত দেয়া হয়েছে।

আমি আবার আপনাদের হিসেব মিলিয়ে দিচ্ছি-
১) প্রথম- আগের সপ্তাহে মঙ্গলবার দিন মেয়র সাঈদ খোকন বললো, আগামী সপ্তাহে কেমিকেল কারাখানায়  অভিজান হবে।  (https://bit.ly/2SV3nMZ)
২) সপ্তাহের শুরুতে কিছু কিছু দোকানে অভিজান চালাতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে পড়লো সাঈদ খোকন। স্থগিত হলো অভিজান। (এটার জন্য নিউজ রেফারেন্স নাই, কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী আমাকে জানিয়েছে)।
৩)  বৃহস্পতিবার রাস্তায় প্রচুর মানুষ থাকবে এমন সময় বাইরে থেকে ঘটানো হলো বিষ্ফোরণ, এমন বাড়ির সামনে, যেখানে আছে কোন ধরনের কেমিকেল গোডাউন। উদ্দেশ্য যানজটে বিষ্ফোরণ হলে এমনি মানুষ মারা যাবে, কিন্তু যদি গোডাউনে আগুন লাগে তবে ভালো। আর যদি নাও হয়, অন্য পলিসি। বিষয়টা হলো পরীক্ষায় আসছে গরুর রচনা। কিন্তু  নদীর রচনা পারি কিন্তু গরুর রচনা পারি না। সমস্যা সমাধানে গরুটাকে নদীতে নামায় দাও তাইলে হবে। বাইরে কিছু দিয়ে বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে ‘কেমিকেল’ শব্দটাতে হুজুগ তুলে দাও, ব্যস পরে টিভি ক্যামেরা নিয়ে ঢুকে পরো গোডাউনে। হয়ে যাবে কারবার।
৪) আমার ধারণা, পুরান ঢাকা দীর্ঘ সময় ধরে যে বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে গড়ে উঠেছে, তা উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হলো চক বাজারের অগ্নিকাণ্ডের মাধ্যম দিয়ে।  এত এত মানুষের রুটি রোজগার ধ্বংস হলে হোক, নদীর পাড়ে পর্যটন এলাকা গড়তে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করা অনেক সহজ হবে।
৫) পুরো ঘটনার সাথে মেয়র সাঈদ খোকন জড়িত, সাথে জড়িত সাবেক আইনমন্ত্রী কামরুলের ভাইয়ের টিভি সময়নিউজ, এটা আমি মোটামুটি নিশ্চিত। তবে সরকারের উর্ধ্বতন মহলের দিক নির্দেশনায় হওয়াটাও উড়িয়ে দেয়া যায় না।

হয়ত ভাবতে পারেন, পুরান ঢাকা যদি পর্যটন এলাকা হয় তবে তো ভালোই হয়।  হা অবশ্যই ভালো  হবে, সেটা যারা তৈরী করছে তাদের জন্য ভালো, কিন্তু সাধারণ জনগণের জন্য ভালো না। এ সম্পর্কে আজ থেকে ১ বছর আগে একটা লেখা লিখেছিলাম ব্রাজিলে কর্পোরেটোক্রেসির বাস্তবায়ন নিয়ে। বলেছিলাম ব্রাজিলে তৈরী হয়েছে অত্যাধুনিক সব স্থাপনা, রাস্তাঘাট, বিমানবন্দর, পর্যটন স্পট। বিদেশীরা সেখানে গিয়ে আলিশান ভঙ্গিতে থাকে, কিন্তু স্থানীয় মানুষ দু’বেলা খেতে পায় না, সামান্য খাদ্যের জন্য মেয়েরা শরীর বিকিয়ে দেয় (https://bit.ly/2VfHBAk)। পুরান ঢাকায় বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদ হলে ভালো মানের পর্যটন এলাকা হবে নিশ্চিত, কিন্তু অনেক সাধারণ ব্যবসায়ী পথে বসে যাবে, বেকার হয়ে পড়বে লক্ষ লক্ষ মানুষ।

ছবি : হাতিরঝিলের স্থাপনা তৈরী হওয়ার পরও তার পর্যটন স্পট বর্ধিত করতে আশেপাশের বস্তিতে দুর্ঘটনায় (!) আগুনের দৃশ্য।

----------------------------------------------------------
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

পুরান ঢাকায় যদি ক্ষতিকারক বা দাহ্য পদার্থ হয়, তবে সেটা সরিয়ে নেয়াই উত্তম। কিন্তু সেটা হুজুগে মেতে উচ্ছেদ করে নয়। তাদের সঠিক উপায়ে পুনর্বাসন করা

