Thursday, February 15, 2018

চেতনার অভাবে মুসলিম সমাজ


বর্তমানে মুসলিম সমাজ কঠিন সঙ্কটের পথে। মুসলিম সমাজ নিজেই জানে না, তাকে কোন পন্থায় এ সমস্যা উত্তরণ করতে হবে। এ সঙ্কট উত্তরণে মুসলিম বুদ্ধিজীবি মহলও যে খুব এগিয়ে এসেছেন তাও নয়, ফলে দ্রুত দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে পড়ছে মুসলমানরা।

আমি বিষয়টি নিয়ে অনেক চিন্তা করেছি এবং সঙ্কট উত্তরণে কিছু পথ নিয়েও ভেবেছি। প্রথমে আমার যেটা মনে হয়েছে, বর্তমানে মুসলিম সমাজের মধ্যে চেতনার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। চেতনা’ শব্দটা অনেকেই এখন ব্যঙ্গাত্মক অর্থে ব্যবহার করে। তারপরও বহুল প্রচলিত হওয়ায় আমি তা ব্যবহার করলাম। বর্তমানে মুসলিম বলতে কিছু নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে সীমাবদ্ধ ব্যক্তিকে বোঝায়, কিন্তু ‘মুসলিম চেতনা’ বলতে যেটা বোঝায়, তার যথেষ্ট অভাব বিদ্যমান। এর কারণ হতে পারে, মুসলমানদের ধর্মীয় গুরুরা শুধু ধর্মীয় নিয়ম-কানুন শিখিয়েছে, কিন্তু সেই নিয়ম কানুনের মধ্যে দৃঢ় ও একতাবদ্ধ থাকার জন্য যে ‘চেতনা’ দরকার সেটার প্র্যাকটিস করেনি। ফলশ্রুতিতে দেখবেন, অন্য চেতনাধারীরা তাদের চেতনাসমৃদ্ধ (যেমন : স্বাধীনতার চেতনা, নাস্তিক্য চেতনা, হিন্দু চেতনা ইত্যাদি) ব্যক্তি বা বস্তুর উপরে আঘাত আসলে তারা একসাথে সব ঝাপিয়ে পড়ছে, কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে নিজস্ব চেতনার অভাব থাকায় হাজার হাজার মুসলমান মেরে ফেললেও মুসলমানদের ঘুম ভাঙ্গছে না।

কিন্তু কেন এই চেতনার অভাব ? আমি ৪ মাস আগে একটা আর্টিকেল লিখেছিলাম, যার শিরোনাম ছিলো- “জেনারেশন গ্যাপ ও মুসলিম সমাজ” (http://bit.ly/2BvD8CQ) লেখাটা যারা পড়েননি, দয়া করে আবার পড়ে নিবেন, তবে আমার এ লেখাটা বুঝতে সহজ হবে, নয়ত পুরো লেখাটা বুঝতে পারবেন না।

মুসলমানদের মধ্যে যেটা ঘটেছে তা হলো ব্রিটিশ প্রিয়ডে মুসলমানদের জেনারেশন টু জেনারেশন চেতনার সংযোগটা কেটে দিয়েছে ব্রিটিশরা। এতে মুসলমানদের মধ্যে পূর্ববর্তী প্রজন্মের (যখন মুসলমানরা সুপার পাওয়ার ছিলো) চেতনার ট্র্যান্সফার হতে পারেনি। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমানে মুসলমানরা একেবারে চেতনাশূণ্য হয়ে গেছে, অনেকে আবার অমুসলিম চেতনায় চেতনাবান হচ্ছে।

এখন মুসলমানদের যেটা করতে হবে, সেটা হলো চেতনার যে সংযোগটি কেটে দেয়া হয়েছে সেটা আবার পুন:সংযোগ করতে হবে। তখনই পূর্ববর্তী চেতনার ট্র্যান্সফার হবে। আর সেই চেতনার ট্র্যান্সফার হলেই কেবল বর্তমান মুসলমানরা চেতনাসমৃদ্ধ হতে পারবে এবং অমুসলিমদের ষড়যন্ত্র থেকে বাচতে পারবে।

এক্ষেত্রে মুসলমানরা যেটা করতে পারে, তাদের পূর্ববর্তী চেতনাসমৃদ্ধ প্রজন্মের বিভিন্ন বিশেষ ঘটনাকে টার্গেট করে একটা দিবস নির্ধারণ করতে পারে, এবং বছরে ঐদিনকে উপলক্ষ করে পূর্ববর্তী ঘটনার ব্যাপক আলোচনার মাধ্যমে তা নতুন করে ছড়িয়ে দিতে হবে।

যেমন, ধরুন আওয়ামীলীগ ৭ই মার্চ আসলে যায়গায় যায়গায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ চালিয়ে দেয়। এর মাধ্যমে কিন্তু আওয়ামীলীগ সদস্যরা নিজেদের মধ্যে চেতনা সমৃদ্ধ করে, এবং একই সাথে অন্যদের মধ্যে চেতনার বিস্তার ঘটায়। ঠিক একইভাবে ধরুন, যে তারিখে মুসলমানদের শেষ নবী বিদায় হজ্জের ভাষণ দিয়েছিলো ঐ তারিখে পৃথিবীর সব মুসলমানরা ঐ ভাষণের লিখিত রূপ পাঠ করে মাইকে ছেড়ে দিলো কিংবা ঐ ভাষণ নিয়ে গবেষণা করলো, লেখালেখি করলো। এতে দেখা যাবে, ঐ সময়কার চেতনা অটোমেটিক বর্তমান মুসলমানদের মধ্যে ট্র্যান্সফার হওয়া শুরু হয়েছে। হয়ত বলতে পারেন, ভাষণ তো লেখা আছেই, তাহলে আবার দরকার কি ? কিন্তু না, যত আলোচনা করবেন, প্রতি লাইন-দাড়ি-কমা নিয়ে গবেষণা করবেন, চেতনা তত বৃদ্ধি পাবে ও ছড়াবে, এটাই নিয়ম।

এভাবে করে যদি বছরে ৩০-৪০টি উপলক্ষ নির্ধারণ করে প্র্যাকটিস করা যায়, তবে মুসলমানদের পুরাতন অবস্থা ফিরিয়ে আনা খুব সহজ হবে, একইসাথে অমুসলিমদের চেতনাসমৃদ্ধ পহেলা বৈশাখ, ভ্যালেন্টাইন ডে, পহেলা ফাল্গুন, সাকরাইন ডে, হ্যালোইন উৎসব ইত্যাদি থেকে মুসলমানরা বেছে থাকতে পারবে বলে মনে হয়।


===============================
আমার মূল পেইজ- Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5)
পেইজ কোড- 249163178818686

------------------------------------------------------------------
আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
------------------------------------------------------------------------------------------------

0 comments:

Post a Comment