বেজমেন্টে ছিলো বিশাল কেমিকেলের গোডাউন ।
যদি বিষ্ফোরণ হতো, তবে পুরো এলাকা উড়ে যেতো । কত হাজার মানুষ মারা পড়তো, তার হিসেব থাকতো না।

ঐ এলাকার অনেক মানুষ জানে না, বেজমেন্টে এত বড় কেমিকেল গোডাউন ছিলো।
কিন্তু ঐ বাড়ির সামনে এসেই সিলিন্ডার বোঝাই গাড়িটি বিষ্ফোরণ ঘটলো ?
উল্টাভাবে যদি চিন্তা করি, তবে তারাই বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছে যারা জানতো বাড়ির নিচে বিশাল কেমিকেল গোডাউন আছে ! কারণ একবার যদি বেইজমেন্ট পর্যন্ত আগুন পৌছায় তবে পুরো এলাকা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হবে! যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের উদ্দেশ্য ছিলো বড় ধরনের ক্যাজুয়ালিটি করা।

পাঠক! সময়টা ছিলো ২০শে ফেব্রুয়ারী, রাত ১০টা বেজে ৩০ মিনিট। আর মাত্র দেড় ঘন্টা পর ২১শে ফেব্রুয়ারীর প্রথম প্রহর। যারা পুরান ঢাকায় গিয়ে অভ্যস্ত, তারা বুঝবেন, ঐ সময় ঐ এলাকায় সারা ঢাকা শহর থেকে তরুণ প্রজন্ম একত্রিত হয় মজাদার খাবার খেতে। রাস্তায় রাস্তায় থাকে প্রচণ্ড ভীড়। সারা ঢাকা শহরের রেস্ট্রুরেন্ট যখন বন্ধ, তখন পুরান ঢাকায় সারা রাত খোলা বিরিয়ানীর দোকান। এমনিতেই প্রতিরাতে ই ভীড় থাকে, কিন্তু সেটা যদি থাকে একুশে ফেব্রুয়ারীর প্রথম প্রহর, তাহলে তো কথাই নেই। তাই কেউ যদি ব্যাপক হতাহত চায়, তবে সময়টা একদম উপযুক্ত।

আর তাছাড়া, সরকার যখন কেমিকেল কারাখানা বিরুদ্ধে একশনে যাবে বলে ঘোষণা দিলো, তখনই কেন এতবড় ঘটনা, একদম কেমিকেল গোডাউনের সামনে গিয়ে, জনপরিপূর্ণ রাতে ঘটে গেলো ?

এবার আসুন,
পুরো ঘটনায় খেলোয়ার কয়জন, একটু জেনে নেই:

প্রথম খেলোয়াড়: মিডিয়া। মুখে বলা হচ্ছে গণমাধ্যম বা জনগণের মাধ্যম। কিন্তু এরা সব সময় বিদেশীদের মুখপাত্র হয়। মিডিয়া রুমের মূল মূল সাংবাদিকরা ইহুদীবাদী সংস্থা পেন ইন্টারন্যাশনাল থেকে ট্রেনিং করা।

দ্বিতীয় খেলোয়াড় : সরকার। যেদিকে ঝোল পায়, সেদিকে ভাতের নলা ধরে। কমিশন খাওয়া তাদের পেশা। বিদেশীদের বড় কমিশনের সুযোগ পেলে মিস করবে না।

তৃতীয় খেলোয়াড় : পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী মহল।

চতুর্থ খেলোয়াড় : আমজনতা। হুজুকে বিশ্বাসী। বিদেশীদের এজেন্ট হয়ে মিডিয়া পোড়াদের আত্মীয়ের কান্না বার বার প্রচার করে ইমোশন তৈরী করে। আর সেই ইমোশন দিয়ে জনগণের কনসাস মাইন্ড আড়াল হয়ে তথ্য সাব-কনসাসে প্রবেশ করে তথ্য “হটাও কেমিকেল কারাখানা। সাইকোলোজির ভাষায় যাকে বলে মাইন্ড প্রোগ্রামিং। উপরে এত বড় বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটে গেলো, কিন্তু নিচে কেমিকেল কারখানায় আগুন পৌছালো না, যারা বেইজমেন্টে এত বড় কেমিকেল গোডাউন বানিয়েছে তাদের তারিফ না করে পারা যায় না।

এবার আসুন,
মিডিয়া কি চাচ্ছে ?
মিডিয়া চাইছে জনগণের হুজুর তৈরী করে কেমিকেল ব্যবসাসহ পুরো পুরান ঢাকার ব্যবসা বাণিজ্যে একটা উল্টাপাল্টা করা। যেহেতু পুরান ঢাকার ব্যবসা বাণিজ্যের এক বড় অংশ যেহেতু কাচামাল থেকে প্রস্তুত এবং সেই কাচামাল অবশ্যই কোন না কোন কেমিকেল দিয়ে বানানো, তাই সেই কেমিকেল ট্যাগ লাগিয়ে পুরান ঢাকার থেকে ব্যবসা বাণিজ্য উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা তাদের। আলটিমেটলি পুরান ঢাকার বিশাল ব্যবসা বাণিজ্যে একটা ধস নামবে, যার সুযোগে বিদেশীরা ঢুকবে। শুধু কেমিকেল নয়, রং, প্রশাধনী, গৃহস্থলীর অনেক মালামাল ‘কেমিকেল’ শব্দ ব্যবহার করে পুরান ঢাকা থেকে উচ্ছেদ করা হবে।

জনগণের কি চাওয়া উচিত ?
যদি ক্ষতিকারক বা দাহ্য পদার্থ হয়, তবে সেটা সরিয়ে নেয়াই উত্তম। কিন্তু সেটা হুজুগে মেতে উচ্ছেদ করে নয়। তাদের সঠিক উপায়ে পুনর্বাসন করা, যেন তাদের ব্যবসার কোন ক্ষতি না হয় এবং সেই সুযোগে বিদেশীরা ঢুকতে না পারে। মনে রাখতে হবে, সকল কাচামাল তৈরী করতে কোন না কোন কেমিকেল লাগে। তাই গণহারে সবাইকে কেমিকেল ট্যাগ লাগিয়ে পুরো ব্যবসা-বাণিজ্যকে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। চামড়া শিল্পকে যেভাবে তাড়াহুড়া করে সাভার পাঠিয়ে দিয়ে তাদের পথে বসিয়ে দেয়া হয়েছে সেটা যেন পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে না হয়। আগে ঢাকার বাইরে তাদের ব্যবসা বাণিজ্যের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দিয়ে অবস্থান তৈরী হবে, এরপর তারা পুরান ঢাকা ত্যাগ করবে।

তাছাড়া, পুরো ঘটনাটি সন্দেহজনক এবং স্যাবোটেজ হওয়ার সম্ভবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। তাই যারা এই ঘটনা থেকে ফায়দা নিতে চায়, তাদের চিহ্নিত করে মূল ঘটনার কারা ঘটিয়েছে তা বের করে নিয়ে আসতে জনগণের দাবী তোলা উচিত। কারণ স্যাবোটেজকে দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিবেন, এতগুলো মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করবেন, এটা কখনই মেনে নেয়া যায় না।

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

আমি সম্ভবত একমাত্র ছিলাম, যে এই পুরান ঢাকার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহ প্রকাশ করেছিলাম।

২১শে ফেব্রুয়ারী/১৯ তারিখে `বাংলাদেশ সময় সকালে’ আমি সম্ভবত একমাত্র ছিলাম, যে এই পুরান ঢাকার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহ প্রকাশ করেছিলাম। স্ট্যাটাস দেয়ার পর কমেন্টে অনেকের প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলাম, ‘পুরো ঘটনায় কোন বিশেষ সমস্যা আছে, কোন একটি বিশেষ মহলের স্বার্থ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।” বিষয়টি নিয়ে অনেকে আমার সাথে তর্কও করেছিলো, কিন্তু দিন গড়াতে অনেক কিছু পরিষ্কার হয়েছে এবং সরকারও ইউটার্ন নিয়েছে।

১) আমি দেখছিলাম, সরকারের মধ্যে একটি মহল পুরান ঢাকার কেমিকেল কারখানার পেছনে আগেই লেগেছে, এটা সন্দেহজনক।

২) মিডিয়াতে মার্কিনপন্থী একটি গ্রুপ আগে থেকেই পুরান ঢাকার কেমিকেল কারখানা উচ্ছেদের পক্ষে। এই ঘটনায় তাদের পোয়াবারো হয়েছে।

৩) ইউটিউবের একটি ভিডিওতে দেখলাম, মার্কিনপন্থী একটি মিডিয়া ঢামেক মর্গের সামনে এক নিহতের আত্মীয়কে শিখিয়ে দিচ্ছে, “বলুন, আমরা পুরান ঢাকা থেকে সমস্ত কেমিকেল কারখান উচ্ছেদ চাই।”, নিহতের আত্মীয় সেটাই মুখস্ত বলছে, আর সেটা ভিডিও করে সারা বিশ্বে প্রচার করা হচ্ছে।

৪) ঘটনা ঘটার পর সাঈদ খোকন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ওবায়দুল কাদের এই তিনজনের মুখ থেকে মিডিয়া স্বীকৃতি নেয়ার চেষ্টা করে, পূরান ঢাকা থেকে কেমিকেল কারখানা উচ্ছেদ করা হবে।

৫) ঘটনা যদি এই পর্যন্ত ঘটতো, তবে যারা সচেতন মহল (অবশ্যই সাধারণ জনগণ নয়), তারা বুঝতে পারতো, ঘটনা ‘ডালমে কুছ কালা হে’, হাজার কোটি টাকার প্রডাকশন মার্কিনপন্থী একটি গ্রুপের প্রভাবে সরকার ডুবিয়ে দিচ্ছে, তাহলে কি এই ঘটনা স্যাবোটেজ ? দেশীয় শিল্প ধ্বংস করে বিদেশী কর্পোরেটদের পথ পরিষ্কার করতে চায় তারা ?

৬) কিন্তু সরকার দুপুরের পর ইউটার্ন নেয়, বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্য এবং তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে।  আপনারা গতকাল সকালে যারা আমার কমেন্ট পড়েছেন, তারা বানিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সাথে মিল পাবেন আশাকরি। আমি বলবো, সরকার এতে বুদ্ধিমানের কাজ করেছে, নয়ত একদিন না একদিন পুরো ঘটনার দায় সরকারের উপর পড়তো।

৭) ইহুদীদের প্রোটোকলে সাধারণ জনগণকে তুলনা করা হয়েছে ভেড়ার পালের সাথে। গতকালকে ঘটনা ঘটার পর পাবলিকের লম্ফ-ঝম্ফ দেখে আমার তেমনটা মনে হয়েছে।  ঘটনা ঘটেছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বোঝাই গাড়ি বিষ্ফোরণে, আর মার্কিনপন্থী মিডিয়ার প্রভাবে দায় চাপিয়েছে কেমিকেল কারাখানার উপর। অথচ ঐ এলাকায় কোন কেমিকেল কারখানা বা তার গোডাউন ছিলো না (শুধু সরকারের তদন্ত প্রতিবেদন নয়, আমি ফোনে পুরান ঢাকায় আমার বন্ধুদের সাথে আলাপ করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। তবে সেখানে অ্যালকোহল মিশ্রিত বডি স্প্রে’র গোডাউন এবং পলিমার দানার গোডাউন ছিলো)। ইহুদী প্রটোকলে এমনি এমনি জনগণকে ভেড়ার সাথে তুলনা করা হয় নাই।

৮) অনেকে বলেছে, “ভাই যাই হোক, তাই বলে এতগুলো প্রাণ ?” আরে ভাই, ভেড়ার যেমন কোন মূল্য নাই, তেমনি সম্রাজ্যবাদী ও তার দোসরদের কাছে জনগণেও কোন মূল্য নাই। যদি মূল্য থাকতোই তবে, সামান্য কিছু টাকার লোভে বিদেশীদের প্রেসক্রিপশনে সরকার দুই-আড়াই কোটি শিশু বাচ্চার মুখে ভিটামিন এ ক্যাপসুল নামক ওভার ডোজ ঔষধ তুলে দিতে পারতো ? জিএমও ফুড বা গোল্ডেন রাইস এনে কোটি কোটি মানুষকে ক্যান্সারের দিকে ঢেলে দিতে পারতো ? একটা কথা মনে রাখবেন, ইহুদীবাদী কর্পোরেটরা বুঝে ব্যবসা আর টাকা আর সরকার বুঝে তার কমিশন। হাজার না লাখ ভেড়ার জান গেলো, এটা তাদের দেখার বিষয় না। তাই সব সময় বলি কর্পোরেটোক্রেসির উপর লেখাপড়া করেন, অনেক কিছু বুঝতে পারবেন।

৯) গতকালকে অনেক পাবলিককে স্ট্যাটাস দিতে দেখেছি, তারা বলছে পুরান ঢাকার জনগণ বোমা’র উপরে বসবাস করে। হায়রে বোকা ! শুধু পুরান ঢাকার জনগণ কেন ? পুরো বাংলাদেশের মানুষের ঘরে এখন বোমা পাঠানো হচ্ছে। সরকার বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয়াতে বাসায় বাসায় এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের চাহিদা বাড়ছে।  আর এলপি গ্যাস সিলিন্ডার মানে এক একটি বোমা। আপনি পুরান ঢাকার কয়েক লক্ষ জনগনকে নিয়ে কাদছেন, আর সারা দেশে কোটি কোটি জনগণ আর বোমার হুমকির মধ্যে, সেটা নিয়ে তো কাদলেন না ? পুরান ঢাকায় এলপি সিলিন্ডার বোঝাই গাড়ি বিষ্ফোরণের পর জনগণের উচিত ছিলো এই সিলিন্ডারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা, কিন্তু জনগণ ক্ষেপে গেছে কেমিকেল কারখানার উপর। আহ ! কি দুঃখ !!

১০) আমিও ব্যক্তিগতভাবে পুরান ঢাকার কেমিকেল কারখানা সরিয়ে নেয়ার পক্ষপাতি। আমি সব সময় ঢাকা বিকেন্দ্রীকরণের পক্ষে বলি।  এই বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হচ্ছে ঢাকার এইসব শিল্প কারখানা ঢাকার বাইরে কোন জেলায় নিয়ে যাওয়া। কিন্তু এরমানে এই নয়, তিলে তিলে গড়ে ওঠা এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানকে কোন স্যাবোটেজ করে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে হবে। আগে যেখানে পাঠাবেন, সেখানাকার ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করুণ, পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দিন, তারপর তাদের পাঠান। চামড়ার ট্যানারিদের যেভাবে গলা ধাক্কা দিয়ে সাভারে খালি ময়দানে পাঠিয়ে চামড়া শিল্পকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছেন, একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করবেন না।  হুজুগে পড়ে  কারো তিলে তিলে গড়ে ওঠা ব্যবসায় লাথি মারা মানে ঐ লোকগুলোর উপর অবিচার করা, এটাও মেনে নেয়া যায় না।

১১) সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে, পুরান ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জের কেমিকেল কারখানাগুলো এক করে কেরানীগঞ্জের কেমিকেল পল্লীতে আনা।  কেরানীগঞ্জে আনা মানে তো, সেই ঢাকা কেন্দ্রীক করা, বিকেন্দ্রীকরণ তো হলো না।  কেরাণীগঞ্জ না করে এই কেমিকেলপল্লী শরীয়তপুর, মাদারিপুর বা অন্যকোন জেলা শহরে করা যেতে পারে। তাছাড়া কেরানীগঞ্জে বরাদ্দ করা হয়েছে  মাত্র ৩০০ প্লট, এটাও কম। হাজার হাজার ব্যবসায়ীর জন্য আরো বড় যায়গা বরাদ্দ করা দরকার ছিলো।

১২) এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে “গ্যাস সিলিন্ডার একটি  একটি বোমা, এই বোমা বাসাবাড়িতে পাঠানো বন্ধ করুন”” এই শ্লোগানে আন্দোলন গড়ে তুলুন। শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে সংসদে দাড়িয়ে বলেছিলো, “বাসাবাড়িতে সরকার আর কোনো গ্যাস সংযোগ দেবে না। এটা ফাইনাল। এখন সরকারি যত ফ্ল্যাট আছে সেখানে এলপিজি স্টোরেজ বানানো হবে। সেখান থেকে লাইন দেয়া হবে। বাসাবাড়িতেও এই পদ্ধতি চালু হবে।” (http://www.somoyerkonthosor.com/2018/05/21/226072.htm)
এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করুন।  বলুন, এলপিজি স্টোরেজ নামক বোমার কারখানা না বানিয়ে জাতীয়ভাবে গ্যাস সংযোগ দিতে হবে।" একই সাথে বলুন, বিদেশ থেকে এলএনজি আমাদিন করে জাতীয় গ্রিডে সংযোগ দিয়েও লাভ হবে না। এতে বাংলাদেশের জনগণের জীবন খরচ বেড়ে যাবে। এর বদলে সরকার যেন গ্যাস উত্তোলন শুরু করে। আন্তর্জাতিক চাপে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ রাখার পলিসি থেকে সরকার যেন সরে আসে। “গ্যাসের উপর ভাসছে দেশ”, যেই দেশে “সমুদ্র তলদেশে ২০০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ : বাংলাদেশ হবে আগামীর এনার্জি সুপার পাওয়ার”,  আছে বলে দ্য ডিপ্ল্যোম্যাটে সংবাদ আসে, সংবাদ আসে, সেই দেশের মানুষ পাইপে গ্যাস না পেয়ে এলপি সিলিন্ডার বহণ করতে গিয়ে বিষ্ফোরণে মারা যায়, তা সত্যিই দুঃজনক।

সবশেষে বলবো, অনেকে গতকাল কমেন্ট করেছেন, “ভাই আপনার লেখা খুব ভালো লাগে, কিন্তু এ বিষয়টি ভালো লাগলো না”, তাদের উদ্দেশ্য করে বলবো, ভাই আমার সব কথা যে আপনাদের ভালো লাগবে, এটা আমি মনে করি না। আমার অনেক লেখা আপনাদের খারাপ লাগবে এটা বরং আমি মনে করি। কিন্তু কারো ভালো লাগবো, আর কারো খারাপ লাগলো, এই চিন্তা করে আমি লেখালেখি করতে চাই না। কারণ যদি আমি এ কথা চিন্তা করি, তবে আমি অনেক সত্য প্রকাশ করতে পারবো না। আপনারা কি চান, আমি কারো মন জুগিয়ে সত্য প্রকাশ থেকে সরে আসি ? নয়নের কাজ নয়ন খোলা, তাই একটু কষ্ট লাগলেও সত্যটা সহ্য করতে হবে। ধন্যবাদ।

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

পুরান ঢাকা অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি কি ইচ্ছাকৃত তৈরী???


বাংলাদেশে সপ্তাহ হিসেব করা হয় শনিবার থেকে শুক্রবার।
সে হিসেবে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন এর ঘোষণা “আগামী সপ্তাহ থেকে অবৈধ কেমিক্যাল কারখানায় অভিযান শুরু হবে”- এর দ্বারা বোঝা যায় এ সপ্তাহে কেমিকেল কারখানায় অভিজান হওয়ার কথা ছিলো।

গত সপ্তাহের মঙ্গলবারে নগর ভবনের সেমিনার রুমে আয়োজিত ‘ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ও কেমিক্যাল পল্লীতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থানান্তর’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ঐ কথা বলেছিলো দক্ষিণ মেয়র সাঈদ খোকন।  গত সপ্তাহে খবরটা দেখে আমি চিন্তা করেছিলাম, বুড়িগঙ্গার তীরের পর এই অভিজান করতে গেলে প্রশাসনের বেশ বাধা আসবে।”

যাক গতকালকের দুর্ঘনটার পর পুরান ঢাকায় প্রশাসনের অভিজানের আর বাধা থাকবে না।  এখন জন-সমর্থন আদায় করেই তবে পুরান ঢাকায় কেমিকেল কারখানায় অভিজান চালানো যাবে।  কথা হলো, এই জন সমর্থন আদায়ের ঘটনাটি কি কাকতালীয় নাকি ইচ্ছাকৃত তৈরী সেটাই খতিয়ে দেখা উচিত।

ছবির সূত্র: https://www.jagonews24.com/national/news/480931
===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

কারো কোন ব্যবসা দেখলেই সেটা খেয়ে ফেলাই আওয়ামী সরকারের কাজ।

প্রথম আলোতে এক সাক্ষাৎকারে নতুন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনসি বলছে, আওয়ামী সরকার নাকি ব্যবসা বান্ধব। (https://bit.ly/2GTJDly)

সরি, টিপু মুনসি আপনার কথা মানতে পারলাম না।
আওয়ামী সরকার ব্যবসা বান্ধব সরকার না, ব্যবসা খেকো সরকার।
কারো কোন ব্যবসা দেখলেই সেটা খেয়ে ফেলাই আওয়ামী সরকারের কাজ।
টিপু মুনসি নিজেই তো এক সময় বিজিএমইএর সভাপতি ছিলো।  সে নিজের মুখেই বলুক, বর্তমানে গার্মেন্টস শিল্পের অবস্থা কি ?
উল্লেখ্য, দৈনিক জনকণ্ঠে গত ৬ই জানুয়ারী, ২০১৮ তারিখে একটি খবরে প্রকাশ, এক সেমিনারে বিজিএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাছির বলেছিলো, চার বছরে ১২০০ ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে গেছে”।(https://bit.ly/2XcxSfY)\
 
যে গার্মেন্টস ব্যবসার মাধ্যমে এত এত বৈদেশিক মুদ্রা।  যে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ নিয়ে শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে গর্ববোধ করে, সেই গার্মেন্টস সেক্টরের কেন এত দুর্দশা ? সরকার যদি ব্যবসা বান্ধবই হয় তবে তো এমন হওয়ার কথা ছিলো না।

ব্যবসা খেকো আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় এসে সর্বপ্রথম ধ্বংস করেছিলো দুটি ব্যবসা-
১) রিয়েল স্টেট
২) শেয়ার মার্কেট

নতুন করে সরকারী অব্যবস্থাপনার কারণে নষ্ট হলো ট্যানারি বা চামড়া শিল্প। সরকার যদিই ব্যবসা বান্ধবই হতো, তবে এমনটা হলো কেন ?

কোন ব্যবসায়ী ব্যবসা বিস্তৃতি করতে না পারার মূল কারণ, ব্যাংক ঋণ না পাওয়া। অনেক সৎ ও দক্ষ ব্যবসায়ী আওয়ামী সরকারের আমলে ঋণ পায়নি, শুধু আওয়ামীলীগ না করার কারণে। অপরদিকে শুধুমাত্র আওয়ামীলীগ করার কারণে অনেক নব্য গজিয়ে ওঠা ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে মিথ্যা বলে কোটি কোটি টাকা নিয়ে লোপাট করেছে, যার দরুণ আজকে ব্যাংকগুলো এক মূলধন সংকটে ভুগছে।

অজ্ঞাত কারণে সরকার দেশের গ্যাস উত্তোলন করে না। কথিত আছে, বাংলাদেশের গ্যাসে লেয়ার এমন অবস্থায় আছে যে, বাংলাদেশে থেকে গ্যাস উত্তোলন করলে ভারতীয় লেয়ারের গ্যাস বাংলাদেশ দিয়ে বের হয়ে যাবে। অথচ এই গ্যাসের অভাবে বন্ধ হয়ে আছে লক্ষ লক্ষ কারখানা। (https://bit.ly/2TTd8I1)

ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ব্যবসাকে ধ্বংস করা ছিলো আওয়ামী সরকারের ওয়ান-টু’র কাজ। এই তো কিছুদিন আগে বাংলাদেশের ডেইরি শিল্পের পেছনে লাগলো সরকার। সরকার শিক্ষিত বেকারদের চাকুরী দিতে পারে না। তাই তারা মা-বাপের জমানো টাকা দিয়ে নামছে ডেইলি ফার্ম ব্যবসায়। লক্ষ লক্ষ বেকারের কর্মসংস্থান হচ্ছে এই খাতে। কিন্তু হঠাৎ করে বিদেশী সম্রাজ্যবাদীদের অঙ্গসংগঠন ফাউ (FAO) এর টাকায় বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এক জরিপে দাবি করে, বাংলাদেশের গরুর দুধে নাকি তারা এন্টিবায়োটিক আর শিসা পাইছে।  বিষয়টি প্রচারের দায়িত্ব নেয় সিআইএ’র মুখপাত্র দৈনিক প্রথম আলো। মূলত এর পেছনে মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশে স্বপ্রণোদিত হয়ে গড়ে ওঠা ডেইরি শিল্পকে ধ্বংস করে বিদেশ থেকে গুড়া দুধ আমদানি করে নিয়ে আসা।  (https://bit.ly/2IrV0nj, https://bit.ly/2TXOwOn)

শুধু এবারই না, বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশের ডেইরি ফার্মগুলোর পেছনে লেগেছে সরকার প্রশাসন। আবাসিক এলাকা থেকে ডেইরি ফার্ম সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেয় প্রশাসন (https://bit.ly/2V8GC4R)। অথচ আবাসিক এলাকায় এসব ফার্ম আছে বলে আবাসিক এলাকার মানুষ গরুর দুর্ধ খেতে পারছে, নয়ত তাদেরকে গুড়া দুধ পানিতে গুলিয়ে খেতে হতো।  উল্লেখ্য বিভিন্ন এলাকায় এইসব ফার্ম গড়ে উঠায়, দুধের পাশাপাশি, কোরবানীর ঈদে গরু সরবরাহ অনেক সহজ হয়ে গেছে, ফলে ভারত থেকে গরু আমদানি করা লাগছে না। কিন্তু এই ব্যবসা খেকো সরকার কোন সম্ভবনাময় শিল্প দেখলেই সেটাকে কিভাবে করে কোমড়ভাঙ্গা যায়, সেটা নিয়ে থিসিস শুরু করে, যা দেখা যাচ্ছে এবার ডেইরি ফার্মের বেলায়।
এবার আসুন, দোকান-মার্কেট ব্যবসার দিকে তাকাই। সরকারের বাপের টাকা না, নিজের টাকা দিয়ে তিল তিল করে গড়ে তোলা ব্যবসা। কিন্তু ফ্লাইওভার-মেট্রোরেল এর দাপটে ব্যবসা সব লাটে উঠছে। বছরের পর বছর রাস্তা কাটা, মার্কেটে বেচা বিক্রি নাই। বিক্রি ছাড়া দোকান ভাড়া আর স্ট্যাফ খরচ দিয়ে কত দিন লসে চলতে পারে ? ফ্লাইওভার-মেট্রোরেলের  নির্মাণের জন্য সারা ঢাকা শহরে অনেক ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, শুধু তাই নয়, এসব স্থাপনা তৈরী হওয়ার পর গাড়ি আর নিচ দিয়ে যায় না, উপর দিয়ে যায়। তাই অনেক চালু দোকান কাস্টমারের অভাবে বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। ফ্লাইওভার মেট্রোরেল করতে গিয়ে তো সরকার আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে, কিন্তু কত লোকের পেটে লাত্থি পড়ছে তার হিসেব কেউ রেখেছে?

কোচিং-কে যদি আমরা এক ধরনের শিল্প হিসেবে দেখি, তবে সেটাও কিন্তু বন্ধের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে ব্যবসা খেকো আওয়ামী সরকার। শিক্ষিত যুবকরা নিজের পকেটের টাকা জমিয়ে পাড়ার অলিতে গলিতে গড়ে তুলেছে কোচিং সেন্টার, যা আজকে দেশের স্কুল-কলেজের প্যারাল্যাল হিসেবে কাজ করছে। কিন্তু সরকার চায় না, সরকারী বইয়ের বাইরে কোন ছাত্র ১ অক্ষর বেশি জানুক। তাই এর বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র। নানান মিথ্যা ছুতা-নাতা দিয়ে বন্ধ করে দিচ্ছে কোচিং সেন্টারগুলো।

আপনাদেরকে আগে থেকে সতর্ক করে দিচ্ছি, বাংলাদেশের চিংড়ী শিল্প ধংষ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে সরকার। ভেনামি চিংড়ী নামক এক ক্ষতিকারক চিংড়ী এনে বাংলাদেশের চিংড়ি সম্পূর্ণ লাটে উঠার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।  একটি ইহুদীবাদী বিদেশী সংস্থা ‘উইনরক ইন্টারন্যাশনাল এর টাকা খেয়ে  এর সাথে যুক্ত হয়েছে মৎস ও প্রাণীপ্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু।  (https://bit.ly/2U62AFm)

উল্লেখ্য ২০১৩ সালেও একবার ভেনামি চিংড়ী আসার কথা ছিলো বাংলাদেশে।  কিন্তু এর ক্ষতিকর দিক বেশি হওয়ায় এই বিদেশী চিংড়িটি আর বাংলাদেশে আসা হয়নি।   এর কারণ, ভেনামি চিংড়ি আমদানির পর প্রথমেই যে সমস্যাটি দেখা দিবে তা হলো ব্রুড চিংড়ি অনুপ্রবেশের মাধ্যমে আমাদের দেশীয় চিংড়িতে ভাইরাসজনিত রোগের সংক্রমণ।  গত কয়েক দশকের ইতিহাস থেকে জানা যায়, বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে ব্রুড চিংড়ি অনুপ্রবেশের কারণে ভাইরাসজনিত রোগ বিশেষ করে 'হোয়াইট স্পট ডিজিস' ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।  একটু অসতর্কতার কারণে একবার রোগের রাস্তা খুলে গেলে দেশীয় বাগদা চিংড়ির অপার সম্ভাবনা চিরতরে বিনষ্ট হবে।   (https://bit.ly/2GAtXV9)

উৎপাদন বন্ধ করো, বেকারত্ব বৃদ্ধি করো।
বিদেশ থেকে ঋণ আনো, নিজের পকেট ভর্তি করো।
অনুৎপাদন খাতে ব্যয় করো, জীবনব্যয় বৃদ্ধি করো,
বেকারত্ব বৃদ্ধি করো, দারিদ্রতার চাষ করো।
বিদেশী কলকারাখানা স্থাপন করো, নামমাত্র মজুরিতে শ্রমিক নিয়োগ করো।
স্ব-নির্ভর নয়, স্বাধীন দেশে দাসত্ব জীবন গড়ো।

এটাই হলো কর্পোরেটদের শাসন বা কর্পোরেটোক্রেসি, এক সময় নীলকর এই কাজটি করেছিলো, এখন নব্য উপায়ে, নতুন সিস্টেমে তার বাস্তবায়ন চলছে। সময় পাল্টেছে মীর জাফরদের স্থানটি দখল করেছে সরকার, তবে জনগণ এখনও অবুজ। নতুন ষড়যন্ত্র বুঝতে তাদের আরো সময় প্রয়োজন।

===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686
------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------